হিরণ্ময় গঙ্গোপাধ্যায়:
পলাশ গাছগুলো, কত বছর বয়স কে জানে, অন্তত গাঙ্গুলি অমনি সাইজেরই দেখেছে চল্লিশ বছর আগে। পলাশ গাছ বড়ো শম্বুক গতিতে বাড়ে। মাটিতে ফুল ছড়িয়ে সে পলাশ তার সাবালকত্ব জানিয়ে যাচ্ছে।
সব গাছগুলো কাট। শালারা ছড়িয়ে পড়েছে মূল জমিতে, যেন বাপের জমি!
আগ্রাসী পলাশের গোড়ায় ভয়ঙ্কর আক্রোশে কুড়ুল চালায় গাঙ্গুলি। পৃথিবীর প্রথম শস্যক্ষেত্র এ জাতীয় ভয়াবহ আক্রোশের বীর্যেই ভূমিষ্ঠ, লহমায় আবিষ্কার করে গাঙ্গুলি। অর্থাৎ, প্রতিটি শস্যক্ষেত্র, প্রতিটি মন্দির বহু বৃক্ষচ্ছেদনের এক একটি জাগ্রত সিমেট্রি! ইতিহাস তাহলে আগ্রাসনের কাহিনি, আত্মত্যাগের কাহিনি, বিজেতার গৌরবময় পারদর্শিতার ক্রনিকল। ভূমি আগ্রাসী পলাশ গাছগুলি, যারা এখন ভূপতিত, তাদের পায়ে ক্রুদ্ধ কুড়ুল চালাতে চালাতে কীভাবে যেন, আচানক সেই খুনেড়া কুড়ুল ছিটকে পড়ে পায়ে, ফিনকি দিয়ে রক্ত গড়ায়। রক্তের বিরাজমানতা। বর্তমানে রক্ত তো মৃত, আগাছার মতো রক্তস্রোত কেবল সুগারে উজ্জীবিত। ভাসমান লোহিত কণিকা।
লখিরাম এক টুকরো কাপড় পুড়িয়ে রক্তে লাহন জায়গাটায় চেপে ধরে। রক্ত কি বন্ধ হবার স্রোত? বিশ্ব হয়ে ওঠার পর থেকেই রক্তপাতে স্লিপ খেতে খেতে বেয়ারিং-ভাঙা চাকার
মতো ঘুরছে, পৃথিবী।
ছাড় ছাড়, টেটভেক নিয়ে নেব।
ওসব ওল্ড কনসেপ্ট চলে না আজকাল।
কাপড়ে কটন নেই, সিনথেটিক
তবুও লখিরাম চেপে ধরে ছাই, তোকে গাছ কাটতে কে বললো?
বসে বসে দেখ কেন্নে।
তুই বড কনঝড়।
কঙ্কা, লখিরামের বড়ো বেটা একগোছা দূর্বাঘাস চিবিয়ে থেঁতো করে রক্তের ওপর চেপে ধরে।
ইবেরে রক্তের বাপ থিরাই যাবেক, ঠাকুর।
তবে একটা ইনজিকশন লিয়ে লিবি দিন ফুরাবার আগু।
মাকে ত গ বলিস, বাপের সাঁওতালি কি? থতমত লখিরাম তৎসহ তার পুত্র নীরব আর নতহাস্যমুখ।
জানি নাই। বাবা বলি ত আমরা।
এ ভাবেই সংস্কৃতি মরে।
বুঝলি কিছু?
এখন, তোরাও আর ঘাসঘাসালির ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছিস নাই!
ভালো লাগছে।
অধঃপতন সবসময়ই সুদৃশ্য।
ছাড়!
ডাক্তার দেখিয়ে নেবো।
রক্ত দিয়েই আমাদের কর্মধর্ম। তোদের মারাং বঙার কাছে মুরগা বলি দিসনা?
দমকা হাওয়ার মতো লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে কেন যে গাঙ্গুলি বললো, আমি তো মুরগাই রে!
বলিনিমিত্ত পয়দা হয়েছি।
লখিরামের বেটা, শুনলো না, মোপেডের পেছনে বসিয়ে চললো হাসপাতাল।
ভেবেছিলো, এইসব কর্পোরেট-শাসিত বস্তুজগৎ থেকে বেরিয়ে গেলেই আদিম স্তব্ধতায় পৌঁছে যাবে, অদালিতে। কিন্তু অনন্ত চিন্তাজগতের কাছে মানুষ বড়ো অসহায় প্রাণী, বড়ো আদিম। সবচেয়ে প্রাচীন বস্তু মৃত্যু, সেটাকে বহন করছে প্রাচীন প্রাচীনতম টিকে-যাওয়া জন্তুজানোয়ারের মতো। যতক্ষণ যুক্তি আছে, মানুষের সাথে মানুষের কথালাপ চালানো অসম্ভব। মানুষীর সাথে কথালাপ চালানো যেতে পারে যৌন অঙ্গে যৌন অঙ্গে। মানুষের সাথে?
হোমোসেফিয়েন্সের হোমো দুর্বলতা থাকবেই। মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কটা তাহলে একটি উৎপাদনহীন রিলেশন! সম্পর্কের বিনাশ।
মোটরসাইকেল নিতে গিয়ে সাইকেল নিলো স্তব্ধতা বিঘিœত হবে বলে, সেটাও রেখে দিয়ে, পয়দলেই পৌঁছাতে চাইলো সেই স্তব্ধতায়; কোথায় কী! পৃথিবীটা ইতিমধ্যে কত পাকচক্রে ঘুরেছে নিজের চতুর্দিকে কতবার বুড়ি ছুঁয়ে গেছে সূর্যকে, নিশ্চিন্ত নিরাপদ জীব গাঙ্গুলি অনুমান করে নি। সারা গ্রামে পিএমএজে-র পাকা বাড়ি, এ-দেয়ালে নকশা আঁকা যায় না, ভোটের প্রতীক আঁকা যেতে পারে। হাস্যমুখ মোদিদিদির ফটো সাঁটা যেতে পারে। সারি সারি নির্মল ভারত দাঁড়িয়ে আছে এক একটি সিমেট্রির মতো। পায়খানার মৃত্যু। তবু, শালা আদিবাসী, গ্রামীণ ভারতকে আর ইয়োরোপ আমেরিকা হতে দিলো না। গ্রামছাড়া ওই রাঙামাটির পথ হারিয়ে গেছে মহাদিকচক্রের বালে। রাস্তার রং তবে কালো। হরপ্পা সভ্যতা ধ্বংসের পর ১৯৭৭ সালে আর্য-দাবিদার পঞ্চায়েত বাবুরা অদালির সাঁওতালদের জানালো, তোদের গাঁয়ে ঢোকার কোনো পথ নেই। পঞ্চায়েত রাস্তা বানিয়ে দেবে। এর ওর জমির আল, অতএব বড়ো আঁকাবাঁকা একটি পথ রাস্তা হলো, প্রথমে মাটি, এখন রাজপথ ; প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় পিচ মোড়া। যে নালাটি ছিল তাদের পুকুরের আউটলেট, তার ওপর সুদৃশ্য নীলসাদা অনুপ্রেরণার কালভার্ট, নদীর মান্যতায় আকাশের নিচে শুয়ে আছে। ঠিক দুটি দিকুর মতো দুটি হড় জিন্স আর চে -আঁকা জ্যাকেটে মোবাইলে, হিন্দি গান, বাতাসে পেট্রলের মহক।
লখিরামের বাড়ি গিয়ে গাঙ্গুলি জানালো, আমি ঠাকুরের মারাং বেটা।
তুর ভাই তাহালে আসবেক নাই?
