এখন সময়:বিকাল ৫:৪৪- আজ: সোমবার-২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

এখন সময়:বিকাল ৫:৪৪- আজ: সোমবার
২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

ঝরা

ইদরিস আলী মধু

 

আপন মাহমুদ ঝরাকেই ভাবছে। ক’দিন থেকে ঝরাই তার সমস্ত হৃদয়টা দখল করে আছে। আপনের মনে পড়ছে, ঝরা কী ভাবে হাসে, হেসে  হেসে কথা বলে; ঠাট্টা করে। আবার কখনো একসাথে মৃদুপায়ে হেঁটে যেতে কী ভাবে গল্পের স্থলে কাজী নজরুল ইসলামের সেই বিখ্যাত কবিতা ‘অভিশাপ’ থেকে আবৃত্তি করে,‘আমি যে দিন হারিয়ে যাব/ বুঝবে সেদিন বুঝবে/অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় /আমার খবর পুছবে—বুঝবে সেদিন বুঝবে।’

আপন তখন ঠাট্টা বলতো, আমাকে রেখেই চলে যাবে?

ঝরা তখন হাসতো। তার হাসিতে আপন মাহমুদ এক মায়ারটানে বিগলিত হতো। ঝরাকে তখন অনেক করে আদর করতে ই”েছ করতো। তার সোনার পাতে মোড়ানো ঠোঁটের উপর হাজারটা ভালোবাসার চুম্বন দিতেও মন চাইতো। কারণ ঝরা শুধু আদর-সোহাগ পাবার মতোই একটি মেয়ে। ঝরার নীচের ঠোঁটটা দেখতে ঈষৎ মোটা আর কাঁচা সোনার মতো রঙের হওয়ায় আপন এভাবেই তার তুলনা করতো।

 

এতে ঝরা যারপর নাই খুশি হতো আর মনের আনন্দে হাসতে থাকতো। তার মুখে ও ঠোঁটে হাসি লেগেই থাকতো।

এ জন্য আপন মাঝে মাঝে ঝরাকে বলতো, তোমার হাসি তো নয় যেন আমার মুখ দর্শনের আয়না।

ঝরাকে স্বয়ং স্রষ্টা যেন নিজ হাতে গড়ে দিয়েছেন। লম্বায় পাঁচফুট পাঁচইঞ্চি ছিপছিপে গড়নের উজ্জ্বল রঙের দেহখানিতে নাক, মুখ, চুল, চোখ, চোখের উপর বাঁকানো ভ্রুদ্বয়, ওষ্ঠযুগল, হাত—পায়ের লকলকা আঙ্গুলগুলো আর ডান গালে বসা মশার মতো কালো তিলটা সদাসর্বদাই দৃষ্টি আকর্ষণ করতো। তার মুখের কথা শুনতেও অসাধারণ মিষ্টি লাগতো। আপনের কাছে আরো বেশী করে মিষ্টি লাগতো ঝরা যখন মৃদুকণ্ঠে আপনকে নাম ধরে ডাকতো। আপনের কাছে মনে হতো, স্বর্গের স্বয়ং কোনো দেবী যেন অমন করে নাম ধরে ডাকছে তাকে। গুণেও অসাধারণ সে। আবার মনটাও আকাশের মতো বিশাল ছিলো। সাহিত্যের সংগঠক হিসাবে এবং লেখালেখিতেও দেশজুরা নামডাক তার।

 

ঝরা শুধু আপনের কাছেই মায়াবী ছিলো না, তাকে যে দেখে—সেই হৃদয়ে মায়ারটান অনুভব করতো। এজন্য ঝরার বন্ধুর সংখ্যাও নেহাত কম ছিলো না। দেশের মন্ত্রী, বড়ো বড়ো আমলা, কবি—সাহিত্যিকদের সাথেই তার বন্ধুত্ব ও যোগাযোগ বেশী। প্রতিবছর তার নিজস্ব সাহিত্য সংগঠন আঁচলের পক্ষ থেকে অনেক সোড়গোল করে সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করতো সে।

 

তারপরও আপন ঝরাকে বন্ধু ভাবে। সে অধিকার ঝরাই তাকে দিয়ে ছিলো। আপন একদিন কোনো এক কবি আড্ডায় তার স্বরচিত কবিতা ও আবৃত্তি শুনে তার প্রতি মুগ্ধ হয়েছিল। সেটা নব্বই দশকের মধ্যভাগের কথা। তারপর থেকে আর থেমে থাকেনি। দু’জন একসাথে একাত্মা হয়েই সাহিত্যের কাজ করে আসছে। এজন্য অনেকের বাঁকা কথাও হজম করতে হয়েছে তাদের।

