শাকিল আহমদ:
যদিও বলা হচ্ছে তাবৎ বিশ্বে বইপড়া কমছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষে মানুষ দেখার দিকেই বেশি করে ঝুঁকে পড়ছে; এতে আড্ডায়ও কি ঘাটতি আসছে? তথাপি বলবো, আড্ডার আবেদন বা মজাই আলাদা। আর সে আড্ডা যদি সাহিত্য-সংস্কৃতিনির্ভর হয় তবে তো কথাই নেই; এতে মনের প্রশান্তির সাথে সাথে লেখক সত্তা-সৃষ্টিশীল সত্তাও জেগে ওঠে বৈকি। তাইতো বাঙালির এই আড্ডা কালে-কালে, যুগে-যুগে কলকাতা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ কোথায় গড়ে ওঠেনি। সমমনাদের নিয়ে এ-সব আড্ডা আমাদের সৃজনশীল সাহিত্যেও রেখাপাত করেছে প্রবলভাবে। এ নিয়ে আমাদের সাহিত্যপাড়ায় লেখালেখিও চলছে গত দুই শতাব্দী ধরে।
সিকি শতাব্দ ধরে আমাদের আছে আন্দরকিল্লা পত্রিকা; যেভাবে ঢাকার আছে গ্রিণরোড পত্রিকা এবং কলকাতার আছে কলেজ স্ট্রিট পত্রিকা। আর এই মাসিক আন্দরকিল্লা পত্রিকা ঘিরে সেই সিকি শতাব্দী থেকেই গড়ে ওঠেছে এক সাহিত্যাড্ডাও। এই সাহিত্যাড্ডা নিয়ে লেখার সময় এসেছে বৈকি। কারণ সিকি শতাব্দ সময়কাল তো- কী ব্যক্তি জীবনে, কী একটি পত্রিকার আয়ুষ্কালের জন্য নিছক কম সময় নয় কিন্তু।
চাটগাঁ শহরের ঐতিহাসিক ও মনোরম পরিবেশে চেরাগী পাহাড় মোড়। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে লেখক-সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক-সাহিত্যকর্মীদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে পত্রিকা অফিস সমূহ ও গলিপথগুলো। চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেহিশাবী আড্ডা আর চা-এর চুমুক। শিল্প-সাহিত্যের এরকম এক পিটস্থান সাত্তার ম্যানশন-এর দ্বিতীয় তলায় ১৯৯৭ সালে প্রথম মাসিক আন্দরকিল্লা ডিসেম্বর সংখ্যার আত্মপ্রকাশ। নবীন সম্পাদক মুহম্মদ নুরুল আবসারের শ্রমে-ঘামে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আন্দরকিল্লা উদ্বোধনী সংখ্যা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। সেই সময়টা আমার হৃদয়পটে আজ সিকি শতাব্দী পরও জেগে আছে পিদিমের মতো। প্রথম সংখ্যাটি ছিল ম্যাগাজিন আকৃতির। সংখ্যাটির প্রচ্ছদ ছিল কবি শামসুর রাহমানের একটি দৃষ্টিনন্দন ছবি ও জলছবির সমন্বয়ে গড়া শামসুর রাহমান সংখ্যা। আধুনিক যুগের কবিসম্প্রদায়ের শীর্ষস্থানীয় ও জনপ্রিয় কবি শামসুর রাহমানের ওপর বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ ও সাক্ষাৎকার ছিল আবুল মোমেন, আহমেদ মওলা ও শাকিল আহমদের। কাবিতা লিখেছেন যথাক্রমে শামসুর রাহমান, ময়ুখ চৌধুরী, ত্রিদিব দস্তিদার, সাথী দাশ, কামরুল হাসান বাদল, আকতার হোসাইন, স.