না। এবেরে আমিই জমিদার।
বড়ো মনোরম হাসলো লখিরাম।
বাম আমল থেকে বর্গাদার লখিরাম জানে, জমির মালিক কেউ না, ভাগিদার মাত্র, তা সে গাঙ্গুলি হোক আর না হোক।
ভাই বলেছিল, লখিরাম চাষ করে যতোটা, তার তিনগুণ জমি পড়ে আছে অচষা, অযতেœ অবহেলায় সে আর জমি নেই, তড়াগড়া। পঞ্চায়েত প্রধান অভয় দিয়েছেন, আপনি নিজে চাষ করুন যে জমিগুলো পতিত হয়ে আছে। বর্গাদারের কিছু করার নেই।
জমির মাথায় একটিমাত্র সুবিশাল শারজোম বৃক্ষ দ-ায়মান, পরদাদার আমল থেকে, অতন্দ্র জাগ্রত প্রহরী সে বৃক্ষের কত বাকল খসে গেছে তার চিহ্নসমূহ ঠিক মাটিতে। বাস্তুবৃক্ষটিকে প্রণাম করে জমিতে পা রাখতে পিতৃদেবকে দেখেছে গাঙ্গুলি, গাঙ্গুলিও আভূমি প্রণাম করেই টেরিটরিতে প্রবেশ করে।
বড়ো বিস্তারে ঝুরঝুরে রোদ হাওয়ায় উড়ছে, তারই ছিটেফোঁটা গাঙ্গুলির মুখে ও চোখে। চোখটা কিরকির করে ওঠে, এই সমস্ত জমিগুলোয় ফসল হবে? বন্ধ্যা নারীতুল্য অনুর্বর গতর, এতবছর লাঙ্গল ঢোকেনি! ৪০ বছর পর তো নারী কনসিভ করে না।
অদালির এইসব জমিগুলো পতিত হয়ে পড়েছিল তা চার দশক, বাবা মারা যাবার পরই। জমির মাথায় দাঁড়াতেই, গাঙ্গুলির পিতৃভক্তি খোলা মেঠোহাওয়া, রোখ চেপেছে সব জমিগুলোকে ঋতুমতী করে তুলতে হবে। মানুষ বড়ো ভুখা।
সারা পৃথিবীতে খাদ্য সঙ্কট, কোনো জমি পতিত রাখা মানে কারও অন্নসংস্থান বন্ধ করে দেওয়া। খাদ্য উৎপাদনের জন্যই তো বন কেটে আবাদ গড়েছিল মানুষ, পুনরায় তাকে বন হয়ে উঠতে দেওয়া সভ্যতাবিরোধী। অতবড় আমাজন, নাকি পৃথিবীর ফুসফুস, মানবকল্যাণেই তো হাসিল করতে হয়েছে?
সভ্যতাবিরোধী অনুপ্রবেশকারী পলাশ গাছগুলোয় গাঙ্গুলি রক্তাক্ত আক্রোশে কুড়ুল চালায় আর জমির শরীর থেকে অল্প অল্প পোশাক খসে পড়ে; বিবস্ত্র সেই জমির দিকে তাকিয়ে গাঙ্গুলি সৌন্দর্যমুগ্ধ। বিউটির ম্যাসাকার করার ক্ষমতা আছে। এক্সটার্নাল বিউটি থেকেই ভালোবাসা জেগে ওঠে, ইনার বিউটিতে প্রবেশের মুখে উত্থিত পেনিসও নেতিয়ে যায় চরম বিপর্যস্ত ভয়ে। ভয় কাটানোর সময় কোনো সৌন্দর্য কখনও কোনো প্রেমিককে দেয় না। ভয়াবহ মনোবল ছাড়া সর্বার্থসাধক সঙ্গম হয় না, ধর্ষণও হয় না। ধর্ষক কখনো যৌনতৃপ্তি পেতে পারে না। বীর্যস্খলন করে মাত্র।
বিপর্যস্ত গাঙ্গুলি হাতের কুড়ুল নামিয়ে থরথর করে কাঁপে সৌন্দর্যের বিপর্যাসে। বিশাল বিবস্ত্র যুবতী, অন্তত ১০ একরের বিস্তারে তার নিতম্ব নাচায়।
গোটা পলাশঝোপের জমিটা স্টুডিওর লালে লাল কাঁচা রোমান্টিক সেট, এখন। শনশন বাতাস তদুপরি দৃপ্ত ফাগুনে-রোদেলু আকাশ, টিকে-আছে প্রজাপতিটি পলাশ ফুলে, জানান দিয়ে খুচরো কিছু পাখি আর অরণ্যের চিহ্নস্বরূপ একটি মাত্র শারজোম বৃক্ষ দৃশ্যপটে। সৌন্দর্য বড়ো বীজন বড়ো বিপিন বড়ো নির্জন বড়ো একা। সৌন্দর্য তাই বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে না।
গিন্নির প্ররোচনা, এতো এতো টাকা নিয়ে যাচ্ছে চাষ-খরচা বলে, নিজের আই দিয়ে যাচাই করে এসো। গাঙ্গুলি আই দিয়ে যাচাই করতে এসে আজ এক সপ্তাহ অদালির গরু-না-চরা গোঠে। কতকাল সংগম বঞ্চিত নারীটির মতো শুষ্কযোনী সে-মাঠ দেখে তার লিঙ্গ চালনা করতে কামনা জাগলো। উত্থিত লিঙ্গ নিয়ে তখন গাঙ্গুলি মত্ত, তখন গিন্নির মারমার ফোন বাজে, গাঙ্গুলি রিসিভ করে না। মোবাইল কী খুব এসেন্সিয়াল সাবসটেন্স? মোবাইল তো ভার্চুয়াল সেক্স পটিয়সী, ইথারে ইথারে বীর্যক্ষেপ। গৃহিণী তো জানছেই গাঙ্গুলি এক খচ্চর লম্পট, যাতে মন ফ্যালে সর্বহারার মতোই রিক্ত না হওয়া পর্যন্ত সে কামনার বাকল খসায়। মন বসেছে বলেই ঘরে ফেরার গা করেনি তাহার তার সবেধন চরিত্রবিহীনটি।
সারা আকাশ ডালপালা মেলে বোধিদ্রুম গাঙ্গুলির মাথার ওপর; একটি পিপাল ট্রি, বৃক্ষমূলে গৌতম সদৃশ ধ্যানমগ্ন গাঙ্গুলি, সন্ন্যাসী সদৃশ একটি বিড়ি ধরায়। আসার আগে গৃহিণীকে বলেছিল, গৃহত্যাগ করছি।
কি দরকার সন্ন্যাসে? গৃহী থাকাই তো নিরাপদ। এতবছর পর আর গৃহত্যাগ করে কী হবে?
