এখন সময়:দুপুর ১:১৫- আজ: বৃহস্পতিবার-৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:দুপুর ১:১৫- আজ: বৃহস্পতিবার
৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ডে চবক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রাসঙ্গিকতা

মোঃ হাবিবুর রাসুল

 

চট্টগ্রাম বন্দরের যাত্রা শুরু চতুর্থ শতাব্দীর আগে। এই বন্দরের আইনি কাঠামো তৈরি হয় ১৮৮৭ সালের ২৫ এপ্রিল। এই বছর পালিত হলো চট্টগ্রাম বন্দরের ১৩৮ তম বন্দর দিবস। ১৯১০ সালে নির্মিত চারটি জেটির মাধ্যমে এই বন্দরের যাত্রা শুরু হয়। ১৯১০ সালে কার্গো হ্যান্ডলিং এর পরিমাণ ছিল ০.৫ মেট্রিক টন। বন্দর প্রতিষ্ঠার পর থেকে পোর্ট কমিশনারস এবং পোর্ট রেলওয়ে যৌথভাবে বন্দর ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হতো। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে পোর্ট ট্রাস্ট গঠনের মধ্য দিয়ে বন্দর নিজস্ব সত্তায় আত্মপ্রকাশ করে।

দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৬ সালে এক অর্ডিন্যান্স জারির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। আশির দশকে এনাম কমিটি কর্তৃক জনবল কাঠামোর উপর ভিত্তি করে রচিত ‘চবক প্রবিধানমালা ১৯৯১’এ পদ সংখ্যা ৮ হাজারের অধিক। চট্টগ্রাম বন্দর সাগর মোহনা থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে কর্ণফুলী নদীর তীরে এবং চট্টগ্রাম শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিকভাবে সুনামের সাথে দেশের সমুদ্র বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং কন্টেইনার বাণিজ্যের প্রায় ৯৮% পরিবহন করে থাকে।

 

চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম দক্ষতার সাথে সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ১৯৮০ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠিত হয় চবক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে কাস্টমস হাউজের পশ্চিম পাশ ঘেঁষে এটি অবস্থিত। প্রথম বছর তিনটি কোর্সের মাধ্যমে ৬৪ জন কে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল । ২০২৩-২৪ অর্থবছরে টেকনিকাল এবং ননটেকনিক্যাল ক্যাটাগরিতে ১৪৩৪ জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। চবক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি প্রশাসন বিভাগের অধীনে একজন ব্যবস্থাপক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এখানে পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সমূহ কোর্স সমূহ হচ্ছে- বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ (কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য), অগ্নি নির্বাপন কোর্স,আই এসপিএস কোড কোর্স,ফাস্ট এইড কোর্স, ফিন্যান্সিয়াল রুলস এন্ড রেগুলেশন কোর্স,ডি-নথি কোর্স( কর্মকর্তা কর্মচারীদের), এডভান্স কোর্স অন মেকানিক্যাল এন্ড ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কশপ অন এপিএ, হ্যান্ডলিং অফ ডেঞ্জারাস গুডস, এছাড়াও পৃথক একটি ভবনে সিমুলেটর মডেল ব্যবহার করে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর যন্ত্রপাতি পরিচালনার উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা দেশের স্থানীয় এবং বিদেশের প্রশিক্ষণ অথবা ভিজিট অথবা সেমিনারে অংশগ্রহণের যাবতীয় ফরমালিটির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কর্তৃক সম্পন্ন করে থাকে। এনডিসি, বিপিএটিসি সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত টিমকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ভিটি এমআইএস (যার মাধ্যমে মিরসরাই থেকে মহেশখালী পর্যন্ত ৫৭ নটিকেল মাইল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক নিরাপত্তার পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব), সিসিটিভি (প্রায় ১২০০ এর অধিক সিসিটিভির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি এরিয়া ভিজিট করার সব ব্যবস্থা করে থাকে।

সকল জেটি এরিয়া পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা নীতিমালা ২০২৩ অনুযায়ী সরকারি দপ্তর সমূহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ও কাজের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত বিষয়সমূহের বক্তব্য প্রতিষ্ঠান কর্মরত সকল কর্মচারীদের জন্য মাসে ন্যূনতম ৫ ঘন্টা হিসেবে বছরে ৬০ ঘন্টা ইন-হাউজ প্রশিক্ষণের আয়োজন করার কথা বলা আছে।