ম. শামীম। গল্প-মহীবুল আজিজ। রম্য রচনাÑরণজিৎ বিশ্বাস। আরো লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ, ইসহাক চৌধুরী, রনেশ দাশ গুপ্তের অপ্রকাশিত লেখা, নোবেল বিজয়ী দারিওফোর সাক্ষাৎকার। ছিল নিয়মিত বিভাগ, বিনোদন প্রতিবেদন মিলিয়ে আন্দরকিল্লা প্রথম সংখ্যাটি মনে রাখা এবং সংগ্রহে রাখার মতো একটি সংখ্যা। লেখকদের মধ্যে আজ অনেকেই বেঁচে নেই। তবে বেঁচে আছে তাঁদের সৃষ্টিকর্ম। সংখ্যাটিতে আরো যাদের শ্রম ও মেধা জড়িয়ে আছে তাঁদের মধ্যেÑপ্রধান সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদ, সহকারী সম্পাদক শান্তিপদ বৈদ্য, সহ সম্পাদক নিজামুল ইসলাম সরফী, মুজাহিদুল ইসলাম, প্রতিবেদক নুরুল আমিন সিকদার, সালাহউদ্দিন চৌধুরী, শাহনাজ পারভিন বকুল, দিল আফরোজ রিতা, প্রচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জা: জিয়াউদ্দিন চৌধুরী, জমির উদ্দিন।
আনন্দ-বেদনার সিকি শতাব্দ পথ অতিক্রম করে হিসেব মেলাতে গিয়ে আন্দরকিল্লাকে বাঁচিয়ে রাখতে ও গতিশীল করতে মরিয়া হয়ে এখনো কাজ করছেন সম্পাদক মুহম্মদ নুরুল আবসার, সহকারী সম্পাদক-শান্তিপদ বৈদ্য ও বর্ণ বিন্যাস-নুরুও ওসমান। আর এই আন্দরকিল্লা সূচনা সংখ্যা থেকেই পত্রিকাকে বেষ্টন করে পল্লবিত হতে থাকে একটি সাহিত্যাড্ডা, যার আয়ুষ্কালও সিকি শতাব্দ। ইতোমধ্যে এই আড্ডা থেকে অনেক প্রিয়জন চিরতরে মর্তালোকক ছেড়েছেন। অনেকেই জীবিকার তাগিদে স্থান ত্যাগ করেছেন আবার প্রতিনিয়তই এই আড্ডায় যুক্ত হয়েছেন নতুন মুখ। আড্ডা কিন্তু ঠিকই জমছে চেরাগী পাহাড় সাত্তার ম্যানশন, দ্বিতীয়তলার সম্পাদকীয় দপ্তরে। শিল্প-সাহিত্যপ্রেমি অনেকেই কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে কিছুটা সময় বের করে খানিকটা সমমনাদের সাথে বিচিত্র আড্ডায় মেতে ওঠলে যেন শরীর-মন দু’ঠোই চাঙ্গা হয়ে ওঠে, সতেজতা ফিরে আসে দেহ ও মনে। শিল্প-সাহিত্য, লেখালেখি, সভা-সেমিনার প্রকাশনা সবকিছু জানার-অবগত হওয়ার কেন্দ্রবিন্দু এই সম্পাদকীয় দপ্তর। এখানে এসে আড্ডা দিয়ে যায় শিল্প-সাহিত্যের অনেক বিদগ্ধজনেরা।
আন্দরকিল্লা সাহিত্যাড্ডা সম্পর্কে লিখতে বসে প্রথমেই আমার মনকে বেদনাবিদূর করে তুলল যে সব বিদগ্ধজনরা আমাদের আড্ডার মাঝখান থেকে চিরবিদায় নিলেন, তাঁদের কথা মনে পড়ে। আমাকে আজ বিশেষভাবে আলোড়িত করছে এই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক সিদ্দিক আহমেদের স্মৃতি। আজ থেকে সিকিশতাব্দী আগে আবসার ভাইয়ের সম্পাদনায় আন্দরকিল্লা প্রকাশের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বর্তমান সম্পদকীয় দপ্তরটিতে। সভাবতই আমাদের আনাগোনা বেড়ে গেলো। এদিকে নতুন পত্রিকাকে ঘিরে ব্যস্ততা বাড়লো প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, সাংবাদিক সিদ্দিক আহমেদেরও। আর সেভাবেই সূত্রপাত আন্দরকিল্লার সাহিত্যাড্ডাও। তখন থেকে এই সৃজনশীল আড্ডার মধ্যমণি এই শহরের সক্রেটিস নামে খ্যাত স্থিতধী সিদ্দিক আহমেদ। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে হ্যামিলনের বংশিবাদকের মতো নবীন-প্রবীণ শিল্প-সংস্কৃতির মানুষেরা পত্রিকা কার্যালয়ে জমা হতো সিদ্দিক আহমেদের সান্নিধ্যের আশায়।