কোন নবধর্ম প্রবর্তন করবে, প্রিয়তম? জমিদারিতে কি ফল লভিবে?
মাটি কারো বাপের নয়, পৃথিবীর, পৃথিবীতেই থেকে যাবে।
বড়ো মোক্ষম দর্শন ভার্যামুখ-নিঃসৃত। অর্থপূর্ণ বরফশীতল একটা টেরিবল মেটাফিজিক্যাল বন্দিত্বের রিয়ালাইজেশন, জগতের বাইরে জগৎ ছাড়া দ্বিতীয় কোনো জগৎ নেই, গাঙ্গুলি লহমায় বোঝে। যেন এক কারাগার থেকে আর কারাগারে স্থানান্তরিত হওয়া একজন বন্দি সে।
মাটি কী জিনিস, সান বাধানো ফ্ল্যাটজীবী গৃহিণী বিবাহ-পূর্ব, বিবাহ -পরবর্তী, কৌমার্য ও সঙ্গমদক্ষ দাম্পত্য জীবনে, কোনো কালেও, জানেনি, কখনো জানতে চায় নি, মাটি থেকেই ফলে যাবতীয় আবাদ, এমনকী পিৎসা মটন বিরিয়ানিও। গাঙ্গুলিরও ঔদাসীন্য তার বয়স। ৬০+। ছেলে জিন্দেগিতে জমিজায়গা পিতৃপুরুষের ভূসম্পত্তি দেখলো না, মায়ের প্ররোচনায়। পৃথিবীর গতি একশো গুণ বেড়ে যাওয়ায় জমিজমা দেখার সময় কোথায়? পুত্রও বোঝে, যাহা কর দেয় না, তাহাতে রাষ্ট্রের আগ্রহ নেই। জমির উৎপাদনকে করের আওতায় আনতে রাষ্ট ফ্রিতে হাই ইয়েলডিং ধান দিয়েছে, সার দিয়েছে ফ্রি যেমন প্রথম দিকে চা খাইয়েছে ফ্রি, যেমন মোবাইল ডাটা ছ-ছটা মাস ফ্রি দিয়েছে আম্বানির জিও কোম্পানি। কিন্ত খাদ্য কর্পোরেটবাবুদের কাছে প্রিয় বাণিজ্য, রাজনীতিকদের কাছে প্রিয় একটি পলিসি। বেদে বলেছে অন্নই সব শক্তির মূলে, মাটি মা। স্রিফ মাটি, এই একবিংশ শতাব্দীতে নব উপলব্ধি, একা মাটি কারখানা তুল্য মুনাফা দিতে পারে। সকলকে প্রকৃতিমুখী হতে হবে। কিন্তু, মানুষের শস্যের কোনো প্রয়োজন নেই যদি অরণ্যের ফল পুষ্করিণীর জল অটুট থাকে। স্থবির এই ব্যবস্থাটিকে তছনছ করে রুপিয়ায় কনভার্ট করে দেওয়ার নামই সভ্য রাষ্ট্রব্যবস্থা। অনিঃশেষ এক দ্বন্দ্বে গাঙ্গুলির চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছে, কেন অতিরিক্ত ফসল ফলাবো তবে কেবলমাত্র ট্যাক্স পে করার জন্য?
গাঙ্গুলি জানে, তার মৃত্যুর পর জমিটা পুনরায় অধিকার করে নেবে শায়িত পলাশবৃক্ষের প্রতিশোধকামী বংশধররা, আবার কৌমার্যে ফিরে যাবে বসুন্ধরা। যেমন তার বংশধর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিজের অজ্ঞাতেই এই প্রজন্ম, লড়াকু। রাষ্ট্রস্বার্থে নয়, নিজের প্রয়োজনে সে রাষ্ট্রের মুখে মুতে দিয়ে চলে যাবে রাষ্ট্রহীনতায়।
বুঝলি লখিরাম, আমরা জেনেটিক্যালি বাঁদর, আমাদের শরীরের অভিযোজন হলো শাকসবজি। মাংসাশী আমরা নই। আমাদের স্টোমাক মাংস নিতে পারে না। এক্সট্রা এনজাইম লাগে। সেটা আমাদের শরীরে নেই।
আদিম মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে প্রথম গেছলো তার খাদ্যাভ্যাস বদলে। মানে, মাংসাশী প্রাণীর দেখাদেখি পশুশিকার করে। অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে এটাই একটা প্রধান কারণ।
মাংসাশী স্ত্রী বললো, সেটাই তো বলছি। মুনাফা লাও, ফসলকে রুপিয়ায় কনভার্ট করে আসানসোল চলে এসো।
কী দরকার অসভ্যতায় পড়ে থাকার?
প্রকৃতপ্রস্তাবে গাঙ্গুলি এসেছিলো ধান ঝাড়াতে। অক্ষতযোনী মাঠ দেখে তার তাত্ত্বিক মন সভ্যতাবিরোধী হয়ে উঠলো নস্টালজিয়ায়। বাবার আমলে মাসাধিককাল পিকনিক হোত ধান ঝাড়াইয়ের সময় খামারে। খড়ের অস্থায়ী একটা তাবুর ভেতর গাদাগাদি করে ভাইবোনেরা গলা জড়াজড়ি করে রাতে শুতো। ভাইবোনের গলাগলি করে শোয়ার ক্ষণিক দিনগুলি, দিদিরা বড়ো হয়ে গেলে তাকে ঝেড়ে দিলো, আর জড়িয়ে শুতো না, জড়াতে গেলে ঠেলে সরিয়ে দিতো। গাঙ্গুলি কি সত্যিকারের জড়াতে চেয়েছিল তাদের? আকাশের নীল আর একেবারে হাতের নাগালে থোকা থোকা ঝুলন্ত তারা ফুটে থাকতো রাতভর। আকাশী নীল চাদরে কত তারা তুলে এনে তাঁবুর সারা বিছানায় ছড়িয়ে দিয়ে নরম চাঁদের বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যেতো দিদিদের কোলের ওমে। সে ওমে এত পুড়ে যাবার ভয়!
