এখন সময়:রাত ৩:১৭- আজ: শনিবার-১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:রাত ৩:১৭- আজ: শনিবার
১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

পদাবলি (সেপ্টেম্বর ২০২৫ সংখ্যা)

অবিনাশী উপহার

আসাদ মান্নান

 

ঝড়ে ও ঝঞ্ঝায় বহুকষ্টে

পাতার আড়াল থেকে

বেরিয়ে এসেছে

রক্তজাত এই বৃক্ষ

আমি আজ তাকে

লিখে দেবো

জল-স্থল-অন্তরীক্ষ!

 

এ বৃক্ষের নাম

দুর্ভাগ্য আমার

আমাদের পরিচয়

আমার সন্তান

কিংবা তার প্রজন্মের

পথভ্রষ্ট কীট

এ সত্যটা

মানতে রাজি নয়।

 

কেন বলি

আমার কিছুই নেই

তবু বলি

সব আছে

এ আমার অহংকার

এ আমার মাতৃভূমি

এ আমার প্রাণ।

 

আমার সন্তান

কিংবা তার প্রজন্মের

সবই আছে,সব —

পিতা-মাতা,

ভাই-বোন

অর্থ-বিত্ত

ডলারজীবন

ভোগের উৎসব

অপার আনন্দ।

 

কী নির্মম পরিহাস

এদের সবই আছে,

শুধু নেই

এক টুকরো মাটি —

মাতৃভূমি।

 

আমার কিছুই নেই

তবু আছে

মাতৃভূমি

স্বাধীনতা

এ আমার অমৃতের

অবিনাশী রক্ত উপহার।

 

ঝড়ে ও ঝঞ্ঝায়

যে কোনো উপায়ে

অন্য কিছু নয়

শুধু তাকে

বুকে নিয়ে

শুয়ে যেতে চাই

মৃত্যুর সময়।

=================================

 

পাথর সময়

প্রদীপ খাস্তগীর

 

নিষ্পলক পাথরচোখ ঢেকেছে বরফ স্তুপ

দৃশ্যমান সকল কিছু আবছা ও ঘোলাটে

সম্মুখে ঘুনেপোকার জমাট বিস্মৃতির ঢিবি

 

দিবস-রাত্রির প্রভেদহীন স্থির সময়, কব্জি থেকে

সেকেন্ড-মিনিট-ঘণ্টার কাঁটা কবে উধাও

তাতোও কিইবা আসে যায়

সবকিছু চলছে তো ঠিক-টাক

এভাবেই ধরে নেয়া যাক

 

ক্ষণে ক্ষণে কানে বাজে ভাদ্রের কক্কুরীয় শীৎকার

অসভ্যতার বড়বেশি অতিশয় বাড়াবাড়ি

কোমলমতি শিশুরাও অন্ধগলিতে মুখ লুকায়

 

পৃথিবীর তাবৎ কুৎসিত মুখ দাঁত বের করে

লালসার জিহ্বায় চেটে-পুটে নিঃশেষ

করে দেয় সকল আলো ও জ্যোৎস্নার সুখ

 

বিশাল একটি শৃঙ্খলভার টানছে অতলান্ত কৃষ্ণগুহায়…।

 

 

 

================================

 

আমার সোনার বাংলা

আসিফ নূর

 

‘আমার সোনার বাংলা’র বাউল পথে বুকের বোতাম খুলে

হাঁটতে হাঁটতে কখন যে মজেছিলাম ‘বটের মূলে,

নদীর কূলে কূলে’ বিছানো মায়ার আঁচলে, টেরই পাইনি;

আনন্দিত আকাশ-বাতাস আকুল প্রাণে বাজাচ্ছিল বাঁশি।

 

অকস্মাৎ হানা দিল ভয়ঙ্কর কালাঘূর্ণি, ধূলিঝড়ের তাণ্ডবে

দুচোখের পাতা বন্ধ হবার সাথেসাথেই বাতাসে ভেসে এলো

ধর্ষিতার আর্তচিৎকার, মন্দির-মাজার ভাঙার বর্বর উল্লাসে

কেঁপে উঠল চারদিক, মাটিতে লুটালো চেতনার মহান মিনার;

মসজিদের মেঝেতে গড়াগড়ি খেল ইমামের রক্তাক্ত দেহ।

 

পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা আর শহিদ জননীর চাপা দীর্ঘশ্বাসে

ভারাক্রান্ত এই শৃঙ্খলিত সবুজে আমি যখন স্থবির পাথর;

আমারই গহিন চিরে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ গেয়ে উঠলেন—

‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়নজলে ভাসি’ …

======================================

 

 

তাঁর শীর্ষরা নতজানু নয় বিপ্লবী

মজুমদার শাহীন

 

মৃত্যুর মঞ্চে দাঁড়িয়ে

যার বুকে থাকে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল,

বুকের ভিতর সবুজ বাংলা

আর রক্তলাল শহীদের ছবি

এ এক মৃত্যুন্জয়ী যাদুকর

যে মুষ্টিবদ্ধ হাত রক্তনদীর জল আর

মায়ের উর্বর মাটি দিয়ে বানায় মানচিত্র,

তাঁর শীর্ষরা কখনো নতজানু হতে পারে না।

কাকে ভয় দেখাবে!