আমার সাথে এই মহৎপ্রাণ বড়মাপের মানুষটির কাছে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম ছিল এই আন্দরকিল্লা পত্রিকার প্রথম প্রকাশনা। তখন থেকেই প্রিয় সিদ্দিক ভাই আমাকে পরম মমতা দিয়ে কাছে টেনে নিয়েছেন। প্রথম আলাপচারিতায় জানতে পারি ইতিপূর্বে তিনি আমার মতো ক্ষুদে লেখকের অনেক লেখাই মনোযোগ সহকারে পড়ে ফেলেছেন। ইতোমধ্যেই আড্ডা জমে ওঠেছে আন্দরকিল্লা কার্যালয়ে। সময় পেলে ছুটে যেতাম সেই সৃজনশীল আড্ডায়। সেখানে যাওয়া মানে তো সেই প্রিয় মানুষ সিদ্দিক ভাই-এর সান্নিধ্য পাওয়া। শিল্প-সাহিত্য এবং বিশ্বসাহিত্যের নানান আলোচনা শোনা। আজও আবসার ভাইয়ের আন্দরকিল্লা দপ্তরে নিয়মিত আড্ডা হয়; কিন্তু প্রিয় সিদ্দিক আহমেদের শূন্যতা অপূরণীয়ই থেকে যায়। গত ১২ এপ্রিল ২০১৭ সাল থেকে সিদ্দিক ভাই পূর্ণ দুই দশকের স্মৃতিময়-প্রীতিময় হয়ে হৃদয়ের এককোণে জেগে আছে। যদিও বিজ্ঞান ও প্রকৃতির ভাষায় বলে কোন শূন্যস্থানই অপূর্ণ থাকে না; তথাপি আজও শূন্য পড়ে আছে আন্দরকিল্লার প্রধান সম্পাদকীয় পদটি এবং সেই সাহিত্যাড্ডায় প্রতিনিয়তই আমরা সবাই শূন্যতা অনুভব করি একজন জ্ঞানতাপস সিদ্দিক আহমদের। ইতোমধ্যে সিদ্দিক আহমদের মধুর স্মৃতিকে সবার মাঝে ধরে রাখার প্রয়োজনে নুরুল আবসারের সম্পাদনায় এই দপ্তর থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘সিদ্দিক আহমেদ সম্মাননা স্মারক’ ও ‘সিদ্দিক আহমেদ স্মারকগ্রন্থ’ যা সমগ্র দেশের সচেতন সৃষ্টিশীল পাঠকের নজরে পড়েছে।
আন্দরকিল্লা সাহিত্যাড্ডার আর এক প্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন শ্রদ্ধেয় কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক রফিক আনোয়ার। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে লেখালেখির গতি বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। জীবনের প্রান্তবেলায় লেখালেখি আর আড্ডাই ছিল এই পিতৃসমতুল্য মানুষটির প্রাণ। আন্দরকিল্লা অফিসে তাঁর নিয়মিত পদচারণা। লেখা এবং আড্ডার মধ্যমণিও ছিলেন তিনি। রফিক আনোয়ারের আগমন ঘটলে আড্ডার প্রাণচাঞ্চল্যও বেড়ে যেতো। বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভা-ারে পরিপূর্ণ রফিক আনোয়ার আলাপচারিতায় সবার মাঝে বয়সের ব্যবধানকে সংকুচিত করে নিতে পারতেন। আজো তাঁর মায়াভরা সম্বোধন কানে বাজে। আসরে প্রবেশ করতে করতে বলতেনÑআবসার মিয়া, শাকিল মিয়া তোমরা ভালো আছো তো? গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ তিনিও হঠাৎ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। অথচ তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে আন্দরকিল্লার বিশ বছর পূর্তির আয়োজন এগুচ্ছিল। সম্পাদক নুরুল আবসার বিষয়টি তাঁকে অবহিত করতে গেলে তিনি হাসিমুখে বললেনÑ‘ততদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকলে আর কী! আড্ডার আরএক মধ্যমণি আন্দরকিল্লার নিয়মিত লেখক ও পরামর্শক প্রচারবিমুখ রফিক আনোয়ারের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২২টির অধিক। তাঁর প্রস্থান আন্দরকিল্লা পরিবারের জন্য এক বড় শূন্যতা।
