এখন সময়:দুপুর ১২:২৬- আজ: সোমবার-৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:দুপুর ১২:২৬- আজ: সোমবার
৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

পচা শামুকের ধার

মাহবুব আলী

 

কেউ কেউ জানাজানির পর আপত্তি তুলল। সে-সবের কিছু উড়োকথা। বাতাসে ভেসে বেড়ানো গুজবের মতো কানে আসে। আবিদুর তখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। একদিন ফুলবাড়ি থেকে দিনাজপুর ফেরার পথে দৌলতপুর গ্রামে এগোয়। শ্বশুরবাড়ি। আইনগত পিতার শরীর নাকি ভালো নয়, একটু খোঁজখবর নেওয়া দরকার; বড়জামাই বলে কথা। আঙিনায় পা রাখতে রাখতে পুব বারান্দায় বুঝিবা শেষ সকালের আলো আকস্মিক নিভে গেল। সকলের চেহারায় মেঘ। কেউ সবজিবাগানে নিড়ানি বা কী কাজ করছিল, আবিদুর খেয়াল করেনি; সেই একজন মাথা উঁচু উঠে দাঁড়ায়।

‘আস্সালামু আলায়কুম দুলাভাই। ভালো আছেন?’

‘ওয়া আলায়কুম আস্সালাম। নাজিম কী করো?’‘

‘গ্রামের মানুষ আবার কী করে! এই এটা-সেটা। আপাকে নিয়ে আসলেন না?’

 

 

একই প্রশ্ন শাশুড়ির। মেয়েকে অন্য ঘরের আমানত বলা হলেও পিতামাতার কলিজার টুকরা, রুনু আবার জ্যেষ্ঠকন্যা; আদর-স্নেহ বেশি। আবিদুর হাতে ধরে থাকা ফলের প্যাকেট এগিয়ে জবাব দেয়।

‘আমি আসলে ফুলবাড়ি গিয়েছিলাম। ফেরার পথে ভাবলাম দেখা করে যাই।…বাবা এখন আপনার শরীর কেমন?’

‘এখন তো ভালো। সেদিন হঠাৎ মাথা ঘুরে উঠেছিল।’

‘প্রেশারের ট্যাবলেট নিয়মিত খাবেন। তবু তো রক্ষা যে ডায়াবেটিস নেই। তারপরও আরও একবার র‌্যানডম চেক করে নিতে হবে।’

‘হ্যাঁ ডাক্তারও বলল। নাতি-নাতনি ভালো আছে তো?’

‘জি আলহামদুলিল্লাহ্। আপনাদের দোয়ায় ভালো আছে।’

এইসব গল্পে গল্পে সময় পেরিয়ে গেলে দুপুরের খাবার। কোনো কথা নেই। আবিদুর আহার শেষে যখন উঠি উঠি করে, কথার সূচনা তখন। শাশুড়ি সরাসরি বলে উঠেন, –

‘বাবা শুনলাম শফিউল চৌধুরি তোমাকে জমিজমা শৃঙ্খলার কাজ দিয়েছে?’

‘তেমনকিছু নয়, কিছু কাগজপত্র তুলে দেওয়ার কথা।’

আবিদুর এই কাজ করতে গিয়ে জেনে গেল, দাদা শ্বশুর জমিজমার যে বণ্টননামা করে গেছেন, দখলিস¦ত্বে সব এলোমেলো। একজনের নামে জমি অথচ দখল করে আছে অন্যজন। কার জমি কে খায়! এইসব শৃঙ্খলা করা দরকার। শফিউল চৌধুরি চাচাশ্বশুর, তিনি সেই বণ্টননামার ফটোকপি কুরিয়ারে পাঠিয়ে কিছু কাজ দিয়েছেন। রেকর্ডপত্র তোলা আর দু-একজনের সঙ্গে যোগাযোগ।

 

এই কাজ করার বিন্দুমাত্র আগ্রহ বা তাগিদ নেই। আবিদুরের ভালো লাগে না। সে জমিজমার কাগজপত্র ঠিকমতো বোঝেও না। পৃং-দ্রং-গং-সাং…কি সব অদ্ভুত শব্দ ও ব্যাখ্যা! দ্বিতীয়ত নিজেরও কাজ আছে। চাকরি আর সময় অনুযায়ী অফিস যাওয়া-আসা, বিবিধ দায়িত্ব ও অফিস পলিটিক্স সামলানোর কৌশল। এ-সব ঝামেলা কম নয়। এরমধ্যে বাজার, এর-ওর কাজ, এখানে-ওখানে দৌড়ানো ইত্যাদি। এতকিছুর পর মনের সকল ইচ্ছে-অনিচ্ছে উপেক্ষা করে যেতে হয়। কাউকে সহায়তা করতে সরাসরি ‘না’ বলতে পারে না। সেই কাজের অংশ হিসেবে সেদিন বেরিয়ে পড়ে।

