সুতোয় বাঁধা পতাকা
পতাকা শুকায়-
লাল রঙটা এখনো ভেজা,
সবুজটা শুকিয়ে গেছে আগেই।
একজন দর্জি বলল,
“এই কাপড় বদলিও না,
সেলাইয়ের দাগেই ইতিহাস টেকে।”
আমি বললাম,
“কিন্তু বাতাস বদলে গেছে-
এখন পতাকা উড়লে, ছায়াটাই আগে নড়ে।”
তখন সে হেসে বলে,
“তুমি ইতিহাস মাপছো আলোয়,
আমি মাপি সেলাইয়ের সুতোয়-
যেটা ছিঁড়লে পতাকাও থাকে,
কিন্তু গল্পটা হারায়।”
ধূসর মানচিত্র
নদী জানে না, কোন তীরে তার অধিকার-
শুধু স্রোত বয়ে চলে, নিয়ম মেনে।
কিছু নৌকা দিক হারায়,
কিছু নোঙর পাথরে আটকে যায়।
তবু দূরের বাতিঘর বলে-
“বুদ্ধিমানেরা ফিরে আসে না ক্ষমতায়,
ফিরে আসে দায়িত্বে।”
ভোটের ছন্দ
রাষ্ট্র কখনো ঘুমায় না-
নিরাপত্তার আলোয় চাঁদকে ঢেকে রাখে।
বাতাসে ভাসে আদেশ,
ভোটের কালি সংকেত জানায় ফাঁকে।
মানুষ নেই, মিছিল নেই-
শুধু ইউনিফর্মের ছায়া
আর চুপচাপ
গভীর শিহরণের মায়া।
জনতার আদালত
ভোটের বাক্সে ঘুমায় বিচার,
আদালত হাঁটে জনতার রাস্তায়।
সাদা কাগজে কালির দাগ-
একটি সিদ্ধান্তের চিহ্ন,
যেখানে ন্যায় মানে সংখ্যার আলো।
ইতিহাস বসে থাকে বেঞ্চে,
অতীত সাক্ষী, ভবিষ্যৎ জুরি।
রাষ্ট্র শুধু রূপক,
মানুষই একমাত্র আদালত—
যার রায়ে সূর্য ওঠে, আবার ডুবে যায়।
ধীরে ধীরে নিভে যাওয়া আলো
একটা প্রদীপ ছিল-
যার আলোয় ঘর চিনত নিজেকে।
একদিন বাতাস এসে বলল,
“তুমি কে?”
প্রদীপ থেমে গেল-
আলো রইল, কিন্তু ঘর চিনল না পথ।
জানালায় আজও আলো পড়ে,
কেউ জানে না-
ওটা সূর্য, নাকি প্রদীপের শেষ নিশ্বাস।
সাফল্যের ছায়া
সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে
সে খেয়াল করে-
শীর্ষের আলো চোখে লাগে,
কিন্তু ভেতরের অন্ধকারে
হারিয়ে যায় তারই প্রথম দীপ্তি।
সাফল্য কি তবে মুখোশ?
নাকি এক গোপন ফাঁদ-
যেখানে আনন্দকে ঢেকে রাখে
অতিরিক্ত জৌলুসের পর্দা?
তবু যে থামতে জানে,
সে খুঁজে পায়-
অচেনা শান্তির নীলকণ্ঠ
নিজেরই ভেতরে।




