এখন সময়:সন্ধ্যা ৬:১৮- আজ: সোমবার-২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

এখন সময়:সন্ধ্যা ৬:১৮- আজ: সোমবার
২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-গ্রীষ্মকাল

ভিখারির অন্য চোখ

মোহিত কামাল

চোখে বেশ পুরু চশমার কাচ দেখেই বোঝা যায় গুরুতর কোনো চোখের সমস্যা রয়েছে বৃদ্ধার। উপরের দিকে তিনি চোখ তুলে তাকালেও দেখে বোঝা যায়কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। সামনে উপস্থিত কারও মুখের দিকে তাকালেও যেন দেখতে পান না, মাথাটা ঠেলে আরও একটু আগ বাড়িয়ে খুব কাছ থেকে দেখলে অস্পষ্ট দেখতে পান মানুষের মুখ, চেনা চেনা লাগে তবু চিনতে পারেন নাএমন এক অভিব্যক্তি ফুটে থাকে তাঁর মুখে।

ভিক্ষার জন্য তাঁর সামনে কোনো থালাবাটি নেই। হাঁটুগেড়ে বসে হাঁটুর ওপর ডানহাত মুঠি করে রাখেন, কেউ দান করতে চাইলে হাত না সরিয়ে কেবলমাত্র মুঠি খুলে এমনভাবে ধরেন, পথচারীদের কেউ কিছু না কিছু দেবেনই। ডানহাতের মুঠি ভরে গেলে, বাঁ-হাতে সব চালান করে দিয়ে দাঁতহীন মাড়িটায় কয়েকবার ঢেউ তোলেন। ভেতরের তৃপ্তির বাইরে প্রকাশের এমন নান্দনিক রূপ প্রতিদিন লক্ষ করে থাকেন লেকের পাড়ে হাঁটুরে কিংবা মসজিদগামী নামাজিগণ। মুখের ত্বকের ভাঁজ থেকে যে-ঢেউ বেরোয় তার সঙ্গে পুকুরের কোমল ঢেউয়ের তুলনা করতে পারে হায়াত। প্রতি শুক্রবারের মতো আজও এ প্রশান্তির ঢেউ দেখার জন্য জুম্মার নামাজ শেষে ঘরে ফেরার সময় টুপ করে পাঁচশ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত সে সরে আসে সামনে থেকে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করে এই বৃদ্ধার অভিব্যক্তি।

টাকা চিনতে ভুল করলেন না তিনি। টাকাটা চোখের সামনে তুলে ধরে অনেকক্ষণ চেয়ে রইলেন। ত্বকের ভাঁজে ঢেউ উঠল না বরং মুখের পেশির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল। অপলক চেয়ে রইলেন নোটটির দিকে। দহনবেলা পেরিয়ে দুখিনির স্নেহশীলা বুভুক্ষু মনে মোচড় খেয়ে টাকা থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালেন প্রথম। তারপর মাথা ঘুরিয়ে তাকালেন বাঁয়ে, ডানেও তাকালেন। দানকারীকে দেখতে পেলেন না। দূর থেকে হায়াত দেখল দৃশ্যটি। টাকাটা বাঁ হাতে চালান করে দিয়ে তিনি দুহাত তুলে মুঠি ভরা ডান হাত প্রসারিত করে দোয়া করলেন। দোয়া শেষে চোখ তুলে তাকালেন উপরের দিকে। গাছের শুকনো পাতারা হু হু করে ঝরে যাচ্ছে। বসন্তের ছোঁয়া পেয়ে গাছে গাছে গজাচ্ছে রঙিন সব পাতা, আর পাতা। সড়কে জমা হচ্ছে ঝরা পাতার স্তূপ।

পাতার ওপর দিয়ে কেউ হেঁটে আসছে। মচমচ শব্দ হচ্ছে। বৃদ্ধা চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলেন লেকের পাড়ের নারীগার্ডরা লাঠি হাতে এগিয়ে আসছে। ফকির-মিসকিন যারা মসজিদে যাওয়া আসার সড়কের দুপাশজুড়ে হাত বাড়িয়ে বসে থাকে তাদের ওপর খবরদারি করে। ভিক্ষুকদের চোখে তারা সন্ত্রাসী। আর নারীগার্ডদের চোখে ভিক্ষুকরা হচ্ছে চোর-বাটপাড়, লেকের সৌন্দর্য বিনাশকারী। এসব গার্ডরা প্রতিদিন দাবড়িয়ে বেড়ায় ভিক্ষুকদের। দাবড়ানি খেয়ে তারা পালিয়ে যায় না। আবার এসে বসে নিজ জায়গায়।

