এখন সময়:সকাল ১১:০৫- আজ: শনিবার-২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:সকাল ১১:০৫- আজ: শনিবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

ছাগল-মাহাত্ম্য

ড. ইউসুফ ইকবাল

ভূপৃষ্ঠের বঙ্গ-ভূভাগে দ্রুতবর্ধমান প্রাণিকুলের মধ্যে সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য প্রাণিটির নাম ছাগল। আমাদের একচুয়াল ও ভার্চুয়াল প্রতিবেশ-বাস্তব ও মেটাফোরিক পরিমণ্ডলে এর প্রভাব অপরিসীম। ছাগলের আচরণ, বিচরণ ও বিশেষ চারিত্রিক-বৈশিষ্ট্যের কারণে আমাদের  আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক-শিল্পসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক জীবনে প্রাণিটি নানা রূপকার্থে ব্যবহৃত হয়। মানবজীবনের সাথে নিবিড় সম্পর্ক এবং বহুমাত্রিক গুরুত্বের বিচারে ছাগলের গুণাবলি, মহিমা ও মাহাত্ম্য বিষয়ে আমাদের কথা বলা দরকার। জানাশোনার ক্ষেত্র প্রসারিত হলে বস্তুকে সহজে চেনা যায়।

ছাগল মেষজাতীয় দ্বিখুরবিশিষ্ট একপ্রকার গৃহপালিত চতুষ্পদ প্রাণি। ছাগলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাপ্রা এগ্যাগ্রাস হার্কাস। এরা প্রাণিজগতের কর্ডাটা পর্বের অন্তর্গত স্তন্যপায়ী ও তৃণভোজী জীব। ভেড়ার সাথে সাদৃশ থাকলেও ছাগল স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত প্রাণি। ছাগলের মহিমা অপার। ব্যবহারিক মূল্যও অপরিসীম। ছাগলের মাংস সুস্বাদু, দুগ্ধ ঔষধি, চামড়া উন্নতমান। বাজার মূল্য ও আর্থ-সামাজিক বহুবিধ গুরুত্বের

 

 

কারণে ছাগলের প্রভাব বহুমাত্রিক। বিশুদ্ধ প্রভূভক্তি গুণের কারণে বিবিধ কাজে ও অকাজে ছাগলকে অনায়াসে ব্যবহার করা যায়। ছাগলের টিকে থাকার আশ্চর্য ধৈর্য ও শক্তি রয়েছে। যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। জগতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ছাগল এখনও সশব্দে সগর্বে স্বমহিমায় অস্তিত্ববান। বর্তমান সমাজে ছাগলের বিকাশ ও বিস্তৃতি ঈর্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বে ছাগল উৎপাদনে এ-দেশ এখন তৃতীয়। স্বাভাবিকভাবে সামাজিক জীবনে এর উৎপাত সুতীব্র এবং উল্লম্ফনও উল্লেখযোগ্যভাবে দ্রুত বর্ধমান।

 

লিঙ্গ পরিচয়ে অন্যান্য প্রাণির মতো ছাগলও প্রধানত দুই প্রকার। পুংলিঙ্গধারীরা পাঁঠা এবং স্ত্রীলিঙ্গধারী ছাগি নামে পরিচিত। তবে এ-দেশে তৃতীয় এক প্রকার ছাগপ্রজাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান। এর নাম খাসি। ছাগবিশ্বে খাসি পরিচয়ে কোনো ছাগল জন্মগ্রহণ করে না। নির্দিষ্ট বয়সের পর প্রভুরা তাকে খাসিতে রূপান্তরিত করে। এর জন্য তাকে ভোগ করতে হয় অঙ্গহানির যন্ত্রণা। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর বিশেষ পদ্ধতিতে নিরণ্ডকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পাঁঠাকে খাসিতে পরিণত করা হয়। এর পর তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে বিপুল পরিবর্তন ঘটে। খাসি হওয়ার পর চিরতরে তার পাঁঠামি শক্তি রহিত হয়ে যায়। রূপান্তরের পর তার জীবন যৌবনে একটা নির্লিপ্ত শান্ত ভাব গ্রাস করে। তখন কোনো কিছুতে সে আর স্বতঃপ্রবৃত্ত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে না। উত্তেজনাশক্তি হারিয়ে ক্রমশ সে নিরুত্তাপ, নিরুদ্বেগ এবং মনিববান্ধব বিশ্বস্ত এক প্রাণি হয়ে ওঠে। এ-দেশে খাসি ছাগল অত্যন্ত জনপ্রিয়।