এই দপ্তরে মাঝে মাঝে আড্ডা দিয়ে যেতেন প্রাণরসে ভরপুর রম্য ও ব্যঙ্গ কথাসিাহিত্যক প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ হোসেন খান। শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান জীবনের পুরোটা সময় বামধারার রাজনৈতিক মতাদর্শকে ধারণ করে উন্নতমমশির নিয়ে অতি সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তাঁর জ্ঞানগর্ব আলোচনা শ্রোতা আকৃষ্ট করতে পারতো বলে যে কোন আড্ডা, সেমিনারকে তিনি প্রাণবন্ত করে রাখতেন। পত্রিকায় মূল্যবান লেখা এবং দপ্তরে সৃজনশীল আড্ডা দিয়ে অধ্যক্ষ হোসেন খান আন্দরকিল্লা পরিবারকে ঋদ্ধ করে গেছেন।
আন্দরকিল্লা আড্ডার আর দুই প্রাণ ছিল শিশুসাহিত্যিক রমজান আলী মামুন ও মঈনুল ইসলাম শামীম। এই দুই মহৎপ্রাণের অকালপ্রয়াণে সম্পাদকীয় দপ্তরে শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। এই দুই শিশুসাহিত্যিকের আন্তরকিতাপূর্ণ অবাধ বিচরণ এবং পত্রিকার শিশুসাহিত্য বিভাগকে যতœসহকারে অনেকদিন সম্পাদনা করে গেছেন নিষ্ঠার সাথে।
আন্দরকিল্লা আড্ডা থেকে চিরতরে হারিয়ে যাওয়া আরো প্রিয়জনদের মধ্যে ছিলেনÑকবি ও শিশুসাহিত্যিক জহুর উশ শহীদ, প্রাবন্ধিক ও গবেষক আহমদ মমতাজ, কবি প্রণয় মজুমদার, লেখক ও সংগঠক এ্যাডভোকেট সরওয়ার হোসেন নবাব, কবি ও প্রচ্ছদ শিল্পী খালিদ আহসান, কবি শাকিল মনজুর, শিল্পপতি ও সম্পাদক বাদল বড়–য়া, গল্পকার জাহেদা বেগম ও সংস্কৃতিকর্মী নুরুল আবসার রুবেল। তাঁদের প্রস্থানে আন্দরকিল্লা সাহিত্যাড্ডায় এখনো শূন্যতা বিরাজ করছে।
গত আড়াই দশকে আন্দরকিল্লাকেন্দ্রিক সাহিত্যাড্ডায় সম্পাদকীয় দপ্তরকে আন্তরিক পদচারণায় যারা মুখরিত রেখেছেন তাদের একটি তালিকা অপরিহার্য মনে করি এবং শুরু করতে পারি তাদেরকে দিয়ে; যারা পত্রিকা ও আড্ডার সূচনালগ্ন থেকে অধ্যাবধি পদভারে মুখরিত রেখেছেন। আন্দরকিল্লা পরিবারের এক সজ্জন ব্যক্তি চা গবেষক প্রাবন্ধিক ও সংগঠক আমিনুর রশীদ কাদেরী। সম্পাদকীয় দপ্তরে দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর নিয়মিত আন্তরিকতাপূর্ণ উপস্থিতি, সৃষ্টিশীল আড্ডা, সুপরামর্শ, লেখালেখি ও সহযোগিতা আন্দরকিল্লা পরিবারকে করেছে ঋদ্ধ। সৃজনশীলতা ছাড়াও সদালাপী মুক্তমনা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে আমিনুর রশীদ কাদেরী বরাবরই আড্ডাপ্রিয় ও সকলের মন জয় করে নিতে সিদ্ধহস্ত। সেই শুরু থেকে শান্তিপদ বৈদ্যের পদচারণা, সাহিত্যাড্ডা প্রাণের সঞ্চার করেছে। তিনি এই সময়ের একজন একনিষ্ঠ পাঠক, রাজনীতিক ও চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিতভাবে সেই তখন থেকেই সম্পাদকীয় কার্যালয়ে সরব উপস্থিতি আড্ডাকে রেখেছে প্রাণবন্ত। বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা (হারবার মাস্টার) হয়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও যিনি এই আড্ডায় দূর থেকেও ছুটে আসেন তিনি আমাদের প্রিয় বদিউজ্জামান ভাই। এই ছুটে আসার কারণ, তিনি একজন আপাদমস্তক শিল্প-সাহিত্যের পাঠক ও সমজদার। বস্তুত পক্ষে সংগীতশাস্ত্র ও সাহিত্য রসবোধে তিনি এক অভিজ্ঞ ও পরিপূর্ণ মানুষ। এই আড্ডায় তিনি নাকি প্রাণের স্পন্দন আর জীবনের বিচিত্র অনুষঙ্গ খুঁজে পান। জনপ্রিয় অধ্যাপক ও সুবক্তা আ.ম.ম. মামুনও দীর্ঘদিনের আড্ডারু। সময় বের করে
