এখন সময়:রাত ৮:৫৬- আজ: শনিবার-১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল

এখন সময়:রাত ৮:৫৬- আজ: শনিবার
১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-৩০শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল

পদাবলি (জানুয়ারি ২০২৪)

গৃহদাহ,ধর্ম প্রেম

দিলারা হাফিজ

 

সৌম্য জলে ভেসে যায় তনুমন, আঁখির তিয়াস

শরৎ সাগরে কাঁদে বহু জনমের অভিলাষ!

 

দেহ ও মনের ভারসাম্যে হাঁটে অচল পৃথিবী

প্রণয়ের বুকে শুয়ে থাকে নির্সগ আর অনাদি

 

দেহ থেকে সরে গেলে মন,দেহ যায় অতলান্তে

দেহের ওজন খুব বেড়ে যায়, মনের অজান্তে?

 

একথা প্রথম বুঝেছিলো গৃহদাহের অচলা,

মনোকষ্টে, প্লেগে সুরেশ দেয় আত্মাহুতি অবেলা।

 

তুমিও মহিম,মনোযোগহীন ত্রিভুজ প্রণয়

অচলাকে ঢেলে দিলে অর্থহীন নৈরাশ্য সময়।

 

আধুনিক অচলাও সচল হলো বাড়ে বিশ্বাসে

ধর্মের খাঁচায় বন্দী প্রণয় বাঁচে না যে আশ্বাসে।

বিপরীত চাঁদের মুখ

সুজন আরিফ

 

বিপরীত চাঁদের মুখ চেপে ধরি,সজোরে।

মানবীয় সাহসে ভরপুর অত্রিজের মেরুদ-

ধরাশায়ী বোধের কুটিরেও হাসে আগুনের ঠোঁট

নদীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় কাগুজে রোদ।

আমি,জরাজীর্ণ আঁচলেই বুনে দেবো

উর্বর সভ্যতার বীজ।

 

সূর্যের জানা আছে,

অনার্য ইতিহাসে প্রেমিকের আত্মা চিরকাল অমর।

 

===================

 

 

কর্মবীর আশ্চর্য আলো

নিলয় রফিক

 

খালের কিনারে ঘাটে রথেবোট শূন্যতা মিছিল

শাহজান মাঝি ঠোঁটে কৃষ্ণচূড়া মনের ফাল্গুনি

প্রত্যহ যাত্রী নোঙর, কর্মরথে স্রোতের আগুন

অফিসে পাখির ভীড় মুঠোফোনে আনন্দে রোদন।

 

নদী শুকিয়ে গেলেই মাছগুলো সুখের দুর্দিন

পারাপারে ঠেলাঠেলি মনোঘাটে কাদার সাঁতার

হৈচৈ ঢেউ শব্দপাড়ে টেনে তোলে মাটির শরীর

নিজের দোষেই গর্তে, গালমন্দ শোনে কর্মবীর।

 

সূর্য মৈনাকের নথ, কবিকূল প্রেমের কূজন

স্বপ্নপাড়ায় শিল্পের নবগ্রহ উড়ছে আকাশে

ডাকছে পেছনে কেউ কানাকানি আশ্চর্য্য আলোক!

ব্যর্থনূরী রসেঘোরে কবিতার শহরে নিখোঁজ।

 

 

========================

 

ঢেউ খেলে যাও লালে

আজিজ কাজল

 

তোমরা তো এখন লিঙ্গ ছাড়াই উথলি ওঠো এমনি করে

পুরনো ছাই ধরার আগেও সুস্থতার গান গাইতে শুনি।

 

তোমার বাপ-দাদারাও একদিন নকশা-গাথায় ভেজাতো

মুখমাটির কল্কি-মিঠাই চালে; পোড়া মাঠের নামচা-

ফুলে এখনো ঝলকায় সেই অবাক ভাটির ভাস্কর্য।

 

শামুক পোড়া গর্তে কুঁজো হয়ে আছি। ভিটের পাখিটাও

গেয়ে যায় সকরুণ সুর। তুমিও আস্তে আস্তে মিশে যাচ্ছো

ধূসর গাছের বাকলে, কালো ধোঁয়া-বিষের কচুরিপানা ঝিলে।

 

 

==========================

 

