সবুজ কুঁড়িতে রক্তের ডাক
রূপক বরন বড়ুয়া
এক পা এগুলে দু’ পা আসি পিছিয়ে
দূর্বার ডগায় শিমুল কৃষ্ণচুড়ায় রক্তের ডাক
বর্ণমালারা জেগে ওঠে হেঁটে আসে ধীর পায়ে।
অলিতে, গলিতে রাতে সংকোচে মেলে চোখ
কেউ কি হাতের তালুতে রেখেছে তুলি?
মানচিত্রে এঁকেছে মায়ের চোখ, হতাশার মুখ।
আতংকে ভয়ে স্বরনালীতে বসেছে চেপে
অদৃশ্য ভয়াল ষড়যন্ত্রিক! ক্রুর হাসিতে মাতোয়ারা
মস্তিষ্কের কোণায় কোণায় তার বেজন্মার কীট!
ভুলে গেছে বায়ান্নে উড়ে গেছে মায়ের সবুজ আঁচল
মরুভূমি হয়ে গিয়েছিল বুক ভরা নদী
কি গভীর সংলাপ ‘আমি কি ভুলিতে পারি ‘!
পিশাচ তিমির থেকে কারা ওরা ওঠে আসে
মননে পিন্দনে বিজাতী লেবাস, ভাবে ভাসে
ক্রুর উল্লাস! বেহুদা নোংরা ছিটায় সবুজ জমিনে
পাখির চোখে, কলমির ডগায় আগুন লাগায়।
আমাদের বুঝি ঘরবাড়ি নেই, নেই নবান্নের উৎসব
আমাদের তো সব আছে, নিজস্ব বর্ণ আছে, শব্দ আছে
আছে গভীর কবিতা কানন, শোকের মাতম!
নিজস্ব বুলি আছে, আছে বিরাট সমুদ্র কাহন
যে জলে বুক চিতিয়ে নাচে রক্তের প্লাবন।
তোমাদের কিছু নেই, ভুমিহীন যাযাবর
একবার পেছনে ফিরে দেখো
তোমাদের কোন পরিচয় নাই আর
ফিরে এসো নদী জলে করি তর্পণ, শুচিশুদ্ধ স্নান
চাঁদ-তারায় তোমার আলগা পিরিত, কায়েদী খোয়াব
দেখো থর’র বালুকাবেলায় রচে তার বেহায়া ভাসান।
=================================
চাই বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতা
এম এ ওয়াজেদ
শুকতারাকে লেখা প্রথম চিঠিতে লিখেছিলাম
তোমার কপালে দাসত্বের আত্মঘাতী পরগাছা
দেখে আমার হৃৎপিণ্ড হরিণীর মতো পলাতকা
অঙ্গীকারে নিখোঁজ হতে চায়। উৎকণ্ঠার শোকার্ত
অনুভূতি ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজমেন্টে
ক্যারিয়ার টিপস গড়তে গিয়ে আত্নপরিচয়হীন।
জগতে দুঃখবোধের উপচে পড়া যে পেয়ালা তার
সুরতহাল রিপোর্টে অত্যাচারিত জনপদের দগদগে
যন্ত্রণার দাপ্তরিক মোহাচ্ছন্নতার অন্ধকার রাত্রির
স্পন্দনশূন্য ক্যামেরার লেন্স। ধ্বংসের যে ক্ষুধার্ত
লিঙ্ক তা অনায়াসে ঢুকে পড়ে অপরিচ্ছন্ন ভগ্ন দরজায়।
ক্ষমতার রসায়নে জারিত মূর্খতার গর্দভ মানস সরোবর
খামচে ধরে মূল্যবোধের রক্তাক্ত চৌকাঠ । বিকাশের যে
অভিমানী অনুভূতিরা প্রেম ইমামের তালাশ করে জানা
যায় সে ইমাম লুটপাটের পরকীয়ার জেরে কারাগারে ।
মিথ্যাচারের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ে এই
পেনিনসুলার হিংস্র পেনড্রাইভের ভাইরাসের মতো
নন্দনতত্ত্বের যে রাজসিক মনোটাইপ তার পৃষ্ঠাগুলো
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়ে ফেলেছে অপ্রত্যয়ের বুনো রাজষাঁড় ।