জমিজায়গা চাষবাসের সঙ্গে গলা জড়াজড়ি করে এখন শুতে গিয়ে দেখছে সব তারাগুলো মগডালে। চাঁদ পালিয়ে পালিয়ে দুয়ো দিচ্ছে। তার শৈশবের জমিজিরেত চাঁদতারারা সব্বাই তার দিদিদের মতো কামনাবাসনায় টুরটুরে থেকেও সতীসাধ্বী বড়ো হয়ে গেছে। কেবলমাত্র একটি বৃহৎ বিস্তারিত ভূমিপত্র নিয়ে সন্তুষ্ট গাঙ্গুলি এতদিনে জানলো, ভূমি মা হলেও সঙ্গমযোগ্য। এখন গৃহিণীও বলছে, সত্যি জমিতে অনেক খড়াব আছে।
ধান ঝাড়াই শেষ হতে ১০/১২ দিন লাগবে। পিতার অনুসরণে একটি খড়ের তাঁবু বানিয়ে, পিতার অনুসরণে পিকনিক করার সিদ্ধান্ত নিলো। পাথর দিয়ে উনুন বানাতে বললো লখিরামকে, শুকনো কাঠকুটো জ্বালিয়ে ভাত চড়ালো। ফুটে ওঠা হাঁড়ির ঢাকনার কানায় কানায় বাল্যকাল অথচ সেই আশ্চর্য ভাতের গন্ধটা নেই।
পিকনিক কি একা একা হয়?
সময়টা যে হারিয়ে গেছে, সর্বত্র তার প্রতœচিহ্ন, গিন্নিকে ফরমান পাঠালো, চলে এসো, পিকনিক মানাবো। খাঁটি টাটকা খেজুর গুড় খেতে খেতে জিন্দেগিকে চিয়ার্স জানাবো।
গিন্নিও তো জানে কতখানি স্বার্থপর প্রেমিক সে, কতখানি সেলফিশ হ্যাজব্যান্ড। প্রত্যহ হারিয়ে যাওয়া খিদেয় টুরটুরে লোককে তাতিয়ে দিতে একটি নারীশরীরই যথেষ্ট। গৃহিণী তার উন্মুক্ত স্তনযুগলের সেলফি পাঠালো, এখানের পিকনিক তোমাকে মিস করছে।
ভাত খেতে খেতে ধানের ফলন, দু ফসলী তিন ফসলী , খাদ্যাভাব, সবুজ বিপ্লব, হাই ইয়েলডিং বীজ সার কীটনাশক ইত্যাদি ইত্যাদি মাথার ভেতর যত বিষ ছিল লখিরামের মাথায় ঢেলে দিয়ে লখিরামকে সরাসরি প্রশ্ন করে, তোর কী কী অসুবিধা বল, চাষ করতে?
একটা পাম্প কিনে দে।
ব্যস?
লিবি।
একটা ট্রাকটারও কিনে দে।
খিল জমিগুলোকে চাষযোগ্য করে দিতে হবে। সারা বছর চাষ করতে হবে।
করবি?
ঘাড় দুমড়ায় লখিরাম, কেনে করব নাই?
গাঙ্গুলির মাথায় তখন বাপের আমল। জমির সর্বত্র শস্য লাবণ্যে পূর্ণপ্রাণ লাফদড়ি খেলে মাঠময় ধান গম সরসে অড়হর বিরি বেগুন আলু পেঁয়াজ লঙ্কা নুন আর পোস্ত ছাড়া কিছুই কিনতো না সে দুদস্যি বৈষয়িক বাপের সংসার। স্বয়ম্ভর একটি কৃষি ব্যবস্থার চিত্র, সিপিয়া কালারের গাঙ্গুলির মাথার ওপর মেঘযুক্ত আসমান। কড়াৎকড় বিজুরিরেখা।
সবুজ বিপ্লবের পোকায় কাটা গ্রিনের দিকে তাকিয়ে গাঙ্গুলি, লখিরামকে ওয়াচ করে, পারবি?
কেনে পারব নাই! দুটা পয়সা কামাই হবেক।
তাহালে পরের বছর ঝুলুর মালতু কলমকাঠি ধান চাষ করবি।
করবি?
তুই যদি খরচা দিস, কেনে পারব নাই?
কলমকাঠি রঘুশাল আশিনলয়া ভূতমুড়ি, কেল্যাশ?
কুকুরগুলো কখন থেকে অস্থির ল্যাজ নেড়ে যাচ্ছে, গাঙ্গুলি দুটো স্লাইস, পাউরুটির, ছুড়ে দিলো, শুকলো কিন্তু খেলো না সাহেবি খাদ্য। খিদেয় থাকলেও, যা তার শরীরের অন্তর্গত এনজাইম গ্রহণ করে না, তাকে, মরে গেলেও খাওয়া দূরে থাক, ছোঁবে না পর্যন্ত জীবজন্তু।
লখিরাম থমকে তাকায়, বীজ কুথায় পাবি?
সে আমি জোগাড় করবো।
আমার অনেক দেশি কৃষি-খামারের সঙ্গে আলাপ আছে।
ইসব ধান যে বহুত দিন লেয় পাকতে।
তাতে ক্ষতি কি?
শিষ যে ছুটু ছুটু?
খড় বড়ো।
খড় চিবাবি?
গাই গরুগুলো তো তৃপ্তিতে খাবেক রে? ভগবতী।
গাই গরুর দরকারই নাই ই-জমানায়।
গোবর কোথায় পাবি?
গরু পোষার বহুত ল্যাঠা গাঙ্গুলির মাথার ভেতর ছটফট করছে দুদস্যি একগোছা শহুরে খিস্তি, মাদারচোদ সবুজ বিপ্লব! একজন ভূমিহীনকেও টাকাখোর করে দিয়ে গেছে! কৃষকের হাত থেকে বীজ কেড়ে নিয়ে চাষাবাদ শেখাচ্ছে চিরায়ত কৃষককে! বীজের অঙ্কুরোদগম, লক্ষ লক্ষ বছরের জ্ঞানের উন্মোচন। বীজ স্মৃতি, বীজ সংস্কৃতি। কর্পোরেট সেই জ্ঞানটাকে, সেই স্মৃতিটাকে মুছে কৃষকের হাত থেকে বীজ কেড়ে নিতে পেরেছে। কৃষকের কোনো স্মৃতি নেই। কৃষকের কোনো ঐতিহ্য নেই। কৃষকের হাতে বীজ নেই। মাথায় কেবল মুনাফার দুর্বুদ্ধি। কৃষক শিখে গেছে অতি দ্রুত স্থায়ী একটি খরা কীভাবে নির্মাণ করতে হয়, কীভাবে ভুঃ ভুবস্বঃ মাটিকে মাটি করে দিতে হয়। কৃষক শিখে গেছে কীভাবে একটি কুৎসিত অসহায় আত্মহত্যা নির্মাণ করতে হয়। মাটির সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক এখন ধর্ষণের, প্রীতিপূর্ণ সঙ্গমের নয়।
ভারতবর্ষ কখনো ভুখায় মরতে পারে না, যদি পলিটিক্স না মারে। এত অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনেরও প্রয়োজন নেই, উৎপাদনের অতিরিক্ত মানেই নগদ অর্থের আমদানি, পুঁজি সে টাকা কত ছলনায় বার করে নেবে তোমার পোকেটে থেকে। পকেটের টাকা খসে যাওয়ার নাম তবে ইনকাম? অমন ইনকামে কুত্তায় মুতুক। আমাদের সর্বহারা হওয়াই ভালো। শালা এমন নাগরিক-হিতৈষী রাষ্ট্র, কোনো হালতেও কোনো শালাকে সর্বহারা হতে দেবে না। অত্যাচারকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেবে না কিছুতেই। পুঁজিবাদের মতো হিতৈষী সমাজতন্ত্রও নয়।
