ঐতিহ্য ও গৌরব
নদী শুকিয়ে গেলে
ক্ষীণধারা বহন করে তার ঐতিহ্য- ইতিহাস
মরে গেছে ঘাঘর নদী, কপোতাক্ষ, ধানসিঁড়ি
বিজয়গুপ্ত মাইকেল জীবনানন্দ বেঁচে আছে বলেই
নদীরাও বেঁচে আছে কবিতায় শাশ্বত সুন্দর ।
আমার পিতামহ আবদুল কাদির বেঁচে নেই
তার গড়া মিয়ার চরের পাঠশালাটি মাথা উঁচু করে
জানান দেয় জন্ম ইতিহাস।
কাদির বেঁচে আছে লোকশ্রতির অমিয়ধারায়।
আমার পিতা বেঁচে নেই
তার সুকর্ম ও আশির্বাদে গড়ে যাই বীজতলা
আমিও হারাবো মাঘের শীতে কোনো একদিন
শোকে ফুল ফুটবে না, আকাশে উঠবে না চাঁদ
তবু কথা বলবে রেখে যাওয়া আমার সুবর্নীল স্বপ্নগাথা।
কবিতা পার্কের সাদা গোলাপ গাছটি সাক্ষী দেবে
সাক্ষী দেবে সুমিত্রা সারথি রূপম বুলবুল…..
বলবে, কবি মুস্তফা হাবীব আমাদের ঐতিহ্য ও গৌরব।
শত জনমের প্রেম
অনিন্দিতা,বলতে কি পারো
পৃথিবী এতো সুন্দর কেন? প্রেম আছে বলেই।
প্রেম আছে বলেই আকাশের বহুরঙ
চোখের তারায় জ্বলে ঝিকিমিকি, অপরূপ!
প্রেমহীন জীবন লাশকাটা ঘরের বীভৎস আখ্যান।
আমি সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করি,
প্রেম আছে বলেই নদীর জল অবিরল কলকল সুরে
রাঙায় হৃদয়ের মাস্তুল, তাই
শত জনম বেঁচে থাকার আকাঙ্খায় উদ্বেলিত মানুষ।
প্রেম আছে বলেই গ্রীষ্মের রৌদ্রে
ডানা মেলে পাখি অন্য পাখিটির সন্ধানে
আমি বেতসবন ছিঁড়ে এসে বসি তোমার মুখোমুখি ।
প্রেম আছে বলেই ফুলের গন্ধে আপ্লুত হৃদয়
শিলাবৃষ্টিও অপরূপ রূপে মানুষের মনে জাগায় শিহরণ।
অনিন্দিতা,
প্রেম ছাড়া মানুষ বাঁচে না, বাঁচে না পৃথিবী
বাঁচার জন্য হিয়ার অতলে পুষে রাখি তোমাকে,
এবং জনম জনম তোমাকেই চাই।
রূপ রূপান্তর
চাহিদার প্রয়োজনে সব কিছুই বদলে যাচ্ছে
রূপান্তর থেকে রূপান্তর হচ্ছে কালের তৃষ্ণা
মৌলিক উপাদান দৃশ্যের অন্তরালে।
মানুষের চরিত্রে নামছে পরিবর্তনের ঢল
যারা রাতে নিশাচর রমণীর শরীর ছুঁয়ে ক্লান্ত
দিনের আলোয় তাদের আলখাল্লা-অবয়বে
ক্ষমতার স্ফূরণ।
এক একজন অশ্বত্থ বৃক্ষ
তাদের অধীনস্থ পৃথিবীর সব ক্ষুধার্ত মানুষ,
তাদের মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা, বধ্যভূমির কঙ্কাল।