বিভ্রম
সত্যি বলছি ফিরে যাবো তোমার কাছে
যদি না ডাকতে পারো আগের মতোন
বুকের মাঝে আগলে রেখে ঠিক দেখাবো
ভালোবাসার নীল জোনাকি কেমন করে
পুচ্ছে নাচায়! অবলীলায় ছুড়তে পারে
লুসেফেরিন মাখা তীর কামনা।
এখন আমি ঠিক ভাবছি বসে কোন বাসেতে
যোগ্য আমি? কোঁচকানো ওই আদিম বসন
কার অপেক্ষায় জেগে থাকে! খোলস নিচে
অলস নদী দিশাহীনে ছুটতে থাকে। দেখো কিন্তু
আমার কাছে নেই সরঞ্জাম, শক্ত শাবল, আঠাল
পলি তোমায় দেবো, বিয়ানবেলায় হেঁটে যাবে
স্মারক চিহ্ন! যার জন্য হন্য হয়ে এক সময়ে
ছুটেছি আমি দিক- দিগন্ত।
চোখের চাঁদে শাদা মেঘের ওই আস্তরণ অন্য কিছু
বলছে যেন,কার দিকে ফের ফেলবো
ধার করা না হউক খয়রাতি আলো!
পোড় খাওয়া মনের অবুঝ কথা ইথার
ভেলায় ভাসিয়ে দেবো অনন্যোপায়ে।
তুমি
তোমার কাছে যেতে তো চাই কিভাবে যাই বলো
মনটা ও যে উড়াল পাখি আকাশ পেলে হলো
গহীন বুকে হৃদয় নীলে ডানার ভাসা আঁখি
কতটা পথ পেরোতে হবে স্বপ্ন বুকে রাখি!
তোমাকে ছোঁব গভীর আশে পথের মাঝে রই
এক জনমে হাজার দুঃখ ফুরালো আর কই
মন -পাড়াটা দ্বিখ-িত সীমা রেখায় ভুল
চাষের জমি বর্গা হলো বিষ প্রণয়ে ফুল।
আদিখ্যেতা তোমার বেশি অধিকারের লোভ
চোখের কোণে গ্রাসের ছায়া বেড়েছে শুধু ক্ষোভ।
এই বেলাতে দৃশ্যপটে তোমার ছবি ভাসে
অতীত তাই গুমরে মরে পোড়া মনের বাসে।
অভাব
সবাই একবাক্যে বললো তর্কে লাভ নেই
মাসের বাজারটা দেখো নাগালের বাইরে
কম টাকায় কী কিনবে?সস্তা কিছু নাইরে
পকেটের যে অবস্থা!ও, জানে না কেউ
গিন্নির মুখ ঝামটায় হ্যাঁ! হারায় খেই
ফর্দ তো পদ্য বোঝে না শূন্যে থলি উড়ে
টাকা কাগজের ঘুড়ি বোকাট্টায় ঘুরে
এ হাতে ও হাতে চুমু লভ্যাংশ পেলেই।
আমাদের কেনা হয়না চাহিদা মেটে না
দ্রব্যমূল্যে ও রাজনীতি দূরে লম্বা লাইন
জয়নুল এঁকে গেছে ক্ষুধার্তের পাইন
উঁচুতলার টেবিল ওসব মানে না।
কসম খেয়েই বলছি হেমলকই চাই
অন্তত ওটাই খাই ক্ষুধাটা মেটাই।
রোজনামচা
বের হবো বললেই বের হওয়া যায় না
প্রয়োজন ও কেউ বোঝে না! বুঝতেও চায় না
কোনরকমে বুঝতে পারলেই হলো,
উড়ে আসে একের পর এক খিস্তির ঢেউ
‘রইদইত তো বাইর হইবার লাই বিববিয়্যর
মাথার খোট ওডিলে কনে চায় আজিয়া চাইয়ুম!
গরমে ঘরত মানুষ থাইর ন পারের তেঁই যাইত চার্দ্দে আড্ডা দিবার লাই ‘
মন খারাপের দিন আর নেই,অভিমান নির্বাসিত
সময় কোনদিন আমাদের কথা শোনেনি
আমি আজ বিরোধী দলের!
প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণেই মেতে আছি
নিয়ম ভেঙ্গে চলেছি!
সময় তো অতীত ফিরিয়ে দিতে পারে না কেবল
ছুটে চলে অনন্তের পানে।
আমি রোজ অতীত আঁকতে যাই বিষণœ রোদে
ইজেলে টাঙিয়ে রাখি হাত থেকে ফসকে যাওয়া
বর্ণিল চিত্র, রঙ তুলিতে আঁকা নির্বাক বিবর্ণ চোখ।
পাতকুয়ার পানি
অনাবৃষ্টি কর্ণফুলী নদীর জলে লবণ ঢেলে দিলে
মিঠা পানির মীন হাঁসফাঁস করে উঠলো
অতিষ্ট জীবন চললো পাতালের খোঁজে
কত গভীরে গেলে জলের পাতায় লেখা হবে
সরল জীবনবোধ।
মানুষেরা ফিরে যেতে চেয়েছিলো পাতকুয়ার কাছে,
প্রাচীনরা এভাবে ফিরে আসে নতুন কারুতে
শব্দতত্ত্বের পাতায় নতুন সংযোজন
ডিপ টিউবওয়েল।
আমাদের প্রেমের কবিতা ফুরায় না
আলোকমালায় ভেসে ওঠে তোমার মুখ
ওই মুখ দেখতে দেখতে পুনরায় লবনাক্ত ¯্রােতে
দীঘল সাঁতার। কালিন্দী’র দীর্ঘ প্রতিক্ষা নির্বিষে
সুন্দর চেয়ে থাকে অন্তহীন আবর্তে।
লড়াই
আরো যে এগুতে হবে জানাই ছিলো না
কতদূর গেলে দেখবো পথের ঠিকানা
কতোবার সূর্য উঠলো ডুবলো প্রতিবারে
আলোক এনেছে ধরে এপাড়ে ওপাড়ে।
প্রবল সংগ্রাম পরে গাঢ় অবস্থান
পৃথিবীর চেনা-মুখ আর তার গান।
অন্ধকার ঘুচে যায় তুমুল লড়াই শেষে
সবুজ নিশ্চিত প্রাণ ফিরে ফিরে আসে।