এখন সময়:রাত ৯:৫০- আজ: রবিবার-৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল

এখন সময়:রাত ৯:৫০- আজ: রবিবার
৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ-২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শরৎকাল

পদাবলি (মে ২০২৪)

ফসল তোলার গান

রজব বকশী

 

কঠিন মাটির বুকে হালচাষ দাও

বীজমন্ত্র বুনে আসো।

কিংবা রুয়ে দাও কঁচি চারাগাছ

তারপর প্রাণবন্ত সবুজের ঢেউ।

আগাছা নিড়ানি দাও,

এক সময় সোনালি স্বপ্ন জেগে ওঠে।

যতোক্ষণ না গোলার ঘরে পৌঁছে যায়,

এক অজানা আশঙ্কা বিড়বিড় করে।

ফসল তোলার গান

আনে নবান্ন উৎসবÑ

অনাবিল আনন্দের ঢেউ।

অবশেষে পড়ে থাকে

শস্যকাটা শূন্য ধুধু মাঠ;

আবার নতুন করে চাষাবাদ চলে।

ঘামরক্তে জেগে উঠে গুচ্ছগুচ্ছ স্বপ্নশস্যগান,

এভাবে জীবন শিল্প সাধনার ধনÑ

ঘরে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে

নিরন্তর।

পৃথিবী তোমাকে চায়;কায়মনে

ভাবো একবার,

মানুষকে ভালোবেসেÑ

একজীবনের ঋণ শোধ করে যাও।

 

 

 

 

 

 

একদিন একটা নিভে যাওয়া প্রদীপ

দিলীপ কির্ত্তুনিয়া

 

একদিন একটা নিভে যাওয়া প্রদীপ

পথে ঘাটে আলো খুঁজতে বেরোলো —

দেখে, কোথাও আলো নেই

পথ ঘাট অন্ধকার।

 

একদিন একটা ভাঙা ঘণ্টা বেসুরো দেহে

শব্দ খুঁজতে বেরোলো

এত দিন ধরে যা বাজিয়েছিল

মানুষের কানে কানে

গাছের পাতায়  — পাথরে, দেয়ালে।

দেখে কোথাও শব্দ নেই — মিহিন কিংবা গভীর

আছে শুধু হাওয়া , বাতাস — খল

নেই শব্দ তরঙ্গ — আছে শুধু জল।

 

একদিন একটা খড়কুটো সবুজ খুঁজতে বেরোলো

সে ছিল সবুজ ধানের কঙ্কাল

হাঁটতে হাঁটতে যেখানে বিরাজিত ছিল

সেই বিলে চলে গেল —

দেখে, শুধু মাটি  — মাটি ছাড়া আর কিছু নেই

প্রকৃতির অট্টহাসি — হাসি ছাড়া আর কিছু নেই

আকাশের নীল  — নীল ছাড়া আর কিছু নেই।

 

 

স্বীকারোক্তি

হাবিব আহসান

 

বলেছিলাম – চাইলে সহজে লিখতে পারি ঢের

অবলীলাক্রমে কবিতা তোমাকে-তোমার কপালে

এঁকে দিতে পারি বিভূতি তিলক সেজদার দাগ

মেরামত করে দিতে পারি ভাঙাচোরা ঘরদোর

শরীরে জড়াতে পারি বারোহাতি নীল জামদানি

কবরীর ভাঁজে গুঁজে দিতে পারি সতেজ টগর

বলেছি গোলায় ভরে দিতে পারি আউশের ধান

পাতে দিতে পারি ভাপ তোলা ভাত সুরুয়া সালুন।

 

আবেগি মিথ্যার মোড়কে মোড়ানো সব প্রতিশ্রুতি

জটা চুল ছেঁড়া শাড়ি শীর্ণকায় নিজের কবিতা

আঙুল কামড়ে চুল ছিঁড়েছিঁড়ে হতাশায় মরি

কবিতার ঘাড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া অন্য কিছু

আমার অজানা – লিখতে পারি না বলতে পারি না

কবিতার প্রতি আমি এক ক্ষমাহীন অবহেলা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভষ্মনামা

খাতুনে জান্নাত

 

যদি কখনো অসাবধানতাবশত সত্য বলে ফেলি-

ক্ষমা করে দিও।

হে প্রেমিক বৃন্দ, হে সুধী মহোদয়

হাসতে হাসতে কতজন শুলিতে চড়িয়ে দেয়!

কত যে গোলাপ ভেতরে লুকনো কাঁটা!

