এখন সময়:বিকাল ৩:৩৩- আজ: মঙ্গলবার-২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

এখন সময়:বিকাল ৩:৩৩- আজ: মঙ্গলবার
২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

মাহবুব-উল আলমের মফিজন : পুনঃপাঠ ও পুনঃবিবেচনা

মোস্তফা তারিকুল আহসান

বাংলা সাহিত্যে প্রাচীন বা মধ্যযুগে বা তার আগে আমাদের উৎসভূ’মিতে যে সব সাহিত্য নিদর্শন লক্ষ করা যায় তাতে জীবনের কোনো সহজ সত্যকে গোপন করার বালাই ছিলো না। সামাজিক বা ধর্মীয় বিধি নিষেধ তখনো মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবার ব্যবস্থা হয় নি। সে কারণে গৌতম বুদ্ধও জীবনের সাথে দেহ ও মনের সম্পর্ক ও এর তাৎপর্যকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। বেদ  বেদান্ত (উপনিষদ) চর্চাপদ, বৈষ্ণব সাহিত্য সর্বত্র দেহকে বা জৈবিক এষণাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে। মন শরীরকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠে তাই দেহ পবিত্র বলেই আত্মা পবিত্র। মহামতি লালন এসব কথা আরো ভালো করে বলেছেন তাঁর গানে। যারা সাহিত্যে শারীরিক সম্পর্ক বা জৈবিক বিষয়ের প্রসঙ্গ এলেই এক অশ্লীল বলে ফতোয়া দেয় তারা প্রকৃতপক্ষে সাহিত্য বা শিল্পের মূল লক্ষ বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে ঠিক মতো পাঠ গ্রহণ করেন নি। আর যারা সমালোচক বা সাহিত্য বিষয়ে ছাত্রপাঠ্য পুস্তক লেখেন তারা যে নিদাঘ কষেণ এইটা সাহিত্য এইটা সাহিত্য নয় সেটা এদেশের সাহিত্যের জন্য আরো মারাত্মক। অর্থাৎ শ্লীলতা বা অশ্লীলতা তো দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। জীবনের সব কিছুই সাহিত্যের অংশ,কাজেই জীবনের যে কোনো বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু প্রেম দিয়ে মানবজীবনের গল্প রচনা করা সম্ভব নয় প্রেমের সাথে দেহজ বা কামজ বিষয় গভীরভাবে অন্বিষ্ট সে কারণে সাহিত্য তখনই সত্যিকারের মানব জীবনের প্রতিনিধি হবে যখন লেখক কোনো বাধা ছাড়াই মানব যা আকাঙ্ক্ষা করে তা প্রকাশ করতে পারে।

আমাদের ভাওয়ালের কবি গোবিন্দচন্দ্র দাস লিখেছিলেন,আমি তাকে ভালোবাসি অস্থি মজ্জাসহ,আমি তাকে ভালোবাসি রক্ত

 