বৃদ্ধা ওঠার সুযোগ পেলেন না। হাঁটু গেড়ে বসেই রইলেন। এক নারী গার্ড, খাটো, মোটাসোটা, পায়ে তার ছেঁড়া স্যান্ডেল, হাতে লাঠি, আর পরনে পুলিশের ড্রেসের আদলে ড্রেস, মোটা বেল্ট পরা। দপদপ করে পা ফেলে সামনে এসে ধমক দিয়ে বলল, ‘এই বুড়ি, ওঠ্। আরো সরে বস্।’ রাস্তা দখল করে বসেছিস কেন?

বুড়ি একটু নড়ল। গার্ডের মুখের দিকে না তাকিয়ে বসা অবস্থায় খানিকটা পেছনে হটে, বসার আসন ইটটি পেছনে সরিয়ে আবার বসল।

নারী গার্ড তৃপ্ত হলো না। আবার ধমক দিয়ে বলল, ‘আরো হটও।’

আবারও ইটের আসনটা পেছনে ঠেলে বুড়ি বসলেন শক্ত করে। এ সময় পেছন থেকে হায়াত এসে দাঁড়াল নারী গার্ডের মুখোমুখি।

‘এই যে! ওনাকে ধামকাচ্ছেন কেন?’

শক্তিশালী প্রতিপক্ষ সামনে এসে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে খাবড়ে গেলেও তেজ কমল না তার। দায়িত্ব পালন করছে যথাযথভাবে এমন ভাবসাব নিয়ে জবাব দিল, ‘রাস্তা দখল করে বসা নিষেধ। তিনি রাস্তার ওপর বসেছিলেন। সরিয়ে দিলাম।’

আমি তো দেখেছি তাঁকে, ‘সড়কের ওপর নয়, সড়ক থেকে খানিকটা দূরেই ছিলেন। অযথা দুর্বলের ওপর লাঠি ঘোরাচ্ছেন! এটা কি ঠিক হচ্ছে?’

‘ওয়ার্ড কমিশনারের নির্দেশ। সব ভিক্ষুকের দৌড়ানোর আদেশ আছে। আমরা তো দয়া করে তবু বসতে দেই।’

উত্তর শুনে হতভম্ব হয়ে গেল রাহাত। ওয়ার্ড কমিশনার অত্যন্ত সজ্জন লোক। ভিক্ষুক তাড়ানোর নির্দেশ তিনি দিতেই পারেন না। ব্যক্তিগতভাবেও হায়াত চেনে তাকে। এমন নামকরা ভদ্র কমিশনারের নাম ভাঙিয়ে তারা ক্ষমতার চোটপাট দেখায়। দোষ চাপে নেতার ওপর, পার্টির ওপর। নেতারা কীএভাবে ভিক্ষুক তাড়ানোর নির্দেশ দিতে পারেন! পারেন না। তবে তাদের দোষও উড়িয়ে দিতে পারল না হায়াত। এসব বাহিনীর কাজেরও যে মনিটরিং দরকার, কেউ করে বলে মনে হলো না। গলায় স্বর নরম করেই সে বলল, ‘কমিশনার সাহেব আমার আত্মীয় হন। এ পাড়ারই বাসিন্দা আমি। কমিশনারের নাম ভাঙিয়ে এভাবেই কি আপনারা অপকর্ম চালিয়ে যান?’

উত্তর দেওয়া তো দূরের কথা, মাথা তুলে আর কোনো কথা বলার সুযোগ পেল না নারীগার্ড। সামনে থেকে অনেকটা পালিয়েই গেল সে।

নারীগার্ডকে পালিয়ে যেতে দেখে স্বস্তি নিয়ে হায়াতও চলতে শুরু করেছিল নিজের পথে। হঠাৎ তার চোখ গেল বৃদ্ধার কুঁজো শরীরের ওপর। জীবন তরঙ্গে হারিয়ে গেছে তার জীবনের জল, এ জীবন বেলায় আঁচলে জমা হচ্ছে মমতার পরিবর্তে নিষ্ঠুরতার জঞ্জাল। বাঁক খাওয়া পেটের খিদার ঢেউয়েও রয়ে যাচ্ছে বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি। জীবন-ভাটার টানে দ্রুত হারিয়ে গেছে ভরাট জোয়ারে ভাসা নৌকা।