বিশ্বাসঘাতকতার উল্কি

জীবনের অর্গল ভেঙে হুহু বাতাস…

ভালোবাসা একটি মৃত শব্দ যদি না গুনগুনাতো!

আগুন করতলে রেখে ফুল চাষ করা

আমাকে উজাড় করে বনান্তরে ফেলে আসে প্রেম

আমি দৌড়াই অন্তহীন পথে

মৌমাছির হুলে জ্বলি

অশ্রু নদীতে ডুবোডুবি

শাঁখের করাতে বিক্ষত ও বলী…

প্রেমিকের দল ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’

বলে নিজস্ব রমণীর পিঠে পিঠ লাগিয়ে ঘুমায়

আর আমি পর পুরুষের উজানে মুক্তির বাসর উড়াই…

 

 

 

আজও কম্যুনিস্ট মেনিফেস্টো

যারা পড়েননি তাদের জন্য

শিশির আজম

 

এ যাবৎ আমাদের গাঁয়ে খাল কেটে যারা কুমির এনেছেন

তারা আমাদের চেনা

তারা আমাদের গুরুজন

কিন্তু আমাদের ভাবা দরকার এখন এই কুমিরগুলোকে নিয়ে

আমরা কী করবো

আর এদের সত্যিকার খিদে কীরকম

সেটাও তো আমরা ঠিকমতো জানি না

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো দেখতে চমৎকার এই হিংস্র কুমিরদের সঙ্গে

কারো কারো তো দারুণ সখ্যতা গড়ে উঠেছে

কারো কারো

হ্যা এরা আমাদের চারপাশেরই মানুষ

যা হোক আগামী সপ্তাহের সেমিনারে আলোচনা হবে

কীভাবে

কুমির ও মানুষের মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মীতা বাড়তে পারে

কীভাবে

আমার এই গ্রাম হয়ে উঠতে পারে সত্যিকার সুখী আর কল্যাণময়

এক জনপদ

 

 

 

 

প্রেমানন্দে এসো যৌবনে

ইলিয়াছ

 

দুঃখ প্রপাতে কম্পিত বসন্ত যদি ছুঁই তোমায়

অন্তর্হিত রেশমি গুটির কর্মহীন বিলাসিতায়-

অনুচ্ছ কাটিয়ো না এক জনম।

ফিরে এসো!

ফিরে এসো জৌলুসি পূর্ণিমায়

বিষন্নতায় ডুবা চাঁদের মত-

কৃষ্ণ তিথিতে।

 

কেউ কেউ বেহায়া হয়

বরণ করে মিলনের মরণ।

পতঙ্গ পুড়ে যৌবনে লেলিহান শিখায়,

নির্ভীক হেঁটে যাই সীতা নিঃশব্দে,

আগুন যেন প্রেম নির্ঝরিনীর শীতল গ্রোত।

আবঙ্ক যৌবনা রাধা অন্তর প্রেয়সী-

অনন্তকাল প্রেমানন্দে।

প্রেমানন্দে এসো তুমিও যৌবনে।

 

 

 

 

 

 

 

মোহে কিংবা দ্রোহে

রুমি চৌধুরী

 

মোহে কিংবা দ্রোহে, প্রেমে বা অপ্রেমে

জীবনের প্রতি বাঁকে মধুরেণ হেমে

 

ঝরা পাতার মর্মরে বিষাদের সুরে

পাখির কূজনে, নন্দন কাননে

কবিতার পঙক্তিতে মৌবনে মৌতাতে

সর্বদা বিরাজমান, সর্ব মঙ্গলায়।

 

কখনো আনন্দ, কখনো বিষাদের ঢেউ

বিশ্বস্ততার নদী হয় মরুচরে কেউ

 

আকাশ কারো জন্য স্বাধীনতা, কারো জন্য শূন্যতা

আমার কাছে সে মেঘভর্তি জল, অশেষ পূর্ণতা।

 

 

 

 

 

 

 

স্বাপ্নিক ঘোড়া

সুশান্ত হালদার

 

মালিকের চেয়ে আমার ঘোড়া মোটা তাজা

রাত্রি হলেই চিঁহি চিঁহি ডাকে

তাই দেখে মালিকের বউ

ক্লিভেজ খুলে দক্ষিণ বসে থাকে

 

আমার ঘোড়া উঠছে পাহাড় বাতাস গতির বেগে

মালিকের ঘোড়া জাবর কাটে আস্তাবলে শুয়ে

 

মালিকের বউ বেজায় সুন্দর, সেক্সি বলে লোকে

ঠোঁটের আগুন গরম হলে ঘোড়ায় চড়ে বসে

 

মালিক আমার বয়োবৃদ্ধ,বন্দুক রাখে কাঁধে

সোনার কাঠি ধরে ধরে ইঁদুর গর্তে গুঁজে

 

মালিক আমার বেজায় নরম,মদ্য পানে রাগে

রাত্রি হলে বউয়ের কাছে নেতিয়ে পড়ে ঘুমে

 

আমার ঘোড়া ছুটছে দ্রুত ঝড় উড়িয়ে পথে

তোমার ঘোড়া মৃত বলে যায় না বাঁধা রথে!