তারস্বরে চেঁচিয়ে যাওয়া কুকুরটার দিকে একটা পাথর ছুড়ে মারলো গাঙ্গুলি, শালারা দাকাইজম ভুক-কুকুর। ওদের ভাত রেঁধে দিতো কে আগে? স্ক্যাভেনজার শালাদের খাদ্যরুচি বদলে দিয়েছে মানুষ। যেমন শালা কর্পোরেট বদলে দিয়েছে
মানুষকে। তুমি মাড়ভাতের বদলে চাওমিন খাবে ব্রেকফাস্টে। তোমার অভাব কোথায় কোথায়, তুমি জানোনা, কর্পোরেট জানে।
ছায়া দেখলে কুত্তা শালারা ভুকভুকায়, বেশি জ্যোৎস্না ঝরারও জো নেই, শালাদের দৌরাত্ম্যে ঘুমোনো মুশকিল। শহুরে গাঙ্গুলির রাত হয় ১১-টার পর, খেতে শুতে খবর দেখতে দেখতে সিরিয়াল শেষ হতে হতে ১২-টা, তারপর ফেসবুক, তারপর টিকটিক করে রাত মধ্যযামে, তারপরও দূরে কাছে গাডরি হর্ন, গতির উল্লাস, রাত আর রাত হতে পেলো কই? দিনের একটা অংশ কব্বে রাতের ভাগে দিয়ে দিয়েছে মানুষ। বউ আড়মোড়া ভেঙে বিছানা ছাড়ে সকাল ৯-টায়। গাঙ্গুলি বিশ্ববিদ্যালয় যায় তার রুটিন মাফিক, কখনো ১২-টায়, কখনো ৩-টায়। লাঞ্চ সারে ক্যানটিনে। আযৌবন সুগার পেসেন্ট মিসেস গাঙ্গুলি, কোনোদিন না খেয়েই কাটিয়ে দেয়। গৃহিণী বলে, উপোসী পেটই বাস্তব, পৃথিবীর জন্ম থেকে সব জন্তুই কালেকলাপে ভরপেট খেয়েছে। আধপেটা, পরিপূর্ণ ফাস্টিং-এ মানুষ সহ সব শালা লিভিং-ওয়ার্ল্ড কোটি বছর পার করে দিলো। নিজের খাদ্য নিজে উৎপাদন করার গর্বে, বস্তুত পৃথিবী, মানুষের অধীন। খাদ্য গ্রহণে তার ইচ্ছার প্রাধান্য। কবে থেকে এসব হল, কবে থেকে মানুষ ঐশ্বরিক নির্মাণের বিনির্মাণ শুরু করলো? কবে থেকে মানুষ তার স্বাভাবিক এনজাইমে আক্রান্ত করলো, সকলকে বদলে দিলো ফল থেকে মাংসে, মাংস থেকে রন্ধনে? সব্জি ফলে?
এহেন মনোলিথিক বনভূমিকে মনোলিথিক কৃষিজমি করে তোলা প্রজাতির একটি নমুনা গাঙ্গুলি। গাঙ্গুলিরও তাই, তাহলে মোবাইলে ইন্টারনেট চাই, মোবাইলে চার্জ চাই।
হোয়াটসঅ্যাপে দুটো মেয়ে নিয়মিত এরোটিক উত্তেজনা দেয় তাকে। সেই উদ্ভিন্ন যৌবনাদের গাঙ্গুলি বলেছিল, আ এম সিক্সটি।
নো প্রবলেম। ইস্ ইয়োর পেনিস সেনসিটিভ? Íইফ ইউ হেল্প মি, ইট উইল রেইজ আপটু নাইন ইঞ্চেস।
যুবতীটি ইস্স্ করে উঠেছিল, সাপ যেমতি করে ছোবল মুহূর্তে।
লখিরাম বলে, অত অত টাকা সিপিএম আমলে ছিল নাই ঠাকুর।
প্লিজ সো ইয়োর পেনিস।
নট ইরেক্ট নাও। সো ইয়োর ভেজাইনা।
যুবতী পটপট তার বাস-অন্তর্বাস খুলে ফেললো। টুপ করে ঝরে পড়লো দুটো স্তন। তারপর বিদিশার নিশার মতো অন্ধকার, তার, যৌনকেশে ছুপানো যোনিমুখ ক্ষুধার্ত পশুর মতো লালার্ত জিভ ঝোলায়, হাঁপাচ্ছে।
লে করব। বড়ান ঝুলুর মালতু কলমকাঠিই করবো।
লখিরামের আজ পৃথিবী বদলানোর জোস লেগেছে, লে পাম্প কিন তবে একটা।
ঠিক আছে, ট্রাকটারও কিনে দেবো।
দে একটা বিড়ি।
চাষে লাভ নাই এখন ঠাকুর।
ত নাই।
থাক পড়ে জমি।
খিল থাক।
পরিস্থিতির আজ্ঞানুবর্তী হয় ভদ্রলোক গাঙ্গুলি, লাভ লোকশান দরকার নেই। নিজের প্রয়োজন মেটালেই খরচ কমে গেলো উদ্ভিন্নযৌবনা ভিডিও কল করছে আর রিসিভ না করে গাঙ্গুলি কেবল মেসেজ পাঠাচ্ছে, নট নাও। লেটার। আফটার এন আওয়ার।
টুং করে উত্তর, আ এম রেডি টু ফাক উইথ ইউ। মাই ভ্যাজাইনা অ্যায়েফুলি সিঙ্কড।
অল্প অল্প করে কাঁপছে তার পেনিস। গাঙ্গুলির।
করোনাতে অভাব বুদ্দেই দেই নাই ঠাকুর।
বরং করোনা থাকাই ভাল ছিল,
গমে চালে চালাক্কার।
জ্যোতি বসুর চাইতেও মমতা ভাল।
টুপ করে জেগে উঠলো তার ঘুমন্ত সিভার পেনিস।
লখিরাম, যা ইবেরে শুয়ে পড়।
আকাশ জুড়ে চাদেড়ু জ্যোৎস্না, সিল্যুটে ঘেরা চতুপার্শ্বে পৃথিবী সঙ্কুচিত। কুকুরের চিৎকারে ঘুম পলাতক। হতাশ গাঙ্গুলির লিঙ্গ লাঙলের চেয়ে সুচারু তীক্ষè। উপুড় হয়ে খড়ের বিছানায় লিঙ্গকে দাবড়ে শোয় গাঙ্গুলি। তারপরও। কামনা কখনো লিমিট জানে না।
জমিতে ধান ফলবে,
শাকসবজি হবে,
ডালকলাই হবে,
আমজামকলালেবু ফলবে,
ইগলা কুন খবরই লয় ঠাকুর।
অন্ধকারেও ওর জ্বলজ্বলে চোখের ওয়াট দেখতে পাচ্ছে গাঙ্গুলি, বুঝলি, জমিটা যদি তুই বিচে দিস-সিটই ঘটনা।
গাঙ্গুলির লিঙ্গ, তখন সেই কলগার্ল, তার যোনিতে মোটা একটা কৃত্রিম লিঙ্গ ঢোকাচ্ছে, কতদিন পর, হোক ভার্চুয়াল, গিন্নি ছুঁতে পর্যন্ত দেয় না তার স্তন, তো ভ্যাজাইনা! মিলনের কালেই শুকিয়ে যায় যে যোনী তাকেই তো অনস্তিত্ব বলা যেতে পারে। গাঙ্গুলি পরম তৃপ্তিতে একটি সঙ্গম করলো হস্তমৈথুন দিয়ে, অনন্ত নদীর বেগে যৌনজলে বান।
গাঙ্গুলির প্রকৃত লিঙ্গ তখন নেতিয়ে কেন্নো। সন্তান নয়, গর্ভধারণ নয়, কত বছর প্রীতিবশে পারস্পরিক অত্যাচার সয়ে এখনো টিকে গেছে দাম্পত্য সেটাও সংবাদ নয়, বিবাহ সংক্রান্ত একমাত্র বড়ো সংবাদ হলো বিবাহবিচ্ছেদ আর বহুগমণ। তার স্ত্রী, ব্যবহারে ব্যবহারে সুপ্রাচীন যৌনযন্ত্র, সেটিকে ছেড়ে দিলেই তো হয়।
গাঙ্গুলির স্ত্রীর নগ্ন শরীর বড়ো অযৌন। চুলের গন্ধ পর্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত। এক একটি দিন না-হাসিল পতিত জমির মতো আগাছাপূর্ণ।
উইল ইউ মেরি মি?
