পলাতক
অসীম সাহা
দূরে বাতাসের কানে কানে কথা বলে অশ্বারোহীদল।
জ্যোৎস্নার ছায়ায় কাঁপতে থাকে পুকুরপাড়ের ভীরু গাছগুলি।
অন্ধকারে বিদায়ের প্রস্তুতিতে বিষণœ
কারো মুখে কোনো কথা নেই;
সকালের আলো ফুটবার আগেই
কাউকে কিছু না জানিয়ে পাড়ি দেবে অজানার উদ্দেশ্যে।
যাবেই যখন, তখন ফিরে তাকালো
উঠোনের প্রিয় বকুলফুলের গাছটির দিকে
অন্ধকারে না না করে উঠলো পাতা;
হাত দিয়ে স্পর্শ করে দেখলো ছোট তুলসীগাছটিকে;
প্রতি সন্ধ্যায় আর প্রদীপ জ্বালানো হবে না তার পায়ে,
প্রতিদিন জলস্নানের বদলে কুকুরের প্রস্রাবে ভরে উঠবে
তার শানবাঁধানো মাটি;
তারপর একদিন কেউ এসে উপ্ড়ে ফেলবে তাকে।
ভাবতেই কেঁপে উঠলো বুক, চোখের জলে ভরে উঠলো নদী
মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি ছাপিয়ে জেগে উঠলো অশ্বক্ষুরের শব্দ
পেছনে ধুলো উড়িয়ে জানিয়ে গেলো সতর্ক-সংকেত।
সেই রাতেই তারা চলে গেলো কোথায়Ñকেউ তা জানে না।
হোসাইন কবির–এর দুটি কবিতা
চিতায় যাবো না একা
চিতায় যাবো না একা
যাবো তো সমুদ্রে
লোনাজলে ভাসাবো তরী
তোমাকে সঙ্গে লয়ে
জানোই তো!
লোনাজলে রয়েছে পরম আসক্তি
জন্মের আগেও ছিলো সমুদ্রে বসতি
শিরায় শিরায় তাই
অতলে অতলান্তিকে মীনের আকুতি
চিতায় যাবো না একা
যাবো তো সমুদ্রে
যেদিকে তাকাই
যেদিকে তাকাই
হেসে ওঠে দুলে ওঠে অসম্ভব
দুলে ওঠে অন্ধকার
শুঁড়িখানা বাড়িঘর উলঙ্গ-বাসর
কার কাছে যাই বলো
কার হাতে রাখি হাত
দুলে ওঠে অন্ধকার
স্মৃতিময় অবয়ব বালির পাহাড়
=================================
মানুষ যদি মানুষ হয়
আনোয়ার রানা
দুনিয়ার বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানুষকে একটু একটু করে মানুষ হতে বলছি।
মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার আবেদন করছি।
যে মানুষ সৃষ্টি করেছে মারণাস্ত্র সে অস্ত্র ধ্বংস করে দেয়ার নিবেদন করছি।
মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের হিংসা বিদ্বেষ যুদ্ধ যুদ্ধ খেল আর নয়…
মানুষ যদি মানুষ হয় ;
পৃথিবীর রূপ-লাবণ্যে হবেই হবে সম্প্রীতির সূর্যোদয়।
==========================
পর্বত শীর্ষে সূর্যাস্তে
নূরুল হক
একটু পর
সমুদ্রের সুবিশাল পেটের ভেতরে
সূর্যদেব ধীরে ধীরে হবে অন্তগামী
সুউচ্চ পর্বত শীর্ষে তুমি আর আমি
বসে আছি মৌনতাকে সাক্ষী রেখে
কেন তুমি রেখেছো ঢেকে
ইচ্ছার শরীরজুড়ে ফুটে থাকা কামনার
ছোট ছোট পুষ্পকুঁড়ি
যে মুখে ছিল কথার ফুলঝুরি
সে মুখ কেন আজ বাকরুদ্ধ স্তব্ধ কেন কণ্ঠস্বর
তবে সূর্যের বিরহে তুমি কাতর,
নিজেকে করেছা সমর্পণ
পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে, তোমার দর্পিত মন
উড়ে যেতো অরণ্যের কাছে
আজ সূর্যের বিরহের আঁচে
হয়েছো ক্লান্ত বুঝি
আমি তাই তোমার জন্য একমুঠো প্রশান্তি খুঁজি।
মগ্নতার স্ফটিক স্বচ্ছ সলিলে
জীবনের কোলাহলে নম্রতার ঝিলে
দেখো, বিরহের রঙ কেমন যেন হয়ে গেছে লাল
এমন সুবর্ণ বিকেল
জীবনে হয়তো আসবে না আর
সম্মুখে সমুদ্র ক্রন্দন ডানে বামে নির্জন পাহাড়
তুমি আমি বসে আছি সেই পাহাড়ের শিরে
সন্ধ্যার সড়ক ধরে সব পাখি ফিরে যায় নীড়ে
সুন্দরের বক্ষ ভেদ করে
জেগে ওঠে অন্ধকার উড়ন্ত কলস্বরে
আমরা দু’জন ছাড়া চারপাশে ছিলো না তো কেউ
তুমি দেখ অপলক সমুদ্রের লাল লাল ঢেউ
সবুজের নগ্নতাকে আমি শুধু দেখি
কিন্তু একি!