খুব প্রয়োজন পথ্য

বদরুল বোরহান

 

ছড়ার রাজা, ছড়া সম্রাট, বাদশা এবং রানী,

নামের আগে এসব লিখে ঝাড়েন বিজ্ঞ বাণী।

এসব নিয়ে “ফেবু”-তে হয় অনেক কানাকানি,

কে রাজা আর কে স¤্রাট? পাঠকমাত্রই জানি।

এসব লিখে নেন হাতিয়ে পদক রাতারাতি,

পাশের দেশের অলিগলি খোঁজেন আঁতিপাঁতি।

এদের অনেক চামচা থাকে, দেয় জোরে হাততালি,

লাইক-কমেন্টে সয়লাব হয় খিস্তি-খেউর, গালি।

এরা আবার নির্লজ্জ খুব, মঞ্চে ঝাড়েন গলা,

“তলে তলে” গোমর ফাঁক আর উন্মোচিত তলা।

লেখালেখির ক্ষেত্রে এদের বেজায় আধিপত্য,

এসব কবি-লেখক, তাদের খুব প্রয়োজন পথ্য।

 

 

 

=========================

 

শ্রাবণশেষের গান

আখতারী ইসলাম

 

এ কোন তমসায় ডোবালে তুমি,

লিখতেই পারছি না!

কলম নিয়েছো কেড়ে

আর সাদা কাগজকে স্তব্ধ করেছো

ভারী অন্ধকারে!

এ কোন তমসায় ডোবালে তুমি!

ফিরিয়ে দাও সে আলো

লিখবো কিছু ভুলে যাওয়া প্রেম

প্রেমের পুস্পরেণু, যার হাতে

আজ আইসক্রিমের কাঠি।

ভালোর ছোঁয়ায় আলো

হবে সব।

এ কোন তমসায় ডোবালে তুমি!

এখনো আছি চেয়ে

ঊর্ধমুখী হয়ে

নীল, নীলিমার দেহে

কেন এতো ঘনঘোর!

ফিরিয়ে দাও সে আলো

আজ লিখে দিয়ে যাই

প্রকৃতি ও প্রেম

যা কিছু লাগছে ভালো।

 

 

 

=======================

 

 

স্কুলে রোজ ছুটি

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু

 

ভোরবেলাতে ঘুম ভেঙে যায়

তাই প্রতিদিন উঠি,

ছোট্টখোকার হাতটি ধরে

স্কুলে রোজ ছুটি।

 

ঘুমে দু’চোখ ঢুলুঢুলুু

বড্ড খারাপ লাগে,

তবু খোকা কষ্ট করে

হাটে আমার আগে।

 

বইয়ের ব্যাগে খাবার থাকে

টিফিনে সে খায়,

খাবার খেয়ে খোকা আমার

তৃপ্তি দারুণ পায়।

 

পড়াশুনায় বড্ড ভালো

সবাই তাকে চেনে,

বড় তাকে হতেই হবে

কষ্টটুকু মেনে।

 

 

নারী হবো, পুরুষের জীবন নিয়ে

ফরিদা ইয়াসমিন সুমি

 

পুরুষ হলে নির্দ্বিধায় যাপন করবো

স্বাধীন, জবাবদিহিতাহীন জীবন।

যখনতখন বেরিয়ে যাব বাড়ি থেকে

চাইলেই রাতের বাসে চেপে বসবো-

তোমার কাছে যেতে।

কৈফিয়ত নয়, শুধু জানিয়ে দেয়াই যথেষ্ট,

ফিরবো না আজ বাড়ি!

গোপন স্বপ্নের মতো,

নারী হবার ভীষণ ইচ্ছে;

পুরুষের জীবন নিয়ে।

অলিখিত নিয়ম করা আছে,

ধূমপানের একচ্ছত্র আধিপত্য

শুধু পুরুষের,

অনেকখানি জায়েজ নেশাভাং-

সেইসাথে একটু-আধটু ব্রোথেলও !

অপ্রকাশিত ইচ্ছে ভীষণ,

নারী হব এরকম রঙিন-জীবন নিয়ে!

কাঙাল আমি ভালোবাসার,

ভালোবাসা দিতে ও নিতে তাই

পুরুষের জীবন পেতে চাই।

অনেক বেশি নারী হবো

পুরুষের জীবন পেলে,

অনেক বেশি ভালোবাসবো

পুরুষের জীবন নিয়ে!

