বিপন্ন অণুভূতি
সীমাহীন অন্ধকারে নিবিড় সতর্কে পা ফেলে চলা ভালো; নয়তো
ইতিহাসের দায়িত্বহীনতা, নির্বিকারত্ব ঘাড়ে চেপে বসে।
এ অন্ধকার ব্যক্তিক সৃষ্টি হীনস্বার্থ চরিতার্থে দৃশ্যমান
প্রমাণগুলো সব কথার বাতাসে উড়ে উড়ে যায় আঁচড়
লাগে না শরীরে। এখানে জড়ো হয়ে মিথ্যাকে বেছে নেয়ার
বিপন্ন অনুভূতি সত্য খোঁজার উদাসীনতা চেহেরায়Ñ
চরিত্রে সামান্যও দাগ লাগে না। এমনই কাটছে আজকাল।
———————-
রাহুগ্রাস
শব্দটা শুধু আমাদের এই পেছনেই জোড়া লেগে থাকে
আরো আরো শব্দগুচ্ছ আমি তুমি আর আমরা তোমরা,
এক একটি শব্দ নিয়েই আমাদের শব্দটি উচ্চারিত।
আমাদের ভাষা এখন রাহুর কবলে। পাঁচমিশালি কিন্তু
ব্যঞ্জন নয়, সঙ, বহুরূপী অভিনয়। পাঁচমিশালি ব্যঞ্জন
স্বাদে-গন্ধে চমৎকার। সঙের বহুরূপী সাজ উচ্চারণের
টানের কৌশলে কি আগামী দিনের গোপন ইশারা?
গোত্রের রক্তের জিন পরম্পরায় আবারো অন্ধকারে
ঘাতক হয়ে ওঠার মহাপরিকল্পনা নয়তো?
—————————-
কিছু কিছু মানুষ
রক্তের জোয়ার কবে থেমে গেছে, শীতল শরীর কিন্তু
মনোবারান্দায় কামনা-বাসনা, লোভ-মোহ সব সূর্যের
তেজে তেজস্ক্রিয় হয়। না পাওয়া গল্পের বেদনাগুলো
সাথে সংযুক্ত হলে চতুর্ব্যূহ ভেদ করে ক’জনাই বা পারে।
বের হয়ে আসতে? সময়ের সাথে লড়াই এক ভয়ানক
বলা যায় এক অদ্ভুত ইচ্ছেসূচি হৃদয়টা যেন কেমন
প্রতিমা বিসর্জনের সময়বাস্তবতায় মানুষের সামনে
মানুষকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। বহুকাল আগে
শিরদাঁড়া সোজা রেখে বীজমন্ত্র নিয়ে মানুষের সামনে
এক-পা এক-পা করে হেঁটেছিলো, ওরাই, হ্যাঁ- ওরাই
কালের খেয়ায় দেখি দুঃখ-কষ্ট আর অসহায়ত্বকে
প্রাপ্য হিসাবে মেনেছে ছায়াঘুমে স্বপ্নদেখে মানুষেরা
সময়ের ¯্রােতে রক্তক্ষরণের সাথে বন্ধুত্ব করেই বাঁচে।
এ বাঁচাতে ক্ষুধাা মিটে; কিন্তু স্বপ্নগুলো আলোছায়ায়
লুকোচুরি খেলে। সময়ের সাথে তাল মেলাতে লোভ
গ্রাস করে চিন্তাকে মোহের জালে মাকড়সার মতো
ঝুলে থাকে অসার। এক সময়ে প্রাণহীন; নিস্তেজ।
————————-
চার নিষেধাজ্ঞা
অনুভূতির গভীরতায় বোঝার যারা বোঝে কেউ হয়তো বা
নীরবে হজম করে মুখ ফস্কেও বলে না, ব্যক্তি চিন্তায়
অন্য কারো হস্তক্ষেপ সমাজের জন্য শুভ হয় না।
নিষেধ আর নিষেধ, কুঁকড়ে থাকে মন বেজায় রকম
ভয় দানা বাঁধে বুকের গ্রন্থিতে। সবাই কেমন আশ্চর্য!
নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল থেকে বের হবার জন্যই তো
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। যুদ্ধজয়ের প্রাপ্যতা রাষ্ট্র-দেশ, বাংলাদেশ।
আত্মপরিচয়ের অহংকারে সবার ললাটে টিকার চিহ্ন,
অসামান্য প্রাপ্তিতে খুশির ফোয়ারা, কতো উচ্ছ্বাস,
কতো উজ্জ্বলতা। আজকের দিনে এসে মনে হয় সবই
আত্মবিড়ম্বনা। নিজের সামনে আয়না রাখি, প্রশ্ন করি;
পৃথিবীর পরিবর্তনে রাষ্ট্র ও মানুষের পরিবর্তন ঘটে।
এটাই তো সত্যি, নাকি? চোখ দিয়ে দেখো সঙ্গবদ্ধ হয়ে
কিছু কিছু মানুষের ইশারা-ইঙ্গিতে শুধু নিষেধাজ্ঞার
কুয়াশা-প্রলেপ চোখে চোখ রাখলেই ধরা পড়ে নির্ভুল।