এখন সময়:সকাল ৬:৪৩- আজ: বৃহস্পতিবার-৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:সকাল ৬:৪৩- আজ: বৃহস্পতিবার
৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

রেজাউল করিম এর গুচ্ছ কবিতা

অস্থির পৃথিবীর মুখোমুখি

 

অস্থির সময় অস্থির পৃথিবী

এ কী দেখি– হাজার বছরের

সভ্যতা চোখের নিমিষেই ধ্বংসস্তূপে–

রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রের অন্দরে

হানাহানি যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে

রক্তের এ কী হোলিখেলা চলছে?

 

যুদ্ধ এখন আর সৃষ্টির বেদনা নয়

যুদ্ধ এখন আর সৃষ্টির লীলা খেলা নয়

যুদ্ধ মানে যুদ্ধ,এর বিকল্প আর কোনো শব্দ নয়

 

সর্বত্র যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চলছে

মারণাস্ত্রের দম্ভে,কূটনীতির কূটচালে

শহর-বন্দর-গ্রাম জ্বলছে

বিদ্রোহের আগুনে চন্দ্র-সূর্য জ্বলছে

নিরাপরাধ মানুষ আবাল বৃদ্ধ বনিতা নারী শিশু মরছে

 

পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড়ো শত্রু কে?

ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগ,অনুজীব না মানুষ

মানুষের শত্রু তো মানুষ–

পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড়ো মিত্র কে?

তাও মানুষ…

 

চন্দ্র-সূর্যের এই পৃথিবী তো সাম্যের-

তবু মানুষে মানুষে এতো অসাম্য বৈষম্য কেন?

এর জন্য দায়ী তো মানুষ

সময়ের আবার সাহসী উচ্চারণ হোক

বৈষম্য নয় সাম্য–

স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ কাঁপুক

 

ধ্বংস হোক সমস্ত ক্ষোভ-লোভ, হিংসা-বিদ্বেষ

সাম্রাজ্যবাদ-সম্প্রসারণবাদের

কালো থাবার আয়ুষ্কাল আর কতোকাল?

এই অশুভ শক্তিকে প্রতি মুহূর্তে অভিশাপ দিচ্ছি

এদের কালো থাবার বিনাশ হোক

 

ফিরে আসুক সাম্যের পৃথিবী

জেগে ওঠুক মানবতা

জেগে ওঠুক সভ্যতা

ফিরে আসুক শান্তির পৃথিবী।

 

 

 

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা আর নয়

 

হিংসার বদলে প্রতিহিংসা,ভালোবাসার বদলে ঘৃণা

অসভ্যতার বিপক্ষে সভ্যতার সংগ্রাম চলছে।

বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাম্য

আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার সংগ্রাম চলছে।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের

অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের সংগ্রাম চলছে।

প্রচারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার

আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ চলছে

চিন্তার বিপক্ষে প্রতিচিন্তা

প্রাচ্যের সাথে পাশ্চাত্যের দ্বন্দ্ব চলছে।

 

ড্রোন,ক্রুজ,সিজ্জিল,মিসাইল,ব্যালাস্টিক

আর বাংকার বোমার আঘাতে আঘাতে জ্বলছে-

বারুদের ঝংকারে সয়লাব ইউরোপ-এশিয়া-

আফ্রিকা- আমেরিকা- মধ্যপ্রাচ্যের নীলাকাশ;

মানুষসহ যতসব নিরীহ প্রাণি অকাতরে মরছে।

 

সভ্যতা আজ হুমকির মুখোমুখি,

পৃথিবী আজ ধ্বংসের মুখোমুখি।

 

মানুষ যুদ্ধ নয় শান্তির অন্বেষায়-

যারা যুদ্ধবাজ তাদের প্রতি সারা দুনিয়ায়

ঘৃণার আগুন আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে।

 

তবু কেন এতো রক্তপাত,এতো ধ্বংসের লীলাখেলা?

জবাব দে যতসব সম্রাজ্যবাদের ধারক,কুশীলব

জবাব দে যতসব আধিপত্যবাদের ধারক,কুশীলব।

তোদের প্রতি ক্ষমা নেই… ক্ষমা নেই-

মানবিক পৃথিবীর সংগ্রাম গোলার্ধ থেকে গোলার্ধে চলছে।

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা আর নয় – চাই এর নিষ্পত্তি।

 

 

 

ত্রিভুজ প্রেম

 

বুকে তোলপাড় মনে আগুন। যৌবনের মাতাল হাওয়া বয়ে যায়। প্রেমসাগরের ভরাট জোয়ারের ঢেউ তীরে এসে কখনও মায়াজালে আটকে যায়। অবন্তী গ্রাম্য মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। ঈশ্বর তার শরীরটি যেন শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় বানিয়ে দিয়েছে। থাকে হোস্টেলে। রুটিনমাফিক এক গলি দিয়ে শহরের বিখ্যাত কলেজে যায়, অন্য গলি দিয়ে ফিরে…। যেতে যেতে ফিরতে ফিরতে, একদিন মেয়েটি জড়িয়ে যায় শাশ্বত বন্ধনে। চুটিয়ে চলে দ্বিমুখী অভিসার।