স্বভাবের একাডেমিক বিদ্বেষে পুড়ে গেছে অন্তর্দৃষ্টির
জ্ঞানশূন্য ইবাদতখানা । ঘৃণার অঙ্কুরিত রক্তবীজে
অজ্ঞতার কদর্য বিচ্যুতির সন্দেহবাদী বুদ্ধিবাদ । কুৎসার
ল্যাবরেটরি বিকৃত কমেডির নিন্দিত প্রবৃত্তিসদনের মতো ।
বিশ্বাসের প্রাণহীন নিশ্চল পাঠশালা আর প্রসব করেনা
এনলাইটেনমেন্টের পুষ্পজ্ঞান । সত্তার সীমাবদ্ধতা
গ্রাস করেছে সম্ভাবনার অপরিণত সংকল্পের বানোয়াট
মতবাদের অন্ধকারাচ্ছন্ন বর্বর লাম্পট্যের অব্যর্থ মধ্যযুগ ।
স্বৈরতন্ত্রের কর্তৃত্ববাদী অগ্নিশিখা জ্বলতে থাকে এই গহ্বর
উন্মাদ যুদ্ধবাজের ভয়ংকর লালাগ্ন্থিতে। ভস্মীভূত হয়
গাজা উপত্যকার অস্থি মজ্জা শিরা দেহকোষ প্রাণকোষ
ইউক্রেনের মানবিক ক্লোরোফিল বোমার আঘাতে নিহত
হয় সালোকসংশ্লেষণের মানবতাবাদী প্রতিষ্ঠান।
ছড়িয়ে পড়ে নীতিভ্রান্তির উপনিবেশবাদী শোষণের
জিরাফগ্রীবার গর্ভবতী প্রোজেকশন। শকুনের বস্তুবাদী
চক্ষুদৃষ্টি উড়ে বেড়ায় এশিয়া আফ্রিকার অরক্ষিত
জলাধারে শ্রেণিবিভেদের চৈতন্যহীন দাসত্বের মাটিতে।
কী অদ্ভুত ! গণতন্ত্রের থিসিস পেপারগুলো নির্দ্বিধায়
প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালের
বুদ্ধিজীবী নামধারী মিথ্যুকের পেইড এজেন্ট।
জঞ্জালপূর্ণ জ্ঞানমূর্খরা রফতানি করে সাম্রাজ্যবাদী
খায়েশের নিম্নমুখী প্রবণতার বিধ্বংসী অস্তিত্বের তৃষ্ণা।
অশান্ত সাগরের মতো শুকতারার প্রেমনদী আন্দোলিত
হয় আন্দোলিত হয় অগ্নিগিরির লাভার মতো। সে ভাবতে
থাকে মূর্খতাই জগতের অভিশাপ। ধ্বংসের সর্বগ্াসী নষ্টতা
মূর্খতার গর্ভজাত সন্তান। যে যাই বলুক শুকতারা এই নষ্ট
সময়ে লিখে “সবার আগে চাই বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতা”।
================================
আমি বললেই যদি…
সু শা ন্ত হা ল দা র
আমি বললেই যদি নদী খাল সমুদ্র হোত
আকাশের বুক যদি প্রিয়তমার মতো সেন্ট মার্টিন দ্বীপ হোত
তাহলে নতুন দেশ
নতুন মানুষের মতো
আমারও হাওয়াই দ্বীপে নেপোলিয়ন ভিলা হোত
এমনই সুবর্ণ বিজয় উৎসবে
জর্জ বুশ যদি করমর্দনে এগিয়ে আসেন ওয়াশিংটনে
যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প হাটু গেড়ে অভিষিক্ত করেন অসংখ্য চুম্বনে,
কোনকিছু তোয়াক্কা না করেই
আমি দুর্দমনীয় প্রতাপে হেঁটে যাব সুন্দরী ইসাবেলা ভবনে
যেখানে স্বেচ্ছা মৃত্যু-বাণ রেখে দিয়েছে কাঁচুলি মোড়া দুগ্ধ ফেনিল সাগরে
আমি বললেই যদি মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা থেমে যেত
কিয়েভের যুদ্ধে পুতিন যদি সন্ধি করতো
তাহলে সমরাস্ত্র নির্ভর পৃথিবীতে
সব রাষ্ট্র নায়কই গৌতম ধ্যানে ‘বুদ্ধ’ হোত!
