মুহাম্মদ নিযামুদ্দীন:
যেদিকে যাবে, দেখতে পাবে, বড়ত্বের বড়াই ; বড়াইয়ের কারণে মাথা হয়ে যায় উত্তপ্ত কড়াই – লেগে থাকে লড়াই। এই লড়াইয়ে হয়না কোনো লাভ – বাড়তে থাকে পাপ, যা এক মহা অভিশাপ। বড়াইয়ের বিপরীতে ব্যতিক্রম বাস্তবতাও দেখা যায় কখনো কখনো, যা মানুষকে দেয় সবক অন্য কোনো। সেই ব্যতিক্রম বাস্তবতা থেকে যদি সবক নেয়া যায়, জীবন তবে ভালোবাসায় ভরে যায়। বড় হওয়াকে তখন কে ঠেকায়! স্বর্গও বুঝি নেমে আসে দুনিয়ায়।
যেমন একবার এক স্কুলে হলো কি, অংকের সংখ্যা ৯ করে বসে এক কান্ড – ৮ এর গালে লাগিয়ে দেয় থাপ্পড় এক প্রচ- । ৮ আচমকা থাপ্পড় খেয়ে – যায় হতবাক হয়ে! ৯ কে উদ্দেশ্য করে বলে- কেন তুমি থাপ্পড় মারলে? কিবা কসুর আমার – জবাব চাই তার! ৯ উত্তরে তার বলে- শুনতে চেয়েছো যেহেতু, শুন তাহলেঃ আমি যে বড় ভাই তোমার – তাই আছে আমার তোমাকে থাপ্পড় মারার অধিকার। তারপর আর যায় কোথায় – থাপ্পড় মারার সিলসিলা জারি হয়ে যায়। ৮ থাপ্পড় মারে ৭ এর গালে – থাপ্পড় খেয়ে ৭ তেলে-বেগুনে উঠলো জ্বলে! জ্বলে উঠে ভাবে ৭, আমারও তো আছে হাত। যদি তার করি এস্তেমাল – ঠিক থাকবে ঘটনার তাল। ৭ থাকতে পারলোনা বসে – বসিয়ে দেয় থাপ্পড় এক ৬ এর গালে কষে।
৬ দেখলো সেও তো বড় ৫ এর চেয়ে – দেরি না করে দিলো এক থাপ্পড় ৫ এর গালে বসিয়ে। ৫ বলে, আমার কি হাত নাই? আমিও তো ৪ এর বড় ভাই। বলেই বিলম্ব না করে – ৪ এর গালে দেয় জোরে থাপ্পড় মেরে। ৪ দেখে বসে থেকে কি কাজ আর! ৩ এর গালে বসিয়ে দেয় থাপ্পড় তার। ৪ এর থাপ্পড় খেয়ে – ৩ এর মাথা যায় গরম হয়ে। মাথা তার যায় এতোটাই চটে – কার্যকর করে তা ২ এর গালে থাপ্পড়ে থাপ্পড়ে। ২ তখন ভাবে, বসে কেন তবে? ১ তো হয় ছোট আমার। অমনি তার গালে লাগিয়ে দেয় থাপ্পড় দুচার! ০ ভাবে, আমি তো অসহায় – একা আমার মূল্য কোথায়! এই ভাবতে ভাবতে নিজ মনে – ভয়ে লুকায় ০ গৃহের এক কোনে। তার এই অবস্থা দেখে – ১ বলে, ভয় পেয়োনা আমাকে। থাপ্পড়-টাপ্পড় মারবোনা আমি – ভালোবাসা পেলে তুমিও হতে পার দামি। এসব বলতে বলতে ১ এর চোখ ভিজে ওঠে জলে – সোজা গিয়ে বসে ০ এর বাম বগলে। বগলে বসার পর ফল গিয়ে দাঁড়ায় – ০ তখন ০ কোথায়! ১০ হয়ে যায়। ০ তখন ওঠে বলে, আপনি তো বসে বগলে, দিয়েছেন আমাকে বড় বানিয়ে, ভাষা নেই কৃতজ্ঞতা জানাবো কি দিয়ে! তারি জবাবে, ১ তার নিজের স্বভাবে, বলে, যে নিজেকে বড় ভাবে, সে বড় নয় কোনোভাবে। বড় তো তবে হওয়া যায়, যবে কেউ অন্যকে বড় বানায়।