 

খাসিরা সবসময় ইতিবাচক প্রাণি। প্রভুর সামনে সে সবসময় কম্পিতকণ্ঠে হ্যাঁ-সূচক মনোভাব প্রকাশ করে। খাসি মূলত উত্তেজনাবিহীন, নিস্তেজ, নির্বীজ, অনুগত ও অণ্ডহীন এক প্রাণি। খাসিতে পরিণত হওয়ার পর ছাগসমাজে সে নিঃসঙ্গ জীবন অতিবাহিত করে। পাঁঠারা তাকে আর সাথে নেয় না। কেননা সে অণ্ডহীন। একই কারণে ছাগীরাও তার পাশে আর কখনও ঘেঁষে না। তাতে অবশ্য খাসির কিছু যায় আসে না। কেননা রূপান্তরিত প্রাণি হিসেবে নিজের অণ্ডহীন নিস্তেজ অবস্থাকে সে মনে মনে মেনে নেয়। খাসিরা ছাগল জাতির বংশ বৃদ্ধিতে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না। বীর্যহীনতা এর একমাত্র কারণ। দিনে দিনে কেবল তার দৈহিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। এক পর্যায়ে খাসির সারা দেহ চর্বিতে ঢেকে যায়। স্থূল দৈহিক সৌন্দর্য ও নিস্তেজ মানসিকতার কারণে সমাজে খাসি ছাগলের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। খাসিকে সবাই আদর করে। বাজারে এদের কদর বেশি। নিস্তেজ স্বভাব, প্রভুভক্তি, মাংস ও চর্বির আধিক্যপূর্ণ দেহশ্রীর কারণে নপুংসক প্রজাতির এই ছাগল সহজে সকলের মন জয় করতে সক্ষম হয়।

 

ছাগল বড় অস্থির প্রাণি। তাকে এক জায়গায় স্থির রাখা সহজ নয়। ক্রমাগত স্থান পরিবর্তন, ঘনঘন ঊর্ধ্বলম্ফ ও মূত্রত্যাগ তার স্বভাব। ছাগলের মুখ কখনো বন্ধ থাকে না। সার্বক্ষণিক তাদের মুখ নড়ে এবং নিয়মিত বিরতিতে কম্পিত স্বরে শব্দ করতে থাকে। সে শব্দ চারপাশে বড় কাতর ও করুণ আবহ সৃষ্টি করে। এ-কারণে সহজেই সে সমাজের করুণা ও সমবেদনা লাভ করে। পাতিছাগল সবচেয়ে বেশি অস্থির। পাতিছাগলের বাচ্চারাও কখনও স্থির থাকে না। তারা কেবল লাফাতে পছন্দ করে। কোনো কারণ ছাড়াই তারা ক্লান্তিবিহীন লাফালাফি করে। ইস্যু পেলেতো কথাই নেই। তখন সে দেহমনেপ্রাণে তিনগুণ বেশি লাফায়। যে-কোনো বিষয়ের সূত্র ধরে পাতিছাগলগুলো তিলকে তাল করে তুলতে সক্ষম। ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চাটি এক্ষেত্রে আরও একটু বেশি অগ্রগামী। কিছু না-পেয়ে, না-খেয়ে, না-বুঝেই অকারণে সে শুধু লাফায়। লাফালাফিতেই সে রাজ্যের সুখ লাভ করে। পাতিছাগলের মতো এমন সুখি প্রাণি পৃথিবীতে মনে হয় দ্বিতীয়টি নেই।