দেখে হু হু করে জ্বলে উঠল হায়াতের চোখ। মমতার নৌকো আচমকা ঘূর্ণি তুলে ডুবে যেতে লাগল অচিন কোনো সমুদ্রে।

 

দুই

জুম্মার নামাজের সময় হয়ে গেছে। বাসা থেকে মসজিদে ছুটে যেতে লাগবে পাঁচ মিনিট। আর হেলেদুলে বাঁকা পথে যেতে দশ মিনিট। এত টুকুন সময় হাতে নেই। সপ্তাহ বাদে আজ নামাজ ধরার জন্য ছুটেই সোজা পথে হায়াত হাজির হলো মসজিদে। ভেতরে পা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ে গেল সেই বৃদ্ধা-ভিক্ষুকের কথা। প্রতি শুক্রবার দুবার করে দেখা হতো। দেখার সুযোগ হয়। মূল পথ ধরে আসলে আসার সময় তাঁকে দেখার সুযোগ ঘটত। অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো বৃদ্ধাকে দেখে মসজিদে ঢুকলে মনোযোগে প্রশান্তি নামে। মসজিদ বিল্ডিংয়ের চারপাশ ঘিরে যে খেজুর গাছ, শিলকড়ই গাছ আর সুপারি গাছের ঝাড় রয়েছে তার ছায়ার ফাঁক দিয়ে নেমে আসে প্রশান্তির অন্যরকম ঢেউ। আজ কি তবে সেই ঢেউ নামবে না? শান্তির পরশ পাবে না? মনটা এত অস্থির লাগছে কেন? ব্যাখ্যা জানা নেই হায়াতের। তবু মসজিদে ঢুকে জানালার পাশে বসে তাকাল একবার বাহির পানে। কী আশ্চর্য লেকের ওই কোণাটা দেখা যাচ্ছে। যেখানে বৃদ্ধা বসে থাকেন, পুরো অংশটি চোখে পড়ছে। অথচ নেই তিনি। বসে নেই। আপনাআপনি হায়াতের মনে উৎকণ্ঠার ঝড় শুরু হলো। নামাজ শুরু হয়ে গেলেও সে ঝড় থামল না। ঝড় মোকাবিলা করে নামাজ শেষ করল সে। সুন্নত নামাজ পড়ার জন্য অপেক্ষা না করে কী এক অদৃশ্য টানে বেরিয়ে এল মসজিদের জরুরি গেট দিয়ে।

জরুরি গেট পেরুলেই বাগান। নানা জাতের গাছগাছালির চারা বপন করা হয়েছে বাগানে। এ বাগান পেরিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বেরোনার সময় থমকে দাঁড়াতে হতো। দেখার মতো করে দুচোখ মেলে তাকতেই হতো চারপাশে। সবুজ অরণ্যের বুকের ঘরেও জেগে উঠত চোখ জুড়ানো সজীব অনুভূতির ঢেউ। আজ কিছুই জাগল না। কোনো দিকে তাকানোর ফুরসত পেল না হায়াত। গোপন টানে ছুটে চলল সে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে। কাঙ্ক্ষিত মোড়ে গিয়ে দেখল আজ সেখান থেকে একটু দূরে আসন নিয়েছে ভিক্ষুকের দল। আর লাঠি হাতে মুখে পান চিবোতে থাকা অন্য এক নারীগার্ড চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।

পই পই করে খুঁজে দেখল সে। অসংখ্য ভিক্ষুকের ভিড়ে সেখানে রয়েছে আরো কয়েকজন বুড়োবুড়ির দলও, কাঙ্ক্ষিত মুখটি নেই! হাহাকার করে উঠল বুক!

বিষয়টা কি? এমন কষ্ট লাগছে কেন?