 

 

 

 

চিঠির দাবি

আশ্রাফ বাবু

 

তুমি চিঠি দেও, তাতে আমার করুণা থাকে না

থাকে আগ্রহ আর স্পর্শ অনুভবের তাড়না

 

প্রবাহমান ঘ্রাণ খামে ভরে আসে, চিঠি দিও,

আঙুলের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে শব্দের উৎস

 

তোমার ভুল বানানে আমাকে বেশি টানে

বেশি হলে চেয়ে দেখি,এটা দাবি রইল

 

সামান্য দাবি, শাড়ির পরার মতো

অক্ষর আকৃতির কুঁচি চোখে পরে তখন।

 

লম্বা লাইন আর প্রতিটি দাঁড়িতে থেমে যাই

চুলের বুনন পরে থাকে যেমন।

 

চিহ্ন দিও মাঝে মাঝে বিস্ময় সূচক বোঝাতে

তোমার চোখের মতো, হৃদয়ে পৌঁছে দেবো।

 

কিছু দিও! কিছু হয়তো পাওনি খুঁজে গল্প

মিথ্যে করে হলেও বোলো, ভালবাসি অল্প।

 

 

 

 

 

বৈরী সময়

. . . বাবর আলী

 

সময় বৈরী হলে

কোকিলের কূজন হয়

বায়সী কন্ঠ;

হঠাৎ বৃষ্টি এসে নষ্ট করে দিয়ে যায়

বসন্তের পুষ্পিত উদ্যান।

 

লক্ষ নটিকেল যোজনে অবস্থ’ান করেও

বিশ্বকে সজীব করে

দিবাকরোত্তাপ।

অথচ তুমি আমি তা পারি না,

কারণ এখন আমাদের বৈরী সময়।

 

 

 

 

 

 

 

অপেক্ষার প্রহর

কল্যাণ বড়ুয়া

 

প্রেমের খেলায় মত্ত

বিপরীত লিঙ্গের দুজন মানুষ,

মিলনের আনন্দের নেশায়।

নিশিরাতে ভাঙ্গে আঁধারের ঘুম।

দরজায় খিল আঁটে নির্ঘুম রাতে,

ঝিঁঝি পোকা ডেকে যায়

রাত হয় গভীর।

কমে আসে কুকুরের ঘেউ ঘেউ ডাক,

মোরগের ডাকে ফিরে ঊষার আলো,

রাতের আঁধার বিলিন, দিনের শুরু।

জটরে অঙ্কুরিত বীজ।

বেড়ে উঠে ধীরে ধীরে বিধির নিয়মে,

মায়ের জটরে ভাঙ্গে শান্তির ঘুম।

নিরব কান্না শুনে উৎফুল্ল রমনী,

অনাবিল আনন্দের বন্যায় ভাসে

রমনীর হৃদয়।

নতুন প্রজম্মের আগমন বার্তায়

সতর্ক রমনী। অবাক পৃথিবী আগমনের অপেক্ষায়,

অপেক্ষাতেই বসে।

নিরবতার বাঁধ ভেঙ্গে খুশীর জোয়ারে

ভাসে তৃপ্ত রমণী।

অপেক্ষার প্রহর শেষে ধরণীতে আসে,

উদ্ভাসিত আলোয় ভরে মায়ের মন।

মা ডাক শোনার অপেক্ষায় কাটে

বিনিদ্র প্রহর।

অতপর !