তোমার চোখে জল, তুমি ভেসে যাচ্ছ অশ্রুজলে
অতঃপর বলে উঠলে ফিরে যাব বুঝি জীবনের কোলাহলে।
বিজয় যখন এলো
অপু বড়ুয়া
বিজয় যখন এলো-
মনটা হলো পাখনা মেলা দুঃখ ঘুছে গেলো।
বঞ্চনাতে কাটলো জীবন দীর্ঘ জীবন ধরে
অধীনতার বদ্ধ ঘরে ছিলাম কষ্ট করে।
কাটলো জীবন এমনি করে হঠাৎ বাজে বাঁশি
যুদ্ধে যাবার জন্য সবার ফুটলো মুখে হাসি।
সেই হাসি নয় যেমন তেমন সেই হাসিটা লড়ার
শেখ মুজিবের ডাকে জীবন নতুন করে গড়ার।
যুদ্ধ হলো ন’মাস ধরে আসলো বিজয় শেষে
সেই বিজয়ে স্বাধীনতা উঠলো সুখে হেসে।
স্বপ্নগুলো যতœ করো
নাজিমুদ্দীন শ্যামল
সারা রাস্তা আমি কেবল ঘুমিয়েছিলাম।
এতটা পথ ঘুমের মাঝে কাটিয়ে দিলাম।
চোখের পাতা নড়েছিলো। ঘুমের মাঝে
স্বপ্ন ছিলো। নীল আকাশ সবুজ মাটি
তারই মাঝে লাল মানুষের উড়াউড়ি;
প্রজাপতি, হলুদ শাড়ি, ঠোঁটের তিল
সবই ছিলো। এসব শুধু স্বপ্ন ছিলো।
ঘুমের মাঝে স্বপ্নগুলো চোখে এলো।
ঘুম ভাঙতেই রোদের তাপ, দেহের
ক্ষুধা মোচড় দিলো। চারিদিকে সাপের
রাজ্য আমার স্বপ্ন কেড়ে নিলো।
তবুও আমি পাখি হয়ে উড়ে গেলাম,
গানে গানে স্বপ্নকাঁথা ছাড়িয়ে দিলাম
এই পৃথিবীর লাল মাটিতে সেসব
স্বপ্ন বুনে দিলাম। যাবার বেলা
একটি পাখি তোমার কাছে রেখে গেলাম।
স্বপ্নগুলো যতœ করে দেখে নিও,
পাখিটাকে ভালোবেসে উড়িয়ে দিও।
আলোর পশ্চাতে
হাবিব আহসান
তুমি নেই – শূন্যতায় হু হু করে বুক
তোমার ভালবাসার ছড়ানো বীজেরা
অনামিকা ফুল হয়ে ফুটে আছে
শ্যামল উপত্যকায় –
ঢাল বেয়ে নামি সমতলে, সবুজ প্রান্তরে।
শূন্যতার বুক চিরে কত রঙ কত ঘ্রাণ
শাদা রঙ শাদা ফুল শাদা আকাশের পট
জীবন সোনার চেয়ে খাঁটি অযথা করিনি মাটি
মাটিতেই রাখি পা, যাইনি পুড়ে
উড়ে উড়ে দেশান্তরি ছাইভস্ম হয়ে।
শূন্যতায় ফুটে আছে সোনা রোদ
আলো ভালো যদি থাকে আলোর পশ্চাতে
ছোপ ছোপ কালো –
আমার ভিতরে চিরকাল তুমি
বেদনার দীপশিখা জ্বালো।
খেয়ালি প্রকৃতি
খাতুনে জান্নাত
প্রকৃতির কৌতুকে হাসছে নটিনী নদী।
ঘুঙরো ছড়িয়ে ডুমরো বাজিয়ে
যুবতী পল্লীর দেহের শ্যামলীমা ঢেকে টাঙিয়ে দিচ্ছে ধূসর পর্দা।
আর্তনাদ, মেলে না বাঁচার জন্য একটুকরো ছাদের সম্বল।
কোথাও কেউ নেই; জলে পুড়ে যাচ্ছে তৃষ্ণা,
ভাঙছে বিবেক।
ঈদের মৌসুমে ক্ষুধার চিৎকার।
কাচের বৃষ্টি পড়ছে চোখে-
ঠাঁই দাও ঠাঁই দাও রুদ্র অন্তর।
কে ঠাঁই দেবে?