 

ঝরার তুলনায় দৈহিক ভাবে আপন মাহমুদ ততটা মানান মতো না হলেও সে তার ব্যক্তিত্ব আর সাহিত্যকর্ম দিয়ে কাছে আসতে পেরেছিল। সুন্দরী মেয়েরা ছেলেদের টল ফিগার, ফর্সা এবং চেহারায় আভিজাত্যের ছাপ না থাকলে নাকি পছন্দ করে না, ঝরাকে দিয়ে আপনের কাছে সেটাও ভুল প্রমাণিত হয়ে ছিলো। কারণ আপন রঙে কালো, ঝরার চেয়ে কমপক্ষে এক ইঞ্চি খাটো ও খর্বাকৃতির।

 

ফিগার নিয়ে তাদের মধ্যে অনেক আলাপচারিতা হয়েছে। ঝরা বলেছে অন্য কথা, ‘মানুষের বাহ্যিকতা কোনো বিষয় নয়—মনটাই আসল।’ আপনকে আরো বলেছে, সে তুলনায় তুমি পুরোটাই ফিট। তোমার দৈহিক গড়নেও টান টান ঊত্তেজনা আছে। ঝরা বুঝাতে চেয়েছে, আপন যে স্পোর্টসম্যান ও ফুটবলার ছিলো সে মেজাজটা এখনো তার সর্বাঙ্গে দৃশ্যমান- সেটাই। ঝরা আরো বলেছে, এই যে আমার শত শত বন্ধু—বান্ধবের কথা বলা হয়। তাদের অনেকেই কেবল বাইরে সুন্দর আর স্মার্ট। কিন্তু ভেতরটা কে দেখেছে কার। যদি বলি কারো ভেতরটাই তেমন সুন্দর নয়। সবাই কেবল আমার দেহটাকে কবিতা বানিয়ে চোখের ভাষায় অনুবাদ করে পাঠ করে যায়। আমাকে সস্তা প্রেরণা যোগায়। লেখা ছাপানোর লোভ দেখায়। কেউ কেউ আবার বইটাও নিজ খরচে বের করে দিতে চায়। লেখালেখিতে মনগড়া আধাত্ম্য জগৎ টেনে উল্টা—পাল্টা কথা—বার্তা বলে আমার উপর অধিকার ফলায়। আবার  ভোগের সামগ্রী ভেবে অন্য প্রস্তাবনাও দেয়। কেউ তো কবি বা মানুষ ভাবে না। সাহিত্য—সংস্কৃতির লেবাস পরে ভোগ করতে চায়। খামখা বদনাম করে মনোতৃপ্তি পায়। ইদানিং অনেক মেয়েও এজগতে এসে এমনটাই পছন্দ করছে। তথাকথিত আমলা কবি, সাহিত্যিকরা তাদেরকে রাতারাতি ফেমাস করার লোভ দেখিয়ে পেছনে অনেক অনেক অর্থ দু’হাতে খরচ করছে। তারা সাহিত্য সৃষ্টির চেয়ে দৈহিক প্রেম—উপাখ্যান সৃষ্টি করছে বেশী। আবার সম্ভাবনাময়ী অনেক সুন্দরী মহিলা কবি এসব বেহাল্লাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করছে। একবার আমার সাহিত্য সম্মেলনে সুযোগ বুঝে জনৈক এক সুন্দরী কবির বক্ষদেশের দিকে হাত বাড়িয়েছিল আরেক ফ্যান্টাসি দাড়িওয়ালা বদমাশ পুরুষ কবি। তারপর সে তাকে থাপ্পর মারতেই গিয়েছিল বলে কানে এসেছিল।

 