 

 

 

ঢুলি

অপু বড়ুয়া

 

 

টাক ডুমাডুম টাক ডুমাডুম

ঢুলি বাজায় ঢোল

ঢোল বাজলে তবেই হবে

বিয়ের কোলাহল।

 

ঢোল না বেজে হয় না পূজা

ঢুলির কদর তাই

সুখের আমেজ দেয় ছড়িয়ে

গাঁয়ের ঢুলি ভাই।

 

গাঁয়ের ঢুলি চ-ীচরণ

বাজনাতে খুব হাত

ঢোল বাজিয়ে হয় না আহার

এক বেলা খায় ভাত।

প্রাণ-প্রকৃতি

হৃদয় হাসান বাবু

 

সবুজ ঘেরা পাহাড়গুলো

প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে

শাবল কোদালের আঘাতে

নির্দয় মানুষগুলো

পাহাড় খননের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত

স্ক্যাভেটর ড্রাম ট্রাকের গর্জনে

পাহাড়ের কান্না চাপা পড়ে যায়

ড্রাম ট্রাকের চাকার ভেতর দিয়ে

পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে পাহাড়ের হাজারো চোখ

মনুষ্যপ্রজাতির নিকট অসহায় আকুতি

আমার শরীর ক্ষত বিক্ষত করিস নে

আমাকে তোরা ধ্বংস করিস নে

আমাকে তোরা বাঁচতে দে

তোদেরকে একটু শান্তিতে বাঁচতে দেয়ার জন্যই

আমাদের বেঁচে থাকা জরুরি

কিন্তু না মনুষ্যপ্রজাতির একটু মায়া হয় না

নিজেদের লোভ লালসা চরিতার্থ করতে

নিধন হতে থাকে একের পর এক পাহাড়

কালো পলিথিন মোড়ানো

কালো টাকার বান্ডিল পৌঁছে যায়

পরিবেশ কর্তা, হোমড়াচোমরা আর

আইনশৃঙ্খলার উর্দি পরা পকেটে

নিশ্চুপ বোধহীন মানব।

বাংলার অপার সৌন্দর্য

বন-বনানী সাবাড় হচ্ছে

বনখেকোদের বিরামহীন অত্যাচারে

করাত কুড়াল দায়ের আঘাতে জর্জরিত

হাজার হাজার হেক্টর বনাঞ্চল

দেখার যেন কেউ নেই

বেড়ায় খেয়ে নেয় ক্ষেত

অন্ধকারে লাভের অংশ ভাগাভাগি

উল্লাস আর উচ্ছ্বাসের হোলিখেলা

চলে পরিবেশ খেকোদের প্রাসাদে

ফলশ্রুতিতে তাপমাত্রা অর্ধশত ডিগ্রী সেলসিয়াস!

বোবার নাকি শত্রু নাই

কিন্তু এখানে আমাদের শত্রু আমরাই

নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন

প্রতিবাদহীন নির্লিপ্ততা আমাদের

কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে।

নদী খাল নালা পুকুর

ছোট থেকে ছোটতর হচ্ছে

ভরাট হতে হতে সমতল ভূমিতে রুপান্তর

কারখানা নির্গত দূষিত বর্জের অত্যাচারে

পানি তার রূপ রসে স্বকীয়তা হারিয়েছে

পরিবেশ হচ্ছে কলুষিত

নদী খেকোরা রাতদিন জাগ্রত

কালো টাকায় ধরাকে সরা জ্ঞান করছে

আমরা মানুষেরা নির্জীব নিস্তব্ধ

প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে

লেজুড়বৃত্তি করার দীক্ষা নিচ্ছি… আর

মনুষ্যত্বের রক্তক্ষরণে

¯œান করছি আমরা প্রতিনিয়ত।

 

 

 

 

প্রকৃতির প্রতিশোধ

সুচিত্রা ভট্টাচার্য

 

কোথা পাই প্রকৃতির শীতল বাতাস

প্রচ- দাবদাহে করছি হাঁসফাঁস।

 

গড়েছি রম্য প্রাসাদ, বহুতল ভবন

ধ্বংস করেছি শ্যামলীমা, পক্ষীকুল, বন।

 

নির্বিচারে করেছি আমরা বৃক্ষ নিধন

তাইতো ধরিত্রী নিচ্ছে প্রতিশোধ এমন।

 

বাতাসে দিয়েছো ঢেলে বিষ হে মানবজাতি

তাই দূষণের  রাহু গ্রাস থেকে মিলবে না নিষ্কৃতি।

 

পৃথ্বীকে করেছ যুদ্ধ, অস্ত্র আর খুনে রক্তাক্ত

বসুধা দিতে আজি সুধা তার হচ্ছে রিক্তহস্ত।

 

পরবর্তী প্রজন্মের তরে অপেক্ষমান ভয়ংকর সময়

এসো সবাই বলে প্রাণীকুল বাঁচাতে এখনি সচেষ্ট হই।

 

 

 

 

 

কোন এক নূরজাহান

শানু মজুমদার

 

ইতিহাসের পাতা থেকে চোখের সামনে

ভেসে উঠে নূরজাহান

শরীর থেকে বিচ্ছুরিত হয় জ্যোৎস্নার আলো

আর কস্তূরী সৌরভ

এমনই তার রূপ যৌবন

আহা মরি মরি!