সকাল নয় হতে চলল। আশরাফ অ্যাডভোকেট যদি আবার কোর্টে চলে যায়, সকলি গরল ভেল। সে পায়ে জোর লাগিয়ে হাঁটে। তখনো সঠিক রাস্তা মেলেনি। নিউটাউন আট নম্বর এলাকার বি-ওয়ান নাকি টু, এই গলি নাকি পাশের, যেটি ছেড়ে এলো; কে জানে। ভোর সকালে উঠতে হয়েছে। অবশ্য প্রতিদিন তেমনই ওঠে। সে আরলি রাইজার। এক কাপ চা আর দুটো টোস্ট খেয়ে রওয়ানা দেয়। ফুলবাড়ি উপজেলার রাঙ্গাামাটিতে অফিস। শহর থেকে চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ কিলোমিটার দূর। যোগাযোগ ভালো। বগুড়া মেইল কি বিআরটিসি ছুটা যাত্রী তোলে। চল্লিশ-পঞ্চাশ মিনিটে কর্মস্থল। সে টেকনিক্যাল কলেজ মোড়ে এসে উদাস হয়। আজ নিমনগর-বালুবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে অফিস যেতে হবে। দেড় ঘণ্টা। অবশ্য ম্যানেজারকে বলা আছে। এসব ভাবতে ভাবতে রিস্টওয়াচ তুলে ধরে আবিদুর। নয় বেজে সাত মিনিট। তৃতীয় গলি। মোড়ে রিকশা থেকে নেমে একজনকে জিজ্ঞেস করেছিল।

‘এই যে ভাইজান, এদিকে আশরাফ উকিলের বাড়ি কোনদিকে যাব?’

‘ওই ফরসা মতোন গোলগাল চেহারার লোক?’

ভদ্রলোক স্থানীয়। আবিদুর ভরসা পায়। আশপাশে অনেক মানুষ জগিং করে। তারা ট্র্যাকস্যুট কেডস্ পরে হেঁটে দৌড়োয়। ক্যাটওয়াক করে। কারও মাথায় ক্যাপ। এই মানুষ তেমন নয়। সম্ভবত বাইরে থেকে নাশতা সেরে ঘরে ফিরছে। মোড়ে পাশাপাশি কয়েকটি রেস্তোরাঁ। সেখানে প্রায় রাস্তার উপর উনুন। বড় তাওয়ায় পরোটা ভাজা চলছে। ডালডার চনমনে সুবাস। মগ সাইজ গ্লাসে ডিম ভেঙে ঝটপট মামলেট। ক্যাশবাক্সে যে মানুষ বসে আছে, তার মাথার উপর মালভোগ কলা, সামনে পান-সিগারেটের দোকান; কত কি!

‘জি জি।’

‘এসে গেছেন প্রায়, সামনে পুবমুখী গলিতে দুটো বাড়ির পর। ওই যে ইপিল ইপিল গাছ দেখছেন, সেই গলি। হাতের বাঁয়ে। দেয়ালে সম্ভবত সাইনবোর্ড আছে।’

‘উকিল মানুষ অবশ্যই থাকবে। অনেক ধন্যবাদ ভাই। থ্যাঙ্কিউ।’

‘ওয়েলকাম।’

আবিদুরের হাতে সময় কম। সে দ্রুত গলির দিকে এগোয়। একবার পেছন ফিরে দেখে নেয়, ভদ্রলোক আছেন নাকি চলে গেছেন? তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করছেন বোঝা যায়। কে জানে মনে মনে সার্কাস খেলা দেখার সাধ। হা হা হা! সার্কাসই বটে! আবিদুর এসব কাজ পারে না। তার জন্য একরকম তামাশা। যা হোক, যে কাজে আসা, সেটি হলে হবে; না হলে কি যায় আসে। এখানে দু-একটি কথা বলে কাজ শেষ। এমনই পরিকল্পনা।