দেশের অঞ্চল ভিত্তিক গড়ে ওঠা সাহিত্য সংগঠন নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। তার বেশীর ভাগ সংগঠনই অর্থকে প্রাধান্য দিয়ে সংগঠন করে। সংগঠন থেকে যে সকল পত্রিকা করা হয় তার জন্য লেখকদের থেকে টাকা নিয়ে লেখা ছাপানো হয়। লেখার মান বিচার করা হয় না। সব কবি, লেখকদেরকেই লেখার জন্য ব্যাপক প্রসংশা করা হয়। পাঁচ—দশ হাজার টাকা নিয়ে আমলা—টামলা ডেকে একটা অনুষ্ঠান করে তাদেরকে সম্মাননা দেয়া হয়। এসব পলিসি করে সংগঠকরা শুধু অর্থ হাতিয়েই নেন না, লেখক জীবনকে একটা ঘোর অন্ধকার অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়; জীবনে তারা আর ভালো লেখক বা কবি হতে পারেন না। কারণ পুরুস্কার পেয়ে নিজের প্রতি অন্ধ হয়ে ভাবতে শেখেন, অনেক বড়ো মানের লেখক বা কবি হয়ে গেছি। বুঝতে চায় না যে, আসলে কী সব লিখছি। আদৌ লেখা হচ্ছে কি-না। পরবর্তীতে দেশের সাহিত্যের খাতা থেকেই চিরতরে তারা হারিয়ে যান।

 

আপনকে নিয়েও ঝরার অনেক কানকথা ছড়িয়ে আছে। সাহিত্য মহলে টক অব দ্যা টাউন তারা দুজনে। যারা এসব ব্যর্থ রটনায় মত্ত হয়, তারা তাদের দু’জনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে কেবল টাকা ছড়িয়ে সাহিত্য চর্চা করেন না, নিজের প্রকাশিত বইও পাঠককে তারা টাকা দিয়ে পড়ান। টাকা দিয়ে অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করান। বাড়ি বাড়ি হেঁটে হেঁটে বিনামূল্যে বই বিলি করে রাতারাতি লেখক বা কবি খ্যাতি অর্জন করতে চান।

 

এসব নিন্দুকদেরকে ঝরা কখনো বিবেচনায় আনতো না। পাত্তাও দিত না তেমন। তার কাছে যেন আপনই ভিন্ন। আপনই যেন পারফেক্ট। আপনই ঝরার শত শত বন্ধু—বান্ধব পেছনে ফেলে একান্তই মনের মানুষে পরিণত হয়ে ছিলো। ঝরা তাকে সত্যিকারে কাছের বন্ধু মনে করতো। কাছের বন্ধু হিসেবে যা বুঝায় সেটা সে আপনকে বুঝিয়ে দিতো। ঝরা অবলীলাক্রমে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক সবটাই তার কাছে শেয়ার করতো। ঝরাকে নিয়ে আপনের লেখা কবিতা শুনেও সে খুশি হতো। আবার ঝরাও তার লেখা কবিতা আপনকে শুনিয়ে তৃপ্তি পেত। আরো বেশী তৃপ্তি  পেতো, যখন তারা প্রকৃত পাঠকদের থেকে সাড়া পেতো।

 

কখনো কখনো হোটেল—রেস্তোরায় বসে তারা সাম্প্রতিক সাহিত্য, সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করতো। একসাথে খানাপিনাও হতো। তবে বেশীরভাগ সময়ে ঝরা নিজেই বিল পরিশোধ করতো, আপনকে খুবএকটা দিতে দিতো না। কারণ ঝরা বিশ্বাস করতো চা-নাস্তার টেবিল  পুরোটাই মনের মানুষের জন্য সৌজন্যমণ্ডিত।

 

আপনের আরো মনে পড়ে, কেসুর আলুর মৌসুমে ঝরা প্রায়ই তার কাছে কেসুর খাওয়ার বায়না ধরতো। আপন তাকে সেগুলো যোগার করেও দিতো। আপন দেখতো, কী মজার তৃপ্তি সহকারে তার দু—তিনটা খেয়ে ফেলতো সে। এতোসব ভাবনার স্রোতেই ভাসছিল আপন। এবার হঠাৎ করে একটা দীর্ঘশ্বাস পড়ে। কারণ নিজের অসুস্থতাজনিত কারণে বেশকিছু দিন যাবত ঝরার সাথে দেখা নেই তার। ঝরা কোথায় আছে তাও সে জানে না। সেদিন খবরটা দিতেই ঝরাকে ফোন দিয়েছিল। কিন্তু ঝরা রিসিভ করে না। বারবার দিয়েও একই অবস্থা হয়। এ অবস্থায় আপনের মনে কিছুটা রাগ ও ক্ষোভ দানাবেঁধে ওঠে। ঝরাকে আর বন্ধু ভাবতে পারে না। ভাবে, বন্ধুতো কাছের মানুষ হয়। অসময়ে প্রকৃত বন্ধুইতো সত্যিকারের শক্তির মানুষ হয়ে পাশে দঁড়ায়। অথচ ঝরা কত ভিন্ন। শুধু আজই নয়, ডিজিটাল যুগ হওয়া সত্ত্বেও টাইফয়েডকালে কোনোদিন একটিবারের জন্যও ফোন করে খবর জানতে চায়নি ঝরা। এমুহূর্তে ঝরাকে শুধু নিষ্ঠুর ছলনাময়ী ছাড়া আরকিছুই ভাবতে পারে না সে।

 

অভিমানে ঝরাকে মন থেকে মুছে দিতে চায়। তার নামটাও মনে করতে চায় না আর। রাগে- ক্ষোভে ফোন থেকে তার সেভ করা নামটাও ডিলেট করে দেয়। যতবার ভাবছে ঝরা নামের কাউকে আর চিনি না, তারপরও ঝরা যেন তার মনের ভেতর হাসতে হাসতে এসে বসে পড়ছে। সরল বন্ধুর মতো আচরণ করে চলছে। এতে করে আপন আরো বেশী যন্ত্রণার আঁধারে ডুবে যেতে থাকে।

 

তার কিচ্ছু ভালোলাগে না। ঘরেও মন বসে না। জ্বর কিছুটা কমেছে মাত্র। আর দেরি নয়। আজ শুক্রবার হওয়ায় ডেলি কাগজগুলোর সাময়িকীগুলো দেখতে ছুটে যায়। পত্রিকা স্টলে যেতেই স্টলমালিক শাহিন যথারীতি তার দিকে কাগজগুলো এগিয়ে দেয়। আপন এক এক করে দেখতে থাকে সেগুলো। তারপর স্থানীয় একটি কাগজের এক জায়গায় ঝরার ছবি দেখে চমকে ওঠে সে। মনটা ভেঙে যায়। সেখানে আর দেরি করে না। দ্রুত বাসায় পৌঁছে ঝরাদের বাড়ি যেতে সিদ্ধান্ত নেয়। রওনা হয়ে ঠিক ঘন্টাখানেকের মধ্যে আপন নদীঘাটায় পৌঁছে যায়। ঝরাদের বাড়ির সামনে পৌঁছে এক বৃদ্ধাকে দেখতে পেয়ে ঝরার বর্ণনা মতো অনুমান করে, তিনিই বুঝি ঝরার মা হবেন। এজন্য সে তাকে সরাসরি মা সম্বন্ধন করে বলে, আপনি নিশ্চয়ই ঝরার মা হবেন। আমি দেখা করতে আসছি। বাসায় আছে-জানেন কি? ঝরার মাও আপনকে ইতিপূর্বে না দেখলেও প্রথম দেখাতেই চিনে ফেলেন এবং নির্ভরতা নিয়ে বলেন, তুমি আপন?

জ্বি-আমি আপন।

সেটাই। ঝরার কাছে গল্পশুনে তোমাকে আগে থেকেই চিনে রেখেছি। সে অনেক গল্প করতো তোমার। তুমি একদিন ফোনেও আমাকে মা বলে সম্বোধন করে কথা বলেছিলে। এসো বাবা! ভেতরে এসো।

 

ঝরা তার মাকে আপন সম্পর্কে বলেছিল, মা! আপন খুব ভালোছেলে। আমার ভালো বন্ধু। কিন্তু ওর সমস্যা, ও বড়োই আবেগপ্রবণ। আবেগের বশে আমার জন্য নিজেকে শেষ করে দিতেও দ্বিধা করবে না। আমি চাইনা ও আমার সম্পর্কে অন্যকিছু জানুক।

আপন ভেতরে গিয়ে সোফায় বসে। চটজলদি কহিনুর বেগম একগ্লাস জুস নিয়ে এসে বলেন, খাও বাবা। আপন তৃপ্তিসহকারে পান করার পর একটা ডায়রি আপনের দিকে এগিয়ে দিতে দিতে বলেন, ঝরা তোমাকে এটা দিতে বলেছে।

 

আপন তড়িৎ গতিতে ডায়রিটা নিয়ে পাতা উল্টাতে থাকে। উল্টাতে উল্টাতে মনে পড়ে, এজন্যই তো সে চলার পথে মাঝে-মধ্যে হাঁফিয়ে উঠতো। পেটব্যাথা-ব্যাথা করতো। সোনামুখটা কালচেটে দেখাতো। জিজ্ঞেস করলে বলতো, ‘এমনি। তেমন কিছু না। রোদে বের হলে এমনটা হয়। ঠিক হয়ে যাবে।’ ডাক্তার দেখাতে বললে, কিছুতেই  রাজি হতো না।

