এখন সময়:সকাল ১০:৩৫- আজ: মঙ্গলবার-২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

এখন সময়:সকাল ১০:৩৫- আজ: মঙ্গলবার
২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

কারার ঐ লৌহ কপাট” প্রসঙ্গে (সম্পাদকীয়- নভেম্বর ২০২৩ সংখ্যা)

সম্প্রতি ভারতীয় একটি চলচ্চিত্রে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটি বিকৃত সুরে উপস্থাপন করায় বাংলাদেশ এবং ভারতের সচেতন বিদগ্ধজনেরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের এই প্রতিবাদ যথার্থ এবং যারা এই গানের মূল সুর বাদ দিয়ে নিজস্ব সুর প্রতিস্থাপন করতে চেয়েছেন তারা অবশ্যই নিন্দার পাত্র। অবশেষে তীব্র প্রতিবাদের মুখে সংশ্লিষ্ট সিনেমার প্রযোজক প্রকাশ্য ক্ষমা চেয়েছেন।
এবার আসা যাক এ গানের প্রেক্ষাপটে। ১৯২১ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ “বাঙ্গালার কথা” নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। এর সম্পাদক ছিলেন তিনি নিজেই। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে যখন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ গ্রেপ্তার হন তখন পত্রিকাটির দায়িত্ব স্ত্রী বাসন্তী দেবীর হাতে তুলে দেন। পরবর্তীতে বাসন্তী দেবী সুকুমার রঞ্জন দাশের মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলামের নিকট পত্রিকাটিতে প্রকাশের জন্য একটি কবিতা চেয়ে পাঠান। তখন কবি ‘ভাঙ্গার গান’ শিরোনামে কবিতাটি লিখেন। যা সাপ্তাহিক বাঙ্গালার কথা’য় ১৯২২ সালের ২০ জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে কবি নজরুল এই কবিতাটিতে সুরারোপ করেন এবং কাব্যগীতি পর্যায়ের এই গানটিতে প্রথম কণ্ঠ দেন গিরীন চক্রবর্তী, গিরীন চক্রবর্তীর কণ্ঠে এই গানটি ১৯৫০ সালের জানুয়ারিতে এইচ এমভি (এন.৩১১৫২) রেকর্ড করে।
সামরিক মার্চ এর সুরে এবং ‘দাদরা’ তালে গানটি সুসংরক্ষিত। ঐ সময়ে ভারতে নির্মিত চট্টগ্রাম ‘অস্ত্রাগার লুণ্ঠন’ চলচ্চিত্রে গানটি ব্যবহার করেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে নির্মিত ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রে প্রয়াত চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান গানটি ব্যবহার করে।
কাজী নজরুল ইসলাম রচিত কবিতা বা গানটি আন্দরকিল্লা পাঠকদের জন্য সংযোজন করলামÑ
“কারার ঐ লৌহ কপাট/ভেঙ্গে ফেল, কর রে লোপাট,/রক্ত-জমাট/ শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।/ ওরে ও তরুণ ঈশান!/ বাজা তোর প্রলয় বিষাণ!/ ধ্বংস নিশান/ উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদি।/ গাজনের বাজনা বাজা!/ কে মালিক? কে সে রাজা?/কে দেয় সাজা/মুক্ত স্বাধীন সত্যকে রে?/ হা হা হা পায় যে হাসি,/ ভগবান পরবে ফাঁসি!/ সর্বনাশী/ শেখায় এ হীন তথ্য কে রে!/ ওরে ও পাগলা ভোলা!/ দে রে দে প্রলয় দোলা/ গারদগুলা/জোরসে ধরে হেচ্কা টানে!/মার হাঁক হায়দারী হাঁক,/ কাঁধে নে দুন্দুভি ঢাক/ ডাক ওরে ডাক,/ মৃত্যুকে ডাক জীবন পানে!/ নাচে ওই কালবোশাখী,/ কাটাবী কাল বসে কি?/ দে রে দেখি/ ভীম কারার ঐ ভিত্তি নাড়ি!/ লাথি মার, ভাঙ্গরে তালা!/ যত সব বন্দী শালায়/ আগুন-জ্বালা,/-জ্বালা, ফেল উপাড়ি।”
‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানের সুর ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তোলে। অর্ধচেতনকে সচেতন করে। পরাধীন জাতিকে মুক্তির সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ-উদ্দীপ্ত করে। এ গানের ভিন্ন কোন সুর হতেই পারে না। কবির পরিবারের কেউ হয়তো গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেনÑকিন্তু সুর বিকৃত করতে বলেননি। আর কবি নজরুল বাংলাদেশের জাতীয় কবি। এখানে কবির নামে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নজরুল ইনস্টিটিউট রয়েছে। নজরুল এর যে কোন ব্যাপারে তাঁর পরিবার একা সিদ্ধান্ত দিতে পারে না।
রবীন্দ্রনাথ-নজরুল বা লালন এদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে যে কোন সিদ্ধান্তের আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বা সরকারি অনুমোদনের বিষয়টি জরুরী হয়ে পড়েছে। এখানে এখন রবীন্দ্রনাথ-নজরুল এবং লালন এর গান গুলোকে যার যার ইচ্ছে মতো সুরারোপ করে রঙ মেখে বাজারজাত করছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এইসব বন্ধে জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

আন্দরকিল্লা প্রকাশনার ২৮ বছর আগামীর পথ ধরে অনাদিকাল

রূপক বরন বড়ুয়া আমি মাসিক ‘আন্দরকিল্লা’ কাগজের নিয়মিত পাঠক। প্রতিবারের মতো হাতে নিলাম এবারের দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদে ঢাকা জুলাই ২০২৫ সংখ্যা, হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতেই

জলে জঙ্গলে (পর্ব-২)

মাসুদ আনোয়ার   ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী বোর্ডের রেজাল্ট আউট হলো। আমি কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষার্থী। ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠলাম। যে কোনোদিন কুমিল্লা বোর্ডও ফল প্রকাশ

স্বপ্নে গড়া অবয়ব

সৈয়দ মনজুর কবির   মনটা যখনই কেমন অজনা বিষণ্নতায় ছেয়ে যায় তখনই কেয়া জানালার ধারে এই চেয়ারটাতে এসে বসে। আজ অবশ্য অন্য একটা কারণ আছে

অন্তহীন সুড়ঙ্গ

সুজন বড়ুয়া   কবর থেকে বেরিয়ে মহিম অশরীরী রূপ নিল। সঙ্গে সঙ্গে গত কয়দিনের সব ঘটনা একে একে মনে পড়ে গেল তার। ফার্স্ট সেমিস্টারের পর

রাত যখন খান খান হয়ে যায়…

মনি হায়দার   চোখ মেলে তাকায় সোাহেল হাসান। প্রথম দৃষ্টিতে সবকিছু অচেনা লাগে। কোথায় এলাম আমি? উঠে বসতেই মনে পড়ে গতরাতে অনেক ঝক্কি আর ঝামেলার