ভেজা কাপড়ের দিনরাত, ক্ষুধার্ত জীবন
লকলকে আগুন ,
সাজানো গৃহস্থালি ভেঙে পড়ার আর্তনাদ।
স্বর্ণলতা ঝোপে সর্পের কু-লী।
পা ডুবিয়ে, কোমর পেরিয়ে উঠে যাচ্ছে জল
সীমাহীন সাঁতার ;
খুলছে পাঁজরের হাড়…
কে শোনে জলের গান!
জীবনের শাশ্বত রূপ
মুস্তফা হাবীব
বৃষ্টিধোয়া স্বপ্ন সাধনায়, নির্মোহ পথে হেঁটে
একটি দুগ্ধধোয়া জীবন গড়ার ইচ্ছে আছে যার,
¯্রষ্টাই ভালোবাসে তাকে ছায়া দিয়ে মায়া দিয়ে
প্রয়োজন হয়না তার অন্য কারো একটু করুণার।
এমন বিশ্বাসেই কাটিয়ে দিয়েছি সকাল – দুপুর,
অপরাহ্নের সিঁড়ি বেয়ে নেমে যাচ্ছি সন্ধ্যার দিকে
যেদিকে তাকাই, দেখি ঝরাপাতার নিঃশব্দ হাতছানি।
সিঁকোয় তুলে রাখিনি সম্পদ, নগদ কিংবা স্থাবর
রেখে গেলাম পত্র-পল্লবহীন অদৃশ্য জীবনবৃক্ষ,
শব্দ সুষমায় সাজিয়ে গেলাম পথের রোজনামচা
মনোলোকের শাশ্বত রূপ- ভালোবাসার মণিহার।
একদিন এই মণিহার জন্ম জন্মান্তরে
শিল্পের শতদল হয়ে মেলবে ডানা শুভ্র আলোয়ে
প্রজন্মের মনোদুয়ারে উঁকি দেবে সহ¯্র কৌতূহল
শেষে গ্রন্থের প্রতিটি পৃষ্ঠায় খুঁজে পাবে এই আমাকে।
অতলস্পর্শ
অঞ্জনা সাহা
যেতে যেতে ছুঁয়ে যাই সবুজ মৃত্তিকা
বারবার স্পর্শ করি সুগভীর বনাঞ্চল
ছুঁয়ে যেতে যেতে, ছুঁয়ে যেতে যেতে
আরো গভীরে পৌঁছে যাই
ছুঁতে চাই, যা কিছু স্পর্শের অতীত।
অরণ্যের কান্না শুনতে শুনতে আমার পদযুগল স্তব্ধ।
তোমার নীল খোলস থেকে বেরিয়ে আসার
মুহূর্ত গুনতে গুনতে আমার প্রাণ ওষ্ঠাগত।
এতো সহজ কথা তোমার কাছে
এতো দুর্বোধ্য মনে হলো, হায়!
আমার অন্ধকারের একটুখানি স্বচ্ছ আলো,
অতলস্পর্শ, আমার আত্মার আরাম,
অতিশয় স্বাস্থ্যকর সুখের কাঁটা
বিঁধে আছো বুকের ভেতরে।
সেখানে অবাধে আসা-যাওয়া করে
অনিবারণীয় মুক্ত বাতাস।
আকাশে মেঘেরা খেলে লুকোচুরি খেলা
হাওয়ার নেশায় পলাতক পাখি মেলে ডানা
নিভৃতে, অতি নিঃশব্দে তার শরীর থেকে
খসে পড়ে রুপালি পালক;
কার পদশব্দের বার্তা সে বয়ে আনে
এবং তাকে পৌঁছে দেয় আমার নিঃসঙ্গ প্রাণে?
দৃশ্যের আড়ালে
হাফিজ রহমান
আর তখনই বলে উঠলে
আমায় নিয়ে একটা কাব্য লিখ!
দুলে ওঠে সমগ্র পাহাড়
কি করে লিখব বল, তোমাকে তো জানিনা আমি-
কণ্ঠে তারল্য নিয়ে ছন্দিত বলে ঊঠলে
জানবে না কেন? আমাদের পরিচয় অনন্তলোকের।
চাঁদের আলোয় ভেসে
কুয়াশা হিমেল মিশে
কোন এক সাগরের জলে
উঠিনি কি আমরা কথা বলে!
শঙ্খচিলের কণ্ঠে যে সুর গিয়েছে বেজে
সে সুর আমার ছিল।
তুমি ছিলে ঢালু পাহাড়!
তাই হয়তো শুনিনি কিছুই
চিনি নাই তুমি কে আমার!
এবার তাহলে চিনে নাও
ঐ হাত এই হাতে দাও
সাগর পেরিয়ে যাই
হাত থাক হাতে ধরা
যাক এই শীতের প্্রহর
বসন্তে উঠো জেগে
মধুমতী কূলে একবার!
