এখন সময়:বিকাল ৪:৫৭- আজ: শুক্রবার-২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

এখন সময়:বিকাল ৪:৫৭- আজ: শুক্রবার
২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

৭১ এর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ

হোসাইন আনোয়ার

১৯৭১ সাল ১৪ ডিসেম্বর দিয়েই শুরু করছি। ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে লে. জেনারেল নিয়াজী ফোনে রাওয়ালপি-িতে সামরিক বাহিনীর প্রধান সেনাধ্যক্ষ জেনারেল আবদুল হামিদকে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ পরিস্থিতির কথা জানালেন। তিনি আরও বললেন, “স্যার, আমি এর মধ্যেই প্রেসিডেন্টের কাছে কিছু প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আপনি একটু চেষ্টা করবেন, যাতে অতি দ্রুত এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত পাঠানো হয়।”
এই দিনই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হলো। এই দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উপমহাদেশে শান্তি স্থাপনের লক্ষে ভারত ও পাকিস্তানকে অবিলম্বে সৈন্য প্রত্যাহার করে আন্তর্জাতিক সীমানায় ফিরে যাওয়ার জন্য যে প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিলো তা’, বাতিল হয়ে গেল। কেন এই প্রস্তাব সমর্থন করলেও ব্রিটেন ও ফ্রান্স ভোট দানে বিরত রইল। সোভিয়েত রাশিয়া তৃতীয় ও শেষবারের মতো ভেটো প্রয়োগ করলো। এই অবস্থার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়ার নিকট থেকে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর তারবার্তা এলো, “যুদ্ধ বন্ধ এবং জীবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করো।”
গভর্নর ডা. আবদুল মালেক থেকে শুরু করে সমস্ত মন্ত্রী ও সেক্রেটারি সবাই একযোগে পদত্যাগ করে ‘নিরপেক্ষ জোন’ হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল আন্তর্জাতিক রেডক্রসের নিকট আশ্রয় নিয়েছে। তাই নিয়াজী আলোচনার জন্য মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে ডেকে পাঠালেন। দু’জনে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন, অবিলম্বে আত্মসমর্পণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কোন দূতাবাসের মধ্যস্থতা মেনে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
শেষ পর্যন্ত জেনারেলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মধ্যস্থতায় আত্মসমর্পণের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকায় তখন মার্কিন কনসাল জেনারেল হচ্ছেন মি. এস্ পিভ্যাক। সন্ধ্যার কিছু পর গোপনে দু’জন দেখা করলেন মার্কিন কনসাল জেনারেলের সঙ্গে। সব কিছু শুনে মার্কিন কূটনীতিবিদ বললেন, “জেনারেল, আমি তো আপনাদের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করতে পারি না। তবে আপনারা চাইলে বার্তাটি জায়গামতো পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারি।”
এরপর মি. এস পিভ্যাকের অফিসে বসেই ভারতীয় আর্মি চিফ অফ স্টাফ জেনারেল স্যাম মানেকশ এর জন্য বিশেষ বার্তা লেখা হলো-(১) পাকিস্তান সৈন্যবাহিনী এবং সহযোগী বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা (২) মুক্তিবাহিনীর হামলা মোকাবিলায় স্থানীয় অনুগত জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা এবং (৩) আহত ও রুগ্ন সৈন্যদের নিরাপত্তা এবং চিকিৎসার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির জন্য আমরা রাজি আছি।”
১৪ ডিসেম্বর ছিল পূর্ব পাকিস্তানের শেষ দিন। বার্তাটি তৈরি হতেই মি. পিভ্যাক বললেন-কুড়ি মিনিটের মধ্যেই এটাকে পাঠিয়ে দেয়া হবে। জেনারেল নিয়াজী এবং রাও ফরমান আলী পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডে ফিরে এলেন। উত্তরের অপেক্ষায় এইড দ্য ক্যাম্প এ নিয়াজীকে বসিয়ে রেখে গেলেন। তিনি সেখানে রাত ১০.০০টা পর্যন্ত ছিলেন। ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তাকে খোঁজ নিতে বলা হলো। রাতে কোনো জবাব পাওয়া গেল না।