কষ্টের অনুভব ছড়িয়ে যেতে লাগল চোখের মণিতে। হঠাৎ হায়াত দেখল অন্যরকম দ্যুতিময় আলো এগিয়ে আসছে পাশে নতুন বিল্ডিং তৈরির কাজে ব্যবহারযোগ্য স্তূপকৃত ইটের আড়াল থেকে। লাঠিতে ভর দিয়ে শরীর কুঁজো করে এগিয়ে এসে তিনি বসলেন সবার থেকে একটু দূরে।

প্রচণ্ড একটা নাড়া খেল হায়াত। তাঁকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে দেহের অণুপরমাণু ভেদ করে যেন বেরিয়ে এল শান্তি! আর শান্তি। পাঞ্জাবির পকেটে হাত ঢোকাল টাকার জন্য। পাঁচশ টাকার নতুন নোটটি পকেটে পুরে নিয়ে এসেছিল বৃদ্ধাকে দেয়ার জন্য। এ মুহূর্তে পকেটের ভেতর দিয়ে হাতটা চালান হয়ে গেছে। পকেট কাটা। টাকা নেই। মোবাইল সেটও নেই। দ্রিম করে একটা ধাক্কা খেল সে বুকের ঘরে। মোবাইল কিংবা টাকার জন্য নয়, বৃদ্ধাকে আজ টাকাটা দিতে পারল না সে কারণেই হতাশা জেগে উঠল হায়াতের মনে। হঠাৎ খেয়াল হলো ভিড় ঠেলে মসজিদে ঢোকার সময় গায়ে বেশ জোরেই ধাক্কা দিয়েছিল একজন পাশ থেকে। তখনই কি ঘটে গেছে অপকর্মটি? মসজিদের মতো পবিত্র স্পটেও ঘটতে পারে এমন ঘৃণ্যতম কাজ!

উদ্বিগ্ন মুহূর্তটি কীভাবে পার করল, টের পেল না হায়াত। হঠাৎ দেখল কুঁজো দেহ কিছুটা সোজা করে বৃদ্ধা এসে দাঁড়িয়েছে তার মুখোমুখি। পুরো চশমার কাচের আড়াল থেকে তার দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে বলল, ‘কী? এমন করছেন কেন?’

‘না। কিছু করছি না। পকেট কাটা গেছে!’

‘ও! পকেটমাররা মসজিদেও ঢোকে?’

‘হ্যাঁ। তাই তো মনে হচ্ছে।’

‘খারাপ লাগছে, তাই?’

‘না। এখন আর খারাপ লাগছে না।’

‘ভালো। খারাপ না লাগলেই ভালো। ভালো থাকার জন্য খারাপটা মাটিচাপা দিতে হয়।’

‘আপনার এ মুহূর্তের কথায় খারাপ লাগার অনুভূতিটা মাটিচাপা খেয়ে গেছে। ভালো লাগছে তাই।’

মমতার দৃষ্টিতে বৃদ্ধা আবার চোখ তুলে তাকালেন হায়াতের মুখের দিকে। মায়ার রেণু ছড়িয়ে গেল তার দেহে।

‘প্রতি শুক্রবার আপনি আমার হাতে পাঁচশ টাকা গুঁজে দেন! কেন? এত টাকা একসঙ্গে কেন দিতে ইচ্ছা করে?’

‘এ প্রশ্নের জবাব নেই আমার বোধে। এটুকু বুঝি, দিলে ভালো লাগে, দিতে ইচ্ছা করে।’ বলল হায়াত।

‘নিন, পাঁচশ টাকার নোট, আপনার দেওয়া, হাতে নিন।’ বলেই কোমরের ভাঁজ থেকে একটা নোট বের করে দিলেন বৃদ্ধা।

‘ফিরিয়ে দিচ্ছেন?’

‘না। ফিরিয়ে দিচ্ছি না। আবার দিন আমার হাতে। আপনার মনটা ভালো হোকচাই আমি। নিন। আবার দিন আমার হাতে।’

হায়াত স্তব্ধ হয়ে গেল।

বৃদ্ধা আবার বললেন, ‘আপনার সমান বয়সি আমার একমাত্র ছেলেকে মেরে ফেলেছে শত্রুরা। সে রাজনীতি করত। নিজের দলের বিদ্রোহী গ্রুপ নেতৃত্বের লোভে খুন করেছে তাকে। স্বামীকে হারিয়েছি বহু বছর আগে। আর ছেলেকে কয়েক বছর আগে। আপনাকে প্রতি শুক্রবার যখন দেখি, ছেলের কথা মনে হয়। মায়া লাগে। আপনার দেওয়া পাঁচশ টাকার চেয়েও বড় উহার আমি পেয়ে যাই, মায়ার উপহার। সে উপহারের মূল্য পাঁচ কোটি টাকা।’

‘সে কি! আমি তো ভেবেছিলাম চশমার পুরু কাচ ভেদ করে আপনি আমার মুখ দেখতে পান না, ঝাপসাভাবে দেখলেও চিনতে পারেন না!’

