এখন সময়:সকাল ৭:০৯- আজ: মঙ্গলবার-২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

এখন সময়:সকাল ৭:০৯- আজ: মঙ্গলবার
২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

দেখে এলাম অপেরা হাউস

অপু বড়ুয়া

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি একটি বিখ্যাত শহর। মাসব্যাপি ঘুরলাম অস্ট্রেলিয়ার আনাচে কানাচে। সব সময় আমার সফর সঙ্গী জামাই পবিত্র বড়–য়া ভাগিনী হৈমন্তী বড়–য়া হিমু তাদের ছেলে হিয়ান বড়–য়া মেয়ে অনামি বড়–য়া। বলা প্রয়োজন -যারা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করে তাদের প্রতিটি মিনিট যেন সোনার চেয়ে দামি। কাজ পাগল সবাই। প্রতি শনিবার তাদের সাপ্তাহিক বন্ধ। বন্ধ ছাড়া কাউকে তেমন পাওয়া যায় না। এমনকি ফোনে পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ায় বর্তমান বসবাস করে আমার ছোট কালের বন্ধু ক্লাসমেট নাম মানিক বড়ুয়া সম্পর্কে মামা ভাগিনা আমরা। তার ব্যাচলর বাসায় নিমন্ত্রণ করলো আমাকে। তার বাসা সিডনি শহরে। তার সাথে আরো দুচারজন থাকে সবাই বাংলাদেশি। নিজেরা রান্না করলো হরেক রকমের। খেলাম পেট ভরে। খাওয়ার পর ভাবলাম কোথায় যাওয়া যায়। মানিক জানালো মামা সিডনির আকর্ষণ অপেরা হাউস যাওয়া যেতে পারে। সাথে সাথে অফারটা লুফে নিলাম রওনা হলাম ট্রেনে, বাসে হেঁটে পৌছলাম নন্দিত স্থান অপেরা হাউসে। গাড়ি থেকে নেমে হাঁটার পথে বিখ্যাত সিডনি বিশ^বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নিয়ে গেল আমাকে। অসাধারণ ক্যাম্পাস নির্জন নিরবে চলছে লেখাপড়া। ভাগিনা মানিক জানালো – ওখানে কোনো রাজনীতি নেই, ধর্মঘট নেই, সেশনজট নেই, উচ্চশিক্ষার পরিবেশ আসলে এমন হওয়া উচিত।

নদীর পাড় ঘেঁষে হেঁটে হেঁটে অপেরা হাউসের বেদিমূলে গিয়ে দুজন বসলাম। তারপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠে অপেরা হাউসের শে^ত পাথর ষ্পর্শ করলাম। এটি এমন একটি সৃষ্টি যা জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ^ উত্তরাধিকার তালিকায় স্থান পেয়েছে। ১৯৫৯-১৯৭৩ সময়কাল ধরে নির্মিত এই স্থানটি বিশ^জুড়ে পরিচিত। অপেরা হাউসের প্রাচীরগুলো সাদা জমাট কংক্রিটের দ্বারা তৈরী। অপেরা হাঊসের ভেতরে ৫৭০০ জন দর্শক প্রদশনী উপভোগ করতে পারে। অপরো হাউসের চারপাশে নীল জলরাশি দেখলে মন ভরিয়ে রাখে। বেদির সিঁড়িতে বসে বসে আমরা মামা ভাগিনা গলা ছেড়ে অনেক গান গাইলাম। আশে পাশে পর্যটকের ভিড়। কার কথা কে শোনে। অপেরা হাউসের বিস্তৃত আঙিনায় অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীরা স্বকীয় ঢংয়ে নাচ গান জাদু প্রদর্শন করছিলো। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করলাম। তাদের পোশাক পরিচ্ছদ তাদের নিজস্ব ঐতেহ্যের ধারক বাহক। এমনকি তাদের বাদ্যযন্ত্রগুলোও আদি ঐতিহ্যের নিদর্শন। নিজস্ব ভাষায় গানের কথায় তাই পরিষ্ফুটিত হলো। আদিবাসী কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাদের এই প্রচেষ্টা চমৎকার। অতীতে তাদের সংখ্যাধিক্য থাকলেও বর্তমানে তারা সংখ্যালঘু। বিশে^র বিভিন্ন দেশের মানুষ বর্তমান অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছে। বসবাস করবেইতো কারণ- যে দেশে নেই আন্দেলন, মিছিল মিটিং, সমাবেশ, ওয়াজ মাহফিল, যানজট, ঘুষপ্রথা, স্বজনপ্রীতি, চাকরি, বাণিজ্য ইত্যাদি।