 

 

========================

 

 

ধীর পায়ে উঠে আসে স্বাধীনতা

আইনাল হক

 

এই পতাকা আমার অধিকার;

তেজোদ্দীপ্ত তারুণ্যের বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর ‘জয় বাংলা’

এবং একটি স্লোগান ক্রমশঃ

জনপ্রিয় হয়ে উঠে কৃষাণীর ঘামে ভেজা আঁচল পর্যন্ত

সন্তান হারা মায়ের জায়নামাজের কিনার পর্যন্ত

 

অতঃপর, ত্যাগের সিঁড়ি বেয়ে

ধীর পায়ে উঠে আসে স্বপ্নের স্বাধীনতা

সুশৃঙ্খল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে

জনৈক কবি পাঠ করেন বিজয়ের কবিতা

‘সাতকোটি মানুষকে দাবায়া রাখতে পারবা না’

 

প্রজ্বলিত জাতির সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিজ্ঞার মূলমন্ত্র

এভাবেই ছড়িয়ে পড়–ক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

 

 

===================

 

 

অস্থির এক বাংলা 

সু শা ন্ত  হা দা

 

এতদিন প’র যাকে দেখছ

আমি কি সেই পাতা ঝরা গোধূলি সন্ধ্যা

যাকে দেখলেই

সারসের গলায় আটকে যেত মহেশখালীর পুঁটি টেংরা

আমি কি সেই পূবালী হাওয়া

যাকে দেখলেই

ভৈরবী রাগে গেয়ে যেত গান সেই মৌন বালিকা

যাকে দেখলেই মনে হতো

দীর্ঘ বিরহে কাতর নীলকন্ঠ লতিকা

 

আমি কি সেই ঝরে পড়া পাতার মড়মড় অস্থিরতা

নাকি বসন্ত আগমনে চির বিদায়ের সম্ভাবনা

যাকে দেখলেই

দুরুদুরু বুকে বয়ে যেত চৈত্রের ঝড়ো হাওয়া

আমি কি সেই একলব্য বালকের নিখুঁত নিশানা

যাকে দেখলেই

প্রেম নয়,জেগে ওঠে অসম এক প্রতিযোগিতা

রাজা আর রাজ্য রক্ষার্থে একপেশে এক মহানুভবতা

 

আমি কি সেই নিভে যাওয়া আগুনের অখ- যন্ত্রণা

যাকে দেখলেই

নেমে আসে প্রভূত যুদ্ধে সন্তান হারা মায়ের নীরবতা

আমি কি ঘটে যাওয়া ঘটনার শিরোনামহীন ‘কবিতা’

নাকি ভুলে যাওয়া প্রেমে বালিকার ধড়ফড় করা বুক উঠা-নামা

যাকে দেখলেই

মনে হয় বৈশাখী ঝড়, ‘অস্থির এক বাংলা’ !

 

====================

 

বছরের হিসাব

বিজন বেপারী

 

একটা দুইটা তিনটা করে

বারোটা মাস গেলো

কত্ত মানুষ এই বছরে

কত্ত কিছু পেলো।

 

ভাই পেলো বোন খেলার সাথী

চাকরি পেলো কেউ

চড়–ই পাখির দু’টিছানা

খুশির মাতাল ঢেউ।

 

নতুন গাড়ি নতুন ফ্লাটে

উৎসব আমেজ হয়

এই বছরটা তাদের কাছে

স্মরণীয় রয়।

 

রহিম মিয়ার পায়ে রিক্সা

আজও টানতে হয়

বছর বছর যুগ চলে যায়

নয়নে জল রয়।

 

দালান কোঠায় বিজলী ঝিলিক

নতুন বছর আসে

গরীবের হাত ধরুক ধনী

গরীব তোমার পাশে।

 

========================

 

সময়ের বৃক্ষ

রওশন মতিন

 

বার্ধক্য শুকনো লজ্জার কোলস ছেড়ে,

ছুঁয়ে যায়নি আদি শেকড়ের ললাট,

মরিচায় ভোঁতা হাত খানি নেড়ে-নেড়ে

হয়নি সে জীর্ন বইয়ের মলাট।

 