মূলত মি. পিভ্যাক বার্তাটি জেনারের মানেকশ’কে পাঠান নি। তিনি সেটা সরাসরি ওয়াশিংটনে পাঠিয়ে দেন। সেখানে মার্কিন সরকার কোনো কার্যক্রম গ্রহণের আগে ই্য়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তখন ইয়াহিয়া খানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
মানেকশ’ ১৫ ডিসেম্বরই বার্তাটির জবাব দিলেন। মানেকশ’র বার্তাটি ১৫ ডিসেম্বর রাওয়ালপি-িতে পাঠানো হলো। ঐ দিন বিকেল ৫টা থেকে সকাল ন’টা পর্যন্ত অস্থায়ী যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হলো দু’পক্ষই পরে ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হলো।
১৯৭১ সাল ১৬ ডিসেম্বর। অন্ধকার ভোরের ঘন কুয়াশার মধ্যে মেজর জেনারেল নাগরা মিরপুর ব্রিজের ওপারে আমিন বাজারের উপরে পায়চারী করছেন। নাগরার সঙ্গে কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান টাইগার সিদ্দিকী, ভারতীয় ১৩ গার্ডস এর সন্তু সিং এবং শিখ লাইট ইন্্ফ্যানটির ব্রিগেডিয়ার হরদের সিং ক্লার। মীরপুর ব্রিজের কন্ট্রোল তখন মোটামুটিভাবে ২ কমান্ডো প্যারা ব্যাটালিয়নের দায়িত্বে। এই কমান্ডো ব্যাটালিয়নকে ১১ ডিসেম্বর বিকেলে টাঙ্গাইল উপকণ্ঠে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময়কার একটি পরিত্যক্ত এয়ার ট্রান্সপোর্ট প্লেন থেকে প্যারাস্যুট যোগে অবতরণ করানো হয়েছিল। এ সময তাদের অন্যান্য সমরাস্ত্রের সঙ্গে প্যারাসুট করে ৩.৭ ইঞ্চি কামান পর্যন্ত অবতরণ করানো হয়। টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসে অবতরণরত পলায়ন করে পাকিস্তানি ৯৩ ব্রিগেডের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার কাদির প্রথমে ভুল খবর পেয়েছিলেন যে, তাদের সাহাযার্থে টাঙ্গাইল শহরের উপকণ্ঠে চিনা সৈন্যরা অবতরণ করছে। ভুল ভাঙার পর পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার তার বাহিনী নিয়ে ঢাকার দিকে দ্রুত পশ্চাদপসরণের প্রচেষ্টা করলে কাদেরিয়া বাহিনী টাঙ্গাইল-ঢাকা এলাকায় তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়। এবং কালিয়াকৈরে পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার কাদিরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর প্রায় ব্যাটালিয়ান নবনির্মিত কালিয়াকৈরের নয়ারহাট রাস্তা দিয়ে সাভার হয়ে মিরপুর এসে হাজির হয়।
১৬ ডিসেম্বর ভোরে মিরপুর ব্রিজের কাছে জেনারেল নাগরা বাস্তায় পায়চারী করার সময় মাঝে মাঝে দাঁড়িয়ে কুয়াশার মাঝ দিয়ে ঢাকা নগরীর ঝাপসা চেহারাটা দেখার চেষ্টা করছিলেন। তাঁকে খুবই চিন্তিত দেখাচ্ছিল। হানাদার পাকিস্তান বাহিনীর হাত থেকে ঢাকা নগরীতে মুক্ত করার কৃতিত্ব তিনি কি লাভ করতে পারবেন?
এই সময়ে দুটো ঘটনা তাঁকে খুবই উদ্বিগ্ন করেছে। কিছুক্ষণ আগে তাঁর কমান্ডের বাহিনীর কয়েকজন সৈন্য মিরপুর ব্রিজের ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করলে, সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর সালামতের নির্দেশে ব্রিজে প্রহরারত পাকিস্তানি সৈন্যরা গোলাবর্ষণ করে, দুটো জীবনই উড়িয়ে দিয়েছে। এতে ভারতীয় বাহিনীর একজন অফিসার ও ৪ জন জোয়ান নিহত হয়েছে। অবশ্য পাকিস্তানিরা ব্রিজ উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে ২ কমান্ডো বাহিনীর প্রচ- পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এই মিরপুর ব্রিজ রক্ষা করা এমন কমান্ডো বাহিনীর জন্য জীবন মরণ প্রশ্ন। কেননা পাকিস্তানি সৈন্যরা ব্রিজটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম হলে আপাততঃ বিকল্প ব্রিজ বানাবার কোনো ব্যবস্থাই তাদের সঙ্গে নেই। ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা এখনও ব্রিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও অতর্কিত হামলার ভয়ে ব্রিজ অতিক্রম করা সম্ভব নয়।