নো, ওনলি ফাক ইউ।
পঞ্চায়েত ভোটে টিএমসির নিশ্চিত জয়, পার্থ চ্যাটার্জি ঘুষঘাষ জেল যাওয়া কোনো ফ্যাক্টারই নয় বিশ্ব বাংলায়। যা লড়ার লড়ছে কেবল কোর্ট, বিচারপতিরা নিশ্চয়ই ভোটে দাঁড়াবে না।
হোয়াটসঅ্যাপের উদ্ভিন্নযৌবনা মারমার মেসেজ পাঠাচ্ছে, শো ইয়োর পেনিস,শো
গাঙ্গুলি তার নেতিয়ে পড়া লিঙ্গকে আর জাগাতে পারছে না।
মাথার ওপর তারা বিজবিজে আকাশ,
দূরে কাছে কুকুর ডাকছে, বিপবিপ করে রাত বাড়ছে। লখিরাম বিড়িটা যতœ করে নেভায়, ঠাকুর তবে ঘুমা।
খড়ের তাঁবুর ভেতরে চার্জার লাইট নিভু নিভু তারপর দুম করে রাত হয়ে গেল। একটা হেরিকেন অনেক দীর্ঘস্থায়ী আলোর উৎস, পেলে ভালো হতো।
হ্যারিকেন, হুরিকেন!
কিউরিও সামগ্রী।
বাল্যকালে তার আলোতে পড়তো গাঙ্গুলির ভাইবোনেরা, ঘিরে। দাদার আর দিদির, বাবার কাকুর আলাদা হ্যারিকেন ছিল। ঠাকুমার জন্য ছিল অন্ধকার। ছোটদের জন্য ছিল রাজপুরি রাক্ষসখোক্কস। রান্নাঘরে মায়ের জন্য ছিল ডিবরি। কী সুন্দর নেচে নেচে ধোঁয়া উঠে রান্নাঘরের শিলিং-এ কালো ভূষার একটি গোল চক্রে আলোআঁধারি রূপকথা।
বিজলি বাতি, সেই ছায়াছায়া সুন্দর কল্পনার জগতটাকে মুছে দেওয়া বিজলি বাতি, তাহার জীবনে প্রথম কিছু চিরতরে হারিয়ে দেওয়ার টুল।
যুক্তি ম্যাডনেশ ইউনিফিকেশন নিয়ে নিরন্তর ডিসকোর্সে ক্লান্ত গাঙ্গুলি এক আকাশ নীরব আকাশের তলায় এখন বাকরুদ্ধ। এই ঘুম চেয়েছিলে তবে? পৃথিবী নাকি উষ্ণ হবে ১১.১৫ ডিগ্রি থেকে ২০.২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ২০৭০-এ। টোয়েন্টি ট্রিলিয়ন জিডিপি হবে ইন্ডিয়ার। ওয়ার্ড পাওয়ারে তার পজিশন হবে থার্ড। ১৭ দফা প্রস্তাব কার্যকর হলে পৃথিবীতে স্বর্গ নেমে আসবে। এসব মোদি বেঁচে থাকতে থাকতে দেখে যাবেন তো? নাকি মন কি বাতের মোদি মৌলিক কিছু না, বিশ্ব বাতেলার মুখপাত্র?
গাঙ্গুলি এখন সিক্সটি প্লাস। মোদিও সেভেন্টি প্লাস।
একটি সকাল নামে মোরগের ডাকে, অবিরল পাতা, ম্রিয়মাণ হলুদ বাতাসে পাক খেয়ে খেয়ে একে অপরকে ঠোক্কর মারতে মারতে একই পরিণতি বলে উভয়েই বড়ো জড়াজড়ি, খসে পড়ছে সারজোম গাছ থেকে। ন্যাড়া পলাশের মাথায় ফুলের কুহক, ফুটে উঠলেই বসন্ত। একটি মেঝেন, মোবাইল ইন্টারনেটের যুগেও একটি স্তন অবলীলায় রোদে শুকোতে শুকোতে নদীর দিকে ঠমকি ঠমকি চালে। স্তন বড়ো ফাতাল সৌন্দর্য।
উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জে দশ মাসে ১১১ জন শিশুর মৃত্যু, মাতৃদুগ্ধ পানে। বিষ। শিশুহন্ত্যা স্তনটির দিকে গাঙ্গুলি তাকাতেই ভীত ভয়াবহ রকমের ভয়ে নদী থেকে চলে এসে সারি সারি নির্মল ভারতের প্রতীক পায়খানায়, অক্ষত অব্যবহৃত সেসব পায়খানায় ঢুকেও গাঙ্গুলি বেরিয়ে আসে তার উদ্যত বেগ আটকে। এত পবিত্র সফেদ, যোনির প্রতীক যেন, ভয়াবহ কামেচ্ছা নিয়ে শুয়ে থাকা প্যান, সে তো অক্ষত যোনীর মতো, তাতে হেগে দেওয়া যায়?