মাংসসহ। এই কবিকে যদি আমরা অশ্লীল বলি তাহলে বলতে হবে আমরা কবির কবিতাকে বুঝি না এবং মানব এষণা সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই কম। মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়ের এক নায়ক তার নায়িকা কুসুমকে বলে, শরীর,শরীর তোমার কি মন নাই কুসুম। কুসুমের যে অবস্থা সে অবস্থায় তার শরীরটা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বাস্তবতাকে অস্বীকার করে শুধু মন নিয়ে, ভাবজগৎ নিয়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা করলেও সাহিত্য হবে তবে তা দুর্বল হবে এবং সত্যকে অস্বীকার করে রচিত হবে। এই সব কথাবার্তা বলার উদ্দেশ্য আছে। আমরা নতুন করে মাহবুব-উল আলমের (১৮৯৮-১৯৮১) মফিজন পাঠে মনোযোগ দিতে গিয়ে এইসব কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় এবং পাঠকের কানে আগেই একটু বাতাস দিয়ে তাকে প্রস্তুত করতে চাই। জানি না পাঠক কতটুকু বাতাস পাবেন। যাহোক, মফিজন (১৯৪৬) গল্প নিয়ে বিদ্বত মহলে বেশ সাড়া পড়েছিলো। বাঘা বাঘা লেখক কথাসাহিত্যিক এর পক্ষে জোরে সোরে অবস্থান নিয়েছিলেন। তারা মূলত এই বড় গল্প বা নভলেট নিয়ে যে কুটতর্ক হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে এবং লেখকের পক্ষে কথা বলেছিলেন। বলাবাহুল্য সব কথা প্রায় অশ্লীলতা নিয়ে। এটা ঠিক যে তাঁর সময়ে অর্থাৎ কাজী নজরুল ইসলাম বা প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁর আমলে মাহবুব উল আলম খুব বেশি পরিচিত বা বলিষ্ঠ লেখক ছিলেন না। তিনি পাকিস্তান আমলে বা বাংলাদেশ আমলে নামকরা পুরস্কারও পেয়েছেন এটা ঠিক তবে বাঙালি মুসলিম লেখকদের লেখা নিয়ে খুব বেশি উচ্ছসিত হবার ব্যাপার কখনো ছিলো না। দু’একটি উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছাড়া সব লেখাই ছিলো মধ্যমানের বা নিম্নমানের। আর ব্যতিক্রমের মধ্যে মাহবুব উল আলমকে নিতে কষ্ট হয়। তবে তাঁর সৈনিক জীবন বা চট্টগ্রামের সামাজিক সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বেশ কিছু রচনা তৈরি করেছেন যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও প্রায়শ অভিযোগ করা হয় যে তিনি লেখার সময় শিল্পের নৈয়ায়িক শৃঙ্খলার কথা মনে রাখেন নি; সোজা কথায় তাঁর রচনা শৈল্পিক মানদণ্ডে দুর্বল। তবে মনে রাখা দরকার যে সব সমালোচক এসব কথা বলেছেন তারা কতটুকু সমালোচনা সাহিত্য সম্পর্কে জানেন সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায়। তবু মফিজন গল্পটির বেলায় আমাদের সাবধানে মন্তব্য করতে হবে।

 

মফিজন গল্পটি তাঁর অন্য রচনার চেয়ে আলাদা। এটা ঠিক যে এটি তাঁর পরিণত বয়সের রচনা। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে এখানে তার মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। আমার ধারণা মফিজন নামের মেয়েটির মানসিক শারীরিক কষ্ট এবং সামাজিক বা ধর্মীয় রীতি নীতির বিশিষ্ট উদাহরণই গল্পটিকে আরো বেশি পরিণত করেছে। তিনি চারপাশের সমাজকে এখানে বেশ চমৎকার করে প্রকাশ করতে পেরেছেন; মনে হবে এই সমাজ তাঁর খুব চেনা এবং তাঁর অভিজ্ঞতার শাণিত বিন্যাস গল্পের মধ্যে খুব ভালোভাবে চোখে পড়ে। একটি কথা প্রচলিত আছে লেখকের অভিজ্ঞতার বৈচিত্র্যময় নিরীক্ষাই হলো সাহিত্য বা সেই অভিজ্ঞতা যা জীবনের সম্ভাবনাকে মিলিয়ে দেখে। আর এই অভিজ্ঞতানিসৃত জীবনপ্রণালির নানাবিধ খুটিনাটি যা মানবজীবনের অভিপ্রায়ের পক্ষে কথা বলে এবং যা অন্য মানবকে সংশ্লেষতার চাদরে আটকে ফেলে তাই হয়তো সাহিত্য।