১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে যে, জেনারেল নিয়াজীর অনুরোধে জেনারেল মানেকশ’ ১৫ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা থেকে পরদিন ১৬ ডিসেম্বর সকাল ন’টা পর্যন্ত হামলা বন্ধ রাখার জন্য মিত্র বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। তখন সকাল ছ’টা। এর মধ্যে ভারতীয় ১০ জুম্মু ও কাশ্মীর রাইফেলস্্ এবং ৭ বিহার এর দুটো ব্যাটালিয়ন আমিন বাজারের কাছাকাছি এগিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। এমন সময় ব্রিগেডিয়ার ক্লার সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খবরটা দিলেন।
পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ডের হেডকোয়ার্টার থেকে জেনারেল নিয়াজী বিভিন্ন কমান্ডে সকাল পাঁচটা থেকে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ওয়ারলেসে যে মেসেজ পাঠাচ্ছেন তা ইন্টারসেপট করা হয়েছে। মিরপুর ব্রিজের পূর্ব পারে আমিন বাজারে দাঁড়িয়ে জেনারেল নাগরাকে তাঁর সৈনিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এখন গ্রহণ করতে হবে। মিরপুর ব্রিজের পাদদেশে দাঁড়িয়ে হরদের সিং ক্লার, সন্ত সিং আর কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে আলাপ করে জেনারেল নাগরা সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এই মুহূর্তে জেনারেল নিয়াজীর কাছে দ্রুত খবর পাঠাতে হবে।
একটা জিপের সামনে বিরাট আকারের একটি সাদা পতাকা লাগিয়ে তৈরি করা হলো। ২ কমান্ডো ব্যাটালিয়নের দু’জন অফিসার ও ড্রাইভার জিপে উঠলো। এরপর জেনারেল নাগরা একটা বার্তা লিখলেন জেনারেল নিয়াজীকে। প্রিয় আবদুল্লাহ, আমি এখন মিরপুর ব্রিজে। ঘটনার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। পরামর্শ হচ্ছে, আপনি আমার কাছে আত্মসমর্পণ করুন। সেক্ষেত্রে আমরা আপনাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নেবো। শিঘ্রই আপনার প্রতিনিধি পাঠান।-নাগরা।
বছর কয়েক পূর্বে জেনারেল নাগরা যখন ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসে মিলিটারি অ্যাটাচি হিসেবে চাকরি করতেন, তখন থেকে জেনারেল নিয়াজী’র সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা ৪৫ মিনিট। জেনারেল নাগরা এই বার্তটি তার এডিসি’র হাতে দিয়ে তাকেই নির্দেশ দিলেন জিপে জেনারেল নিয়াজীর কাছে যাওয়ার জন্য।
সাদা পতাকা উড়িয়ে জিপটা ইস্টার্ন কমান্ড হেড কোয়ার্টারে এসে পৌঁছালো।
অবাক বিস্ময়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা এই ভারতীয় জিপটাকে দেখছিলো। তখন ঘড়িতে সকাল ন’টা। হেড কোয়ার্টারে বসে রয়েছেন লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ্্ খান নিয়াজী, মেজর জেনারেল জমসেদ, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী এবং নৌবাহিনীর আঞ্চলিক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল শরিফ। জেনারেল নাগরা’র বার্তাটি হাতে নিয়ে পড়ার পর নিয়াজীর চেহারাটা সম্পূর্ণ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। তিনি কোনো কথা না বলে চিঠিটা অন্যদের পড়ার জন্য দিলেন। উপস্থিত সকলেই বার্তাটি দেখলেন। মিনিট কয়েকের জন্য সেখানে ‘কবর’ এর নিস্তব্ধতা নেমে এলো।
রাও ফরমান আলী প্রথমে কথা বললেন, তা হলে জেনারেল নাগরাই আলোচনার জন্য এসেছেন? এ প্রশ্নের জবাব কেউ দিলেন না। জেনারেল নিয়াজীকে উদ্দেশ্য করে রাও ফরমান প্রশ্ন করলেন, আপনার হাতে কি ঢাকার জন্য কিছু রিজার্ভ সৈন্য আছে কি? নিয়াজী কোনো জবাব দিলেন না। শুধু জেনারেল জমসেদের দিকে তাকালেন। রাজধানী ঢাকা নগরীর দায়িত্বে নিয়োজিত জেনারেল জমসেদ মুখে কিছু না বলে মাথাটা নেড়ে বুঝিয়ে দিলেন, যুদ্ধ করার মতো ঢাকায় কোনো রিজার্ভ সৈন্য নেই। রিয়ার অ্যাডমিরাল শরিফ ও রাও ফরমান একই সঙ্গে বলে উঠলেন, “এই যখন পরিস্থিতি, তাহলে নাগরা যা বলছে তা ই-ই করুন।” (উইটনেস টু সারেন্ডার : পৃ: ২১০ সিদ্দিক সালিক)