সে দরজা বা দেয়ালে কোনো সাইনবোর্ড দেখতে পেল না। আধপুরোনো সাদা বিল্ডিং। প্রাচীরের ওপাশে বিশাল লম্বা ইউক্যালিপটাস। আকাশ স্পর্শ করে প্রায়। তার ফরসা শাখাপ্রশাখার ধূসর ছায়ায় দাঁড়ায় সে। চমৎকার মৃদু বাতাস উঠেছে। আবিদুর পুনরায় বাড়ি গুনে দেখে নেয়। ঠিক এসেছে তো? প্রথম বাড়ির বাঁ-দিকে দুটো ঘরের পর। এটিই হবে। সে দরজার পাশে কলিং বেল সুইচ চেপে ধরে। পাখির অস্থির ডাক ভেতরে শুরু হয়। এমন কলিং বেলও চলে আজকাল। এক-আধ মিনিট পর পদশব্দ। কেউ একজন দরজার হুড়কো খুলে বেরোয়।

‘স্লামালেকুম।’

‘ওয়ালেকুম সালাম। জামাই আসেন ভেতরে আসেন।’

আবিদুর দরজা পেরিয়ে আঙিনায় পা রেখে ভেবে নেয়, সকাল সকাল কারও বাড়ি যেতে নেই। এখন নাশতা খাওয়ার সময়। কারও কাজে যাওয়ার ব্যস্ত সময়। সে চকিতে এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফেরায়। ছোট এক মেয়ে স্কুলের জন্য রেডি হচ্ছে। একজন উজ্জ্বল শ্যামল মহিলা সহায়তা করতে করতে বেশ সংকোচে মাথায় আঁচল তুলে দিলেন। ইনি নিশ্চয়ই চাচিশাশুড়ি। আবিদুর ইশারায় সালাম দিয়ে পাশে তাকায়। টেবিলের উপর বিবিধ খাবার সামগ্রী। এঁটো গ্লাস-প্লেট ইত্যাদি। সে নিজের মধ্যে এতটুকু হয়ে গেল। আশরাফ উকিল, দূর সম্পর্কে চাচাশ্বশুর হলেও বয়সে চার-পাঁচ বছরের ছোট। আবিদুর লাজুক মানুষ, সহজে বিব্রত হয়; একটু কি জড়সড়?

‘বসেন জামাই। জবার মা শোনো, শফিকুল ভাইয়ের বড়জামাই। ওই যে দৌলতপুরের জ্যাঠাত ভাই আছে না…তার বড়মেয়ে রুনুর বর।’

‘আসসালামু আলায়কুম।’

‘আমি সালাম দিয়েছি চাচি।’

‘ওয়াআলায়কুম আসসালাম। বাড়ির সবাই ভালো?’

‘জি আলহামদুল্লিাহ।’

‘বসেন।’

আবিদুর সহজ হওয়ার চেষ্টায় সোফায় আলগোছে বসে। তার চোখ চাচিশাশুড়ির দিকে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না। তিনি যথেষ্ট পরিপাটি সুন্দর। জামাই মানুষ শাশুড়ির দিকে মুগ্ধ চোখে তাকাতে নেই। শোভনীয় নয়। অপরাধ। তিনি রুনুর চেয়ে বছর এক-দেড় বয়সি হবেন। বেশ সপ্রতিভ। বুদ্ধিদীপ্ত চোখ। আবিদুর জামাই মানুষ। সেজন্যে বোধকরি লজ্জা পেয়েছেন। কিংবা অপ্রস্তুত সময়। আশরাফ চাচার সঙ্গে এক কি দুইবার দেখা হয়েছিল। প্রথমবার বিয়ের কথাবার্তার সময়। দ্বিতীয়বার বিয়ের আসরে। আজ সম্ভবত তৃতীয়বার। সেও হতো না। শফিউল চাচা মোবাইল করে কথা বলেছেন। কী করতে হবে পরামর্শ।

‘তুমি পরিবারের বড় জামাই, তোমাকে একটু মুভ করতে হবে না? তোমার শ্বশুর তো আউলা-ঝাউলা, কোথায় কোন্ জমি আছে, কে দখলে রেখে খাচ্ছে; এসব নিয়ে মাথাব্যথা নাই। তোমার শালাটাও হলো দেউলিয়া-মাতবর। নিজের পাতে ঝোল টানে। সে সবকিছু লুটেপুটে নিজের নামে করে নিলে কী করবে?’

‘আমি কী করতে পারি চাচা? আমার এসব বিষয় জানা নেই।’

‘তোমারে কিছু জানতে হবে না। তুমি আশরাফের সাথে দেখা করো। সে কী বলে, সেই পরামর্শ শুনলেই হবে। তোমার এই নম্বরে বিকাশ আছে না?’