রিকশাওয়ালা বুক যখন গোলাপের বাগান,

কোরানে হাফেজের কন্ঠে মার্চের ভাষণ,

শত বছরের বৃদ্ধা

মিছিলের প্রমিথিউস, তখন

বুঝে নিতে হয় এ আগুন

সুপ্ত হয়, নিভে না।

সে কখনো চে গুয়েভারা,কখনো সুভাস বোস,

কখনো ফিদেল ক্যাস্ত্রো অথবা বাংলাদেশ

তবে তাঁর শীর্ষরা কী করে

নতজানু হয়!যতই ভয়ের ফানুস ওড়াও মহাজন

তাকে হৃদয়ে রেখেছে জনগণ।

সে এক অমর কাব্যের কবি,তার শীর্ষরা

নতজানু নয়, বিপ্লবী।

 

=================================

 

একটি মুখাপেক্ষী সকাল

আ ই না ল হ ক

 

একটি মুখাপেক্ষী সকাল আমাদের আলোর গল্প শোনাবে বলে বীরদর্পে কথা দিয়েছিল

একদল ঝোড়হাওয়া চেতনার তেজোদ্দীপ্ত স্লোগানে সাধারণ মানুষকে মুক্তির গানে বিমোহিত করেছিল

অতপরঃ স্বেচ্ছায় ও বিভোর স্বপ্নে

মাথায় তুলেছিলাম একটি সম্ভাবনাময় জ্বলন্ত সূর্য।

আশা ছিল একটা মুক্ত আকাশ পেলে

নিজেদের মতো সোনার সংসার সাজাবো

পুকুর ভর্তি মাছ হবে, মন মাতানো দখিনা বাতাস হবে

আঙিনা বোঝাই অবারিত রোদ হবে আরও কত কি!

কথা ছিল সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি চারায় সজীব হবে হৃদয়

পরশপাথরের স্পর্শে মানুষ মানুষের জন্য সার্থক হবে

 

যখনই মহাশ্মশানে প্রাণ সঞ্চারের লোভ পেয়ে বসে

তখনই খাবারের টেবিলে, পাথরের নিচে ত্রিশূলবিদ্ধ প্রাণ

চপেটাঘাতে আমাদের অদূরদর্শীতার কথা স্মরণ করায়

 

=============================

নীলাঞ্জন বিদ্যুৎ-এর দু’টি কবিতা

গানের ঝরনায়

(অতুল প্রসাদ সেনকে)

প্রাণের সঞ্চার করে সে-প্রতিমায়

অতুল ডেকে উঠে নাড়িয়ে করতল

ক্রমশ উজ্জ্বল মেঘলা দিনগুলো

হউক নিঃশেষ গ্লানির মেঘদল।

ব্যক্তি হেরে গেলে জীবন হার মানে?

হেরেছি বলে আমি হারিয়ে গেছি কবে

জীবন ছুঁয়ে ছুঁয়ে স্বপ্ন পাখা নাড়ে

দাঁড়াব ফের বলি সৃজনে,বিপ্লবে।

দুখীর অযতন সুখীর পূজা কেন!

সময় অনুকূল মাছি ও মশাদের

তিমির হননের চেতনা ফিরে পাই

গানের  ঝরনায় অতুল প্রসাদের।

 

প্রতুল প্রশস্তি

চোখে চোখে নদী নামে বুকে হাহাকার

ঘ্রাণ নিয়ে ফুটে উঠে আগুনের ফুল

গান নয় সুরে গাঁথা সাত নরী হার

চেতনায় দীপ জ্বেলে ডেকেছে প্রতুল।

গোলা জুড়ে ধান আর গলা জুড়ে গান

ধ্বংসের বিপরীতে সৃষ্টির শাঁখ

প্রতুলের মীড়ে ভাসে অই চোরাটান

 

