ভূমিকা ও ভাষান্তর: শাহেদ কায়েস
পারনিয়া আব্বাসি ২০০২ সালে তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন তরুণ ইরানি কবি ও ইংরেজি ভাষার শিক্ষিকা ছিলেন। পারনিয়া ২০২৫ সালের ১৩ ও ১৪ জুনের মধ্যবর্তী রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। তিনি কাজভিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুবাদ বিষয়ে স্নাতক শেষ করেন, এবং ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স ডিগ্রি নেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। কৈশোর থেকেই পারনিয়া আব্বাসি কবিতার প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। তাঁর লেখা কবিতা বিভিন্ন সাহিত্য ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি প্রায়ই অন্তর্মুখী, চিন্তাশীল লেখা শেয়ার করতেন। তাঁর শেষ দিকের একটি কবিতায় তিনি লেখেন: “কিন্তু আমি শেষ হয়ে যাব/ পুড়ে-পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাব/ আমি হবো হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্র”এই পঙক্তিগুলো এখন ভবিষ্যদ্বাণীর মতো শোনায়। হামলার রাতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের ভবনে আঘাত হানে, যেখানে তিনি পরিবারসহ বসবাস করতেন। পারনিয়া ছাড়াও তাঁর ছোট ভাই ও বাবা-মাও হামলায় নিহত হন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সূত্র অনুযায়ী, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল ঐ আবাসিক ভবনে থাকা একজন সন্দেহভাজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী। কিন্তু বিস্ফোরণটি বিশাল ধ্বংসের সৃষ্টি করে, যাতে বহু বেসামরিক নাগরিক, এমনকি অনেক শিশুও প্রাণ হারায়।
.
কবিতাটি পার্সিয়ান থেকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেছেন গাজালা মোসাদ্দেক, ভূমিকা ও শাহেদ কায়েস-এর ইংরেজি থেকে বাংলায় ভাবানুবাদ:
হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্র
পারনিয়া আব্বাসি
আমি কেঁদেছিলাম
তোমার জন্য, আর আমার জন্য।
অনন্ত নক্ষত্রের দিকে
ছুঁড়ে দিও আমার চোখের জল।
তোমার জগতে
আলোর স্বাধীনতা,
আমার জগতে
কেবলই ছায়ার পেছনে ছোটা।
পেরিয়ে যাচ্ছি জীবনের সীমারেখা
শেষ হয়ে যাব একদিন,
তুমি আর আমি, দূরে কোথাও
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কবিতাটিও
নিঃশব্দ হয়ে যাবে একদিন।
তবু অনন্ত জাগুক
তুমি শুরু করো ফের, অন্য কোথাও
মেতে ওঠো জীবন-উৎসবে
কিন্তু আমি শেষ হয়ে যাব
পুড়ে-পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যাব
আমি হবো হারিয়ে যাওয়া নক্ষত্র
তোমার একান্ত আকাশে
মিশে যাব ধোঁয়ার মতো।