পিতার নামটি সদা বহমান
রোকসানা পারভীন সাথী
চির তরুণ অরুণের বিশ্বখ্যাত সেই অবিনাশী তর্জনীর দোলায়
স্বপ্নাতুর লাঞ্ছিত আপোসহীন বাঙালির হৃদপদ্মে ওঠে অগ্নির মাতম
পদ্মা- মেঘনা- ধলেশ্বরী -গোমতী,পায়রা,মধুমতি, সোমেশ্বরীর শরীরে
ভিসুভিয়াসের সোমত্ত হার্দিক শিহরণ!
রক্তে রন্ধ্রে রন্ধ্রে জাগে লেলিহান শিখার উদ্দামতা!
ফুঁসে ওঠে শ্যামলিমার নীলিম জনপদ পিতার অরুণিমা শপথের মিছিলে
না ফোঁটা ফুলেরা মালা গাঁথে মধুবন্তী খুশবুর আলিঙ্গনে।
তেরশত নদীর অট্টরোলে ঘুম ভাঙে পরাণ মাঝির!
ঝাঁকে ঝাঁকে নৌকা পাল তুলে বদর বদর রবে ছোটে রমনার রেসকোর্স ময়দানে
তরুণী মেঘেরা সদলবলে হামলে পড়ে হুকোর টিক্কার হার্মাদ সূর্যের পরে
বাইগর উষ্ণতা ছড়ায় ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের সবুজ লোবান জলে
কিশোরি বধূর সলাজ ভীতু চোখে স্বাধীনতার মায়া কাজলের অমরাবতী স্পর্শ
পাষ- শোষকের তোষকে জ্বালে বীরপুত্র লাল, নীল তুখোড় অনল
জাহান্নামের অথৈ জলে ভাসে জুলুমকার!
পাপাশ্রয়ী পরজীবী নরপশু ওরা!
অপারেশন সার্চলাইটের নারকীয় পৈশাচিক তা-বে বাকরুদ্ধ বিশ্ব বিবেক!
অমৃতস্য বীর দ্রোণাচার্য বাংলা মায়ের তিমিরবিদারী সূর্যপুত্র
হিমালয়ের উত্তুঙ্গ শাণিত মন্ত্রবাণী আওড়ান ;
” রক্ত যখন দিয়েছি, আরো রক্ত দেব
এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো। ইনশাআল্লাহ।
তোমাদের যার যা আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা কর ;
ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল…..
….
এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। ”
…….
জায়নামাজের উর্বরা জমি কর্ষিত, বন্দি অর্কে বাজে যুদ্ধের দ্রিম দ্রিম দামামা
আচমকা বৃষ্টি নামে অঘোরে। তাপিত প্রাণে জাগে মুক্তির বারতা
জয় বাংলা। বাংলার জয়।হবে হবে হবে হবে নিশ্চয়ই।
তেরশত নদীর আতরজল মেশে সাত সমুদ্দুরে।
ইপ্সিত স্বাধীনতার পাল ওড়ে ময়ূরপঙ্খি নাঁয়ে
…..
পিতা জেগে আছেন বট,অশত্থ,হিজলের ছায়ায় মায়ায়
ফসল ভরা ঢেউ খেলানো তেপান্তরের শ্যামল পলিল বুকে
নদীর নরোম স্ফটিক স্বচ্ছ জলে বিম্বিত স্মিতহাসি পিতার মুখে
মায়ের আঁচল বিছানো জমিনে অন্তরের সুধায় পিতা চির ভাস্বর।
দুর্দৈবে দুর্দিনে দিশারি জোগান মুক্তির অবিনাশী কলতান
জোনাক কথায় বাংলার মাঠে ঘাটে সুশীতল ধরায় জাগে অনন্তপ্রাণ।
দৃপ্ত পদক্ষেপে বাঙালি বীর পা বাড়ায় আজো পিতার হাতটি ধরে
শপথের মিছিলে শ্লোগানে পরাণে বাঁধে নতুন দিনের আগমনী গান
ক্ষুধামুক্ত,সন্ত্রাসমুক্ত,দুর্নীতিমুক্ত,জঙ্গিবাদমুক্ত মানবপ্রেমে ভরপুর
সুশাসনের, ন্যায়ের,সুসমতার পুবালি বাতাসে কীর্তনখোলা
ধানসিঁড়ির প্রীতিলতায় দোলে স্বপ্নের সোনার বাংলার পাল তোলা নৌকা ;
ষোল কোটি পুণ্যতোয়া জননীর যাত্রী রেখেছেন পিতার মান- সম্মান
তাঁদের পিতার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সুুরমা,চিত্রা,বিরিসিরির সফেন অন্তরে পিতার নামটি সদা বহমান।
জীবনবোধ
তোফায়েল তফাজ্জল
জীবনের সোনালি মুহূর্তগুলো ঝরে যায়
বাতাসের বাগে পাওয়া ঠিক যেনো ভোরের শিশির
কিংবা উড়ে যায় বাষ্পাকারে।
অথচ দুঃখের কালটায় মনে হয়
জুড়ে দেয়া থাকে ইলাস্টিক
যেদিকেই টান পড়ে অনায়াসে বাড়ে
অথবা এটিকে বলা যেতে পারে এক ভরা গাঙ,
সেখানে মানুষ স্রোতে পাওয়া শুকনো তৃণ,
যেতেই পারে না কূল-কিনারের দিকে
বা সাহস যুগিয়ে পারলেও
ওপরে উঠায় বড়সড়ো বাধাবিঘœ,
মাটি আকঁড়িয়ে ধরলেই বৃহৎ আকারে ভেঙে পড়ে,
সে ধাক্কায় চলে যেতে হয় বহু নিচে।
সেই বুদ্ধু-বিপদেও খাড়ার ঘা হয়ে পিছু নেয়
মাংসলোভী জলজেরা, ভীষণ হাঁ করে গিলতে আসে।
তখন কীভাবে আত্মরক্ষা ?
