এখন সময়:রাত ২:৪৬- আজ: বৃহস্পতিবার-২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

এখন সময়:রাত ২:৪৬- আজ: বৃহস্পতিবার
২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

গ্রন্থের শক্তি এবং জাতির বুদ্ধিমত্তা

কাজী জহিরুল ইসলাম

মেহেরগড়ের লোকজন কতটা শক্তিশালী ছিল, যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিল কিনা; সেই তথ্য পাওয়া না গেলেও আমরা ইতিহাস ঘেঁটে জেনেছি, মহেঞ্জোদারো-হরপ্পা সভ্যতা যথেষ্ট উন্নত ছিল, তাদের যুদ্ধবিদ্যার কৌশল জানা ছিল এবং প্রচুর সৈন্যসামন্তও ছিল। বড় বড় দুর্গ ছিল, বিশাল প্রাচীর ও পরিখা ছিল। তবে ভিনদেশিদের কাছে এসবের চেয়েও শক্তিশালী এক অস্ত্র ছিল, তা হচ্ছে বর্ণমালা। তারা লিখতে ও পড়তে জানত। হরফের চেয়ে শক্তিশালী কোনো অস্ত্র নেই– সেটি এই ভিনদেশিরাই প্রমাণ করে দেয়। নেটিভরা যাতে এই শক্তির স্পর্শ না পায়, সে জন্য বেদ পাঠ এবং শোনা নেটিভদের জন্য, মানে শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ করে। তারা জানত, নেটিভরা বিদ্যাশিক্ষা পেলে তাদের আর দাবিয়ে রাখা যাবে না।

পরবর্তী সময়েও আমরা দেখেছি, যারাই গ্রন্থ রচনা করেছে, তারাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি বলে বিবেচিত হয়েছে। অসির চেয়ে মসি যে অধিক শক্তিশালী, তা বহুবার বহুভাবেই প্রমাণিত। এই একুশ শতকে এসে এই চিত্রের সামান্যতম ব্যতিক্রম ঘটেনি। বই পড়ার দিক থেকে পৃথিবীর সেরা পাঁচটি দেশের নাম যদি উল্লেখ করি, তাহলে তালিকাটি দাঁড়াবে এ রকম সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; এই দেশের মানুষ বছরে ২ লাখ ৭৫ হাজার ২৩২টি বই পড়ে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন; এই দেশের মানুষ বছরে ২ লাখ ৮ হাজার ৪১৮টি গ্রন্থ পাঠ করে। তৃতীয় অবস্থানে ইংল্যান্ড; তাদের পঠিত বইয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৮৮ হাজার। চতুর্থ অবস্থানে জাপান এবং পঞ্চম অবস্থানে জার্মানি। জাপানিদের পঠিত বইয়ের সংখ্যা ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৮টি। লক্ষণীয়, মোট জিডিপির দিক থেকেও এই পাঁচটি দেশ পৃথিবীর শীর্ষে। সবচেয়ে বড় জিডিপির দেশ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন। সামরিক শক্তি, গ্রহ-নক্ষত্রে বিচরণের শক্তিও এই দুটি দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে।

অনেকে বলেন, ভালো বই পড়তে হবে, আজেবাজে বই পড়লে হবে না। কথাটা ঠিক। কিন্তু আমি বলি, আজেবাজে বই পড়তে পড়তেই তার বই পড়ার একটা অভ্যাস গড়ে উঠবে এবং ধাপে ধাপে সে ভালো বইয়ের দিকে অগ্রসর হবে।

 

একটি জাতির গড় বুদ্ধিমত্তা যেখানে আছে, সেখানে নেমে আপনি যদি বই লেখেন, সেই বই বেশি মানুষ কিনবে। যদি তার চেয়ে সামান্য ওপরে উঠে লেখেন, তাহলে পাঠক কিছু কমে যাবে। যদি তার চেয়ে অনেক ওপরে উঠে লেখেন, তাহলে হয়তো সেই জাতির লোকজন আপনার বই পড়বেই না। এ ক্ষেত্রে লেখক হিসেবে আপনি কী করবেন? বাংলাদেশের মানুষের গড় বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে ৭৪ দশমিক ৩৩। সাধারণত ৮৫ থেকে ১১৫ হলো মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা। ১১৫-এর বেশি যাদের, তাদের মেধাবী বলা হয়। ৮৫-এর নিচে যাদের, তাদের স্বল্পবুদ্ধির মানুষ বলা হয়। বাংলাদেশের গড় বুদ্ধি স্বল্পবুদ্ধির পর্যায়ে পড়ে। গড় বুদ্ধিমত্তার দিক থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ অবস্থানে যেসব দেশ রয়েছে, সেগুলো হচ্ছে জাপান, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর, হংকং প্রভৃতি। এসব দেশের মানুষের গড় বুদ্ধিমত্তা ১০৪ থেকে ১০৬।

 

বাংলাদেশের মানুষের গড় বুদ্ধিমত্তার কথা জানার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই পাঠকের একটি আগ্রহ তৈরি হয়েছে- প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের গড় বুদ্ধিমত্তা কত। এই দুটি দেশও আমাদের প্রায় কাছাকাছি, তবে সামান্য ওপরেই আছে। ভারতের গড় বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে ৭৬ দশমিক ৭৪ এবং পাকিস্তানের ৮০।

 

এখন কথা হচ্ছে, বাংলাদেশের লেখকরা যদি ৭৫ বুদ্ধিমত্তার গ্রন্থ রচনা করেন, তাহলে জাতির গড় বুদ্ধিমত্তা খুব সহজে ওপরে উঠবে না। লেখকদের কিছুকাল ৮০, এর পর ৯০, এর পর ১০০ এবং ধীরে ধীরে আরও ওপরের স্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক গ্রন্থ রচনা করতে হবে। এটি হচ্ছে লেখকদের একটি বড় দায়বদ্ধতা।

 

কাজী জহিরুল ইসলাম: কবি

কাজী নজরুল ইসলাম : বাংলা সাহিত্যে অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রাণপুরুষ

আ.ম.ম. মামুন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামই প্রথম মৌলিক কবি। রবীন্দ্র অনুবর্তী একগুচ্ছ কবির একজন তিনি নন। তিনি অন্যরকম স্বতন্ত্র। শিল্প সাধনায়,

আমেরিকায় রবীন্দ্রনাথ 

প্রবীর বিকাশ সরকার ১৯২৯ সালে বহির্বিশ্বে অবস্থানকালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনে ঘটেছে যুগপৎ দুঃখজনক এবং আনন্দদায়ক কিছু ঘটনা। যা নিয়ে বাংলায় সামান্যই আলোচনা হয়েছে, অথবা

হিংস্র ও বুনো অপশক্তির বিনাশ চাই

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় গ্রীষ্মকালটা বড়ই অসহনীয় ও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশে এই ঋতুটির তেজ আগে কখনও এত তীব্র ছিলো না। ইতোমধ্যেই