শেষ পর্যন্ত এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে, জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জমসেদ যাবেন জেনারেল নাগরাকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য। সঙ্গে সঙ্গে মিরপুর ব্রিজ এলাকায় প্রহরারত পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছে জরুরি নির্দেশ পাঠানো হলো। যুদ্ধ বিরতির কথাবার্তা হচ্ছে। তাই জেনারেল নাগরার ঢাকা নগরীতে প্রবেশের সময় যেনো কোনো বাধা দেওয়া না হয়।
একটু পরেই সাদা ফ্ল্যাগ উড়িয়ে পাকিস্তান সৈন্য বাহিনীর একটি জিপ মিরপুর ব্রিজের উপর দিয়ে এগিয়ে এলো। জিপ থেকে একজন পাকিস্তানি মেজর নেমে জেনারেল নাগরাকে স্যালুট দিয়ে নিয়াজীর আত্মসমর্পণের বার্তা প্রদান করে জানালো যে, ব্রিজের পশ্চিম ধারে লে. নিয়াজীর পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা জানাবার জন্য মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জমসেদ অপেক্ষা করছেন।
একটু পরেই জেনারেল নাগরা, কাদের সিদ্কিী, ব্রিগেডিয়ার ক্লার সাদা ফ্ল্যাগওয়ালা জিপে মিরপুর ব্রিজের পশ্চিম ধারে এসে উপস্থিত হলেন। ৩৬ ইনফ্যানট্রি ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জমসেদ তাদের ঢাকা নগরীতে অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজের স্টাফ গাড়িতে বসার অনুরোধ করলেন। তখন সময় সকাল দশটা। কুয়াশা সরে যাওয়ার মনে হচ্ছে ঢাকা শহরটা নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
গাড়িটা সরাসরি ৩৬ ইনফ্যানট্রি ডিভিশনের হেড কোয়ার্টারে হাজির হলে মেজর জেনারেল জমসেদ ফোনে জেনারেল নিয়াজীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন।
ঠিক সকাল ১১টায় গাড়িটি পাকিস্তান ইস্টার্ন কমান্ড হেড কোয়ার্টারে এসে পৌঁছলো। অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে নিয়াজীর পক্ষ থেকে পাকিস্তান ইস্টার্ন আর্মির চিফ অফ স্টাফ ব্রিগেডিয়ার বারেক সবাইকে অভ্যর্থনা জানিয়ে একটি সাজানো কক্ষে বসতে অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই লে. জেনারেল নিয়াজী আন্ডারগ্রাউন্ড টেকনিক্যাল হেড কোয়াটার থেকে অফিসে এসে হাজির হলেন।
জেনারেল নাগরা ও তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে করে মেজর জেনারেল জমসেদ এসে ঘরে ঢুকতেই আমীর আবদুল্লাহ্্ খাঁন নিয়াজী ধীর পদক্ষেপে এগিয়ে এসে জেনারেল নাগরার সঙ্গে করমর্দন করেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। জেনারেল নাগরার কাঁধে মুখটা লুকিয়ে নিয়াজীর বিরাট দেহটা কান্নায় ভেঙে পড়লো।
নিয়াজী কান্না থামিয়ে একটু ঠা-া হতেই জেনারেল নাগরা তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে শুরু করলেন। প্রথমেই কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান কাদের সিদ্দিকী। নাগরা যখন কাদের সিদ্দিকীর পরিচয় দিচ্ছিলেন। তখন জেনারেল নিয়াজী, জেনারেল জামসেদ এবং ব্রিগেডিয়ার বাকের এই বাঙালি যুবকের আপাদমস্তক নিরীক্ষা করছিলেন। জেনারেল নাগরা তাঁর বক্তব্য’র শেষে বললেন, “এই হচ্ছে টাইগার সিদ্দিকী।” জেনারেল নিয়াজী করমর্দনের জন্য কাদের সিদ্দিকীর দিকে হাত এগিয়ে দিলেন। সবাইকে হতবাক করে এই মুক্তিযোদ্ধা তাঁর হাত সরিয়ে নিয়ে ইংরেজিতে বললেন, “যারা নারী ও শিশু হত্যা করেছে তাদের সঙ্গে করমর্দন করতে পারলাম না বলে আমি দুঃখিত।”
এদিকে মুজিব নগরে তখন তুমুল উত্তেজনা। তাজউদ্দিন আহমদ প্রতি মুহূর্তের খবরের জন্য উদগ্রীব। অভ্যাসবশতঃ তিনি অবিরাম তাঁর বৃদ্ধাঙুলি খুঁটছিলেন। এমন সময় খবর পেলেন, আজ বিকেলেই ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করবে পাকিস্তানি বাহিনী। মুজিবনগর সরকারের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য একজন উচ্চপদস্থ কাউকে উপস্থিত থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ তাঁর ছোট্ট অফিস কক্ষ থেকে ছুটলেন পার্শ্বে অবস্থিত প্রধান সেনাপতি তৎকালীন কর্নেল (অব.) আতাউল গনি ওসমানীর সুরক্ষিত অফিসের দিকে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাঁর কক্ষের দিকে এগিয়ে আসছেন, জানতে