এই বৃক্ষের ছায়া ক্ষুদ্ধ আকাশ ঢাকে,

কলে তার অমৃতের সঞ্চরিণী মদ-

শুধু অশরিরী জানালার ফাকে-ফাকে

বাজে, মৃত্যুহীন জীবনের অনাহদ।

 

বস্তুর বিনাশে অনু আর পরমাণু,

ক্ষয়ে ক্ষয়ে পাথরের কণা কণা শেষ,

সময়ের দেয়ালে সবাই নতজানু-

পৃথিবীর বৃত্তে, বড়জোর মহাদেশ।

সময় যেন দ্রেীপদীর ভা-ারে হাল

চিরকালের প্রভাতের মত উত্তাল।

 

=======================

 

ভালো নেই আগের মতোন

রাজীব কুমার দাশ

 

আমি হেরে যাই প্রতিদিন

হেরে যায় যেভাবে সন্ধ্যা তারা দূর

আকাশে আলোর ভিড়ে;

গোধূলি হারায় যখন ছলনা রাতকানা সন্ধ্যের কাছে দিনের পর দিন।

হেরে যায় কিশোর যুবক রাত  লুটোপুটি সুখের অতিশয্যে

বাগেশ্রী রাগ রাগিণীর

বুনো শিহরণ পেরিয়ে জরাগ্রস্ত ব্যথা কান্না

বিলাপ পেরিয়ে ভৈরবী ঠাটে মানুষকে

চিনতে পড়তে পারার পরে

অবশিষ্ট থাকে না আর কোনোকিছু ঠিক যেন আগের মতোন।

আমিও হেরে যাই সেভাবে প্রতিদিন

হেরে যাই কারোর অবহেলার কাছে

কারোর ঘৃণার কাছে

কারোর না কারোর স্মৃতির কাছে  স্থুল সূক্ষ্ম প্রতারণা ছলনার কাছে;

আমি হারতে শিখে গেছি এখন

নেই স্মৃতির পিরামিড নেই কোথাও স্মৃতি ভাগাড়;

নেই বেদনার সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল মন

দুঃখ ভোলা আনুপাতিক হার  জীবন।

অধরা স্বপ্নে কৃষাণ কৃষাণি বুকে যেভাবে ঝিলিক ওঠে

লুকোচুরি কানামাছি ভোঁ ভোঁ  প্রত্যাশা

প্রাপ্তির টানাটানি রশি যেভাবে  থির থির করে কাঁপে

সেভাবে খেলছে এ জীবন।

আমার প্রত্যাশা প্রাপ্তি হিসাব মেলা ভীড়ে

নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি এখন;

 

শূন্য জীবনের ভিড় সামলে উপসংহার মনে

ভালো নেই আগের মতোন।

========================

 

বিদ্যুৎ চোখ কথা বলে

টি এইচ মাহির

 

চোখ, কথা বলে সাহসের,

মহা আতঙ্কে ভরা আত্মার

কখনো খুশিতে ভরপুর সত্তার।

চোখ কথা বলে রহস্যের,

যেখানে এক সহস্র ধাঁধার সমাহার।

 

চোখ, কথা বলে দুঃখের

চাহনিতে নেমে আসে আঁধার,

ক্রুরতার আগুনে জ্বলজ্বলে বার্তা

আর কথা বলে সংশয়ের।

 

চোখ, কথা বলে সত্য মিথ্যার

বার্তা দেয় রহস্যের,

ডুবে থাকা একরাশ ভাবনার,

কথা বলে কবিতার।

 

==============

 

কী জটিল রসায়ন ভালোবাসার

অনিন্দ্য টিটো

 

কী জটিল রসায়ন আমাদের ভালোবাসার

তুমি হাসো, আমি পুড়ি

তোমার ঘন তমসার সিঁথিতে শুধু দেখি

রঙিন প্রজাপতিদের ওড়াউড়ি!

আমার কাতর দু’চোখ দেখে শীতের উত্তুরে হাওয়ায় ওড়ে

তোমার চুলরাশি, জানলার পর্দা;

বুকের আঁচলও পড়ে যায় হিমেল হাওয়ায়!