‘চোখের জ্যোতি কমেছে ঠিক। মনের জ্যোতি কমেনি। রত্ন দেখতে ভুল করিনি আমি। মনের কাচে অনেক স্বচ্ছ আপনার মুখ। সে মুখ কি ভোলা যায়?’

বাকরুদ্ধ হয়ে গেল হায়াত।

‘বৃদ্ধা আবার বলতে লাগলেন, ‘আমি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক ছিলাম। শিশুদের মন দেখার অভিজ্ঞতা আছে। আর নিজের সন্তান, হায়াতের মুখও দেখেছি। তার মুখ বসে আছে আপনার মুখে।’

‘আপনার ছেলের নাম কি হায়াত!’

‘হ্যাঁ। এমন চমকে উঠলেন কেন আমার ছেলের নাম শুনে?’

প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বিস্ময়ের ঝাঁকি খেয়ে হায়াত ব্যাকুল হয়ে প্রশ্ন করল, ‘আপনার নাম কী?’

‘আমার নাম দিয়ে কী হবে বাবা?’

‘বাবা’ শব্দটাও ভূকম্পন তুলল হায়াতের বোধে। অস্থির হয়ে আবার প্রশ্ন করল, বেশ জোরালোভাবেই, ‘আপনার নাম কী? বলুন প্লিজ।’

‘হালিমা খাতুন।’

উত্তর শুনে দ্যুলোক-ভুলোক ভেদ করে চন্দ্র-সূর্য গ্রহ-তারা ছেড়ে যেন উড়ে চলে গেল হায়াত মহাশূন্যেতার মায়ের নাম হালিমা খাতুন। প্রায় পনেরো বছর হলো তিনি ছেড়ে গেছেন জগৎ-সংসার।

 

 

মোহিত কামাল, কথাসাহিত্যিক, মনোবিজ্ঞানী, সম্পাদক- শব্দঘর, ঢাকা

অন্ধ হলে প্রলয় বন্ধ হয় না

শোয়েব নাঈম শব্দের মধ্যেই থাকে জীবনের আসল দর্শন। শব্দের কারণেই মানুষ হয় নির্বাসিত। এখন মঙ্গলের অমরতায় ঘামছে গ্রীষ্মের বৈশাখ মাস। মঙ্গল এই শব্দবোধে যতটা কল্যাণ

চীনের মতো আমাদেরও ভাবা উচিত

আমির হোসেন চীনে ফেসবুক, ই’নস্টাগ্রা’ম, ইউটিউব, গুগল, গুগল ম্যাপ, হোয়াটসঅ্যাপ, এমনকি ক্রোম ব্রাউজারও ব্যান! শুরুতে শুনে বিরক্ত লাগলেও এখন বুঝতে পারছি- ওরা আসলে অনেক আগেই

গল্পশূন্য জীবনের ইতিকথা

আন্দরকিল্লা ডেক্স : আমাদের পূর্বপুরুষরা কৃষক ছিলেন, শ্রমিক ছিলেন। থাকতেন মাটির কাঁচা ঘরে। অর্থাভাবে-অন্নাভাবে কখনও-সখনও উপোসও করতেন। পরতেন মলিন পোশাকপরিচ্ছদ। আমাদের বাবারা চাইলেন আমরাও যেন

সংস্কার চাই : চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গন

নিখিল রঞ্জন দাশ সম্প্রতি চট্টগ্রাম এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামকে আগামী ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারশনকে দেয়া হবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজনে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের ৬০

চল্লিশ বছর পর জীবনের প্রথম প্রেম আবার ঝড় তুলল মৈত্রেয়ীর জীবনে “মির্চা, মির্চা আই হ্যাভ টোল্ড মাই মাদার দ্যাট ইউ হ্যাভ কিসড মাই ফোরহেড'”

নহন্যতে উপন্যাসে মৈত্রেয়ী দেবীর এই উক্তি টি অবশ্যই পাঠকদের মনে আছে? মির্চা এলিয়াদ আর মৈত্রেয়ী দেবীর প্রেম কি শুধুই প্রেম ছিল নাকি সেই সাথে কিছু