এখন সময়:সকাল ৯:১৯- আজ: বৃহস্পতিবার-৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:সকাল ৯:১৯- আজ: বৃহস্পতিবার
৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

নভোচারী সুনিতা মহাকাশে ফুল ফোটায় পৃথিবীতে নারীর পায়ে শেকল পরায় কে?

প্রদীপ খাস্তগীর

চমৎকার একটি সফল মহাকাশ সফর শেষ হয়েছে গত ১৮ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে। গত বছরের ৬ জুন মাত্র ৮ দিনের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যান মার্কিন নভোচারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনিতা উইলিয়াম ও বুচউলমোর। সুনিতার বয়স ৫৯ ও বুচ উইলমোরের বয়স ৬২ বছর। তারা দু’জনই শুরুতে মার্কিন নৌবাহিনীর পরীক্ষামূলক নতুন যান চালানোর পাইলট ছিলেন। পরে নাসায় যোগ দেন। মহাকাশ স্টেশনে ৮ দিন কাটিয়ে ফিরে আসার নির্দিষ্ট সময় থাকলেও বোয়িং এর যে ক্যাপসুলে তারা যান, সেই স্টারলাইনারে। ত্রুটি দেখা দিলে সময়মতো তাদেরকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা যায়নি। ফিরিয়ে আনতে সময় লাগে নয় মাস। এতো সময় লাগার কারণ হঠাৎ সৃষ্ট প্রযুক্তিগত সমস্যা। পৃথিবীতে ফেরার অভিযাত্রাটির নাম ‘নাসা-৯ মিশন’। এই মিশনে সুনিতা ও বুচের সাথে আরো দুইজন নভোচারী ছিলেন, তারা হলেন—যুক্তরাষ্ট্রের নিকোলাস হেগ ও রাশিয়ার আলেকজান্ডার গর্বুনভ।

 

পুরো মিশনটি ছিল মহাকাশ নিয়ে ধারাবাহিক গবেষণার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ। নভোচারীরা প্রত্যেকেই অভিজ্ঞ। সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ সুনিতা উইলিয়াম। তিনি কয়েক দফায় মোট ৫১৭ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এটা কোনো নভোচারীর সবচেয়ে বেশি সময়কাল ধরে মহাকাশে পরিভ্রমণ ও অবস্থান করার একটি রেকর্র্ড। সুনিতা ও বুচ এতোদিন সেখানে কিভাবে ছিলেন এবং কেমন ছিল তাদের দিনাতিপাত—এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ ও শংকা থাকলেও নাসা কর্তৃপক্ষ জানায়—প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে নভোচারীদের পৃথিবীতে ফেরার দীর্ঘ বিলম্ব হলেও বড় ধরণের কোনো বিপর্যয় ঘটেনি; এমনকি নভোচারিদের শরীরেও কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ জানান— সুনিতারা প্রতিদিনের সকালের নাস্তা হিসেবে গুড়ো দুধ, পিৎজা, রোস্ট করা মুরগির মাংস, চিংড়ির ককটেল আর টুনা মাছ খাবার সুযোগ পেতেন। তারা প্রয়োজন মতো ক্যালোরি গ্রহণ করেছেন। তাদের জন্য মহাকাশ স্টেশনে তাজা ফল ও শাকসব্জি ছিল, মাছ-মাংস, ডিম ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার মজুদ ছিল। তবে সেসব পৃথিবীতে রান্না করা সংরক্ষিত খাবার। মহাকাশ স্টেশনে সেগুলো শুধু খাবার আগে গরম করে নেওয়া হতো। নাসা সূত্র জানিয়েছে, আই.এস.এসে পুষ্টিকর খাবারের অভাবে কারো ওজন কমেনি। সেখানে পর্যাপ্ত খাবার ছিল। সুনিতাদের মতো কোনো অভিযান যদি আকস্মিকভাবে বিলম্বিত হয় তাহলেও খাবারের অভাব হবে না। আরো উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো যে, মহাকাশ স্টেশনে স্যুপ, স্ট্যু, আর ক্যাশলের মতো খাবার শুকনো অবস্থায় নেয়া হয়েছিল। পরে সেখানে থাকা ৫০০ গ্যালন এর ট্যাংকে মজুদ পানি থেকে রান্না করা হয়। মহাকাশ স্টেশনে নভোচারিদের প্রস্রাব ও ঘাম পুনর্ব্যবহার করে পানিতে পরিণত করার পদ্ধতি রয়েছে। নাসা—ক্রু-৯ মিশনের অংশ হিসেবে ক্রু ড্রাগনে ফিরতি যাত্রা বেশ রোমাঞ্চকর ছিল। যাত্রা শুরুর ১৬ ঘণ্টা পর সুনিতা ও বুচ সহ চার নভোচারী পৃথিবীর আকাশ মণ্ডলীতে প্রবেশ করেন। তাদের বহনকারী ক্যাপসুলটি বিশেষ প্যারাসুটের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূল থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে সমুদ্রে অবতরণ করে। এ ফিরতি যাত্রা নিয়ে ক্রু-৯ মিশনের কমান্ডার ও নাসার নভোচারী নিক হেগ বলেন—কি অসাধারণ এই যাত্রা এবং যাত্রা শেষে পৃথিবীতে ফেরার চমৎকার পরিসমাপ্তি। আমরা এখন অপেক্ষা করছি কিছু মেডিকেল টেস্টের ফলাফল শেষে পরিপূর্ণভাবে সুস্থ শরীরে নভোচারীগণ তাদের পরিবারের সাথে মিলিত হওয়ার সোনালী শুভ ক্ষণটির জন্য।