‘জি।’

‘আমি কিছু টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। খরচাপাতি করবা আর নিজের জন্য রাখবা।’

‘আচ্ছা চাচা।’

শফিউল চাচা মাঝে মধ্যে টাকা দেন। তিনি অর্থশালী মানুষ। ঢাকার মতো রাজধানী শহরে ষাট লাখ টাকা খরচ করে ফ্ল্যাট কিনেছেন। তার ড্রইংরুমে সাড়ে তিন লাখ টাকা মূল্যের এলইডি টেলিভিশন। এমন টিভি দেশের বাজারে আসেনি। বিদেশ থেকে কেনা। যেমন স্লিম ডিজাইন, তেমন বিশাল স্ক্রিন। আবিদুর একটি চোদ্দো ইঞ্চি টেলিভিশন কেনার সময় সতেরো হাজার টাকা খরচ করতে একেবারে ঘেমে উঠেছিল। তার মন খারাপ হয়। সে নরকের মানুষ। শফিউল চাচার যেমন সম্পদ তেমন সাহায্য-সহযোগিতায় উদার। আবিদুর এজন্য নেতিবাচক কথা বলতে পারে না। যে কাজ, তার ক-খ-গ জানা নেই; কিন্তু শিখে নিতে কতক্ষণ! নগদ কিছু টাকা আসে। এ হলো তার লোভ এবং লাভ। তার স্বভাব হাত পেতে নেওয়া। সবসময় চিত্ হয়ে থাকে। জীবনে উপযুক্ত কর্মসংস্থান করতে পারল না। এখানে-ওখানে ধাক্কা খেতে খেতে ছোট্ট এক চাকরি। সামান্য বেতন। মাসের প্রথম সপ্তাহ কি দশদিন পেরিয়ে গেলে শুরু হয় টানাটানি। সুতরাং আর্থিক এই বাড়তি আমদানি সম্পূর্ণ না হলেও খানিক স্বস্তি দেয়। কখনো কখনো ইঙ্গিতে সহায়তার আবদার করে বিফল হয়নি। মোটা অঙ্কের টাকা চলে আসে। পৃথিবীতে যারা হাত উপুড় করে দেয়, দিয়ে সুখ, এরা যাকে দেয় তার কাছে থেকে কিছু নেয় না, আশা করে না; নিতেও জানে না। যারা নেয়, হাত পেতে নেয়, এরা কাঙাল; পরের দেওয়া ছদকা নিয়ে সুখ হাতড়ায়। এদের হাত সারাজীবন চিত্ হয়েই থাকে। কোনোদিন উপুড় হয় না। জগৎ সংসারে এই দুই প্রকৃতির মানুষ একসঙ্গে থাকলেও কখনো এক হয় না। বিশাল দূরত্ব থেকে যায়। এই নিয়ে মানুষের জীবন। আবিদুর তেমন একজন কাঙাল। সে পরামর্শ মতো কাজ করতে রাজী। এড়িয়ে গিয়ে সরাসরি ‘না’ বলতে পারে না।

 

অল্পক্ষণ পর টেবিলে কেক-বিস্কুট-কলা আর ডিমপোচ চলে এলো। হীরকস্বচ্ছ পরিষ্কার ঝকঝকে লম্বা গ্লাসে টলটলে জল। চাচি এগিয়ে দিয়ে ভেতরে চলে গেলেন। আশরাফ চাচা বলেন, –

‘জামাই খান। আমি কাগজটা বের করে রেখেছি। এনে দিই।’

‘আচ্ছা।’

‘কাজ তেমন কিছু না। আপনি জামিল চাচার সঙ্গে দেখা করে কাগজটা দেবেন। তার সাথে আলোচনা করবেন।’

‘আমাকে তবে স্টাডি করতে হবে।’

‘স্টাডির কিছু নাই। তথ্যগুলো জানলে হবে। কার ভাগে কত জমি। কোন খতিয়ানে কোন দাগে কত পরিমাণ এইসব। সেই জমি কার দখলে আছে সেটা বের করতে হবে।’

‘বেশ ভেজাল আছে চাচা। রীতিমতো সাংবাদিকতা বা গোয়েন্দাগিরি।’

‘তেমন মনে হয়? এভাবে বলবেন না। শফিউল ভাই রাগ করবেন। জামিল চাচার সাথে পরিচয় আছে? তিনি আপনার দাদাশ্বশুর হবেন।’

‘পরিচয় নাই। একদিন দেখেছি মাত্র। তিনি সরকারের বড় পদে চাকরি করেন শুনেছি।’

‘করতেন। এখন রিটায়ার্ড পারসন। ভালো মানুষ। খুব মেধাবী।’