ব্যস্থতার মাঝেও চলে আসেন আমাদের কাছে। সাহিত্যের পঠন-পাঠনে দারুন আগ্রহী বন্ধু মামুন ছাত্রজীবনে ভালো কবিতা লিখতেন; আশার কথা কলম ধরেছেন ইদানীং সিরিয়াস প্রবন্ধ রচনা ও সাহিত্যালোচনায়। তার উপস্থিতিও আড্ডাকে প্রাণবন্ত করেছে। দুই দশকেরও অধিককাল ধরে যারা এখনো সম্পাদনা দপ্তরে আড্ডায় ঢুঁ-মেরে যান, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কবি ও শিশুসাহিত্যিক আইউব সৈয়দ, শিশুসাহিত্যিক ও গল্পকার বিপুল বড়–য়া, শিশুসাহিত্যিক ও গল্পকার ইফতেখার মারুফ, কবি সাথী দাস, ড. ইলু ইলিয়াস, কবি ও অধ্যাপক রুহু রুহেল, কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দীন শ্যামল, কবি আশীষ সেন, অধ্যক্ষ আবু তৈয়ব (লেখক), লেখক ও সংগঠক নিজামুল ইসলাম সরফী, ভ্রমণ লেখক ও সংগঠক এস.এম. মোখলেসুর রহমান, ভ্রমণ লেখক রফিক আহমদ খান, কামরুল ইসলাম দুলু সাংবাদিক মৌচাক সম্পাদক স.ম. জিয়াউর রহমান, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আহসানুল কবির রিটন, আলোকচিত্রি মউদুদুল আলম, গৃহিণী শাহনাজ পারভিন বকুল (যিনি মাঝে মাঝে এই আড্ডায় নিজের হাতে তৈরী মৌসুমী পিঠা-পুলি নিয়ে হাজির হন অথবা বাসা থেকে আসার সময় সম্পাদকের হাতে ধরিয়ে দেন এসব মজাদার হরেক রকম নাস্তা যা আড্ডাকে প্রভাবিত করে থাকে) নিয়মিত উপস্থিত বর্ণ বিন্যাস ও পত্রিকা-বইয়ের সুনিপুণ বিন্যাসকারি স্বল্পবাসী প্রিয় নুরুল ওসমান।
আবার অনেকেই আসতেন নিয়মিত কিন্তু কর্মস্থানের পরিবর্তন কিংবা কাজের ব্যস্ততার জন্য এখন খুব একটা আসা হয়না এদের মধ্যে আছেনÑ নাজমুল হুদা (সহকারী কর কমিশনার), অধ্যাপক ড. নিাজামুদ্দীন জামী, কবি অমিত চৌধুরী, ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, ড. মনিরুজ্জামান, নাজমুল আলম টিটু (পুলিশ কর্মকর্তা), শওকত জসিম (পুলিশ কর্মকর্তা), কবি জিন্না চৌধুরী, অধ্যক্ষ তাহুরিন সবুর ডালিয়া, নুরুল আমিন সিকদার (ব্যবসায়ী), শেখ দিদার উদ্দীন আহমেদ (লেখক), আমির পারভেজ জনি (ব্যবসায়ী), মোহাম্মদ আলী (সম্পাদক-লেখক), শিশুসাহিত্যিক উৎপল কান্তি বড়–য়া, কবি করুণা আচার্য, ড. ইউছুফ ইকবাল (প্রাবন্ধিক-গবেষক), ইকবাল ইউসুফ (মরমি গবেষক), কবি বদরুননেছা সাজু, সাংবাদিক লোকমান চৌধুরী, মামুনুর রশিদ (বার্জার কর্মকর্তা), লেখক-সাংবাদিক আবুল কালাম বেলাল, কবি নিশাত হাসিনা শিরীন, রায়হান নাসরীন (লেখক সম্পাদক), লেখক-মুক্তিযোদ্ধা সিরু বাঙালি, শৈবাল চৌধুরী, (চলচ্চিত্র গবেষক), কবি ইউসুফ মুহম্মদ, কবি স্বপন দত্ত, স্বপন