মাথার ওপর একখ- মেঘ তাতে আঁকা-ছবিটির মতো একগুচ্ছ পাখি নিয়ে ফাটাফাটি প্রকৃতি, সাঁওতাল গাঁ-টিকে রিসর্ট রিসর্ট লাগছে, এই সময় হাওয়া একটু হড়হড়ে সরসে ক্ষেতে ভেজা ভেজা মাটি। গাঙ্গুলি হাঁক পাড়ে, পেটপুরে খাচ্ছিস রে? মাথা ঝাঁকায় সবুজ পাতা, ইয়েস! ঘাড় দোলায়।
লখিরাম বললো, ইউরিয়া ছিটাতে হবে এক বস্তা। ডাঁটিগুলো লিকলিক করছে, গাছের তেজ নাই।
মন্থর নিঃসঙ্গ স্মৃতিভ্রষ্ট গাঙ্গুলি হাওয়ায় দুলছে যেমন দুলছে একটি লম্বা ঘাস। তার পুত্রটির আবাল্য বরাদ্দ ছিল কমপ্ল্যান। স্যারেল্যাক।
নো, নট এ পার্টিকেল অব কেমিক্যাল ফার্টিলাইজার।
নো পেস্টিসাইট।
নো এক্সট্রা এনার্জি বুস্টার।
গাঙ্গুলি বলছে কি, নাকি গাঙ্গুলিকে দিয়ে বলাচ্ছে এন্টি গ্রিন-রিভোলেশনের কেউ? মানুষের নিজস্ব তত্ত্ব বলে এই শতকে কিছু নেই, তার মস্তিষ্ককে হরণ করাই সভ্যতার মিশন আর ভিশন।
নিছক মানুষকে আর ভালবাসা সম্ভব নয়, মানুষকে উৎপাদন ভাবো, তার মাটিতে ভরে দাও বীর্য।
কাম টোমোরো মর্নিং, আ উইল ফাক ইউ।
লোভাতুর পেনিসদৃষ্টা হোয়াটসঅ্যাপ ব্লক করে দিলো।
কোন চাঁদু যে বলেছিলেন, ব্যর্থতাও একটি অব্যর্থ ইভেন্ট, আমাদের শিক্ষণীয়। ব্যর্থ গাঙ্গুলি ব্যর্থতার আনন্দে বিনিদ্র থেকে বিশুদ্ধ একটি জবাকুসুমসঙ্কাশ সকালে।
লখিরাম, দশটা দাঁতন হতে পারে, গাঙ্গুলি টুথব্রাশ আনতে ভুলে গেছে, বৃহৎ একটি নিমডাল ভেঙে বললো, লে ঠাকুর, দাঁত মাজ।
হা-হতবম্ব গাঙ্গুলি ঝট করে বুঝে নিলো, পুঁজিকে কেউ টাচ করতে পারে না। ওয়ালমার্ট আমাদের শেখাচ্ছে অর্গানিক টুথব্রাশ, নদী পুকুর ডোবা-ঘাট ভরিয়ে দেওয়া উচ্ছিষ্ট নিম দাঁতন, শেখাতে পারলে উন্নত দুনিয়াই ১৫ ডলারে কিনবে। হায় প্রাচ্য! দাঁতন মুখে দিয়ে গাঙ্গুলি বারংবার উচ্চারণ করে অর্গানিক টুথব্রাশ, ইহা অর্গানিক টুথব্রাশ।
ভদ্রলোকেরা প্রাণ দিয়েও অর্গানিক আদানির ঋণ শোধ করে দেবে।
নিরুত্তর পৃথিবীতে নিরন্তর অর্থ খুঁজতে একটা অ্যাবসার্ড দর্শন চাই গাঙ্গুলির। ফাক শব্দটির প্রভুত বিস্তার থেকে সে জেনে গেছে কৃষক আন্দোলনের লোগো ট্রাক্টার। পেস্টিসাইড ফার্টিলাইজার আর ট্রাক্টার দিয়ে চাষ করা কর্পোরেটীয় মনোকালচারের লোগো কি বলদ লাঙ্গল হতে পারে? গাঙ্গুলি জানে, সর্বত্র সর্ববস্তু সর্বপ্রাণী ফাকানুকুল্য, তাহলে। ফাকযোগ্য, তাহলে? যদি তুমি উত্থিত লিঙ্গের অধিকারী হও সমস্ত পৃথ্বী তোমার ফাকযোগ্য, তাহলে?
তোকে বাঁড়া চাষ করতে হবে না।
আমি তোর জমির বর্গাদার।
ত কি! তুই আমার এক খি বাল তুড়তেও লারবি।
পঞ্চায়েত অফিস কি ধুনতে আছে?
আমার ছাত্র এখন বেঙ্গল লেভেলের লিডার। ভাগ শালা!
লখিরামকে ফাক করে দিলে গাঙ্গুলি নিজের মতো করে জমিতে লিঙ্গ চালনা করতে পারবে। বামফ্রন্ট সৃষ্ট বর্গাদার নামক প্রজাতিটি গাঙ্গুলির সম্মুখে কিউরিও সামগ্রীর মতো রাত্রির নির্জনতায় উপবিষ্ট।
ঠাকুর, তুই ত বছরকি ষোল হাজার টাকা পাবি, জমির মালিক বলে। আমরা যে কিছুই পাব নাই। তাপ্পর তোর চাকরি আছে।
নিজস্ব অজ্ঞতাকে মেনে নিতে সময় লাগে মানুষের, তুই শালা যে বায়ুভূত নিরালম্ব এটা বুঝতে ২০২২ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো, শালা বর্গাদার! তুই শালা বামফ্রন্টের জোরে জমির মালিককে ন্যায্য ভাগটাও দিসনি। মার্কস লেনিন-উন্মত্ত কমরেডরা আইন দেখিয়েছিল। সাম্রাজ্য আইনী ছিল, উপনিবেশ আইনি ছিল, বর্গাদারীও আইনিÍআইন আর নৈতিকতা কী এক জিনিস ভোঁসড়িবালা? কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর পা-বদের দৈবীক্ষমতা হরণ করেছিলেন দেবতারা, এমনি এমনি? তেমনি রাষ্ট্র ২০১১ সালে বর্গাদারদের এক ফুঁয়ে উড়িয়ে দিয়ে জমির মালিকদের ‘কৃষক বন্ধু’ আওতায় এনেছেন মমতা। মমতাই দীর্ঘজীবী।
আরে শালা, আমিও লেবার, ঘামের সমুদ্রে ডুবে আছি।
সকালের চক্কর সেরে গাঙ্গুলি যখন খামারে এলো, লখিরাম লখিরামের বেটা ধান ঝেড়ে ফেলেছে তিন চার কুইন্টাল। লখিরামের ছোট ছেলে টাটকা এক ভাঁড় খেজুর রস নামিয়ে দিলো মাটিতে। লে, খা।
পৃথিবীর রস।
রসেবসে গাঙ্গুলির সারাদিন। ঝটাঝট ধান পিটাইয়ের আওয়াজ, বাতাসে ধুলোর গুঁড়ো, নদী থেকে উঠে আসা হাওয়া, খামার ভর্তি ধান, খড়ের গাদা, খড়ের তাঁবুতে শুয়ে আছে গাঙ্গুলি, নিঃসঙ্গ, ফাঁক ফোকর দিয়ে চুঁইয়ে নামছে পৌষ রাত আর শীতার্ত তারাদল, চাঁদও একবার উঁকি মেরে চলে যেতে যেতে জানিয়ে গেল অজ্ঞতাই তোমার জগৎজ্ঞান। লখিরামরা জানতেই পারলোনা, ফসলের জন্ম হলে কৃষকের মৃত্যু হয়।
কব্বে সে শালা মরে গেছে। একটি নিরম্বু খরা উপহার দেবার জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদনে নিরন্তর উৎসাহিত লখিরামের মাটির নিচে সঞ্চিত জল, যার বয়স কোটি কোটি বছর, অনায়াসে তুলে নিয়ে এমন হরিৎক্ষেত্র বানানোর বিরুদ্ধে গাঙ্গুলি লখিরামকেই বলে, স্যাকসেন পাইপওয়ালা পাম্প কিনে দেবো, সাবমার্শাল পাম্প না। তোদের ওইসব এলেবেলে শিষ বড়ো খড় ছোট ধান লাগানো চলবে না।
রইল তোর চাষ। তোর তো লোকশান নাই, বছর সালে ষোল হাজার টাকা মারবি। চাষ হলেও মারবি, না হলেও মারবি!