চবক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে নিম্নোক্ত বিষয়াদি প্রতিপালন করে থাকে:-

প্রশিক্ষণের ধরণ ও ক্ষেত্র নির্বাচন, প্রশিক্ষণার্থী চিহ্নিতকরণ এবং এর সংখ্যা নির্ধারণ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি, প্রশিক্ষণের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষক নির্বাচন, প্রশিক্ষণ ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজেট প্রণয়ন, প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল প্রস্তুতকরণ।

মূল্যায়নের ফলাফল বিশ্লেষণ পূর্বক প্রশিক্ষণের কার্যকারিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তাত্ত্বিক বিষয়ের উপর নির্ভর না করে প্রায়োগিক দিকের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

সরকারি কোন কর্মচারী নতুন কর্মস্থলে নিয়োগপ্রাপ্ত বা বদলির পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে পরিচিতিমূলক আবশ্যিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এই প্রশিক্ষণ এর সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ১০ কার্যদিবস এবং তা অনলাইনে অথবা সশরীরে আয়োজন করা হবে। তবে দপ্তর প্রধান এবং গ্রেড- ৩ পর্যায়ের কর্মচারীদের জন্য এ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নাই। কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ :

ক) নবম ও তদুর্ধ গ্রেডভুক্ত কর্মচারীগণকে তাদের কার্যক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নতুন ধারণা প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে নির্মিত ভাবে দেশীয় বিদেশে বিভিন্ন কনফারেন্স ওয়ার্কশপ সেমিনার অংশগ্রহণের উৎসাহিত করা হবে এবং খ) এতে ব্যয় নির্বাহের উৎস প্রদর্শন করতে হবে স্বার্থদ্বন্দ্ব পরিহারের লক্ষ্যে বেসরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন কোন প্রতিষ্ঠান অথবা কোন ব্যক্তি নিকট হতে প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারীগণের জন্য বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স:

ক) ক্যাডার বহির্ভূত নবম গ্রেডভুক্ত অথবা তদূর্ধ কর্মচারীগণ তাদের নিজস্ব প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের আয়োজনে অথবা অন্য কোন সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান একটি বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করবেন এবং সকল বিষয়ে কৃতজ্ঞ হয়ে তা সম্পন্ন করবেন সংস্থাটির কার্য কার্যবিধি এবং দায়িত্বশীলতার কথা বিবেচনায় রেখে পরামর্শক্রমে নির্ধারিত হবে।

খ) পদোন্নতির মাধ্যমে নবম অথবা তদূর্ধ গ্রেডভুক্ত সকল সরকারি কর্মচারী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগদানের দুই বছরের মধ্যে অনিবার্য কারণ ব্যতীত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করবেন এবং সকল বিষয়ে কৃতকার্য হয়ে তা সম্পন্ন করবেন এক্ষেত্রে প্রশিক্ষনে মেয়াদ হবে ন্যূনতম দুই মাস। সরকারের উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষার সাথে সঙ্গতি রেখে সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন অভিমুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন বাস্তবায়ন এবং টেকসই ও সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিকল্প নেই। জনপ্রশাসন কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির অভিপ্রায় ২০০৩ সালে ‘জনপ্রশাসন নীতিমালা ২০০৩’ জারি করা হয়। এই নীতিমালার উদ্দেশ্য-

ক) জনপ্রশাসনের ব্যবস্থাপনা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি কার্যকর জবাবদিহিমূলক স্বচ্ছ, সৎ ও সংবেদনশীল প্রতিশ্রুতিশীল প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা যা জনগণের জন্য সাশ্রয়ী পরিষেবা দিতে ।

খ) সবার জ্ঞান ও দক্ষতা সর্বোত্তম ব্যবহার করে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুষম এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে।

গ) প্রাগ্রসরমান মানসিকতা এবং দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টির মাধ্যমে গতিশীল এবং আলোকিত জনপ্রশাসন গড়ে তোলা যাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও প্রযুক্তির আধুনিকায়নের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উপযুক্ত হয় ।

ঘ) প্রশিক্ষণকে আকর্ষণীয়, উপভোগ্য এবং প্রণোদনামূলক করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে পরিবেশ ও অনুষদ সদস্যদের দক্ষতা ও মানসিকতার উন্নয়ন সাধন করা এবং প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার উৎকর্ষ সাধন করা

 

 

মোঃ হাবিবুর রাসুল, উপ-সচিব (সমন্বয়), চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।