বেদনা পাখি
তুমিইতো শুধু জানো
পাখি হয়ে আমি আকাশে উড়ে বেড়াই,
উড়তে উড়তে মেঘের কষ্টগুলো শুধু
আমার পাখায় জড়াই।
তুমি যখন তোমার চুলের রাত্রি খুলে
বসে থাকো বারান্দায়, তখন
আমার পাখার সব মেঘ- কষ্ট
কালিদাসের কবিতার মতন
চোখের জল, শুধুই পড়ে যায়
তোমার চোখের পাতায়। হায়
তবুও তুমি দেখো না গোপন কান্না।
আমি শুধু কবিতার খাতায়
আমার সকল কষ্ট উড়াই!
আমিতো এক বেদনা পাখি
আকাশে আকাশে উড়ে বেড়াই,
এই মাটির সব ব্যথা বুকেতে জড়াই।
জন্মচিহ্ন
জন্মচিহ্ন মুছে গেছে। নেই আমি
উত্তরের মেঘে। মেঘমালা উড়ে গেছে
আকাশের পথ ধরে। তারপর
নেমেছে সমুদ্রে।
সমুদ্রের ঢেউগুলো প্রবল প্রতাপে
আছড়ে পড়েছে তটে। তীরে বসে
কেবল দেখছি দাপুটে ঢেউয়ের মৃত্যু।
মানুষ যেমন, জীবন যেমন,
তেমন করে লয় হয় ঢেউ।
থাকে না কোনো চিহ্ন অথবা
জন্মের দাগ। তারপর সব প্রাচীন
চিহ্ন হয়ে যায় লীন।
আমিও ফিরে গেলাম অবশেষে
মুছে দিয়ে স্মৃতিচিহ্ন আকাশের মেঘে।
স্বপ্নগুলো যত্ন করো
সারা রাস্তা আমি কেবল ঘুমিয়েছিলাম।
এতটা পথ ঘুমের মাঝে কাটিয়ে দিলাম।
চোখের পাতা নড়েছিলো। ঘুমের মাঝে
স্বপ্ন ছিলো। নীল আকাশ সবুজ মাটি
তারই মাঝে লাল মানুষের উড়াউড়ি;
প্রজাপতি, হলুদ শাড়ি, ঠোঁটের তিল
সবই ছিলো। এসব শুধু স্বপ্ন ছিলো।
ঘুমের মাঝে স্বপ্নগুলো চোখে এলো।
ঘুম ভাঙতেই রোদের তাপ, দেহের
ক্ষুধা মোচড় দিলো। চারিদিকে সাপের
রাজ্য আমার স্বপ্ন কেড়ে নিলো।
তবুও আমি পাখি হয়ে উড়ে গেলাম,
গানে গানে স্বপ্নকাঁথা ছাড়িয়ে দিলাম
এই পৃথিবীর লাল মাটিতে সেসব
স্বপ্ন বুনে দিলাম। যাবার বেলা
একটি পাখি তোমার কাছে রেখে গেলাম।
ভালোবাসা তুমুল ঝড়
এক মন্দাকিনী রাতে বৃষ্টিতে ভিজেছি;
জলের ফোঁটায় ফুটেছে কামিনী ফুল
আর ঢেউয়ের ফেনা উপচে পড়েছে
মন্দাকিনী নদীর দুই পাড়ে। আহারে,
আমাদের দুজনের ভিজে যাওয়া
বর্ষা ছিলো এককালে। আমরা
প্রতিরাতে ভিজে যেতাম জলের মায়ায়,
ভেসে যেতাম নদীর ঢেউয়ের ফেনায়।
তোমার গলুইয়ে জেগে ওঠতো বাগান।
আর বসন্ত রাতে ভিজে উঠতাম
উদ্দাম নৌকায়। তোমার তরিতে ভেসেছি
মন্দাকিনী হাওয়ায়। ঢেউয়ে ঢেউয়ে
মিশে গেছি নিত্য বৃষ্টির মায়ায়।
আমাদের প্রতিদিন ঝড়ের দিন ছিলো
একদিন। আর তাই আজও মনে হয়
ভালোবাসা এক তুমুল ঝড় ছাড়া কিছুই নয়।।