রাতের ডালপালা ইশারায় ডাকে

তারারাও জ্বলে দূরের আকাশে

মেঘেদের ভিড়ে, চাঁদটাই শুধু আড়ালে থেকে যায়।

 

অথচ শীতের শেষে বসন্তের আহবানে

সবুজাভ হয় রুক্ষ-রুষ্ট কঠিন পাহাডও

কচিপাতায় সেজে ওঠে অরণ্য।

ষড়ঋতুর সর্বশেষ বসন্তও চলে যায় বারবার

তবুও বুকের ভেতরটা ঊষর, রুক্ষ

জনমানবহীন, যেন প্রাণহীন শূন্য!

 

আমি জানি না

কিংবা মনেই করতে পারি না

কীভাবে, কখন, কোন গোপন সংকেতে ছুঁয়েছে আমায়

তোমার ও মুখ, দু’চোখ, গোলাপি ঠোঁটজোড়া;

কী জটিল রসায়ন ওই আবেগপ্রবণ ভালোবাসার!

একফোঁটা শিশিরের চুম্বনের জন্যে কাঁদে মৃতপ্রায় ঘাস

সজলও হয় ঘুমমাখা রাতের হাওয়া, দীর্ঘশ্বাসে

দেখতে পাও না তুমি! সময় নেই ফিরে তাকাবার;

আমার ভেতরে শুধু জেগে থাকে এক অদ্ভুত তোলপাড়

অদ্ভুত এক টানাপোড়েন, বারবার ফিরে আসার!

 

 

 

পৌষের রাতে

এস ডি সুব্রত

 

আর্দ্র প্রকৃতির শীতল মায়ায়

তোমার ঘন কালো চুলে

ছুঁয়ে  যায় শীতের বিকেল ,

ডুবে যায় চাঁদ থামে কোলাহল

আমার বিজ্ঞাপনে থাকে

তোমাকে নিয়ে লেখা কবিতা।

ঝিনুক খোঁজার রাতে

ডুবে যাই ক্ষণিকে তোমার অতলে

হিমেল পরশ মাড়িয়ে

তোমার উষ্ণতায় স্বস্তি খুঁজি

নির্মোহ পৌষের রাতে।

 

===================

 

বিশ্বাস

আলী আকবর বাবুল

 

ভালবাসিবার তরে শেষ নেই অনেক স্বপ্নের-

বারেবারে ঝাপটে ধরে নতুন ইচ্ছারা!

হাতছানি দেয় নতুন উদ্যমে-

চাষ করতে চাই নতুন চারা, সাজাতে

চাই নতুন বাগান, বিশ্বাসের পথে নতুন আঙ্গিকে!

একদিন হয়ত উঠবে বিজয় পতাকা,

হয়ত আসবে সুখের জোয়ার –

ভাসাবে সাম্পান মাঝ দরিয়ায়!

কোন টিকটিকির জ্বালে বাঁধা পড়বে না

সোনালি সুখ –

নতুন ইস্তেহারে কালের সাক্ষী হবে

আমাদের ভালবাসার একতারা সুর।

 

 

হাজারো সুখে বাঁচব –

হাজারো দুঃখে হাঁটব একসাথে

একনিষ্ঠ সততা ও সৎ পথের সারথি হব!

সংসার বেড়ানোর দস্যুতা আর নড়বড়ে সেতু

পার হব-প্রেমময় শৈল্পিক রূপে।

সময়ের বেলাভূমিতে মুখোমুখি বসে

বাজাব সানাই – হাসবে ভুবনেশ্বরী।

ভালবাসব মানুষকে, ভালবাসব জীবজন্তুকে;

আর ভালবাসব আপন মাংস খাওয়া আদমকে-

হিংসার শহরে ছড়িয়ে দিব ভালবাসার গান।

কুয়াশা ঢাকা শতাব্দীর পথে আঁচল বিছিয়ে দিব

ভালবাসার – মানবতার।

জয় হবে সুন্দর পৃথিবীর, আগামী প্রজন্মেরা পাবে

নির্মল ও শান্তিময় পরিবেশ।

 

=====================

 

তোমার জন্য

আলম নজরুল

 

তোমার জন্য গান -কবিতা

কাব্য -ছড়া -পদ্য,

গল্প -ফিচার -উপন্যাস আর

রম্য নাটক -গদ্য।

 