 

ইউরোপ আমেরিকাসহ শিক্ষা ও জ্ঞানবিজ্ঞানে উন্নত দেশগুলোতে ছাগলের কদর কম। ছাগলামিকে তারা সমাজে অনুৎসাহিত করে। এর মাংসও তারা তেমন পছন্দ করে না। সভ্য জগতের লোকেরা ছাগলকে বন্য প্রাণী মনে করে। সেখানে গৃহে বা খামারে এর লালন পালন কদাচ দৃষ্ট হয়। এদেশে ছাগল লালন পালন উন্নয়নের জন্য রয়েছে সরকারি খামার। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ছাগল খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রাণি। এসব দেশে ছাগলকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়।

 

 

 

দক্ষিণ এশিয়া ছাগলে পরিপূর্ণ। কোনো প্রকার পরিকল্পনা, উদ্যোগ আয়োজন ছাড়াই এখানে ছাগলের বিস্তার ঈর্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে ঘরে ঘরে সাদরে ছাগল লালন পালন করা হয়। নানা রঙের ও আকৃতির ছাগল এখানে বিদ্যমান। বড় আকৃতির ছাগলকে বলা হয় রামছাগল। পাতিছাগল আকারে ছোটো। প্রধানত লাল, সাদা ও কালো রঙের ছাগলই বেশি দৃষ্ট হয়। বাংলাদেশে ছাগলের সংখা বিপুল। ধারণা করা হয় পৌনে তিন কোটি ছাগল এ দেশে বিদ্যমান। এর নব্বই ভাগই কালো ছাগল। বিশ্ব ছাগলসভায় ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বা কালো ছাগল গৌরবময় আসনের অধিকারী। আমাদের ব্ল্যাক বেঙ্গল বিশ্বমানের তথা বিশ্ব সেরা। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংস যেমন সুস্বাদু, চামড়া আন্তর্জাতিকভাবে উন্নতমানের বলে স্বীকৃত। ছাগবিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের উন্নয়ন, প্রজনন ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম এ-দেশের ছাগল গবেষকরাই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জিনোম সিকোয়েন্স বা জীবন-রহস্য উন্মোচন করেছে। তাই— গুরুত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব, সংখ্যাধিক্য এবং অগ্রগামী গবেষণার বিচারে ছাগল নিয়ে গর্ব করার একচ্ছত্র অধিকার রয়েছে আমাদের।

 

আবহমানকাল থেকে বাঙালি জীবনে ছাগল অষ্টেপৃষ্ঠে মিশে আছে। বাংলা প্রবাদ-প্রবচনসহ আমাদের বাগবিধিতে ছাগলের বহুমাত্রিক ব্যবহার তার স্বপক্ষে সাক্ষ্য দেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছাগলকে নেতিবাচক বাগবিধি হিসেবে উচ্চারণ করা হয়। যেমন: ‘সে একটা আস্ত ছাগল’বললে লোকটার আহম্মক পরিচিতি তুলে ধরা হয়। তাছাড়া, বঙ্গে ছাগলের আচরণকে বলা হয় ছাগলামী। পাগলের আচরণের সাথে এর কোনো সাযুজ্য না থাকলেও বঙ্গভাষায় ‘পাগল-ছাগল’ সাধারণত একই সাথে এবং তুচ্ছার্থকভাবে উচ্চারিত হয়। প্রবাদ হিসাবে মানুষ অবলীলায় উচ্চারণ করে ‘পাগলে কীনা বলে ছাগলে কীনা খায়’। পাগল অসংলগ্ন অনেক কথাই বলতে পারে, ছাগল কিন্তু সব খাবার খায়না। এটা ছাগলের বিরুদ্ধে একটা অন্যায় অপবাদ। অযোগ্য বোঝাতে বাংলাভাষায় আরও অনেক বাগভঙ্গি থাকলেও মানুষ কেন জানি ‘গরু-ছাগল’ বলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করে। একই ভাবপ্রকাশের জন্য অনেকে বলে ‘ছাগল দিয়ে হালচাষ হয় না’। ছাগলের বিরুদ্ধে এই পক্ষপাত মূলক অপবাদের কারণেই মানুষ হাজার বছর ধরে বলে আসছে ‘ছাগল পালে পাগলে’। অথচ বর্তমানকালে দূরদর্শী বুদ্ধিমান খামারীরাই ছাগল পালন করে। এতে অনেকেই লাভবান হয়েছে। তাই ছাগলকে নির্বিচারে নেতিবাচক অর্থে উপস্থাপন করাটা মোটেই সমীচীন নয়। কালের বর্তমানপ্রান্তে এসে সমাজে ছাগলের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা করে নতুন বাগবিধি সৃষ্টি এবং পুরনো প্রবাদ ও বাগভঙ্গিগুলোর নতুন অর্থ তৈরি করা প্রয়োজন।