সন্দেহ চোরাবালি নিমিষে মিলাক।

গানে গানে সংগ্রাম হোক অবিরাম

ভালোবেসে রাজপথ দেয় হাতছানি

বানে বানে মরা নদী সে কী উদ্দাম

শৃঙ্খল মুক্তির দিন আসে জানি।

===================================

 

রহস্যের গন্ধ  জীবনানন্দ ২০২২

নন্দিনী সোমা মুৎসুদ্দী

 

কোনও আইডি আর জমকালো হয়না

রমনীর ক্যানভাস ছাড়া।

যেমন জমে ওঠেনা সাহিত্য পাড়া লুণ্ঠিত স্বর্গে,

হরিপদের সংগ্রামী জীবনের কবিতা

মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে বাতিল করা পান্ডুলিপির দলে

 

সৌদামিনীর মুখে সেই ভয় ও ছায়া

সৌদামিনীই তবে সৌমেন রায়

 

হয়তো জীবনের কাছে হেরে গিয়ে

রাষ্ট্রের কাছে হেরে গিয়ে

প্রকাশক পাড়ায় হেরে গিয়ে

সৌমেন রায় আজ সৌদামিনী সেন

কখনো বা রহস্যময় জীবনানন্দ ২০২২।

================================

 

ধানলিপি

মোস্তফা মঈন

 

অতএব

হাজারটা ঘোরপ্যাঁচ পথের মতো ঘোর কাটিয়ে

যুদ্ধ শেষে আমরা যখন জমাট বেঁধে পতাকার মতো

এক হয়ে যাই

আমাদের দৃষ্টি তখন লাল-সবুজ পতাকায়

আমরা নত হই, বিজয়ের আনন্দে গেয়ে উঠি

 

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি…

 

বুঝতে পারি, মাতৃভূমি, বাংলাদেশ

এই মাটি আসলে কতটা মা!

কুয়াশায় ভেজা ঠোঁট

শিশিরের মতো চোখ যার

হেমন্ত আসলে কতটা সোনালি ধান

মায়ের বুকজুড়ে নদী আসলে কতটা নদী

এটা মায়ের আঁচল, পৃথিবীর আর সব বস্তুর মতো নয়

এ আঁচলে ধরা দেয় নতুন নতুন সূর্য

সন্ধ্যায় হলুদবরণ কন্যা নামে সরিষা ফুলের খেতে

ঠোঁট থেকে ঝরে পড়ে হেমন্তের হাসি

বুঝতে পারি, আমরা আছি

জড়াজড়ি করে আছি বসন্তে, বৈশাখে, জীবনের উৎসবে—

এই ধানলিপি, জলপিপি, ময়ূরপু”ছ, রাজহাঁস, নদীলিপি,

কদমফুল কত সুন্দর

 

অতএব

ভোরবেলা তুলির টানে নিসর্গলিপি করি

বাংলাদেশের সৌন্দর্য কুড়াতে কুড়াতে

বুকভরে নিশ্বাসে নিশ্বাসে, বাংলা ভাষার সুর ও স্বর

নিতে নিতে নিজেকে বলি,

মাথা উঁচু করে, ফুল-পাতা মেলে বুক চিতিয়ে দাঁড়াও

কিছু না-হলেও অন্তত মাতৃভূমি একটা ফলবান গাছ হও

রঙিন ফলগুলো পাকুক গাছে

ছেলেরা গাছে ওঠে একদিন ফল পাড়বেই

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

=============================

 

অলাতকাল

আরিফ চৌধুরী

 

আসলে মৃত্যুর দেশ,আমার স্বদেশ

এত মৃত্যু চারদিকে

তবুও জাগেনা মূল্যবোধ

প্রতিদিন বৃষ্টির ছোঁয়া প্রকৃতিতে

উড়ে যায় কালো মেঘ

বেওয়ারিশ লাশ ভাসে

নদী ও  সমুদ্রের জলে,

 

মৃত্যুর কাফনে ঢাকা রৌরব জীবন

সব মায়া ছিন্ন করে প্রতিনিয়ত

মানুষ যাচ্ছে চলে অনন্তের দেশে

ঘুম ভাঙলেই দেখতে পাই

কেউটের চোখে  তাকিয়েছে মানুষ

অলাতকাল, এ কেমন দুঃসময়।

 

রাতে ফুলের গন্ধ ছড়ায় না উঠোন জুড়ে

নির্জনে মানুষ বড় একা,

ঘুটঘুটে অন্ধকারে কাটায় নিদ্রাহীন রাত

তমসা রাতে নিজের ছায়ার দিকে তাকিয়ে

টের পাই ডুবে যাচ্ছে নদীর জলে নৌকা।

আমাদের দিনযাপনে

রাতের কালো ছায়া ঢেকে যায়

অলাতকাল, এ কেমন দুঃসময় এলো।

 

