এখন সময়:রাত ১২:৪৬- আজ: সোমবার-২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

এখন সময়:রাত ১২:৪৬- আজ: সোমবার
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

এক টুকরো ইটে বাঙালির আত্মা

আবু মকসুদ

এক প্রজন্ম বখে গেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ইতিহাস বলে, যে জাতির মাটিতে এখনো অশ্রু পড়ে, যে জাতির কণ্ঠে এখনো কারও নাম উচ্চারণে হৃদয় কেঁপে ওঠে, সে জাতি কখনো শেষ হয়ে যায় না। যার আত্মা অবশিষ্ট আছে, সে শিকড়ের টানে ফিরে আসবেই। হয়তো সময় নেয়, হয়তো সেই ফেরা আসে নিরবে, কিন্তু আসে অবধারিতভাবে। এই প্রজন্মের ভেতরেও সেই আত্মার স্পন্দন এখনো জেগে আছে, সেটা প্রমাণ করেছে এক কিশোর চৌদ্দ বছরের এক বাঙালি সন্তান। সে আমাদের চোখে অন্ধকার নয়, আশার আলো জ্বালিয়ে গেছে।

বাংলাদেশের জন্মের আতুরঘর, ৩২ নাম্বার, একদিন কতিপয় হায়েনার আক্রমণের শিকার হয়েছিল। তারা ভেবেছিল, পবিত্র এই স্থান ধ্বংস করে বাঙালির হৃদয় থেকেও বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলবে। কিন্তু ভুল করেছে তারা। ইট ভাঙা যায়, দেয়াল ভেঙে ফেলা যায়, কিন্তু স্মৃতি ভাঙা যায় না। সেই স্মৃতির ভেতর থেকে এক কিশোর উঠে এসেছে, হাতে তুলে নিয়েছে এক টুকরো ইট। সেই ইট শুধু ইট নয়, তাতে লেগে আছে বঙ্গবন্ধুর শ্বাস, বাঙালির সংগ্রামের ইতিহাস, মুক্তির রক্ত, ভালোবাসার গন্ধ।

ভাবলে শরীর কেঁপে ওঠে একটি কিশোর, মাত্র চৌদ্দ বছরের, হায়েনাদের নখরে ছিন্নভিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা জেনেও সেখানে গিয়েছে। কেন? কারণ তার হৃদয়ে জেগেছে এক অদ্ভুত টান, মায়ের মাটির মতো, পিতার ছবির মতো। সে জানত, এই ইটটা শুধু মাটি নয়, এটা জাতির আত্মা। তাই বুকের ভেতর আগলে নিয়ে এসেছে। কে শেখাল তাকে এই ভালোবাসা? কে বলেছিল, সেই ইটটাকে রক্ষা করতে? কেউ না। শেখায়নি কেউ, শেখায়নি কোনো বই, কোনো বক্তৃতা। এই শিক্ষা রক্তের ভেতরে, জাতির উত্তরাধিকারেই ছিল।

একটা ইটে বাঙালির প্রাণ থাকতে পারে এটা হয়তো বাইরের কেউ বুঝবে না। কিন্তু আমরা বুঝি। কারণ আমরা দেখেছি, এই ইটের ওপর দাঁড়িয়েই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা হয়েছিল।

 

 

এই ইটের সামনে দাঁড়িয়েই এক নেতা বলেছিলেন, “এইবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।” সেই ইট যেন আজও সেই আহ্বান শুনে কাঁপে, আর সেই কম্পনে সাড়া দিয়েছে এক কিশোরের হৃদয়।

এই কিশোরের চোখে আমরা আবার দেখি জাতির নবজন্ম। সে কোনো রাজনীতি বোঝে না, তবু বুঝে যে দেশ মানে মাটি, দেশ মানে ভালোবাসা। তাই যারা আজ ভয় দেখায়, যারা জুলাই সন্ত্রাসে শহর রাঙিয়ে দেয়, তাদের দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ এই কিশোরেরা এগিয়ে আসছে। তারা বন্দুক ধরে না, তারা আগুন জ্বালায় না, তারা কেবল ইতিহাসকে বুকের ভেতর বহন করে।

একদিন এই কিশোরেরা আমাদের ভুলে যাওয়া মাটি থেকে নতুন বৃক্ষ গজিয়ে তুলবে। তারা শিকড়ের কাছে ফিরে যাবে, সেই শিকড় যেখানে বঙ্গবন্ধুর রক্ত মিশে আছে, যেখানে আমাদের মায়ের কান্না শুকিয়ে গেছে, কিন্তু গর্ব এখনো জাগ্রত। তাই হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। যতক্ষণ না শেষ শিশুটি পর্যন্ত শেখে কীভাবে ভালোবাসতে হয়, ততক্ষণ এই জাতি টিকে থাকবে।

চৌদ্দ বছরের সেই কিশোর আজ আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে, স্বাধীনতা শুধু ইতিহাসের গল্প নয়, এটা অনুভবের নাম, আত্মার নাম। হায়েনাদের আক্রমণ ধ্বংস করতে পারে দেয়াল, কিন্তু পারে না জাতির চেতনা মুছে দিতে। তাই আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে একদিন এই কিশোরের মতো আরো হাজারো সন্তান শিকড়ের পথে ফিরে আসবে। এবং সেদিন এই মাটিতে আবার জেগে উঠবে বাঙালির সত্যিকারের আত্মা, অমলিন, অবিনশ্বর, অমর।

 

আবু মকসুদ, প্রাবন্ধিক

আন্দরকিল্লা প্রকাশনার ২৮ বছর আগামীর পথ ধরে অনাদিকাল

রূপক বরন বড়ুয়া আমি মাসিক ‘আন্দরকিল্লা’ কাগজের নিয়মিত পাঠক। প্রতিবারের মতো হাতে নিলাম এবারের দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদে ঢাকা জুলাই ২০২৫ সংখ্যা, হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতেই

জলে জঙ্গলে (পর্ব-২)

মাসুদ আনোয়ার   ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী বোর্ডের রেজাল্ট আউট হলো। আমি কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষার্থী। ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠলাম। যে কোনোদিন কুমিল্লা বোর্ডও ফল প্রকাশ

স্বপ্নে গড়া অবয়ব

সৈয়দ মনজুর কবির   মনটা যখনই কেমন অজনা বিষণ্নতায় ছেয়ে যায় তখনই কেয়া জানালার ধারে এই চেয়ারটাতে এসে বসে। আজ অবশ্য অন্য একটা কারণ আছে

অন্তহীন সুড়ঙ্গ

সুজন বড়ুয়া   কবর থেকে বেরিয়ে মহিম অশরীরী রূপ নিল। সঙ্গে সঙ্গে গত কয়দিনের সব ঘটনা একে একে মনে পড়ে গেল তার। ফার্স্ট সেমিস্টারের পর

রাত যখন খান খান হয়ে যায়…

মনি হায়দার   চোখ মেলে তাকায় সোাহেল হাসান। প্রথম দৃষ্টিতে সবকিছু অচেনা লাগে। কোথায় এলাম আমি? উঠে বসতেই মনে পড়ে গতরাতে অনেক ঝক্কি আর ঝামেলার