পরিস্থিতি এমন শ্যাম রাখি না কুল রাখি। ত্রিভুজ প্রেমের দ্বৈরথে মেয়েটির জীবন এখন ত্রাহি ত্রাহি করে।

 

এই জগতে সবাই ব্যস্ত

 

চৈতালি হাওয়ার গুঞ্জরণে

আম্র মুকুলের ঘ্রাণে মন চনমনে

মধ্যদুপুরে ঘুঘু ডাকে কী বিষণ্নে!

বনমুরগি উঁকিঝুঁকি মারে

অতি সন্তর্পনে।

 

পাহাড় কাঁদে রক্তক্ষরণে

নদী চলে বাঁক বদলের প্রয়োজনে

মৎস্যকন্যারা গভীর ধ্যানে

জীবিকার অন্বেষনে।

নারী আর পুরুষের সম্মিলনে

এই জগতে সবাই মস্ত ব্যস্ত

যার যার প্রয়োজনে।

 

 

নারী ও বৃষ্টি

 

আষাঢ়ে আকাশে কৃষ্ণমেঘের

জমজমাট খোশ গল্পের  আসর বসে

সূর্য লুকোচুরি খেলে মেঘের আড়ালে

ঝুমঝুম বৃষ্টি পড়ে–

এমনি দিনে মন বৈচিত্র্যের রঙে

রঙিন হয়ে ওঠে কখনও

 

এদিকে বসতঘরে নড়েচড়ে বসে এক যুবতী

খোলা জানালার কাছে গিয়ে

উম্মুক্ত প্রান্তরে তাকিয়ে আছে…

 

বিরহে তার মন কাঁদে বুক কাঁপে

অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ে

 

 

 

 

 

 

যুবতীর আর ভালো লাগে না একা একা ঘরে

ডাকে খোলা আকাশ সবুজ ঘাসের খোলা মাঠ

রোমাঞ্চের আগুন ঝলসে ওঠে

 

বৃষ্টিস্নানে বৃষ্টিখেলায় বৃষ্টিসুখে মেতে ওঠে যুবতী

 

 

লাল টুকটুকে শিপন শাড়ির আড়ালে

তার শরীর ওঠানামা করে–

রোমাঞ্চনদীর জোয়ারের ঢেউ আছড়ে পড়ে তীরে

আড়ালে কামনার আগুনে পুড়ে এক যুবক–

 

প্রকৃতিতে নারী ও বৃষ্টি যেন স্রষ্টার অনন্য সৃষ্টি।

 

 

স্বপ্ন চূড়ায়

 

বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ভোরের

স্নিগ্ধ আকাশে উড়ে এসে পর্যটক

ঢুকে পড়ে স্বপ্নের উঁচু উঁচু পাহাড়ের রাজ্যে

ছবির মতন সুন্দর দেশটি যেন আকাশে  ভাসে।

পাহাড় আর পাহাড়, সবুজ অরণ্য

উর্ধ্বে দৃশ্যমান পর্বতশৃঙ্গে বৃক্ষ-লতাপাতা শূন্য।

উঁচু-নিচু ঢালু পথ, পাথর আর পাথর

বরফ,তুষার ঢাকা পর্বতশিখর।

চলতে চলতে উপরে ওঠতে ওঠতে

পাথরনদী থেকে কঠিন বরফগলা নদী

দুধকোশি আর ইমজা সাথে ঝুলন্ত সেতু

যেন পুলসিরাত  পারাপার

সতর্ক ট্রেকিং সঙ্গে শেরপা তো সদাপ্রস্তুুত ।

 

কঠিন সংগ্রামে আত্নপ্রত্যয়ে পর্বতারোহী

নাগাল পায় কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন-চূড়া

হিমালয়ের বুক থেকে মুখ

যেখানে হিমবাহ, সেখানে এভারেস্ট

শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়

তাবৎ দুনিয়ায়  সর্বোচ্চ পর্বত শিখর।

সামনে শুভ্রতুষার,পেছেন ঈষৎ গাঢ় রঙ

আছে স্মৃতিচিহ্ন কঠিন গদ্যের খেরোখাতার।

সমান্তরালে এ পর্বত শির যেন তুলতুলে

মোহনীয় কবিতার শরীর।

 

কতো অহমিকা, নান্দনিক, রহস্যঘেরা

এই স্বপ্ন-চূড়া, এই পর্বত শিখর!

প্রতিক্ষণ জয়ধ্বনি বাজুক

এভারেস্ট, তোমার বুকের ভেতর ।

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।