অনুরাগ
সুইচ-অফ চাঁদ নিয়ে দুহাতে সাঁঝ এসে ছুঁয়ে যায় ঘামঘাম
দুপুরের হাত; কুয়াশার মোহনায় বসে সেই দৃশ্য দ্যাখে
নদীমাতৃক হাওয়া; হাওয়ার শরীর জুড়ে মেঘনা-যমুনা
সন্ধ্যাবেলা খেলা হবে—দিন ও রাতের মধ্যে খেলা
খেলাটা হাডুডু বা অমন কিছু দেয়ালের নিঃসঙ্গ টিকটিকি,
সে-ই এই নাইটম্যাচের রেফারি
হাততালির জন্য আছে চিরকালের উসকানিদাতা হাওয়া।
পিপাসার প্রাক্কলন
ঢেউ ঢেউ চুম্বনের জন্য ধন্যবাদ, হে নদী!
কিন্তু তুমিও তো জানো, সর্বাঙ্গে জলপানে
অভ্যস্ত আমার এই বিবাহিত মাটি;
আরও আছে মাঠ ও ঘাট, দিঘি ও বিল,
অতটা কমে কী করে হয়, বলো!
তো বেড়েছে ভাসানের অপেক্ষা।
ও নদী, চাঁদের ফাইল হাতে বলো, কবে
আসবে আবার! ফের কবে হবে তোমার মঙ্গলবার?
যখন অসময়, সুসময়
অথচ অভাবিত বন্যা এসে ভাসিয়ে দেয় আমার পাকা আউশের খেত আর
তলে তলে রেখে যায় উর্বরতার কোমল ঐশ্বর্য; প্লাবিত চোখের সামনেই
সবুজের সমারোহে ভরে ওঠে বানধোয়া মাঠ। আমি কি বদনাম করবো- নাকি
প্রশংসা—সেটা ভাবতে গেলে সবকিছু একবার পাকিস্তান, একবার ভারত
হয়ে ওঠে। আমি তো জানি, তুমিও জানো, আমি রাজা সোলেমান নই,
তবু হে জোয়ানা, তুমি কেন রানি বিলকিস হয়ে ভেঙে ফেলতে চাও লোভের
হাওয়ায় চঞ্চল বাদামি ঈমানের বেড়া! ভালোবাসো বলেই কী ভাসিয়ে নিতে
চাও পূবালী রাজ্যের রাজধানী—যাকে গুছিয়ে রাখে দুইবেলা পরিপাটি প্রযত্নের
হাত! ভয় হয়–পুরাতন প্রতিশ্রুতি ইঁদুর-কাটা বেড়িবাধ হয়ে ভেঙে না পড়ে
লোকালয়ভরতি ডিজিটাল চোখের সামনে। রাজা সোলেমানের হাজার পত্নী
ছিল, এই গল্প ছড়িয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রত্নরঙা বাতাসে যদিও তাদের
কেউ তার প্রেমিকা ছিল কি না আর তিনি কেনই-বা এতকিছু পারতেন,
সে বিষয়ে সেমেটিক মিথও নিশ্চুপ; কিন্তু আমি তো রাজা বা মহারাজা নই,
কোনো সামন্তও নই; হে জোয়ানা, আমার সাধ্য যে অর্থমন্ত্রীর ঘাটতি বাজেট!
তৃতীয় বিশ্ব
আঁধারের জানালায় শ্বাস ফেলে নদীমাতৃক ঘুমের শত্রুতা করে
উত্তরের যুবতি-হাওয়া;
অন্ধকারে উদ্ভাসিত সেই মুখ দেখে আমি
ঝড়ের রাতের দিঘি!
এমতাবস্থায় বাধ্য-জাগরণকে পুঁঁজি করে
যদি ডোমেস্টিক মিথুনে মেতে উঠতে যাই,
উত্থিত বাসনায় জল পড়ে;
অবশ্য রাতের দেওয়ালে
সেই মোহন শত্রুর স্কেচ এঁকেও রেখেছি; অথচ প্রভাত এগিয়ে এলে
আমি নিজ হাতেই ঢেকে দেই সেই মুখ।
আর এ দেশে কবেই বা কোন তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখোমুখি হয়!
ফলে তো আমার গোপন সর্বনাশের ক্ষান্তি নেই;
ও আমার ভালোবাসার বিশ্বব্যাংক,
উষ্ণখনির লোভে আর কত লোন চাপাবে ভাই!
দ্যাখো, তবু ফলিয়েছি রাতজাগা শ্রমের ফসল।
কিন্তু ফাস্টফুডের বাজারে কী হবে এসব দিয়ে?
ফলে তো আমি এভাবে ফতুর হয়ে গেলে,
তুমিই বলো- সেদিন কে নেবে আমার চক্রবৃদ্ধি বেদনার দায়?
গফুর বলদ পোষে জমিদার পালিছে মিডিয়া
চুরিবিদ্যা বড়বিদ্যা-এটা আজ অতীতের শ্লোক
মলে মলে সিসিটিভি-বর্ডারেও ওয়াচ টাওয়ার
শূন্যে ঝোলে উপগ্রহ-আকাশে পাতালে তার চোখ
কোথায় চুরির রাত? রাতদিন নিউজ আওয়ার!
সাগরে ডাকাতি কত- লুটপাট প্রবাল ঝিনুক
তার চেয়ে মূল্যবান তরল সোনার গোডাউন
লুণ্ঠিত মাটির নিচে সোনাদানা হীরক সিন্দুক
বিবিসি ও সিএনএন হাতে? তবে করে যাও খুন!
স্বাধীনতা, সংগ্রাম, জঙ্গি, খুনি, লড়াই বাঁচার
ইত্যকার শব্দগুলো পেয়ে গেছে নতুন তর্জমা
কী হবে কলেজে গিয়ে? অভিধান? মূল্য কিবা তার!
ক্ষমতার দশমুখ,— সে নিয়েছে সব অর্থ জমা।
চোরের জননী কাঁদে- দ্যাখো তার খালি চুলো-হাঁড়ি
কিন্তু যার প্রেস-টিভি, তাকে তুমি ঠেকাবে কী দিয়া?
তাই তো মিডিয়া নিয়ে বিশ্বব্যাপী এত কাড়াকাড়ি,
গফুর বলদ পোষে,— জমিদার পালিছে মিডিয়া।