‘মেধাবী না হলে টপমোস্ট পদে চাকরি করতে পারেন।’

আবিদুর বেশ জমিয়ে নাশতার সবটুকু এক এক করে খেয়ে ফেলে। সকাল সাড়ে সাতটায় দুটো টোস্ট আর চা খেয়েছিল। আজ বাসায় কনডেন্সড মিল্ক নেই। লাল চা। এখানে ফুলক্রিম মিল্কের চা খেয়ে মন গলে গেল। একেই বলে সুখের জীবন। তারপর জমি সংক্রান্ত প্রায় ছাব্বিশ পাতার জেরক্স নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে সে। বিদায় নেওয়ার আগে আশরাফ চাচা দুপুরে খেয়ে যাওয়ার দাওয়াত দিলেন। চাচিশাশুড়ি জোর করলেন। আবিদুর নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে। রুনুর মতো তেমন সুন্দরী না হলেও অনেক অনেক কালচারড। রুনু বোকা। সুন্দর মেয়েরা নাকি বোকা হয়। তারা অনুগত থাকে। রুনু খুব বাধ্য। কোনো টু শব্দ করে না। সে ভালো। আবিদুর খুব ভালোবাসে।

নিমনগর-বালুবাড়ি এসে ফটোকপির দোকান খুঁজে পেল না আবিদুর। এই বণ্টননামার কপি থাকা দরকার। যদিও তেমন লোভ ও লাভ কিছু নেই তার। কথা বলতে সুবিধে মাত্র। আজ কথাও শুনতে হলো। ক্লাস নাইন-টেনে পড়া দু-চারটি বাগধারা-প্রবচন কি এককথায় প্রকাশ মনে পড়ে গেল। একসময় মনোযোগি ছাত্র ছিল। ক্লাসে ফার্স্ট-সেকেন্ড হতো বলে সকলে ডাকত মেধাবী ছাত্র। সেই মেধাবান একাত্তরে জনতার কাতারে এসএসসি দিয়ে চেয়ার-টেবিল মার্কা পাস হয়ে গেল। তার একাত্তর হলো কলংক। মানুষের কর্ম-কর্মফল-নিয়তি রাজনীতি আর যুদ্ধে ওলট-পালট হয়ে যায়। তার রেজাল্ট কোনো ভাইভায় মূল্য পেল না। তার কোনো মেধা নেই। তার মন বিষণ্ন হয়ে থাকল বছরের পর বছর। এখন আর কোনো প্রত্যাশা নেই। কারও ভালো কিংবা মন্দে থাকতে মন চায় না। সে শ্বশুরবাড়ির জমিজমা বণ্টন আর ভোগদখল নিয়ে উদ্ভুত সমস্যা, ভাইয়ে ভাইয়ে মন কষাকষির কী সমাধান করতে পারে? এর আগে নাকি কয়েকটি সালিশ বসেছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিবৃন্দ আলোচনা করেছেন। কোনো সমঝোতা হয়নি। শফিকুল চৌধুরির জমিজমার বেশি অংশ রাস্তার পাশে। সেগুলোর মূল্য বেশি। বণ্টনে নামে নামে সমান পরিমাণ জমি-পুকুর আর বাঁশবাগান থাকলেও মূল্য হিসাবে অসম ভাগ। আশরাফ চাচা এই বিষয়টি শনাক্ত করে কথা বলেন। চাচিশাশুড়ি যোগ দিলেন একটি-দুটি কথায়। তিনি মন্তব্য করলেন। আবিদুর বলে, –

‘এতসব বিষয় জানি না তো। আমি তবে এখানে কী করব? পাত্তা দেবে? সকলের চোখে মাঝখান থেকে শুধু শুধু খারাপ হওয়া।’

‘জামাই নেগেটিভলি নেবেন না। কে জানে আপনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

‘আপনি বলছেন? আমি তো কোনো ভরসা দেখি না চাচা।’

‘আপনি পারবেন। পচা শামুকেও পা কাটে জানেন না?’

‘পচা শামুকের ধার। কাউকে অবহলো করতে নেই। হা হা হা! ভালো বলেছেন চাচি। আচ্ছা এবার তবে উঠি।’

‘এখানে লাঞ্চ করবেন কিন্তু। কিছু তো খেলেন না। জামাই মানুষ, একটু খাতিরদারি করার সুযোগ পাব না?’