সেন (রাজনীতিক), অধ্যাপক আবদুস সালাম, কবি ও কথাকার দীপালী ভট্টাচার্য, কামরুল কাদের চৌধুরী (শিক্ষা কর্মকর্তা), অধ্যাপক ও সম্পাদক ইবরাহীম মুহম্মদ, প্রাবন্ধিক নেছার আহমদ, অধ্যাপক আলেয়া চৌধুরী (কবি ও গল্পকার), অধ্যাপক শিশির বড়–য়া, কবি ও অধ্যাপক আনন্দ মোহন রক্ষিত, প্রদীপ ঘোষ (চলচ্চিত্রকার), অধ্যাপক বশির উদ্দিন কনক, শিশুসাহিত্যিক কথন সম্পাদক ও গীতিকার ফারুক হাসান, লেখক-সংগঠক সাইদুল আরেফিন, ড. আহমেদ মওলা সংগঠক নোমান লিটন, লেখক সম্পাদক ও শিশুসাহিত্যিক এমরান চৌধুরী, প্রাবন্ধিক হোসাইন আনোয়ার, কবি অধ্যাপক হোসাইন কবির, ফজলুল কবির (কণ্ঠশিল্পী), রাজনীতিক মফিজুর রহমান, আবু সামা (পলগ), এস.এম. ফিরোজ (পলগ), কালাম চৌধুরী (লেখক), সাংবাদিক মোয়াজ্জেমুল হক, সাংবাদিক হাসান নাসির, ইকবাল চৌধুরী, ফাদার জোসেপ গোমেজ (ধর্মযাজক) প্রমুখ।
এখনো যাদের ঝটিকা আগমন কিংবা প্রায়শ নবীন প্রবীণের আগমন হয় সম্পাদকীয় দপ্তরে তাদের মধ্যে কথাসাহিত্যিক আজাদ বুলবুল, ড. শামসুদ্দীন শিশির, লেখক সম্পাদক আলী প্রয়াস, সাংবাদিক আফসার মাহফুজ, প্রাবন্ধিক তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, কবি বিদ্যুৎ কুমার দাশ, কবি আলাউদ্দিন চৌধুরী, কবি আবু মুসা চৌধুরী, কবি রূপক বরন বড়–য়া, কবি রিজোয়ান মাহমুদ, গীতিকার উত্তম কুমার আচার্য, গল্পকার মিলন বণিক, প্রাবন্ধিক মিলটন রহমান, লেখক প্রকাশক হৃদয় হাসান বাবু, কবি অনিন্দ্য টিটো, লেখক শাহরিয়ার আদনান শান্তনু, সাংবাদিক মহসিন কাজী, লেখক-সাংবাদিক হাসান নাছির, কবি মনিরুল মনির, সাংবাদিক আল রহমান, মুনিয়া মুন (কবি), দিলরুবা খানম (কবি), গোলাম নেওয়াজ বাবুল (গ্রন্থকার), ফারহানা রহমান শিমু (কবি), জাহানারা বেগম (কবি), তাপস চক্রবর্তী (কবি), আমানউদ্দীন আবদুল্লাহ (গ্রন্থকার), টিপলু বড়–য়া (কবি ও প্রচ্ছদশিল্পী), সঞ্চয় কুমার দাশ (কবি), জাহানারা বেগম (নবীন লেখক), জান্নাতুন নুর দিশা (কবি), রোকসানা আনোয়ার (কবি), মেহেরুন নেছা রশিদ (কবি), কাজী কামরুন নাহার (নবীন লেখক), ইসমত আরা জুলি (কবি), আতিকুর রহমান আতিক (কবি), জান্নাতুল ফেরদৌস সোনিয়া (নবীন কবি), নজরুল জাহান (কবি), রাবেয়া খাতুন শিমুল (নবীন কবি), এরশাদ উল্লাহ (কবি ও সম্পাদক)।
সিকি শতাব্দীর পথপরিক্রমায় আন্দরকিল্লা যেমন একটি নির্দিষ্ট পাঠক সৃষ্টি করেছে তেমনি একটি সাহিত্যাড্ডা থেকে পরস্পরের একটি মেলবন্ধন সৃষ্টিতেও সফল হয়েছে সম্পাদকের আন্তরিক সৌহাদ্যপূর্ণ আন্তরিকতায়। নুরুল আবসারের আন্দরকিল্লা প্রকাশের পাশাপাশি আর একটি বড় অর্জন আবির প্রকাশনাকে দাঁড় করানো। ইতোমধ্যে এই প্রকাশনা থেকে সৃজনশীল ও মননশীল বই প্রকাশের সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক। সিকি শতাব্দী পর পত্রিকাটিও ট্যাবলয়েড আকার থেকে আবার