==========================
আমার একটা দুপুর ছিল
মুস্তফা হাবীব
উনিশশো অষ্টাশি সালের সাতাশ নভেম্বর
শিশির মঞ্চ, সুস্মিতার হাতে গোলাপ দিয়েছিলাম,
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ঈর্ষাকাতর হয়ে বলেছিল —-
এমন একটা ঝলমলে বসন্ত দুপুর আমারও ছিল,
দার্জিলিঙের উঁচুনিচু পাহাড়ি সরুপথে কতবার
সুপ্রভা -হৈমন্তীর হাত ধরে দিয়েছিলাম দীর্ঘ সাঁতার।
স্বরচিত কবিতা পাঠের পর দেখলাম এক লহমায়
সুনীল- সুভাষের চোখ ভিজে উঠেছে শব্দহীন
হয়তো তাদেরও রক্তরাগ দুপুর ছিল,আলো ঝলমল
বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো সুবর্ণীল দুপুর।
যখন আমার শরীর বেয়ে দুপুর নামে
বাহুবন্দী হবার মানসে ঝর্ণাতলায় ছুটে আসে বর্ণা,
জয়িতারা ডাহুক হরিয়ালের ডাক শুনবে বলে
পদ্মা- যমুনায় ভাসায় ডিঙি, সুর তোলে জল নূপুরে।
দু হাজার পঁচিশ ,শীতের থাপ্পড় খেয়ে ক্লান্ত আমি
বিকেলের বাতায়নে দাঁড়িয়ে শুনাই বিরহ সঙ্গীত ,
আগুনলাগা দুপুরের কোনো রঙে হইনা সংবর্ধিত
আমাকে দেখে হাসে না অষ্টাদশী,গড়েনা স্বপ্নসড়ক;
চোখের অলিন্দে উঁকি দেয় নিশীথ রাতের নীরবতা।
===========================
নাজাত
উৎসর্গ- নাঈমা জান্নাত তারুনুমকে
নাজমুল ইসলাম সজীব
কাজল কালো মায়াবী
চোখের ভ্রুণ পিটপিটে
রাঙায় প্রকৃতি থেকে
নিজের জীবন।
হাসিখুশি মন ছুটে চলে
উষ্ণতায় নিজেকে
বিলিয়ে দিতে বিশ্বে
যৌবনের ছোঁয়ায়।
মন বাসনায় কর্ম ধর্মে
পুরো পৃথিবীই আমার।
কোমল মন ছুটে চলে
অসীম সুখের আশায়।
বুকে বৃষ্টির শব্দে
ছেয়ে যায় উষ্ণতায়।
গতর আমার শৈশবে দাঁড়িয়ে
প্রশান্তি লাভের আশায়।
দেহাবরণের ফাঁকে ফাঁকে
চিনচিন করে স্পর্শ হীনতায়,
ব্যস্ততা আমায় তাড়িয়ে চলে,
যৌবনের উদ্দীপনা থেকে
বঞ্চিত করার তরে।
প্রেমটুকু বিলিয়ে দিতে
খুঁজি যৌবনের হৃদয়।
হৃদয় খুলে বলবে
দুহাতে আমায় জড়িয়ে-
প্রশান্তিতে থাকো ভালোবেসে।
তোমার প্রতিটি শব্দ দেহকে
তাড়িত করে যৌবন উপভোগে।
তোমাকে ছুঁতে পাবো বলে-
তোমার ম্যাসেজ আমায় তাড়িত করে
দেহে থাকা ইলেকট্রন বিনিময়ে
সুখ ভাগাভাগিতেই জীবন।
ইলেকট্রন দেহকে ছুঁয়ে যায়
বরফের পানির মতো।
খুঁজে পাই যৌবন উপভোগে
তোমার পরশে নিথর দেহ।
ভুলে যাই পরিশ্রম-যন্ত্রণা
সারাদিনের ছুটাছুটি
যৌবনের রসাত্মক ছোঁয়ায়।
যৌবনা জীবনকে বাঁচাতে
মনকে লালন আজীবন।
যৌবনা ভাব ফুটে থাক
বুড়ো বয়সে যৌবন রসে অম্লান।
============================
চব্বিশের বুনো উল্লাস
আবদুল মোমেন
বুনো উল্লাস চলছে দেশ জুড়ে
শব রেখে চারপাশে ঘুরে ঘুরে
কী বীভৎস খুনিদের হাসি
কখনোই হবেনা তাদের ফাঁসি!