তোর তো শস্যবীমা আছে আমার পাঁচ বিঘা জমিতে কলমকাঠি ধান চাই। অন্তত ৬/৭ কুইন্টাল। যদি করবি, চাষ কর। না করবি, ভাগ শালা!
দু কুইন্টাল চাল হলেই গাঙ্গুলির চলে যাবে।
আমার ঢেঁকিছাঁটা চাল চাই।
ঢেঁকিতে পাহার দিবেকটা কে?
কেন তোর বউ দিবেক।
দায় পড়েছে।
মানুষ ভাতের অভাবে গতর খাটায়।
আমাদের অভাব নাই।
চাষ করি অভ্যাসে।
না করলেও চলে যাবেক।
রেশন দোকানে মাসভরের চাল পাই।
মাস ফুরোলে ৫/৬ হাজার টাকা পাই। খাটাখাটনি কুছুই নাই।
কে আর চাষ করবে? কেনে করবেক?
চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়।
কদ্দিন বসে খাস, সেটাই দেখবো।
লখিরাম অনড় অজর একটি বর্তমান, তাহার অতীত নাই, তার ভবিষ্যৎ নেই।
হতাশ গাঙ্গুলি সেদিন পৈতৃক বাড়িতে এসে, সে রাতে, সেই ধান ঝাড়াই-সাঙ্গ বিরতিতে সমস্ত বাতিগুলো নিভিয়ে দিয়ে সেই বাল্যকালের বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকার করে দিলে অত বড়ো বাড়িটা একা ও একক হয়ে যাওয়া গাঙ্গুলির ছায়ার প্রতিচ্ছায়া কাঁপে অন্ধকার দেয়ালে। নির্জন আঁধারে এক আকাশ তারার তলায় ঘুম নাহি আঁখিপাতে। গাঙ্গুলি কি সত্যি বৈষয়িক কাজে এসেছে মনিহারা, অদালি, নাকি বহুদিনের না-দেখা তারা গুনতে!
পৈতৃক বাড়িটা বানানো অন্ধকারে কতো সুন্দর আর কতো বড়ো আর কি নির্জন! বাইরে থেকে চুঁইয়ে পড়া আলোয় প্রতিটি কোণা। তাহার বাল্যস্মৃতি তাহার কৈশোর স্মৃতি। পিতৃপুরুষের চরণধ্বনিপ্রতিধ্বনি।
মা কখন পায়ে পায়ে তিনতলায়, পেছনে দাঁড়িয়ে বললো, ঠা-া লাগাচ্ছিস কেন? আয় একসঙ্গে শোব। মাথায় হাত বুলিয়ে দেবো।
দশ বছর আগে গাঙ্গুলিকে একা রেখে চলে গেছে যে মা, আজ বড়ো নাবালক করে দিলো। মায়ের স্নেহ তবে এক আকাশ বৃহতের চেয়েও বৃহৎ।
গৃহিণী ফোনে জানতে চাইলো, এবছর কত টাকার ধান হবে অনুমান করছো?
লখিরাম বললো, এই নিষ্ফলা বছরেও তোর জমিতে কত ধান ফলেছে দেখেছিস?
আমার জমি?
জমির মাথায় খেজুর গাছে রস জমছে গাঙ্গুলির মাথার ভেতরও
রস জমছে।
সামন্ততন্ত্রে মাটি মাটি গন্ধ ছিল।
কেউ শ্রোতা নেই বলেই গাঙ্গুলি চিৎকার করে ওঠে খুব ক্রুদ্ধ হলে যেমনটা তার পিতৃদেব করতেন।
প্রকৃত লুম্পেন ছাড়া পৃথিবীপাঠ অসম্ভব এ যুগে।
জ্বলন্ত একটা কাঠি টেনে বিড়ি ধরায় গাঙ্গুলি, অল্প অল্প কুয়াশা পড়ছে, ঝরঝর করে ঝরে পড়বে মাঝরাতে।
দাহ্যমানেন চৈতন্ন্যকে সে পাচার করে দিতে চেয়েছিল লখিরামের মধ্যে।
লখিরামরা এখন এক একটি স্থবিরতা। স্থবিরতার স্থির চক্ষু জানতে চায় না, ৩০৫ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও ১১৬ টি দেশের ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান কেন ১০৩ নম্বরে।
১১৭টি জেলার বৃষ্টিনির্ভর চাষ থেকেই ৪৮ শতাংশ চাষ না-করা থেকে ৬৮ শতাংশ খাদ্য পাওয়া যায়।
দেশের আবহাওয়ায় ৮২০০০ দেশী ধান, ৩৮০০০ গম, ৫০০০০ রকমের মিলেট, ১০৯৮৮ অড়হর, ৪৮৩৮ রকমের তুলো, ৩৬৮৬ রকমের বেগুনের শস্যকে বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি সবুজায়ন করার জন্য, কৃত্রিম জঙ্গল তৈরির জন্য অস্ট্রেলিয়া মরুভূমির ইউক্যালিপটাস গাছ লাগিয়ে দেওয়া হল মাইলের পর মাইল।…
সুগার পেসেন্ট ঘরে ঘরে, তদুপরি গ্লাইফোসেট।
লখিরামকে দোষ দিয়ে লাভ কি? গাঙ্গুলি নিজেও কি খুব কনসাস? নব নব তথ্য আর তত্ত্বের হাওয়ায় কত গাঙ্গুলি কাঁহা কাঁহা উড়ে যাচ্ছে! গাঙ্গুলিরও কি পায়ের তলায় মাটি আছে?
ফ্যাসেনেবলতম আত্মত্যাগ ও লড়াই করতে করতে গাঙ্গুলি একটি বিষণ্ণ উইসডম। ঘটনায় ঘটনায় বিভাজিত। অতএব তুমিই জগৎ, অতএব যতদিন তুমি নিঃসঙ্গ, ততদিন তুমি নির্বাণে, হে গাঙ্গুলি।
হিরম্ময় গঙ্গোপাধ্যায়, কথাসাহিত্যিক
আসানসোল, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত