হারিয়ে ফেলেন খেই
উৎপলকান্তি বড়ুয়া
ছাগলনাইয়ায় ছাগল কি নেই
জায়গাটা কি চিনতে?
বাগের হাটে সোদরবনের
বাঘ পাওয়া যায় কিনতে?
পাহাড়তলীর পাহাড় দেখতে
হয় কখনো যাওয়া?
ঘোড়াশালে তাগড়া জোয়ান
ঘোড়া কি যায় পাওয়া?
রাজশাহীতে রাজ রাজরার
ছিলো বুঝি শাসন,
ভাসানটেকের হাসান নাকি
জবর দিতো ভাষণ?
চাঁদপুরে ঠিক যায়রে পাওয়া
সকল খবর চাঁদের?
এলাহি কাম-কাজ নাকি সব
সেই এলাহিবাদের?
হাতির ঝিলের কেউ কখনো
হাতির খবর রাখে?
গাইবান্ধায় গাইগুলো সব
কই বান্ধা থাকে ?
পরির পাহাড় চাটগাঁতে কি
আজো আছে পরি?
হিমছড়িতে গ্রীষ্মেও খুব
হিমের ছড়াছড়ি?
মহিপালের মহি কোথায়
কিসে উড়ায় পাল?
রাঙ্গামাটির পাহাড় মাটি
সত্যি রাঙ্গা-লাল?
ফরিদপুরের ফরিদ মিয়ার
খুব বেশি নাম ডাক কি?
পুরান ঢাকা পুরান নেই আর
সবাই আছে সাক্ষী।
বরিশালে শালের চমক
যায় কি বলো দেখা!
রংপুরের নাম রংপুর ক্যান্
কোথাও আছে লেখা?
সাতক্ষীরাতে খিরার কী চাষ-
ফলনটা হয় ভালো!
চৌদ্দগ্রামে জ্বলে নাকি
চৌদ্দ বাতির আলো?
বান্দরবানের বাঁদর দেখেই
খুশিতে কেউ মাতো?
কুড়িগ্রামের কুড়িটা গ্রাম
খুঁজেই পেলাম না তো!
রংপুরে কি রঙের মেলা
হয় কবিতা গানও,
শ্রীমঙ্গলের শ্রী-শোভা বেশ
সত্যি কি কি জানো?
দাঁতমারা’তে কি যোগ আছে
নামের সাথে দাঁতে?
এমন নানান প্রশ্ন নিয়েই
রয় কেবল হাতরাতে।
কারোর কাছে নামে-কাজের
কোনোই জবাব নেই,
এসব ভেবেই ভাবুক চরণ
হারিয়ে ফেলেন খেই।
ভাইবোন
সন্তোষ কুমার শীল
===========================
ভাইয়ের জন্য ভালোবাসা আগলে রেখে বুকে
যখন শুনি বোনটি আমার আছে ভীষণ সুখে
তখন আমি আনন্দেতে হই যে আত্মহারা
সে বোঝেনা যে থাকে রোজ বোনের আদর ছাড়া।
ছোট্টবেলার খেলার সাথী পুতুল বিয়ের দিনে
বোনটি আমার এনে দিতো শাড়ি গয়না কিনে
রূপার নুপুর জুড়ে দিতো পুতুলের দুই পায়ে
স্মৃতিগুলো প্রীতি হয়ে আছে আজও গাঁয়ে।
পুকুর পাড়ে দাঁড়ানো এক শান বাঁধানো ঘাটে
ঝিঁঝিঁ ডাকা সন্ধ্যাবেলা জোনাক জ্বলা মাঠে
বোনটি আমার ভালোবাসার পরশে বেশ নাচে
আনন্দে খুব আত্মহারা ভাইটি আছে কাছে।
শীত সকালে খড়কুটোতে আগুন জ্বেলে নিজে
তাপ দিতো যে বোনটি আমার, আরাম পেতাম কী যে!
সেই সব কথা সযতনে গাথা আছে মনে
স্মৃতির পাহাড় উচ্চস্বরে ডাকছে ক্ষণে ক্ষণে।
ও দিদি তুই কেমন আছিস কোন নীলিমায় থাকিস
খেলাঘরের হাড়ি পাতিল শিকায় তুলে রাখিস?
পুতুল খেলার সুঁই সূতা আর নরম কাপড় গুলো
বাক্স ভরে রাখা আছে জমেনি যে ধূলো।
==============
বৈদেশী ঋণ মিটাই
হোসাইন মোস্তফা
ব্যাঙরা খেতো মশা ধরে
মশার ছিল যম
হাপুসগুপুস মাশার লার্ভা
খেতো যে হরদম।
টাকার লোভে মানুষেরাই
ব্যাঙ করল সাবাড়
রেস্তোরাঁতে দেদার বিকি
ব্যাঙকে বানায় খাবার!
রপ্তানিতে ব্যাঙ চলে যায়
চায়না এবং জাপান
ভীষণ রকম খুশির খবর
পত্রিকাতে ছাপান।
অপরিনামদর্শী আমরা
বোকারহদ্দ বেশ
সব কিছুতেই ধরি কেবল
জ্ঞানীর ছদ্মবেশ!
মশা মারতে তাইতো এখন
ওষুধ কিনে ছিটাই
কোটি কোটি ডলার ব্যয়ে
বৈদেশী ঋণ মিটাই!
নাইরে ডলার কিচ্ছু বলার
নাইরে গ্যাস ওয়েল
আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ
ব্যবসাটা যার কয়েল!
===========================
ভয় পায় শেয়াল
মোঃ সোহেল দুখাই
একদা যাচ্ছি রাস্তা দিয়ে
মনের ভিতর ঢেউ জাগিয়ে
কোথা হতে এলো শেয়াল
ছুটে গেল মনের খেয়াল।
বলছে কোথায় যাবি দাড়া!
কাজে আছি হতচ্ছাড়া।
কোনো কিছু হয়নি যখন
বেড়াল ছানা ধরলাম তখন
বিড়াল ছানা এতো লম্পট
দেখে শেয়াল দিলো চম্পট।
===================
রঙ সাজিয়ে খুশির ভেলায়
লিটন কুমার চৌধুরী
আজকে দিনের শেষ বিকেলে রোদ উঠেছে
মিষ্টি রোদের পরশ পেয়ে ঘাসের ডগা,
মনের মাঝে হাসিখুশির বান লেগেছে
শিকার ধরে বসে আছে একটি বগা ।
রংধনুর ওই রঙ সাজিয়ে খুশির ভেলায়
আবির মেখে বিকেলটাকে রাঙিয়ে দিলো,
মন ফাগুনে উপচে পড়া পাগল পাড়ায়
আনন্দেতে ভাবছে না তো কে কি পেলো?
এমনি করে দিন কেটে যায় সকাল-দুপুর
মিলনমেলার হাট বসে যায় কিশোরবেলায়,
রঙ ছড়ানো সোনা আলোর কলস উপড়
হৈ-হুলোর করে কাটায় হেলায় খেলায়।
দিনের শেষে সন্ধ্যে ফিরুক , এমন আশায়
ছড়া- গানের আসেরেতে মাতিয়ে দিতে,
বন্ধুরা সব এক হয়েছি ভালোবাসায়
জুঁই-চামেলি হাসনা হেনার গন্ধ নিতে।