হাতে হাতে হাতুড়ি শাবল জোগাড়
মাজার মন্দির মূর্তি ভেঙে চুরমার
কী ভয়ানক হাঙ্গামাকারীদের উল্লাস
কে আটকাবে তাদের স্বর্গবাস!
সারাদেশে বাজছে কিরিচ চাপাতির ঝঙ্কার
ছিন্নভিন্ন দেহে রক্তাক্তের করুণ চিৎকার
কী নির্বিঘ্ন হামলাকারীদের প্রস্থান
কেউই ঠেকাবেনা তাদের উত্থান।
চলছে চুরি ডাকাতি জবরদখলের মহড়া
শান্তিপ্রিয় মানুষ আজ ভয়ে আধমরা
কী নির্লজ্জ চোরদের গাদ্দারি
চলবেনা তাদের উপর খবরদারি!
==============================
খোঁজ কাকে?
নাদিয়া ফারহানা
সুখ,তৃপ্তি,উচ্ছ্বাস ?
সেতো ক্ষণস্থায়ী অনুভব
দোলাবে ভুলাবে মন
ভাসবে জীবন দোদুলদোল
হারিয়ে যাবে অনন্তর।
খোঁজ কাকে?
সম্পদ,সামর্থ,সফলতা?
সেতো মরিচীকার পিছে ছোটা
সূর্য পড়বে হেলে
পূব পশ্চিমের খেলায়
অযথা অলসতায় বিকেল বেলা ।
খোঁজ কাকে?
প্রিয়জন, ভালোবাসা, প্রিয়ার মুখ?
স্বার্থের মায়া নগরীতে
বসবাস জীবনযাপন
ছিড়ে যাবে সব বন্ধন
রয়ে যাবে স্মৃতিকথা আলিঙ্গন।
খোঁজ কাকে?
পরমাত্মা, সৃষ্টির উৎস, রব?
যত খুঁজবে তত বুঝবে
হেঁটে যাবে গহীন নিলাদ্রী
স্বর্গীয় আলো নহরসমুহ
নির্মল পানির সালসাবীল।
শেষ ভ্যালেন্টাইন
বিজন বেপারী
হলদে রঙের প্রভাত সূর্য
ওই দেখা যায় ওই
বসন্ত এসে গেছে, ডালে ডালে
পলাশ শিমুল ওই।
মনের ভেতর কেমন যেমন
ষোড়শী মনের ঢেউ
আজকে আমায় মুক্ত করতে
আয় না আমার কেউ।
ফুলের মালায় সাজাতে তোমায়
রজনীগন্ধা ফুলে
কতো যে এসেছি বসন্ত মেলা
চলন্ত বাস ঝুঁলে।
তবুও আজকে একাকী বৃদ্ধ
তোমাকে পাবার আসে
সাজাই মনের সুপ্ত বাসনা
বসন্তের এ মাসে।
না বলা মনের কথাটা শোনাই
তুমিই আমার ফাইন
এ জীবনে তুমি আমার প্রথম
শেষ ভ্যালেন্টাইন।
==========================
মুক্তি চাই
আবদুর রাজ্জাক খান
মুক্তি চাই, মুক্তি চাই,
স্বাধীনভাবে চলতে চাই।
দুমুঠো ভাত খেতে চাই,
মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।
মুক্তি চাই, বাঁচতে চাই।
নিরাপদে চলতে চাই,
প্রাণ খুলে কথা বলতে চাই।
মায়ের বুকে ফিরতে চাই,
মুক্তি চাই, শান্তি চাই,
বৈষম্যহীন সমাজ চাই।
কোটা মুক্ত চাকরি চাই,