 

 

 

=========================

 

মানুষ শ্রমে নয় ক্লান্ত হয় দুখে

মাহবুবা চৌধুরী

 

মানুষেরা শ্রমে নয়  ক্লান্ত হয় দুঃখঅনুতাপে

সুখ যে আছে সে থাকে ভিতরেই খুব সংগোপনে

যেমন সযত্নে এক বৃক্ষ বীজ চারা হয়ে ওঠে

এঁটেল মাটির ঘরে। চাই শুধু মৃদু জল হওয়া

অঙ্কুরিত হবে তবে, প্রাণ-স্পর্শে ফোটাবে মুকুল।

 

ঊষর শহর জুড়ে ক্লান্তশ্রান্ত মানুষের ভীড়

দিনাতিপাতের ঝড়ে অন্তহীন জীবনের পথে

ছড়িয়ে পড়েছে সেও রৌদ্রদগ্ধ আকাশের নীচে

বৃষ্টি ভিজে  আঁচে পুড়ে অন্ধকার দুহাতে সরিয়ে

সেও যায় লক্ষ্যে পৌঁছে বুকে নিয়ে সুখের পিদিম।

 

ওতেই প্রশান্তি আসে শ্রমক্লান্ত শরীর ও মনে

মশারির  ফাঁকে ভোর উঁকি দেয় নতুন জীবনে।

============================

 

একবার জ্বলে ওঠো

জিৎ মন্ডল

 

প্রদীপ নিভে যাওয়ার আগে

যেমন করে জ্বলে ওঠে,

তরারা কক্ষ পথ পরিবর্তনের আগে

যেমন করে জ্বলে ওঠে,

তুমিও একবার মৃত্যুর আগে জ্বলে ওঠো

জ্বলে ওঠো আপন স্বদেশকে বাঁচাতে।

ওরা তোমার বুকের গহীনে রাখা মানচিত্র নিয়ে

মেতে উঠেছে নষ্টা লীলায়।

ওরা প্রবঞ্চক, ওরা হটকারি,ওরা জোচ্চোর

ওরাই একদিন বিষাক্ত নখরে

ছিন্ন বিছিন্ন করে দেবে তোমার অস্তিত্ব,

তোমার প্রিয় স্বদেশ।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

===========================

 

 

আমার প্রিয় সোনার বাংলা

মারজিয়া খানম সিদ্দিকা

 

ফুল ফোটেছে পাখি ডাকে আঙিনারই পরে

গরু মহিষ সকাল বেলা খোলা মাঠে চরে।

এই আমাদের জন্মভূমি আমার প্রিয় দেশ

জীবন মরণ তোমার সাথে  ভালো লাগে বেশ।

দেখি তোমায় নয়ন মেলে আমার প্রিয় ভূমি

মায়ের ভাষায় কথা বলি তোমার মাটি চুমি।

বর্গী ছিল দেশটি জুড়ে  করতো স্বরাজ লুটে

স্বাধীন বাংলা চেয়ে আমরা যুদ্ধে গেছি ছুটে।

ভয় করিনি দামাল ছেলে বাংলা মায়ের কোলে

পথ হেঁটেছি সদলবলে  পথ হারাইনি ভুলে।

আবালবৃদ্ধবনিতাগণ ঘর ছেড়েছে আশে

ফিরে এলো এবার তারা সোনার বাংলায় হাসে।

বিজয় আমরা দেখেছি আজ পাকা সোনার ধানে

ছুটে গেছি গ্রাম বাংলায় খেজুর রসের টানে।

ঘুম ভেঙেছে চোখ খুলেছি রবি রাঙা প্রাতে

জীবন পাড়ি দিতে চাই মা দিচ্ছি তোমার সাথে।

 

==========================

 

কবি

ইবনুজ্জামান

 

নিশ্চিত জীবন চেয়ে কেউ কি আসে ঝড়ের কাছে?

তপ্ত খড়ায় কিসের আবাদ করবে তুমি

ভুল করে ফোটা শাদা গোলাপের কন্টকে

হাত লাল করে মেখে দেই ললাটে

তাই বুঝি নিশ্চুপ ছিলে?