 

 

এই অভিযানের গবেষণার মূল বিষয়টি ছিল মহাকাশে মঙ্গলের মতো গ্রহে উদ্ভিদ ফলন বা চাষাবাদ করা যায় কিনা। ওখানে চাষাবাদের উপযোগী প্রাকৃতিক উপাদান অনুসন্ধান করতে গিয়ে মহাকাশে থাকা অবস্থায় নভোচারী নারী সুনিতা তার প্রিয়  জিনিয়া ফুল ফুটিয়েছেন মাত্র তিন মাসের চেষ্টায়। এ জন্য তিনি সাথে করে জিনিয়া ফুলেল বীজ নিয়ে গিয়েছিলেন। মহাকাশে জিনিয়া ফুলের চমৎকার রঙের মুগ্ধতায় সুনিতার মনে হয়েছিছল তিনি নিজের বাগানেই হাঁটছিলেন।

সুনিতার মতোন একজন নারী যখন মহাকাশে তার প্রিয় ফুল জিনিয়া ফুটিয়েছেন, তখন পৃথিবী নামক সভ্য ভব্য গ্রহের অনেক দেশে নারীদের পায়ে শিকল পরিয়ে দেওয়ার অহরহ নষ্টামী ঘটছে। নারীরা রক্ত-মাংসের মানুষ, পণ্য নয়, ভোগের বা শুধু সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র নয়; যে নারী মহাকাশে তার প্রিয় জিনিয়া ফুল ফোটাতে পারেন সেই নারীকে মৌল অন্ধকারে ঘাতক কাঁটা যদি অবিরাম বিদ্ধ করে তাহলে বুঝতে বাকি থাকে না যে, মানব সভ্যতার চূড়ান্ত ধ্বংস ও সর্বনাশ হতে খুব একটা দেরি নেই।

তাই জোর গলায় প্রশ্ন করতে চাই নভোচারী সুনিতা যখন মহাকাশে ফুল ফোটায় তখন নারীর পায়ে শেকল পরায় কে?

 

প্রদীপ খাস্তগীর, কবি ও প্রাবন্ধিক, চট্টগ্রাম

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।