মেধার সঠিক মূল্য চাই।
সমান তালে চলতে চাই,
লড়তে চাই, মুক্তি চাই,
নিরাপদ সড়ক চাই।
গোলামীহীন রাষ্ট্র চাই,
ঈমান নিয়ে বাঁচতে চাই।
শিক্ষার মাঝে স্রষ্টা চাই,
মুক্ত হয়েই মরতে চাই।
এই জন্য লড়তে চাই,
মরার মাঝেই বাঁচতে চাই।
============================
মাসের শেষে এত খরচ
মোহাম্মদ আবদুস সালাম
‘কেমন করে চলি আমি
কেমন করে খাই।
মাসের শেষে এত খরচ’
বলেন আদু ভাই।
ছেলে পড়ে জার্মানিতে
মেয়ে হলিক্রসে।
বউটি আমার চুল বাঁধেতো
পার্লারেতে বসে।
বাড়ি দুটো তৈরি করতে
ঘাম ঝরেছে খুব।
চ্যালেঞ্জ থাকলে ম্যানেজ করি
একেবারেই চুপ।
মাসের শেষে পা র্টি থাকে
ব ন্ধু বান্ধব আসে।
বা বু র্চি কে বে শি খাটায়
দারুণ ভালোবেসে।
এসব টাকা জোগাতে হয়
অতি কষ্ট করে।
গাড়ি একটা কিনতে হলো
বউয়ের অনাদরে।
এত খরচা কেমনে জোগাই
শ্রম দিতে হয় বেশি!
মাইনে মাসে তিরিশ হাজার
পোস্টিং পেয়ে খুশি।
(জহির রায়হানের ‘অজগর’ গল্প অবলম্বনে।)
======================================
তৃষ্ণার্ত দেহ
টিপলু বড়ুয়া
মরুর প্রান্তে-প্রান্তে ঘুরেছি
যাযাবরের মতো,
তৃষ্ণার্ত দেহে পিপাসায়
ক্লান্ত হবো আর কত?
সাগরের বুকভরা জল দেখে
গিয়েছি তার পানে,
দু’ফোটা জল ভিক্ষা চেয়েছি
সাগরের কানে কানে।
ব্যর্থ হয়েছি জলপানে তাই
রক্ত-অশ্রু চোখে,
জীবন গেলো জলের খোঁজে
মৃত্যু অভিমুখে।
=========================
নির্বাচিত অভিযোজন
মুন্সী আবু বকর
একদিন,
সমুদ্রের ফেনায় জন্ম নিয়েছিল একটি নামহীন কোষ,
আলো আর অন্ধকারের মাঝে দুলেছিল
তার প্রথম অস্তিত্বের গান।
তারপর?
হাজারো ঢেউ ভেঙেছে, গড়েছে জীবন,
মাটি থেকে গাছ,
গাছ থেকে ডানা,
ডানার স্পর্শে আকাশের স্বপ্ন।
সময়ের ক্যানভাসে কতো রেখা,
কেউ বিলীন, কেউ স্থির,
বিজয়ী কেবল সেই,
যে বদলে নিতে জানে নিজেকে।
শিকড় গেড়ে থাকা বৃক্ষও শিখেছে ঝড়ের ভাষা,
নদী পথ বদলে ছুটেছে সাগরের দিকে,
অবশেষে মানুষ-
সে তো কেবল এক অভিযোজনের গল্প।
আজও আমরা খুঁজি নিজেদের আয়নায়,
আমরা কি পূর্বপুরুষের ছায়া?
নাকি কেবল এক চলমান বিবর্তন,
নতুন কোনো প্রকৃতির আহ্বান?