‘আচ্ছা আরেকদিন আসব।’

আবিদুর বেরিয়ে এলো। নিউটাউন আট নম্বর বাজারে রিকশা নেই। অগত্যা হেঁটে হেঁটে নিমনগর-বালুবাড়ি। এই এলাকাকে মানুষজন ফুলবাড়ি বাসস্ট্যান্ড নামে ডাকে। আবিদুর দাঁড়িয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় ফটোকপির দোকান খুঁজে খুঁজে চেষ্টা ছেড়ে দিল। বাস আসে। বাস যায়। লোকাল বাস সাত মিনিট পর পর। একটি বাসে উঠতে হবে। আজ আর দৌলতপুর যাওয়া সম্ভব নয়। আগামী দু-একদিন পর গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না।

 

খামারবাড়ি বাসস্টপের উত্তরে রেস্তোরাঁ। রেস্তোরাঁ যে জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে, তার মালিক শফিকুল চৌধুরি। এ ছাড়া মরানদীর পুবপাড়ে আশি শতক উঁচু ভিটাও তার। ইদানীং এই জমির এক শতক মূল্য নাকি দশ লাখ উঠেছে। অনেক টাকা। আবিদুর জীবনে একলাখ টাকা একসঙ্গে নেড়েচেড়ে দেখেনি। মাস শেষে বেতন পায় পনেরো হাজার তিন শত। এক লাখ টাকা হতে কত মাসের বেতন দরকার? সেই অকারণ হিসাব করতে ইচ্ছে হয় না। শফিউল চাচা কখনো বিকাশে পাঁচ-দশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কমিশনও যোগ করা থাকে। আবিদুরের মোবাইলে এখন দশ হাজার জমা। শহরে ফিরে ক্যাশ আউট করবে। সে যখন টাকা গ্রহণ করে, কাজও দেখা দরকার; বিশ্বস্ততা বলে কথা।

বগুড়া মেইল রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়ালে আশপাশে তাকায় আবিদুর। শ্বশুরবাড়ির কাউকে দেখা যায় কি না? কখনো দেখা হয়। সালাম আদান-প্রদান চলে। সেদিন জেরক্স সেট পৌঁছে দিয়েছে। জামিল শাহ তেমন কথা বলেন নাই। কাগজ উলটে-পালটে দেখে কিছু জিজ্ঞেসও না। আবিদুরের কুশলাদি সম্পর্কে দু-একটি প্রশ্নও নয়। সে শুধুমাত্র বাহক। একজন পিওন। তার মন খারাপ হয়। একটি প্লেটে চা আর বিস্কুট আসে। লাল চা। আবিদুর চায়ে চুমুক দিতে গিয়ে দেখে কাপের নিচে আদাকুচির সঙ্গে একটি লবঙ্গ খিলখিল করে হাসছে। নিজেকে বড়ই অনাহুত আর অপাঙ্ক্তেয় লাগে তার। সে গরিব মানুষ। গরিব মানুষ সবখানে মূল্য পায় না। অর্থশালী আত্মীয়গণ গুরুত্বহীন আচরণ করে। তাচ্ছিল্যের সঙ্গে তাকায়। প্রয়োজনের বেশি কথা বলে না। এ হলো অপমান। মানুষকে কখনো কখনো অপমান হজম করতে হয়। সে যে গুরুত্ব পেল না, তার আগমন মূল্যহীন এবং সেটি হয়তো তাচ্ছিল্য-অপমান, এমন ভাবনার অবকাশ বা যুক্তি নেই, তাকে অনেককিছু সহ্য করতে হয়; তারপরও কষ্ট পায়। সে দ্রুত ফিরে আসে।

আজ রেস্তোরাঁর পাশে জনতা ব্যাংক ভবনের নিচতলায় শ্বশুরকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখে আবিদুর। ভদ্রলোক বোধকরি ব্যাংকের কোনো সার্ভিস নিতে এসেছেন। সার্ভিস বা সেবা বলতে টাকা উত্তোলন। তিনি কোনোদিন নিজে দোতলা ভবনে ওঠেন না। ব্যাংকের কাউকে ডেকে কাজ করিয়ে নেন। আবিদুর ফুলবাড়ি যাবে। কী ভেবে নেমে পড়ল। লোভ ও লাভ। জগতে না চাইলে কিছু পাওয়া যায় না। শ্বশুরকে এমন নিরিবিলি পরিবেশে পাওয়া সহজ নয়। আবিদুর লম্বা সালাম দিয়ে ধীরে ধীরে একেবারে খুব কাছে গিয়ে কথা বলে, –

‘বাবা আপনার শরীর কেমন?’

‘আছে…ভালো আছে। তোমাদের খবর কী? সবাই ভালো তো?’

‘জি, আলহামদুলিল্লাহ!’