 

আমি তখন বেঘোরে ঘুমাই

দু’চোখে রাজ্যের ঘুম

স্বপ্ন আমাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী

পিছনে নিয়ে যায়, দেখি

নূরজাহান তাগড়া ঘোড়ায় চড়ে ছুটে যায়

অজানা গন্তব্যে!

 

স্বপ্নের রাজ্যে  ঘুরিফিরি এখানে ওখানে

তখন আমিও এক রূপবান  শাহজাদা

কেবল স্বপ্ন ভঙ্গ হলে

বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়াই—

এখন আমি  কোন এক নূরজাহানের

অনাদর ক্লিষ্ট ফতুর জুয়াড়ি!

আলী তারেক পারভেজ এর অনুকাব্য

১.

হৃদয়ে করেছিলে আত্মগোপন

নীরবে হলো কতো স্বপ্ন বপন

কেউ নেই ছিলো নাতো সন্ধ্যাবধি

স্তিমিত কল্লোল, কাঁদে মরা নদী

ফিরে যাবো ভাবছি ঠিক তখনি

“দাঁড়াও” পিছুডাক হঠাৎ শুনি

 

২.

এসেছিলে কিছু দেবে বলে

ফুল পাপড়ি পত্র-পল্লব

দিলেনা ছিটেফোঁটা কিছুই

উপরন্তু নিয়ে গেলে সব

 

৩.

মেঘলা ঠোঁটের নিটল ফ্রেমে

ধরে আছো দিগন্তের হাসি

বললে শেষে বৃষ্টি হয়ে নেমে

ভালোবাসি, শুধু ভালোবাসি

 

 

 

 

শ্রমিকের ঘাম

সারমিন চৌধুরী

 

কাঠফাটা রোদ্দুরে যারা কাজ করে রাজপথে

দিনান্তে দুমুঠো অন্নের আশায়

উন্নত সভ্যতার ভিত্তি যারা গড়েছে শ্রমে।

দারিদ্র্যতার সঙ্গে তারা নিত্য লড়েছে

অক্ষর জ্ঞানহীন ভেবে তাচ্ছিল্য করি

আমরা আদৌও তাদের কতটুকু সম্মান দেই?

পিঠে বস্তা বয়ে পিচঢালা কংক্রিটে হাঁটে

বাবুদের অট্টালিকা গড়ে রক্ত-ঘামে

পিঠে ছাঁচ নেই, মাথায় নেই তুলতুলে বালিশ

আছে শুধু নগ্ন একটা আকাশ!

ইট ভাটার আগুনে যাদের স্বপ্ন পুড়ে,

মানবতা হারিয়ে যায় সভ্য মানুষের ভিড়ে

শোষণ উৎপীড়নে জর্জরিত জীবন,

সর্বদা পিষ্ট হয় হয় নিষ্ঠুরতার পদতলে

তাদের হয়ে প্রতিবাদ করবে যারা তারা ঘুমন্ত

হাটে-মাঠে, গঞ্জে-ঘাটে মহাকাশ কিংবা ভূমিতলে

মেহনতি শ্রমিকের ঘাম মিশে আছে যুগান্তরে

তাদের অর্জন খেয়েছে রক্তচুষা জোঁক,

তবুও উজ্জীবিত সূর্য্যের প্রথম রশ্মিটুকু

এসে মিশে শ্রমজীবীদের হাসিমাখা ঠোঁটে।

আবির প্রকাশন

আপনি দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- ঘরে বসেই গ্রন্থ প্রকাশ করতে পারেন অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমে আবির প্রকাশন থেকে। আমরা বিগত আড়াই দশকে বিভিন্ন

গণতন্ত্রহীন রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাঙালি চিরকালই বিদ্রোহী। ইতিহাসের কোনো পর্বে সে কোনো পরাধীনতাকে বেশি দিন মেনে নেয়নি। উপমহাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্র দিল্লি থেকে দূরে হওয়ায় এবং সাড়ে

বিপ্লব যাতে বেহাত না হয় ( সম্পাদকীয় – আগস্ট ২০২৪)

জুলাই মাসের কোটাবিরোধী আন্দোলন শেষ পর্যন্ত আগস্টের ৬ তারিখে ১৫ বছর সরকারে থাকা আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়েছে। অভূতপূর্ব এই গণঅভ্যুত্থান ইতোপূর্বে ঘটিত গণ অভ্যুত্থানগুলোকে ছাড়িয়ে