আগুনে দগ্ধ হয়ে নতজানু হয়েছিলাম

তোমাকে একান্তে পাব বলে

 

পেয়েছি তবে নিশ্চিত দূরত্ব বজায় রেখে

কিভাবে কোন জাদুর ট্রেনে চলতে শুরু করেছি দুজন দূরত্ব মেনে

কবিদের সংগী পাখি হয়

রক্ত মাংসের মানসী না

 

 

 

 

============================

বৈরী বাতাস

শাহীন ফেরদৌসী রুহী সুলতানা

 

আমি যদি হতাম

আকাশপরী

মেঘের সাথে ভাব করতাম

বলতাম পায়ে ধরি

বন্ধু তুমি নিয়ে চলো

তোমার ভূবন বাড়ি

ওই দেশেতে বাস করে

“মা”পরণে নীল শাড়ি।

শুধাবো তাকে!

এত তাড়া ছিল কিসের?

যেতে গো একটু ধীরে

আমি তোমার”মা” হবো মা

আসো যদি আবারও ফিরে।

 

চারদিক থেকে অক্টোপাস আর

হায়েনারা করে উৎসব,

শুনতে কি পাও? বুঝতে পারো কি,

কোন আঁচ কোন অনুভব?

অস্ত্র,অপমান, ফাঁসির দড়ি

সব কিছু যেন তৈরী

অপেক্ষা শুধু দিন, ক্ষণ, মাস

বাতাস চলছে বৈরী।।

==============================

 

মোমবাতিময় জীবন

কাজী নাজরিন

 

জীবন ফুরিয়ে যায় ঠিক মোমবাতির মতো ক্ষয়ে ক্ষয়ে,

নিজেকে নিঃশেষ করে মোমবাতি যেমন আমাদের আলো দিয়ে থাকে,

মানুষ আলো পেতে অভ্যস্ত কিন্তু মোমবাতির শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে হাপিত্যেশ নেই।

ছোট্ট মোমবাতির আলো আমাদের স্বল্প সময়ে উপকারে এলেও সেটা কিন্তু মূল্যবান,

মোমবাতি ফুরিয়ে যাওয়ার শেষ অব্দি পর্যন্ত আলো দিয়ে থাকে।

মোমবাতির আলোর মায়ায় পড়ে কিছু কিছু পোকামাকড় আগুনে পুড়ে ছাই,

ছোট্ট এই বাতির অনলে অসাবধানতায় জ্বলে পুড়ে শেষ হয় কতো কতো জীবন।

কখনো দমকা হাওয়ায় হঠাৎ মোমবাতি নিভে যায়,

কখনো আবার মোমবাতি ছিটকে পড়ে দাউদাউ আগুনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়,,

 

 

 

 

============================

 

 

 

খাগড়াছড়ি

অপু বড়ুয়া

 

খাগড়াছড়ি পাহাড় ঘেরা ছবি

অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে কবি।

ঝিরঝিরিেিয় ঝরনা ঝরে বেয়ে

পাঠশালা যায় ঘাগরা পরা মেয়ে।

 

জুম-ফসলে উদাস হাওয়ার দোলে

যায় হাটে কে ঝুলিয়ে পিঠে ঝোলা!

পাহাড় মাতে বৈসাবি উৎসবে

চাকমা শিশুর হাসির কলরবে।

 

বিজুর সুখে ফুল ভাসানোর খেলা

পাখির ডাকে মুগ্ধ সারা বেলা।

 

=======================

শরৎশশী

সারমিন চৌধুরী

 

তুমি ঝুমঝুম বৃষ্টি হয়ে

ঝরে পড়ো আমার হৃদয়ের উঠোনে

তোমাকে স্পর্শ করা জলকণা আমাকে ছোঁবে

যার প্রতিটি ফোঁটায় শীতল হয়ে সর্বাঙ্গ;

যখন গড়িয়ে পড়বে জলবিন্দু চিবুক বেয়ে

তোমার আহ্বানে লাল হবে চোখমুখ,ঠোঁট!

এমন করে বর্ষা গিয়ে আসে শরৎশশী,

দিনদুপুরে কাশফুলে দেখবো তোমার ছবি।

কাশের পুচ্ছ হয়ে তুমি উড়ে এসে বসবে,

আমার এলোকেশী চুলে রোমাঞ্চিত বিকেলে।

তোমার স্পর্শে আনন্দে আটখানা হবে হিয়া,

সারারাত ঝরবে আমার উঠোনে শিশির হয়ে

ঘাসের ডগায় জমিয়ে রাখবে লাজুক জল

আমি নগ্ন পায়ে হাঁটবো প্রেমে শিহরিত হয়ে।

চোখ মেলে তোমাকে মুক্তা হয়ে জ্বলতে দেখে

আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকবো চিরকাল।

তুমি আমার আকাঙ্ক্ষিত শারদীয় চাঁদ।

 

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।