সিডনি থেকে অপু বড়ুয়া
স্বপ্নের দেশ অস্ট্রেলিয়ার সিডনি প্রত্যাশা ওয়ার্ল্ড আয়োজিত সিডনির ইঙ্গেল্বর্নে প্রতিবছরের ন্যায় রঙিলা পহেলা বৈশাখ ২০৩১ বাঙলা ১৪ই এপ্রিল দিনব্যাপী জমজমাট ভাবে উৎসবটি পালিত হয় নাচে গানে কবিতায় আর আড্ডায়। সিডনিসহ আশে পাশের বেশ কিছু স্থান থেকে বাঙালিরা আসতে থাকে অনুষ্ঠান স্থলে ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবি লুঙ্গি পরে গামছা কাঁধে নিয়ে। চিরচেনা বাংলাদেশের ঢাকার রমনার বটমুলের আদলে নির্ধারিত এলাকাটি সাজানো হয় বর্ণিলভাবে। বাঙালির ঐতিহ্য ছনের ছাউনি কুঁড়েঘর, ঢেঁকি, মাটির চুল্লিতে মাটির হাঁড়ি পাতিলে রান্না করে খাওয়া, মিষ্টি জর্দা ও পান সুপারির আয়োজন,ভাঁপা পিঠা বানিয়ে গরম গরম খাওয়া, তাসের খেলা, ক্যারাম প্রতিযোগিতা অনেক আনন্দময় ছিলো। প্রতিকি বিয়ের আয়োজন ছিলো মনোমুগ্ধকর, বরযাত্রীর আগমন, বিয়েতে মাটির পাত্রে খাওয়া, হরেক রকম ভর্তা,সবজি,শুটকি মাছ রান্না মুড়ি বিস্কুটের দোকানে বাদাম কলা,মোয়া চা দিয়ে খাওয়া, ঝাল মুড়ি,চটপটি সর্বোপরি পান্তা-ইলিশ খাওয়াটি ছিলো মনলোভা কার আগে কে খায়। তবে সব আয়োজনের মধ্যমনি সবার প্রিয় রাসেল ইকবাল ভাই এবং প্রত্যাশা ইকবাল ভাবি। মোরগ মুরগির বাসা, বাচ্চাদের খেলার টমটম, চার বেহারার পালকি,সুদৃশ্য মঞ্চে চলে বাংলার গান। সিডনির স্বনামধন্য শিল্পীদের গাওয়া ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো‘ সেই বিখ্যাত গানটি কোরাস গেয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করা হয়। বনফুল বড়ুয়া চমৎকার গায় সাথে আমিও গাইলাম গলা ছেড়ে একর পর এক। ঢোল বাজনা ছিলো মজাদার তালে পরিপক্ক। কাঁসর সানাইয়ের সুরে মোহিত করে তোলে এলাকাটি। হৈমন্তী বড়ুয়া হিমুর গায়কি ঢং চমৎকার কোরাসে নেতৃত্ব দিয়েছে অনেকের মতো। নন্দিত কন্ঠশিল্পী সাকিনা আক্তার এর কন্ঠে প্রতিটি গান অসাধারণ দর্শক নন্দিত। কন্ঠশিল্পী মিসেস লুরনিয়া একের পর এক গান গেয়ে উপস্থিত দর্শকদের মোহিত করে রাখে তাল লয় উচ্চারণ গায়কি ঢং ছিলো অসাধারণ। দর্শকদের খইফোটা করতালি বেশ জমে ওঠে অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় অনেকের মতো পবিত্র বড়–য়াও ছিলো বেশ আন্তরিক। ছোট্ট শিশু হিয়ান বড়–য়ার মিহি কণ্ঠে বাংলা ছড়া আবৃত্তি ভালো লেগেছে। অনামির মতো ছোটরা ব্যস্ত দোলনায় চড়া নিয়ে সবাই খুব হাসিখুশিতে অমলিন। বরাবরই প্রতিবারের মতো প্রত্যাশা ইকবালের নন্দিত উপস্থাপনায় প্রতীকি বিয়ের আয়োজন ছিলো অনুষ্ঠানের বাড়তি পাওয়া। বিয়ের আয়োজনটা হাস্যরোলে দর্শদের পেটে খিল ধরিয়ে দিয়েছেন বলা যায়। অনেকে আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন।
অনেকে জানান-আমরা প্রবাসে থেকে আমাদের কচি ছোট ছেলে মেয়েদের বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি না। প্রিয় রাসেল ইকবাল ভাই এবং প্রত্যাশা ইকবাল ভাবির আন্তরিকতার বহিপ্রকাশ সুদূর সিডনির মাটিতে এক টুকরো বাংলাদেশের ছবি বাস্তবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমরা আন্তরিক অভিনন্দন জানাই সাহিত্য সংস্কৃতিমনা যুগলদের। আমরা প্রত্যাশী আগামিতে আবারো রঙিলা বৈশাখের আয়োজন হবে আমরা উপস্থিত হবো স্বতঃস্ফূর্তভাবে আত্মীয়স্বজন নিয়ে স্বপরিবারে বাংলাকে দেখতে বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধারণ করতে।