দুনিয়া এমনই, সুখ যদি মিলে এক কেজি
দশ কেজি যন্ত্রণায় ডুবে থাকতে হয় দিন।
অপূর্ণতার বৃত্ত
রুহু রুহেল
আবার যদি পেতাম দেখা, প্রিয় তোমায় নিবিড়ে
চলে যেতাম তোমায় নিয়ে দূরকিনার ঐ পাহাড়ে
পাহাড় দেখা সবুজ দেখা ইচ্ছে গুলো ছাপিয়ে
ঘোর লাগা সব চিন্তা গুলো আসছে তেড়ে ছুটিয়ে।
আমরা যখন চলছি বিদিক থামায় কারা শুনিয়ে
যেওনা যেথা আছে সেথা অমঙ্গলের ভূত লুকিয়ে
বায়না ধরা কথা গুলো যখন পাড়ি বিবেকে
ঠাঁই মেলে না, কূল মেলে না,মন সবুজের সজীবে ।
বোধের তারা উঁকি মেরে জ্বালায় সেথা মন আলো
আর হলো না মিলনকথা,সমাজ যথা দ্বীপ জ্বালো
মন-সবুজের ইচ্ছে গুলো পায় না ধরা শুচিয়ে
অপূর্ণতার বৃত্তে সবাই চালাই খেয়া ঝিম নাচিয়ে।
তোর সাথে যে লেনা দেনা থাকুক সেথা অন্তরে
মন-ভেতরে জ্বলে যে মোম পোড়ায় সেথা গভীরে।
মানুষ তুমি কবে হবে মানুষ!
সুলতানা নুরজাহান রোজী
মানুষ তুমি কবে হবে মানুষ?
আর কতো উড়াবে রক্ত রাঙানো ফানুস
আতশবাজির ধোঁয়া ওঠা কষ্ট
আহাজারি বেদনার নীল রঙগুলো ছেয়ে গেছে জীবনের করুণ অবয়বে
মায়ের আহাজারি শিশুর আর্তনাদে আরশ কেঁপে উঠছে তবুও
প্রেতাত্মার অক্লান্ত চোখ মন গলছে না
আগুনের ফুলকির স্পর্শে
বিবেক কখন হবে শুদ্ধ কানে দিয়ে তালা অন্তর করেছো যে রুদ্ধ!
সাদা আকাশের বুকে বেদনার কালো ধোঁয়া ছুঁয়েছে বুক ভেঙে পাঁজর শোকাহত পৃথিবী
অবাক নয়নে তাকিয়েই আছে ছলছল বিরামহীন দু’চোখে
মানুষ তুমি কবে হবে মানুষ
বন্ধ হবে কখন এই নিষ্ঠুর বর্বরতা অমানবিকতার এ নির্যাতন
পাষাণ মনের দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিবেক
দরজা খুলে দেখো অশান্ত পৃথিবী হয়ে আছে নির্বোধ অবুঝের মতো অবাক!
অভিজিৎ কথা রেখেছে
সঞ্চয় কুমার দাশ
অভিজিৎ কথা রেখেছে, সে তার চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে
সে এখনো ফুরিয়ে যায়নি।
তার অপরাধ সে অন্যায়কে মনে প্রাণে ঘৃণা করে
ক্লেদযুক্ত বিষাক্ত সমাজের সমাজপতিদের।
অন্যায়কে সে প্রশ্রয় দেয়নি।
ইট, বালু, সিমেন্টের অযৌক্তিক মিশ্রণ দিয়ে
ভঙ্গুর ইমারত গড়তে সে পারেনি
নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে
যুদ্ধ করেছে অহর্নিশ।
অফিসের বসের কথামতো প্যাকেট দিতে
ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে
তাইতো ওর চাকরিটা গেছেÑ
কিন্তু হতাশ নয় কখনোই।
ও জানে একদিন সুদিন আসবেই
একদিন বসন্ত আসবে তার জীবনে।
ফটিকছড়ির বাইশপুর
উৎপলকান্তি বড়ুয়া
নানুপুরের নান্না মিয়ার তিনটা শ্বশুর বাড়ি
বক্তপুরের বক্তিম শেখ শখে চালায় গাড়ি।
ধর্মপুরে মর্ম বুঝে কর্ম করে সবাই
জাঁহানপুরের ধনী জাহান,ওরা ন’বোন ন’ভাই!