 

দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের মানুষ ছাগলকে অত্যন্ত প্রীতিময় ও শ্রদ্ধার চোখে দেখে। মহাত্মাজীর ছাগলপ্রীতি বিশ্ব-বিশ্রুত। ভ্রমণে তাঁর অনিবার্য সঙ্গী থাকত ছাগল। পাকিস্তানে ছাগলকে এতই পছন্দ করে যে- ছাগল সেখানে মানুষের নাম পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে। সে দেশে জাতীয় সংগীতের সুরকারের নাম গোলাম আলি ছাগলা। তাছাড়া মারখোর প্রজাতির একপ্রকার ছাগলকে তারা গর্বের সাথে জাতীয় পশু হিসাবে নির্বাচন করেছে। এ এক আশ্চর্য ছাগলবান্ধব দেশ। শিল্পসাহিত্যেও ছাগল বিভিন্ন ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাসাহিত্যে ঈশ্বরগুপ্ত পাঁটা নামে লিখেছেন বিখ্যাত কবিতা। এতে তিনি ছাগলের প্রতি মুগ্ধ হয়ে বলেছেনু‘রসভরা রসময় রসের ছাগল, তোমার কারণে আমি হয়েছি পাগল’। প্রাচীন গ্রীসে উদ্ভুত ট্র্যাজেডি-নাটক শব্দবন্ধের বাংলা অর্থ করলে যা  দাঁড়ায়, তাহলো ‘ছাগল-সংগীত’। সে কালে শ্রেষ্ঠ ট্র্যাজেডি নাট্যকারকে ছাগল উপহার দেবার রীতি প্রচলিত ছিল। কেউ কেউ গ্রিক ডায়োনাসিস দেবতার প্রতিরূপ মনে করতেন ছাগলকে। ঈদে, আকিকায় ছাগল জবেহ হয়। এদেশে মনসা দেবীকে খুশি করতে ছাগলবলি দেবার রীতি রয়েছে। মনসাপুজায় যুপকাষ্ঠে প্রাণ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে পাঁঠারা জীবনের পূণ্যময় পরিণতি লাভ করে। সাহিত্যের রাজপ্রাসাদে ছাগল গৃহীত হয়েছে বহুবিধ রূপক ভঙ্গিমায়। তামিল সাহিত্যিক পরমাল মুরুগানের উপন্যাস ‘দ্য স্টোরি অব এ গোট’, আমেরিকান সাহিত্যিক এডওয়ার্ড আলবির নাটক ‘দ্য গোট, অর হু ইজ সিলভিয়া’, সংস্কৃত ‘পঞ্চতন্ত্র’ এবং ঈশপের গল্পসমূহ এ-প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

 