পেরে সামরিক পোশাক পরিহিত সৌম্য চেহারার ওসমানী সাহেব তাঁর নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে এলেন। প্রধানমন্ত্রী তাকে দেখেই আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন, সিইনসি সাহেব ঢাকার সর্বশেষ খবর শুনেছেন বোধ হয়? এসব তো আত্মসমর্পণের তোড়জোড় চলছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা শেষ করতে পারলেন না। সেনাপতি তাঁকে করিডরের আর এক কোনায় একান্তে নিয়ে গেলেন (শেখ মুজিবের বড় ছেলে)। ওসমানী সাহেবের শেষ কথাটুকুই শুধু শোনা গেল” নো-নো-প্রাইম মিনিস্টার, মাই লাইফ ইজ ভেরি প্রেশাস, আই ডোন্ট গো” (না না প্রধানমন্ত্রী, আমার জীবনের মূল্য খুব বেশি, আমি যেতে পারবো না)।
এরপর প্রচ- এক বেদনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ তাঁর নিজের কক্ষে ফিরে এলেন। তখন তাঁর অফিসে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার এবং দিনাজপুরের অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার মির্জা আবুল। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ তাঁর চেয়ারে বসে এ কে খন্দকারের দিকে তাকিয়ে বললেন, “আপনাকে একটি দুরূহ কাজে পাঠাবো বলে মনস্থির করেছি। আমাদের সেক্টর কমান্ডাররা তো সবাই এখন লড়াই এর ময়দানে। আজ বিকেল চারটায় ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনীর ‘আত্মসমর্পণ’ অনুষ্ঠান। সেখানে আপনাকেই মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। আপনার জন্য দমদম বিমানবন্দরে একটি হেলিকপ্টার তৈরি রয়েছে। আর একটি কথা, আমার জিপটা নিয়েই দমদমে চলে যান। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এই ফাইলটার মধ্যে রয়েছে। জিপে বসেই পড়ে নিতে পারবেন। ফাইল হাতে নিয়ে খন্দকার সাহেব প্রধানমন্ত্রীকে একটা স্যালুট দিয়ে ঝড়ের বেগে বেরিয়ে গেলেন।
এদিকে ১৬ ডিসেম্বর দুপুর বারো’টার দিকে একটি বিশেষ সামরিক হেলিকপ্টারে মেজর জেনারেল জ্যাকব এসে পৌঁছলেন ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে। তাঁর সঙ্গে এলেন ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্নেল থেরা। মি. জ্যাকবের হাতে সেই ঐতিহাসিক ‘আত্মসমর্পণ’ দলিল। জেনারেল নিয়াজী এই দলিলকে ‘যুদ্ধ বিরতির খসড়া চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করলেন।
জেনারেল জ্যাকব ঐতিহাসিক দলিলটি সবার সামনে ব্রিগেডিয়ার বাকের’ এর হাতে দিলেন। ব্রিগেডিয়ার বাকের কয়েক পা’ এগিয়ে মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর টেবিলে দলিলটা খুলে ধরলেন। একটু নজর দিয়েই রাও ফরমান আলী আপত্তি উত্থাপন করে বললেন, “ভারত-বাংলাদেশের জয়েন্ট কমান্ডারের কাছে” কথাটি তো থাকতে পারে না?
আমরা তো ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করবো।” জেনারেল জ্যাকব তৎক্ষণাৎ জবাব দিলেন, “দিল্লি থেকে এভাবেই এ দলিল তৈরি হয়ে হয়ে এসেছে। এর কোনো পরিবর্তন বা সংশোধন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কর্নেল খেরা। তিনি বলে উঠলেন, “এটা তো আমাদের আর বাংলাদেশের মধ্যে একটা অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা মাত্র”। এরপর জেনারেল নিয়াজী এক নজরে দলিলটা দেখে কোনো রকম মন্তব্য না করেই রাও ফরমানের হাতে ফিরিয়ে দিলেন।
জেনারেল ফরমান তার ‘বস’ এর দিকে তাকিয়ে বললেন, আমাদের কমান্ডারই বলতে পারবেন যে, এই দলিল মেনে নেবেন না, প্রত্যাখ্যান করবেন। লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ্্ খান নিয়াজী এর কোনো জবাবই দিলেন না। প্রায় ১০/১৫ সেকেন্ড ফ্যাল্্ ফ্যাল্্ করে তাকিয়ে থেকে মাথা ঝাঁকিয়ে ইশারা দিলেন। উপস্থিত সবাই বুঝতে পারলেন যে, পাকিস্তান সামরিক বাহিনীতে টাইগার নিয়াজী নামে যিনি পরিচিত এবং গত ন’মাস যাবত যার দম্ভোক্তি বিশ্বের পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে, সেই নিয়াজী ‘আত্মসমর্পণ’ দলিলে স্বাক্ষর করতে সম্মত হয়েছেন।