নিশ্চিন্তাপুরের নিশান শিল্পী, ছবি আঁকে
আবদুল্লাপুরের আবুল সুদূর কাবুল থাকে।
রতœপুরের রতন মিয়া খুবই যতন করে
গরু ছাগল হাঁস মুরগী মোরগ পোষে ঘরে।
রসুলপুরের বসু’র কাজের-কথার বড় দাম
রায়পুরে রাম রায়ের নাতি জপে হরির নাম।
প্রেমপুরের শ্যামবাবু প্রেমের কাঙাল চিরদিনই
জ্ঞান-বুদ্ধির অতল সাগর, সবাই তাকে চিনি।
অলিপুরের অলস আলম ঘুমিয়ে কাটায় দিন
দাদার জমিদারির তালুক সুখ কী তা ধিন ধিন!
মোহাম্মদপুরের মোহন মিয়া দক্ষ কৃষি কাজে
নিজ ইসলামপুর ছাড়া শ্যাম কিচ্ছু বোঝে না যে!
চানপুরের চান মিয়া নিজের সঙ্গে নিয়ে মা’কে
কাঞ্চনপুর গ্রামে মামার বাড়ি এসেই থাকে।
ইদিলপুরের সিদুলবাবুর ব্যবসা চাঙ্গা ভারী
হাট বাজারে বেচে তাজা সব তরি তরকারি।
মানিকপুরের মানুষরা রয় সুখে গ্যারাম জুড়ে
আজিমালীর দাপট চরম নিজের আজিমপুরে।
সুন্দরপুরের মানুষগুলোর মনখানা খুব ভালো
দৌলত মিয়া অভিজ্ঞজন দৌলতপুরের আলো।
ফতেপুরের ফতুর আলী ভারী চতুর তিনি
পান্তা খাবে লংকা মেখে মিশিয়ে সঙ্গে চিনি।
ভুজপুরে নিজ বাড়ি আলীর থাকে আরব দেশ
ফটিকছড়ির ‘পুর’ এর বয়ান আজ এখানেই শেষ।
যাপন
রজব বকশী
যখন বাইরে থাকি পথে ঘাটে বন্যতার ঢেউ
হিংসা অহম সাপের মত ফুঁসে ওঠে
দিনরাত্রির ফণায়
পলক উনিশ বিশে দংশন করে
প্রতিযোগিতামূলক দারুণ বর্ণাঢ্য
লড়াকু জীবন
ঘরে ফিরলে মৌচাকে যেন ঢিল পড়ে
নানা অভিযোগ অভাব ও অনটন
ফোটায় বিষাক্ত হুল
দগ্ধ দেহমন
রক্তাক্ত হৃদয় নিয়ে নিদ্রাহীন সময়ের ঢেউ
তুমুল আছড়ে পড়ে
দৃশ্য অদৃশ্য চৈতন্য দুহাত বাড়ায়
আনন্দ বিষাদে
ডোরাকাটা রোদ্দুরের সুপ্রসন্নতায়
নৈরাশ্য কুয়াশা ঘনঘোর অন্ধকার
লেজ গুটিয়ে পালায়
মেঠোপথে অনাদৃত ঘাসফুল আমি
গুণীর চরণধূলি
মাথায় বরণডালা সেজে জেগে আছি
অথবা রাস্তার পাশে ফোটা ভাঁটফুল
সৌন্দর্য সৌরভে
যেন পথিককে অভিনন্দন জানায়
যদিও ¯্রােতের বিরুদ্ধে
উড়ি পায়রা ডানায় তবু রক্তচক্ষু
উপেক্ষার পাথরের মত পড়ে থাকি
নীরবে নিভৃতে একা
ঝিনুকের বুকে মুক্তা কষ্ট সুখে থাক
যাযাবর
শাহানা সিরাজী
পরজীবী মন উড়োউড়ি খুব
নেই কোথাও শাখা
জন্মান্ধ উঁই বানায় ঢিবি
যায় না তারা ভাঙা
তবুও বর্ণিল অগোছালো ক্ষণ
মধুময় আলোয় মাখা
অশ্রুত শব্দের নীরব ভাষা
জমাট বরফবুকে
লৌহশকট ধীরে চলে
কে দেয় চলন রুখে
তবুও পরাণ রঙিনতিয়াস
উড়ায় ফানুস ফুঁকে
এবং অরেঞ্জ
নাজমুন নাহার
প্রতি রাতে একটা কমলার ভেতর ঢুকে যাই
কোষের দশরকম যন্ত্রণায় দগ্ধ হই
রাধা আমার চন্দ্রচুড়ো
এ কেমন আমার ঘোর বেঘোর
কতরাত আমার ঘুম হয় নি
কতদিন আমার পা এর ঘা শুকোয় না —
দীর্ঘশ্বাসে অতিক্রান্ত হয় ভোর
ভুলো মন আমার
তোমাকে তবু ভুলি নি হে