তোমার জন্য উপমা আর

রূপক -ছন্দ -অন্ত্যমিল,

তোমার জন্য খুলে দিলাম

মন পিঞ্জরের বন্ধ খিল।

 

তোমার জন্য পঙক্তিমালা

অযুত শব্দাবলি,

কাগজ -কলম-রঙতুলি আর

সুর -সুধা -অঞ্জলি।

 

তোমার জন্য রাত্রি জেগে

আমার লেখালেখি,

পান্ডুলিপির প্রতি পাতায়

মুখটি তোমার দেখি।

 

তোমার জন্য নীলিম আকাশ

জ্যোৎস্না ভেজা রাত,

শ্রাবণ দিনের অঝোর ধারা

শিলা বৃষ্টিপাত।

 

তোমার জন্য উদাস দুপুর

মিষ্টি বিকেল বেলা,

চোখে চোখে চোখ রেখে রোজ

লুকোচুরি খেলা।

 

=======================

 

তুমি কেবলই অস্তরাগ কেবলই গোধূলি

গাউসুর রহমান

 

তোমার ছায়াছন্ন চোখ কিছুই দেখতে পায় না

নরকের যে ছায়া ঘিরে রেখেছে তোমায় সে ছায়ার মৃত্যু হোক,

বৈরী বসবাসেও জীবন শুদ্ধ হোক।

 

রক্তিম ধুলোয় লুটোপুটি খাও তুমি

হেঁটে যাও মনের অন্ধকার চুমি;

নিঃসঙ্গ হোক তোমার সব কিছু

পরাণের সখা নেবে না তোমার পিছু।

 

নিজেও লিখে যাও তুমি নিজের সমাধি বা ফলক

তারা হাতে বসে থাকা বাউলের পড়ে না চোখের পলক;

তোমার সব কিছুতে আগুন লাগুক

তৃষ্ণার্ত চৈত্রে জল হাফ ছেড়ে বাচুক।

 

দ্রুত ফুরিয়ে যাক তোমার সব কিছু

আঁধার না ছাড়ুক তোমার পিছু;

যে তুমি গোলাপ হয়ে সুবাস ছড়াতে

জ্যোৎস্না হয়ে আসো না তুমি সব কিছু ভরাতে।

 

সেই তুমি আজ মাকড়সা হও মৃত মাকড়সা

শেষ হয়ে গেছে কবেই আমার আশা ভরসা;

তুমি কেবলই অস্তরাগ কেবলই গোধূলি

দুর্দিনে দুর্ভিক্ষে তুমি অচল আধূলি।

 

তুমি কেবলই শূন্য বৃত্ত

চোখের সামনে ঘুরাফেরা করে অচেনা আর্যাবর্ত;

তুমি কেবলই অন্ধ গোলক

আমার সব কিছু প্রেমের ভাবমূলক ।

 

ঝড়ে উড়ছে দেখো পরিত্যক্ত ধূলি

একাকার সব আমার ভুলগুলি, ফুলগুলি ;

দমবন্ধ তুমি দু পয়সার বায়োস্কোপের ছবি

কী করে জানবে তুমি শিল্পদীর্ঘ পথে মানুষ কিভাবে হয় কবি ?

 

আবির প্রকাশন

আপনি দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- ঘরে বসেই গ্রন্থ প্রকাশ করতে পারেন অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমে আবির প্রকাশন থেকে। আমরা বিগত আড়াই দশকে বিভিন্ন

গণতন্ত্রহীন রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাঙালি চিরকালই বিদ্রোহী। ইতিহাসের কোনো পর্বে সে কোনো পরাধীনতাকে বেশি দিন মেনে নেয়নি। উপমহাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্র দিল্লি থেকে দূরে হওয়ায় এবং সাড়ে

বিপ্লব যাতে বেহাত না হয় ( সম্পাদকীয় – আগস্ট ২০২৪)

জুলাই মাসের কোটাবিরোধী আন্দোলন শেষ পর্যন্ত আগস্টের ৬ তারিখে ১৫ বছর সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়েছে। অভূতপূর্ব এই গণঅভ্যুত্থান ইতোপূর্বে ঘটিত গণ অভ্যুত্থানগুলোকে ছাড়িয়ে