ছাগলের মতো এমন প্রভাব বিস্তারী ও উল্লম্ফনপ্রিয় প্রাণি দ্বিতীয়টি নেই। এই বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ছাগল সহজেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তবে, তার পতনও ত্বরান্বিত হয় এই উল্লম্ফনের কারণে। অবশ্য পতনকে সে অনেক সময় সম্মানজনক উত্থান বলে মনে করে। প্রভুর প্রতি অন্ধ বিশ্বস্ততাও ছাগলের পতনের অন্যতম কারণ। চর্বিতে পূর্ণ হলেই প্রভূ তাকে তুলে দেয় কসাইয়ের হাতে। কসাইকেও সে অত্যন্ত বিশ্বাস করে। প্রভু কর্তৃক নির্ধারিত সেই কসাইয়ের হাতেই তার জবেহ সম্পন্ন হয়। সকল ছাগল শেষ পর্যন্ত খাবারের টেবিলে উপাদেয় খাদ্য-উপকরণে পরিণত হয়। প্রভুর উদরপূর্তিতে নিজেকে সম্পূর্ণ উৎসর্গ করাকেই সে জীবনের পরম সার্থকতা মনে করে। ছাগলসমাজ জীবনের করুণ পরিণতিতেও কখনো হতাশ হয় না। লোকান্তরিত হওয়ার আগে তিন/চারটি যোগ্য উত্তরাধিকার সে রেখে যায় প্রভুর উদরসেবায়। তাইতো সমাজে ছাগলের সংখ্যা দ্রুত বর্ধমান।

 

কালের বর্তমান প্রান্তে এসে এ-জনপদ পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে বিচিত্র ছাগলে। পথেঘাটে, হাটেমাঠে, সমাজে ও সামাজিক মাধ্যমে, কর্মক্ষেত্রে, শিল্পসাহিত্যে, আড্ডা-আলাপে, উৎসব-মহোৎসবে কেবল শোনা যায় ছাগলের উৎকট ও তীব্র কোলাহল। সর্বত্র আজ ছাগলের জয়জয়কার। এ-জয়যাত্রা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাণিরাজ্যে একটি আদর্শ ছাগল-সমাজ বিনির্মাণ এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। ছাগলের জয় হোক।

 

ড. ইউসুফ ইকবাল, নাট্যকর্মী, প্রাবন্ধিক ও শিক্ষক

একজন রোমাঞ্চপ্রিয় মানুষ ও তাঁর তোলা কিছু দুর্লভ আলোকচিত্রের কথা

আলম খোরশেদ অনেকেই জানেন যে, প্রখ্যাত ফরাসি কল্পবিজ্ঞানলেখক জ্যুল ভের্ন এর কিংবদন্তিতুল্য গ্রন্থ ‘অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইজ’ অবলম্বনে ১৯৫৬ সালে হলিউডে একই নামে

প্রগতির পথে, জীবনের গান, সকল অশুভ শক্তির হবে অবসান” এই আহবানে উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ৫৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

\ ভাস্কর ধর \ সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বানের মধ্য দিয়ে এবং প্রগতির লড়াইকে দৃঢ় করার দৃপ্ত শপথের মধ্য দিয়ে উদীচীর ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। 

আমার বাবা কর্নেল তাহের

জয়া তাহের   আমাকে যখনই কেউ জিজ্ঞাসা করেন, কর্নেল তাহেরের মেয়ে হিসেবে আপনার অনুভূতি কি? আমার চোখের সামনে এক নিমেষেই ভেসে ওঠে ৪০ বছরের অসংখ্য

ছাগল-মাহাত্ম্য

ড. ইউসুফ ইকবাল ভূপৃষ্ঠের বঙ্গ-ভূভাগে দ্রুতবর্ধমান প্রাণিকুলের মধ্যে সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য প্রাণিটির নাম ছাগল। আমাদের একচুয়াল ও ভার্চুয়াল প্রতিবেশ-বাস্তব ও মেটাফোরিক পরিমণ্ডলে এর প্রভাব অপরিসীম। ছাগলের

সৈয়দ মনজুর কবির-এর অনুগল্প

শুধুই কলিজার টুকরা পারে   সম্প্রতিক সৃষ্টি হওয়া চরম বিপরীতমুখী দুই পরিবারের মাঝে একটি টানা বেড়ার আড়াল। শুধু ওপাশের আম গাছটির ছড়ানো লম্বা ডালটি চলে