 

আপন ডায়ারি পড়ে দেখে, পাতায় পাতায় একই লেখা—আপন! তুমি ভালো থেকো। আর আমার জন্য দোয়া করো। আমি তোমার কথা ফেলব না। তোমার অপেক্ষাতেই থাকবো। আবার আমাদের দেখা হবে। হ্যাঁ সত্যি দেখা হবে। আমি দুরারোগ্য একব্যাথা সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম। আমার চিকিৎসক বলেছে, আমি আর কোনো দিন সুস্থ হতে পারবো না। আমাকে একদিন চলে যেতেই হবে। সেই বেঁধে দেয়া সময়ের আর মাত্র মাসতিনেকের মতো বাকী ছিলো। তাই আর কষ্ট না বাড়িয়ে তার আগেই চলে গেলাম। তোমাকে বলতে যেয়েও বলতে সাহস হয়নি। আমাকে ক্ষমা করে দিও।

আপন মূহুর্তে বিষাদে ডুবে যায়। ভেতরটা ভেঙে খানখান হয়। সকল স্বপ্ন ধূলোয় মিশে যায়। সে দুহাতে মুখ ঢেকে ফুঁপিয়ে কান্না করতে থাকে। কোহিনুর বেগম তখন ব্যথিত হয়ে আপনের মাথায় হাত রেখে বলেন, ওর এত বড়ো রোগ ছিল, কোনো দিন তা বুঝতে দেয়নি বাবা। তনি আঁচলে চোখ মুছতে মুছতে আবার বলেন,  ছোটবেলায় বাবা হারা মেয়েটা খুব মাড়িচাপা স্বভাবের ছিল! মুখ ফুটে নিজের কথা কিচ্ছু বলতো না কাউকে।

 

মা! ওর ফোনটা?

 

হ্যাঁ! আমিই ওটা এখন ওর স্মৃতি ধরে রাখতে ব্যবহার করি। তোমার নাম দেখে আমি আর রিসিভ করতে সাহস করিনি।

 

আপন তখন শুধু নির্বাক পাথর ছাড়া আর কিছু নয় যেন।

 

 

ইদরিস আলী মধু, কথাসাহিত্যিক, পাবনা

অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হয় না

শোয়েব নাঈম শব্দের মধ্যেই থাকে জীবনের আসল দর্শন। শব্দের কারণেই মানুষ হয় নির্বাসিত। এখন মঙ্গলের অমরতায় ঘামছে গ্রীষ্মের বৈশাখ মাস। মঙ্গল এই শব্দবোধে যতটা কল্যাণ

চীনের মতো আমাদেরও ভাবা উচিত

আমির হোসেন চীনে ফেসবুক, ই’নস্টাগ্রা’ম, ইউটিউব, গুগল, গুগল ম্যাপ, হোয়াটসঅ্যাপ, এমনকি ক্রোম ব্রাউজারও ব্যান! শুরুতে শুনে বিরক্ত লাগলেও এখন বুঝতে পারছি- ওরা আসলে অনেক আগেই

গল্পশূন্য জীবনের ইতিকথা

আন্দরকিল্লা ডেক্স : আমাদের পূর্বপুরুষরা কৃষক ছিলেন, শ্রমিক ছিলেন। থাকতেন মাটির কাঁচা ঘরে। অর্থাভাবে-অন্নাভাবে কখনও-সখনও উপোসও করতেন। পরতেন মলিন পোশাকপরিচ্ছদ। আমাদের বাবারা চাইলেন আমরাও যেন

সংস্কার চাই : চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন

নিখিল রঞ্জন দাশ সম্প্রতি চট্টগ্রাম এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামকে আগামী ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনকে দেয়া হবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজনে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের ৬০

চল্লিশ বছর পর জীবনের প্রথম প্রেম আবার ঝড় তুলল মৈত্রেয়ীর জীবনে “মির্চা, মির্চা আই হ্যাভ টোল্ড মাই মাদার দ্যাট ইউ হ্যাভ কিসড মাই ফোরহেড'”

নহন্যতে উপন্যাসে মৈত্রেয়ী দেবীর এই উক্তি টি অবশ্যই পাঠকদের মনে আছে? মির্চা এলিয়াদ আর মৈত্রেয়ী দেবীর প্রেম কি শুধুই প্রেম ছিল নাকি সেই সাথে কিছু