মূলত এটাই ছিল ঢাকা’র পতন। পতন ঘটল নীরবে। একজন হৃদরোগীর মতো। কোনো অঙ্গচ্ছেদন হলো না। কিংবা দেহ দ্বিখ-িতও হলো না। সিঙ্গাপুর, প্যারিস অথবা বার্লিন পতনের কাহিনির পুনরাবৃত্তি হলো না এখানে।
৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর। বেলা তিনটা নাগাদ ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা কোলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ থেকে সস্ত্রীক হেলিকপ্টারে তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে হাজির হলেন। লে. জেনারেল নিয়াজী তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়ে ‘স্যালুট’ করার পর করমর্দন করলেন। সে এক হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য। এক বিরাট সংখ্যক বাঙালি জনতা ছুটে গেল তাঁর দিকে। তাঁর পতœীকে মাল্যভূষিত করলেন।
বিকেল ৪.০০টার একটু পরেই ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান রে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এসে পৌঁছালেন রেসকোর্স ময়দানে। অনুষ্ঠানের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য তখন ভারতীয় সৈন্যদের প্রাণান্তকর অবস্থা। লে. জেনারেল জগজিৎ অরোরা লে. জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ্্ খান নিয়াজীকে নিয়েই ময়দানে প্রবেশ করলেন। পিছনের গাড়িগুলো থেকে মিত্র বাহিনীর পক্ষে একে একে এসে নামলেন, মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার, কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান কাদের সিদ্দিকী, ১০১ মাউন্টেন ডিভিশনের প্রধান মেজর জেনারেল নাগরা, এয়ার মার্শাল দেওয়ান, ভাইস অ্যাডমিরাল কৃষ্ণণ, ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের চিফ অফ স্টাফ মেজর জেনারেল জ্যাকব, ব্রিগেডিয়ার সন্তু সিং, ৯৫ মাউন্টেন ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার এইচ এম ক্লার, ভারতীয় সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের কর্নেল খেরা প্রমুখ। অন্য গাড়িগুলো থেকে নামলেন, মেজর জেনারেল রাও ফারমান আলী, মেজর জেনারেল জমসিদ, রিয়ার অ্যাডমিরাল শরীফ, ব্রিগেডিয়ার বাকের, এয়ার কমোডর ইমামউল হক প্রমুখ।
সে এক অপূর্ব দৃশ্য। মেজর জেনারেল নাগরার নেতৃত্বে ভারতীয় সৈন্যদের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থার মধ্যে পাকিস্তানি সেন্যদের একটি ছোট্ট কনটিনজেন্ট নিয়ম মাফিক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরাকে গার্ড অব অনার প্রদান করলো। কাছেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে জেনারেল নিয়াজী। রেসকোর্স ময়দানে প্রায় দশ লাখ লোকের জনতা চিৎকার করছে, টাইগার নিয়াজীকে তাদের হাতে ছেড়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু ভারতীয় সৈন্যরা তাকে কঠোর প্রহরায় রেখেছে।
বিকেল সোয়া চারটা নাগাদ জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাঝ দিয়ে জেনারেল নিয়াজী ও অন্যান্যদের সঙ্গে করে জোর কদমে এগিয়ে চললেন। আনুষ্ঠানিক ‘আত্মসমর্পণ’ মঞ্চের দিকে। চারিদিকে তুমুল হর্ষধ্বনি। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত চারদিকে। আর মুক্তিযোদ্ধারা তাদের আগ্নেয়াস্ত্র থেকে নীল আকাশের দিকে অবিরাম গুলি ছুড়ে উল্লাস করছে।
১৯৭১ সাল। ১৬ ডিসেম্বর। বিকেল চারটা উনিশ মিনিট। পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষে লে. জেনারেল এ এ কে নিয়াজী মিত্রশক্তির কাছে ‘আত্মসমর্পণ’ দলিলে স্বাক্ষর করলেন। এরপর দুপক্ষের সেনাপতিরা নিজ নিজ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য জেনারেল নিয়াজী তার কোমরের বেল্ট থেকে নিজ রিভলবারটি এবং ইউনিফরম এর কাঁধ থেকে লে. জেনারেল ব্যাজ দু’টো খুলে জগজিৎ সিং অরোরার হাতে তুলে দিলেন। ঢাকা নগরীর প্রতিটি বাড়িতে তখন গাঢ় সবুজের উপর বাংলাদেশ ম্যাপ অঙ্কিত রক্ত লাল বলয়ের পতাকা পত পত করে উড়ছে। জন্ম হয় একটা স্বাধীন দেশের। নাম তার বাংলাদেশ।