তারপর কথায় কথায় দুই মিনিটেই মূলকথার উপসংহারে এসে দাঁড়ায় আবিদুর। শ্বশুর যদি ভালবেসে মরানদীর পুবপাড়ের জমি থেকে কুড়ি শতক তার মেয়ের নামে লিখে দেন খুব ভালো হয়। রুনুর এমন ইচ্ছে। সে আর অন্যকিছু চায় না। আবিদুর অবশেষে এমন আবদার রেখে লোকাল বাসে ওঠে। সে কি ঠিক কাজ করল? এই বিষয়ে রুনুর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। সে কি রাগ করবে? তার নিজস্ব ভিন্নমত আছে? এই প্রশ্নগুলো উঁকি মেরে ভেসে গেল। রুনু তার বিরুদ্ধে কখনোই যাবে না। এই বিশ্বাস আছে। এখন দেখা যাক কী হয়?

 

সেদিন বিকেলের শেষভাগে মালদহপট্টির রাাস্তায় দেখা হয়ে গেল। চাচিশ্বাশুড়ি মার্কেটিং করতে বেরিয়েছেন। আবিদুর এগিয়ে সালাম দিয়ে দাঁড়ায়। যখন দেখা হয়ে গেছে, পাশ কাটিয়ে যাওয়া চলে না; এতখানি অভদ্র নয় সে। চাচিশ্বাশুড়ি সলজ্জ মৃদু হেসে স্বাগত জানালেন। আজ কামিজ পরেছেন। বিকেলের আকাশে নীল কামিজের বুকে জিপসি ফুলগুলো ছায়াপথ হয়ে আছে। শাশুড়ি হলে হবে কি, মানবী তো; আবিদুরের চোখে সুন্দর লাগে। তার মুগ্ধ দৃষ্টি। জবা সঙ্গে আছে।

‘কেনাকাটা চলছে চাচি? চাচা কেমন আছেন? তুমি কেমন আছো জবা?’

জবা চকচকে দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। চাচিশাশুড়ি কি আবার বিব্রত হলেন? তিনি মকবুল ম্যানশন থেকে বেরিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালেন। আবিদুর সঙ্গে সঙ্গে এলো। সে ফিসফিস করে, –

‘চাচি চা খাই বা ঠান্ডা? সানন্দার সন্দেশ রসমঞ্জরি?’

‘আপনি খাবেন?’

‘আপনারা গেলে খাব।’

তারপর একটু হেঁটে হোটেলে মুখোমুখি বসে আবিদুর। সূর্যের আলো উঁচু বিল্ডিং-এর কারণে আসে না। যদিও কিছু তির্যক রশ্মী অকাতরে নেমে পড়ে। এসবের মধ্যে কথা হয়। সহজ হয়ে আসে আলাপন।

‘শোনেন জামাই। এখন আপনি জামাই। আমি আপনাকে চিনি। আমাকে চাচি ডাকবেন না। আমি বয়সেও ছোট। নিজেকে কেমন বুড়ি বুড়ি লাগে।’

‘তবে কী বলব? আপনি চাচিশাশুড়ি হন। একটা সন্বোধন তো লাগে।’

‘আমার নাম ধরে ডাকবেন। নাম জানেন?’

‘কী নাম? জানি না তো!’‘আমি শাঈলি। বাড়ি বিরামপুর। আপনার ছবি আমার কাছে আছে।’

‘আপনি…মানে আপনি নতুনবাজারের শাঈলি রহমান?’

‘মনে পড়েছে না?’

‘পড়েছে। সরি। আমি অনেক কিছু ভুলে যাই।’

‘জামাই মানুষ যে!’

আবিদুর হোঁচট খেয়ে রীতিমতো তোতলাতে শুরু করে বুঝি। তার মনে পড়ে যায়, রুনুর সঙ্গে বিয়ে হওয়ার সময় আরও দু-একটি সমন্ধের খোঁজখবর শোনা হয়। বিরামপুরে একটি ঘর ছিল। আবিদুরের ছবি-বায়োডাটা সেখান থেকে ফেরত পাওয়া যায়নি। মোজাল চৌধুরি একজন ম্যাচমেকার। তার যোগাযোগে এর মধ্যে রুনুর সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায়। বিরামপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করে অন্য একজন। তার নাম ফজলু ডোঙাই। ডোঙাই কী জানা নেই। তার কাছে ছবি দেওয়া ছিল। ফজলু পরে এসেছিল। তখন শুনেছিল পাত্রির নাম। আজ সেই শাঈলি রহমান হলেন চাচিশাশুড়ি। মানুষের সঙ্গে মানুষের কত সম্পর্ক হয়! কোনো কোনো সম্পর্ক আকস্মিক কৌতুক বা বিব্রতকর সময় এনে দেয়। আবিদুর ছবি দেখেছিল। সেদিন এজন্যই বোধকরি চেনা চেনা মনে হয়। আবিদুরের চোখ আলগোছে নিচে নেমে আসে। কয়েক মুহূর্ত এলোমেলো লাগে। তারপর নিজেকে সামলেও নেয়।