রুদ্র সাহাদাৎ –এর দু’টি কবিতা
ফিরে পেতে চাই
দাম কমাও জান বাঁচাও
বেঁচে আছি আরও কিছু দিন বাঁচতে দাও
ফিরে পেতে চাই সোনালী দিনগুলি
গোলাভরা ধান
পুকুর ভরা মাছ
জমিতে ফসল
গাছে গাছে ফুল ফল…
মহিষাসুর বধ
মহিষাসুর বধ হোক আগামী দিনগুলোতে-
জেগে ওঠো মা দুর্গা
জেগে ওঠো মজলুম আমজনতা
জেগে ওঠো আদম, হই একতা
নিত্যপণ্য কিনতে যেয়ে কাঁদে পুড়ামন…
চলে যাওয়ার পর
মোহাম্মদ আলী
তেপ্পান্ন চলে যাওয়ার পরে চুয়ান্নও যাবে
অক্ষমতার জানলা খুলে গেলে মানুষ বোবা হয়
নম্রতার নদী পার হতে পারলেই তোমার হবে,
এই-তো কনকনে শীতের বার্তাবাহী বৃষ্টি চলে গেছে
রোদে সেকে নিলেই মোলায়েম হয় না মন ও মগজ
শতাব্দীর জখম যখন বুকে পুষেই ঘুমাতে পারি
তাহলে জীবনের গতিপথ নিয়ে এতো কেনো ভাবনা?
তুমি ডের এগুবে নতুন ভোরের প্রেরণা নিয়ে
আমরা তো আঁটকে আছি প্রাচীন নদীর মোহনায়
মানুষের মতো চলমান হৃদয় নিয়ে
পৌষের শীতে এসো আমাদের নিসর্গ শহরে
ধোঁয়ার মতো কুয়াশা গায়ে মেখে দিবো
হরিণা সবুজ যখন ঘুমাবে, গান দিয়ে প্রাণ জাগাবো
আমরা কৃপাণ বসুমতীর মরা নদীতে সুর তুলি
তোমার পালকের রং মুছবে না কোনো দিন
চলে যেও তবে ভুলে যেও না।
শিশিরের ফসিল
সুফিয়া শীলা
মধ্যরাতে সূর্যের আলো চোখে
হেঁটে গেছি মহাকালের পথে,
মায়াময় উপত্যকার হৃৎপি- বিদ্ধ করে বাজিয়েছি জলপ্রপাতের সুর;
প্রতিটি সভ্যতার অলিগলি রাজপথে মিশে আছে তার টান,
তারপরও–
‘আমাতেরাসু’-র পবিত্র আয়নাতে
খুঁজে পাইনি নিষিদ্ধ মুখচ্ছবির ছায়া।।
ঐশ্বর্যময় ‘এলডোরাডো’-র মোহে দিয়েছো বিসর্জন
‘জিল্যা-িয়া’-র প্রেম,
‘মায়ান পিরামিড’-এর ভাঁজে মিশে আছে
জোনাকির শরীর;
অভিমানে সাদা মেঘ হয়েছে ‘পামুক্কালে’-র মাটি,
কষ্টের উষ্ণ প্রস্রবণ ‘মাউনা লোয়া’-র স্রোতেই
ডেকেছে অগ্নিবাণ।
ভালোবাসার মহীসোপান হয়েছে বিচ্ছিন্ন–
থিংভেলি-র মতো কাল থেকে কালান্তরে,
সরে গেছে দূর থেকে আরও দূরে;
অনুভূতির হিমবাহ হয়েছে দ্বিখ-িত
‘ফসফ্রাইড’-এর নির্লজ্জ-নির্মম আঘাতে,
‘ওয়াদি’-র জোয়ারে মরুভূমি আর হয় না সবুজ;
মহাজাগতিক প্রেম তাই–
শিশিরের ফসিলের মতো অবিশ্বাস্য কিংবা
‘এ্যান্টিমেটাল’-এর মতোই দুর্লভ-দুষ্প্রাপ্য এখন!
ইন্দ্রনীল এর কাছে খোলা চিঠি
মিনু মিত্র
ইন্দ্রনীল,
কেমন আছো তুমি? তা জানার সিমানাও আজ অসিম। বড্ড মনে পড়ছে তোমায়। বলাযায় এটা এখন নিত্যদিনের অভ্যেস। তোমার মনে আছে ইন্দ্রনীল, আমাদের বাড়ির পিছনটাতে তুমি ক্রিকেট খেলতে আসতে। শীতকালে বন্ধ জানালা কতো বাহানায় বার বার খুলতাম, তোমায় একটু দেখবো বলে। তুমিও কম নও জোরে জোরে আওয়াজ করতে যাতে বন্ধ জানালা ভেদকরে তোমার কথা আমার কানে এসে পৌঁছায়।
মনেপড়ে ইন্দ্রনীল?
সামনে আমার এস এস সি পরীক্ষা ছিল বলে তুমি আমাদের জানালার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বার বার কয়েকটি রচনার নাম বলতে। আর আমি তা শুনেই পড়াশুরু করে দিতাম। তখনও তোমার সাথে আমার সামনাসামনি কথা বা পরিচয় কোনোটাই হয়নি।
ইন্দ্রনীল,
মনে হয় এইতো সেদিন তোমার সামনে প্রথম যেদিন বসেছিলাম আমার কান দুইটা লাল হয়ে উঠেছিল,পা কাঁপছিল, হাতদুইটা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। তুমি বলেছিলে,”নয়নও সম্মুখে তুমি নাই, নয়নেরও মাঝখানে নিয়েছো যে ঠাঁই।”
এইতো সেদিন বছর কুড়ি আগের কথা, ফার্মের সেই চিরচেনা গাছটার নিচে বসে কতো গানইনা শুনিয়েছো, আমি মাথার দিব্যি দিয়েছিলাম সিগারেট না খেতে। আচ্ছা ইন্দ্রনীল এখনও কি সিগারেটের ধোঁয়া তোমায় স্পর্শ করে? নাকি দূর আকাশে তারার মাঝে তোমাকেই খোঁজে।
তোমার বই পড়ার বড্ড বাতিক ছিল। আমাকেও অনেক জ্বালিয়েছো বই পড়ার কথা বলে। আজ আমি বড্ড পড়ুয়া। তোমার সাথে আলোচনায় আজ আমি নিশ্চিত জিতে যেতাম। আর তুমি মুখ ফুলিয়ে বসে থাকতে।
ইন্দ্রনীল,
তুমি কি এখনো আমার স্কুলের সেই রাস্তয় আমার জন্য অপেক্ষা কর? নাকি সেই পথ বহু প্রেমিক অতিক্রম করে এখন শুধুই পথিকের।
মনেআছে ইন্দ্রনীল?
পুজো তলায় অঞ্জলির সময় আমি যখন চোখ বন্ধকরে ব্রাহ্মণের বলা বুলিগুলো আওরাতাম ঠিক তখন হঠাৎ বুঝতে পারতাম আমার ডানপায়ের পাতার উপর আরেকটা পায়ের চাপ আর কানে আসেেতা ” মিত্রের মেয়ে দেহিং” আমি চোখ খুলতাম না। মুগ্ধ হয়ে শুনতাম সেই মন্ত্র। যাইহোক সে লম্বা ইতিহাস। বিশ/ একুশ বছর পরে আজও সেই আওয়াজ কানে বাজে। কতো যে পাগলামু তোমার দেখেছি,তার সাক্ষী শুধু আমি নিজেই।
ইন্দ্রনীল ভালোবাসার চিত্রগুলোতো থাকে না। থাকে শুধু ঘটনার চিত্র। বহুবছর পরেও হৃদয়ের ভিতরে যে অনুভূতিগুলো জীবিত থাকে তা কী শুধুই ঘটনা নাকি ভালোবাসা?
ভালো থেকো ইন্দ্রনীল। প্রতিদিন হাজার মানুষের ভীড়ে আমি তোমাকে খুঁজি আজও। কোথাও তুমি নাই । তোমার অস্তিত্ব আমাকে জানান দেয়না। আমি অপেক্ষা করি।যেদিন আকাশ ছুঁতে পারবো সেদিন তোমায় ছুঁতে পারবো। আমিও তোমার মতো আকাশের তারা হয়ে তোমার পাশে থাকতে চাই।
ইতি
তোমার
কণকপ্রভা
তোর আগমন
শারমীন আফরোজ
ভেসে যাক আজ
জোছনায় রাতের আকাশ,
তোর আগমনে।
পাখিরা সব নীড় ছেড়ে
মিছিল করুক ঐ আকাশে
তোর হাসির কারণ হতে
বকুল ফুলের গন্ধে ভাসুক
চারিপাশ।
তোর মন খারাপে
ভাসে নদীর দুপাশ।
ভেসে যায় বসতভিটা,
ভাসে ফসলের মাঠ।
তাইতো তোকে রাখতে ভালো
ঘুম কে দিয়েছি ছুটি
বিসর্জন দিয়েছি নিজের সুখ।
দিয়েছি করে বন্ধ
সকল সম্ভাবনার দাঁড়।
বুক ভরে আশা
আর চোখ ভরা স্বপ্ন
আজ সব কিছু
তোকে ঘিরে।
খোকা আমার বড় হবে
ডাকবে আমায় মা,
তারপর,
ছড়াবে নাম দিকে দিকে
রতœগর্ভার পদক মিলবে।
আমার নাম হারিয়ে
সবখানেতে,
তোর নামেতে পরিচিতি হবে।