(প্রবন্ধটি সিদ্দিক সালিক এর উইটনেস টু সারেন্ডার’ এবং এম. আর. আখতার মুকুল এর ‘আমি বিজয় দেখেছি’র আলোকে লিখিত।)

হোসাইন আনোয়ার, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট

ভাষার যতো মান অপমান

অজয় দাশগুপ্ত : বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমাদের মাতৃভাষার নাম বাংলা ভাষা। আপনি আশ্চর্য হবেন জেনে প্রবাসের বাঙালিরা প্রাণপণ চেষ্টা করে তাদের সন্তানদের বাংলা শেখায়। এ

চাঁদপুর চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির কবিতা উৎসবে ১০ গুণী ব্যক্তির পুরস্কার লাভ

আন্দরকিল্লা ডেক্স : নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির কবিতা উৎসব-২০২৫। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় চাঁদপুর শহরের ইউরেশিয়া চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবুজ

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্কুলের শতবর্ষ উদযাপন

আন্দরকিল্লা ডেক্স : শতবর্ষ পূর্ণ হওয়া চট্টগ্রামের হাতেগোনা কয়েকটি স্কুলের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পাহাড়তলী অন্যতম একটি। ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুল ২০২৪

কেনো ইহুদিরা জাতি হিসেবে এত বুদ্ধিমান?

মূল লেখক: ডঃ স্টিফেন কার লিওন অনুবাদক— আসিফ ইকবাল তারেক   ইসরাইলের কয়েকটি হাসপাতালে তিন বছর মধ্যবর্তীকালীন কাজ করার কারণেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার চিন্তা

আগমনী এবং দুর্দান্ত দুপুর

দীপক বড়ুয়া ঋষিতার মুখে খই ফুটে। কালো মেঘে ঝুপঝুপ বৃষ্টি পড়ার সময়। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বৃষ্টির জল গড়িয়ে পরে। আনন্দে বৃষ্টি ফোটা ছুঁয়ে হাসে। মাঝেমধ্যে