অপেরা হাউসের আঙিনা থেকেই দেখা যায় হারবার ব্রিজ। অনেকটা কাছে গিয়ে হারবার ব্রিজের নৈকট্য অনুভব করলাম। এই হারবার ব্রিজটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম পরিচিতির মাধ্যম। পারামাতা নদীর উপরেই এই ব্রিজ। এর উপর দিয়ে ট্রেন,মোটরকার,পথচারী চলাচল করে নিশ্চিন্তে। ১১৪৯মিটার লম্বা ৪৯মিটার চওড়া এবং ১৩৪ মিটার উঁচু ব্রিজটি চালু হয় ১৯৩২সালে। সিডনি সিটির কেন্দ্রস্থলে অপেরা হাউসের দক্ষিণ প্রান্তে রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন। ৭৫ একর বিশাল এলাকা জুড়ে এই বাগান। সবুজ ঘাসের চাদর যেন বিছিয়ে রেখেছে কারো জন্যে। ছোট বড় সব গাছই বাগানে সুপরিকল্পিত ভাবে সাজানো। ১৮১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ১৭০০০ টি বৃক্ষ রয়েছে প্রকৃতির অপূর্ব সমাহার। প্রতিটি বৃক্ষের পরিচিতি এবং উৎস স্থানের বিবরন তুলে ধরায় দর্শকদের বাড়তি আনন্দ উপভোগ্য। বাগানের ভেতরে দল বেঁধে কাকাতুয়া বাস করে। ডর ভয় ছাড়া উড়োউড়ি করে। কেউ তাদের ধাওয়া করে না। শুকনো খাবার দিলে ওরা দল বেঁধে এসে খেয়ে যায। মানুষের সাথে পাখিদের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে সহজে। মাঝে মাঝে পর্যটকের বসার দারুণ চেয়ার টুল দেওয়া আছে। অনেকে ঘুরে ঘরে ক্লান্ত হলে বসে পড়ে এমনকি ঘুমায়ও। আমি আর ভাগিনা মানিক বেশ কিছুক্ষণ বসে বসে প্রকৃতির পাখির দর্শকের মেলবন্ধন আবিস্কার করলাম। পাখির কিচির মিচির শব্দ, পাখিদের গানে মুগ্ধ হলাম। সূর্য ডোবার আগেই স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ আছে। ওখানে ছোড় বড় সবাই আইনের প্রতি খুব বেশি শ্রদ্ধাশীল। এবার যেতে হবে। মামা ভাগিনা আবারো গাড়িতে চড়ে বাসায় ফিরে এলাম।

 

অপু বড়ুয়া, শিশুসাহিত্যিক ও গীতিকার

আন্দরকিল্লা প্রকাশনার ২৮ বছর আগামীর পথ ধরে অনাদিকাল

রূপক বরন বড়ুয়া আমি মাসিক ‘আন্দরকিল্লা’ কাগজের নিয়মিত পাঠক। প্রতিবারের মতো হাতে নিলাম এবারের দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদে ঢাকা জুলাই ২০২৫ সংখ্যা, হাতে নিয়ে নেড়ে চেড়ে দেখতেই

জলে জঙ্গলে (পর্ব-২)

মাসুদ আনোয়ার   ৬ ডিসেম্বর রাজশাহী বোর্ডের রেজাল্ট আউট হলো। আমি কুমিল্লা বোর্ডের পরীক্ষার্থী। ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে উঠলাম। যে কোনোদিন কুমিল্লা বোর্ডও ফল প্রকাশ

স্বপ্নে গড়া অবয়ব

সৈয়দ মনজুর কবির   মনটা যখনই কেমন অজনা বিষণ্নতায় ছেয়ে যায় তখনই কেয়া জানালার ধারে এই চেয়ারটাতে এসে বসে। আজ অবশ্য অন্য একটা কারণ আছে

অন্তহীন সুড়ঙ্গ

সুজন বড়ুয়া   কবর থেকে বেরিয়ে মহিম অশরীরী রূপ নিল। সঙ্গে সঙ্গে গত কয়দিনের সব ঘটনা একে একে মনে পড়ে গেল তার। ফার্স্ট সেমিস্টারের পর

রাত যখন খান খান হয়ে যায়…

মনি হায়দার   চোখ মেলে তাকায় সোাহেল হাসান। প্রথম দৃষ্টিতে সবকিছু অচেনা লাগে। কোথায় এলাম আমি? উঠে বসতেই মনে পড়ে গতরাতে অনেক ঝক্কি আর ঝামেলার