ফিরে এসেছে সেই জন্মসন ১৯৯৭-এর কলেবরে। আন্দরকিল্লা পরিবার পাশাপাশি প্রেমের কবিতা সংকলনও বের করেছে সেই ২০০৩ সাল থেকে প্রায় বাইশটি গ্রন্থ। আন্দরকিল্লা পত্রিকা ও আড্ডা গোষ্ঠিকে কেন্দ্র করে এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য কাজ বেশ কটি সম্মাননা স্মারক ও স্মারকগ্রন্থ। এছাড়াও শ্রাবণের কবিতা সন্ধ্যা, বনভোজন, সংবর্ধনা, প্রকাশনা অনুষ্ঠান, সেমিনার, কবিতাসন্ধ্যা, ইফতার মাহফিল সহ বিচিত্র আয়োজন।
সাহিত্য আড্ডা নিয়ে আমাদের চট্টগ্রামের অতীত বর্তমান আছে। চট্টগ্রাম শহরের নানা স্থানে বিভিন্ন সময়ে অনেক সৃজনশীল সাহিত্যাড্ডা গড়ে ওঠে। স্বাধীনতা পরবর্তী গত শতকের সত্তর দশক থেকে বৌদ্ধমন্দির রোডের সামনে সিভিল সার্জন ডা. কেশব সেনের দোতলা বাড়ি ‘কল্যাণী’র নিচ তলায় থাকতেন দৈনিক আজাদীর সাহিত্য সম্পাদক অরুণ দাশ গুপ্ত। তাঁকে বেষ্টন করে চট্টগ্রামের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সাহিত্য সংস্কৃতি সহ নানামুখী আড্ডা ছিল। প্রায় পাঁচ দশক স্থায়ী এই আড্ডায় সাহিত্য-সংস্কৃতি-রাজনীতিসহ বিশিষ্ট জনের পদভারে মুখর ছিল।
এর বাইরেও সমমনাদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে খ–খ- সাহিত্য আড্ডার মধ্যে উল্লেখ করা যায় বোস ব্রাদার্স আড্ডা, চিম্বুক আড্ডা, জলযোগ আড্ডা, সবুজ হোটেল আড্ডা, সংগঠিত আড্ডার মধ্যে ছিল সকাল শিশুসাহিত্য আড্ডা, কলমি সংগঠন পলগ সাহিত্য আড্ডা, গত দুই দশক ধরে চলে আসছে চট্টগ্রাম একাডেমীর নানামুখী সাহিত্যাড্ডা ও সেমিনার। শহর চট্টগ্রামের বাইরে উপজেলা পর্যায়েও সাহিত্যপ্রেমী তরুণ লেখকরা সংগঠিত হয়ে অনেক সাহিত্য আসর বা আড্ডায় মেতে ওঠতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম শহরে প্রকাশনানির্ভর কিছু আড্ডা ইদানীং লক্ষণীয়। আন্দরকিল্লা/আবির প্রকাশন ছাড়াও দীর্ঘসময় ধরে সাহিত্যাড্ডায় মেতে আছে শৈলী প্রকাশন, এ ধারায় আরো উল্লেখ করার মতো আছে বলাকা প্রকাশন আড্ডা, খড়িমাটি, চন্দ্রবিন্দু, আলোরপাতা, কথন আড্ডা ইত্যাদি। এসব সাহিত্যাড্ডা নিসন্দেহে বাংলা সাহিত্যের ধারাকে গতিশীল রাখছে অন্তত এই পাঠবিমুখ সময়ে।
সাহিত্যাড্ডা থেকে জন্ম নিতে পারে কালের শ্রেষ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা সময়ের শ্রেষ্ঠ লেখকও। ফেলে আসা গত শতকের মাত্র একটি দশককেই উল্লেখ করতে মন চায় সেই দশক ছিল বাংলা সাহিত্যের উত্তাল ষাটের দশক। বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতিতে আড্ডার প্রভাব কতটা অপরিসীম তা প্রতিয়মান হবে এই একটি দশকে অনুপ্রবেশ করলে। সমমনাদের আড্ডা থেকে সৃষ্ট আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘সাম্প্রতিক’ (১৯৬৩), আবদুল মান্নান সৈয়দের স্বাক্ষর (১৯৬৪), আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ‘কণ্ঠস্বর’ (১৯৬৫), উল্লেখযোগ্য সেই তিন সাহিত্য পত্রিকায় রয়েছে আড্ডায় আমাদের সাহিত্য আন্দোলনের সাতকাহন। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস তার পরবর্তী সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেনÑ‘সাম্প্রতিক’ সাহিত্য পত্রিকার আড্ডা থেকে সাহিত্য সৃজনে আড্ডার গুরুত্ব ও নানান প্রসঙ্গ। মূলত ষাটের দশকের এই গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য পত্রিকাগুলোর পাতা থেকে বেরিয়ে এসেছিল ষাটের দশকের সেই শক্তিমান কবি ও কথাসাহিত্যিকরা। প্রথমত এই তিন সম্পাদক ম-লিই পরবর্তীতে আমাদের সাহিত্যের এক একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে জ্বলে ওঠে। অতএব বাংলা সাহিত্যে, শিল্প-সংস্কৃতি সাহিত্য কেন্দ্রিক আড্ডার গুরুত্ব নিতান্তই কম নয়।
কিন্তু আজ একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে সৃষ্টিশীল লেখক সমাজ চিন্তাগ্রস্ত। কারণ সমাজের বিশাল এক নব প্রজন্ম পাঠবিমুখ। এতে সাহিত্য সৃষ্টি ও পাঠে কি ব্যাঘাত ঘটেছে? সৃষ্টিশীলতার পেছনে কি কোন চক্রান্ত চলছে? এর খানিকটা গভীরে প্রবেশ করতে হলে আমাদের যেতে হয় সমাজ বিশ্লেষক, শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর এই বিশ্লেষণধর্মী সম্পাদকীয়তে।
“বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন কিন্তু নতুন কোনো ঘটনা নয়; যুগের পর যুগ ধরে অব্যাহতভাবে তা ঘটে চলেছে। কিন্তু কই অতীতে তাদের উন্নয়নতো গ্রন্থ পাঠকে নিরুৎসাহিত করেনি। কাগজ ছিল না। কাগজ আর ছাপাখানা এসে বইয়ের প্রচারে বিপ্লব ঘটিয়ে দিল, রেডিও, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন কেউই পারেনি বইয়ের মূল্যও মর্যাদা হ্রাস করতে; তবে কম্পিউটার ও ইন্টানেটের আজ কেন এই সাফল্য? বলাই বাহুল্য সাফল্যের কারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নয়; কারণ হচ্ছে মালিকানা। মালিকরা চায়না সাহিত্যের চর্চা বৃদ্ধি পাক। কারণ তারা জানে যে, সাহিত্য তাদের একচেটিয়া কর্তৃত্বের শত্রুপক্ষ। তারা জানে যে, সাহিত্যের সৃষ্টি ও পঠন মানুষ সজীব ও সতর্ক করবে, হৃদয়কে দেবে প্রসারিত করে বুদ্ধিকে করবে শাণিত। এবং মানুষ এখন পুঁজিবাদের তৎপরতাকে চিনে ফেলবে। তারা ….শাসনকে ছিন্ন করতে সংঘবদ্ধ হবে। সে জন্যই প্রযুক্তির উন্নয়নকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাহিত্যকে দমন করবার কাজে।” (সিরাজুল ইসলামের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠা-২৯, নতুন দিগন্ত, সংখ্যা জানুয়ারী-মার্চ-২০২৩)।
হৃদয়ের চর্চা ও বুদ্ধির চর্চা থেমে গেলে পরে মানুষতো আর মানুষের পর্যায়ে থাকবে না। সুতরাং বলাই বাহুল্য, মানুষের সৃজনশীল এবং গোষ্ঠীর আড্ডার মধ্য দিয়ে সৃজনশীল বিকাশও স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে। মানুষের দৃষ্টি ক্ষুদে বার্তা কিম্বা স্ক্রিনে কোনদিন আটকে থাকবে না। পৃথিবী যেভাবে বিশাল হচ্ছে এতে মানুষও দিন দিন খাটো হয়ে যেতে পারে না। মানুষের বিকাশে সৃষ্টিশীল সাহিত্য অনিবার্য এর জন্য প্রয়োজন সাহিত্যাড্ডাও। সুতরাং আন্দরকিল্লা’র এই সিকিশতাব্দীর সাহিত্যাড্ডার গুরুত্বও নিতান্তই অকিঞ্চিৎকর নয় কালের পরিক্রমায়।
শাকিল আহমদ, প্রাবন্ধিক