‘নতুনভাবে পরিচয় ভালো। আমি কিন্তু সকলের সামনে যথাযথ সন্বোধন করব। আপনাকে ছোট করা যাবে না।’

‘এটা আপনার আর আমার মধ্যে থাক। আপনি নাম ধরে ডাকবেন।’

‘চেষ্টা করব।’

মানুষের একটি সম্পর্ক হয়ে গেলে যে ডাক শুরু হয়, সেটি সহজে পালটানো যায় না; আবিদুর পারবে না। সে নিজের মনের গোপন উক্তিটি লুকিয়ে রেখে দিল। কোল্ড ড্রিংকস্ এসে গেছে। বোতলের কর্ক খুলতে খুলতে ফোঁস করে ড্রিংকস্ বের হয়ে আসে। আবিদুর কী করে? বিব্রত সময়। শাঈলি খুব স্বাভাবিক চুমুক দিতে দিতে জিজ্ঞেস করে, –

‘আপনার কাজ কত দূর? তাদের জমিজমার শৃঙ্খলা হবে?’

‘জানি না। অনুমান করা কঠিন।’

‘আপনি কিছু মনে করবেন না, একটা সত্যি কথা বলি?’

‘অবশ্যই।’

‘এদের জমিজমা অনেক, কিন্তু মন বড় নয়। তিন-চারবার হজ্ব করতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে, অথচ কারও হক আদায় করে না।’

‘তাই?’

‘এরা সহায়-সম্পদে মেয়েদের বঞ্চিত করে। দেখে নেবেন সত্য কিনা।’

‘এমনও হয়!’

অন্য প্রসঙ্গ এসে পড়ায় সময় স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আবিদুর এবার সরাসরি চোখ রাখতে পারে। শাঈলি বুদ্ধিমতী শুধু নয় বাস্তববাদী। এমন একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আশরাফ অ্যাডভোকেট, যিনি সম্পর্কে চাচাশ্বশুর; তিনি ভাগ্যবান। আবিদুর তবে কী? সে জানে না। রুনু বুদ্ধিমতী নয়, বোকা; তবে সুন্দরী। অল্প মানুষের ক্ষেত্রে উভয়ের যুগপত সম্মিলন ঘটে থাকে। জীবনসঙ্গী তেমন দরকার।

‘চেষ্টা করে যান। আপনি বড়জামাই। আপনার কথায় সকলে সম্মান দেবে।’

‘আমি হলাম পচা শামুক। পচা শামুকের ধার শুধু পা কাটে শাঈলি।’

‘চলুন এবার উঠি। বাসায় আসবেন।’

‘আপনিও আসবেন।’

‘আচ্ছা।’

শাঈলি ভুবনভোলানো চোখে হাসে। কি মায়াবী! আবিদুরের বুক থেকে ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস নিশ্চুপ গোপনে রাস্তায় নেমে যায়। সে খুব তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করে ফেলেছে। কোনো কাজ অতিব্যস্ত হয়ে করতে নেই।

 

আবিদুর কয়েকদিন পর অফিস যেতে খামারবাড়ি রেস্তোরাঁ স্টপেজে বাস থেমে গেলে দেখে, মরানদীর পুবভিটা জমিতে আমিন আর জনা দশেক মানুষের ভিড়। তারা চেনা-অচেনা মানুষ। বড় শ্যালক ও তার দুই ভাই আছে। আইনগত পিতা আছেন। আমিন চেইন নিয়ে মাপজোকে ব্যস্ত। আবিদুর আলগোছে নেমে পড়ে। সে স্পটে না গিয়ে দূর থেকেই বুঝে ফেলে ঘটনা। জমি ভাগবাটোয়ারা চলছে। আবিদুর কুড়ি শতক জমি চেয়েছিল। রুনুর জন্য। নিজের স্বার্থে। ছোট্ট স্বপ্ন ছিল। সব মিথ্যা।

 

শাঈলি সেদিন এই চরম সত্যটুকু অকপটে বলে দেয়।

 

 

মাহবুব আলী, গল্পকার

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।