আমরা লক্ষ না করে পারি না যে মাহবুব-উল আলম গল্পটি একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছেন। প্রথম পরিকল্পনা তো স্পষ্ট- বঞ্চিত নারী মফিজন; যার ভেতরটা কেউ বুঝতে পারে না। না মা বাবা না তার বোন ছবিরন। এক সাথে বড় হয়ে উঠে একটু অগ্রসর ও সুন্দরী হওয়া সত্ত্বেও তার বাল্যপ্রেমিক মামুদের সাথে তার বিয়ে দেবার ব্যাপারে কেউ এগিয়ে এলো না। তার বোন কিছু বলেনি কারণ বোধ হয় সেও অবলা নারী। তাকে যে পরে এক আরাকানি ব্যবসায়ীর কর্মচারির সাথে বিয়ে দেওয়া হলো টাকার লোভে এবং নিশ্চিত জেনে যে এই ছেলে তার সাথে স্বামী হিসেবে কখনো কাছাকাছি থাকবে না এবং তার ফিরে আসাও অনিশ্চিত। সে শেষ পর্যন্ত ফিরে আসেও না। প্রতিপক্ষ ব্যবসায়ীর হাতে সে খুন হয়। পরে তার বিয়ে হয় এক পীরের সাথে। কোনো সম্পর্ক ছাড়াই জানোয়ারের মতো সেই পীর জোর করে মফির ওপর প্রথম রাতেই চড়াও হয়। আর সন্তানবৎ যে খোকা বা শাহনওয়াজের সাথে তার অদ্ভুত সম্পর্ক হলো তার ব্যাখ্যা দেওয়া বেশ কষ্টকর। একদিকে সে মাতৃরূপে খোকার দেখা শোনা লেখাপড়া খাওয়া দাওয়া করায় আবার তার শিশু কিশোর ডাটো শরীরের দিকেও তার নজর যায়। এটা তার অপ্রাপ্তি থেকে হয় অনুমান করা যায়। সে পুঁথির নানা কথা তাকে পড়ায়। প্রেমের কথা,নারী পুরুষের সম্পর্কের কথা। খোকা ভেতরে ভেতরে অনুসন্ধিৎসু হয়ে ওঠে। শাশুড়ি নাক  ডেকে ঘুমায়। আর কখনো ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে মফিজন। সেই ফাকে খোকা তার শরীরের নানা অলি গলি সন্ধি একদিন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে। এই স্থানের বর্ণনা বা প্রসঙ্গ নিয়ে সে সময় চারিদিকে ঢি ঢি পড়েছিলো। সবাই বিদ্যা জাহির করে বলে উঠেছিলো এটা অশ্লীল গল্প। বস্তুত এক বঞ্চিত সুন্দরী তরুনি সম্পর্কহীন এক বালকের সাথে আদি সম্পর্কে হয়তো জড়িয়ে পড়েনি তবে সেই বিষয়ে আলাপ করেছিলো ও উত্তেজনার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলো বলে আমাদের ধারণা। আর রূপবানের স্বামী বালক রহিমের মতো খোকা মফির স্বামী ছিলো না, তাকে সে বড় করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলো। যে কৌতূহলোদ্দীপক সম্পর্ক আমরা এই অসম নারী পুরুষের সাথে দেখি তা অসম্ভব নয়, অজাচারও নয়। মানব জীবনের নানাময় বৈচিত্র্যপূর্ণ স্বভাব বিবেচনায় আনলে এটা খুবই সম্ভব। বরং আধুনিক কালে নানা জৈবিক মানসিক আবিষ্কারের দিকে নজর দিলেএটা খুব স্বাভাবিক। যে কামজ বা জৈবিক অবদমনের স্বীকার মফিজন সে  কারণে তার পক্ষে এ জাতীয় আচরণ করা খুব স্বাভাবিক। আমরা ফ্রয়েড সাহেবকে কিঞ্চিত স্মরণ করতে পারি। তবে মাহবুব-উল আলম এই নারীর মর্যাদা রেখেছেন অর্থাৎ যেমনটা করলে সমাজ তাকে মর্যাদাহীনা বলবে সেরকম পরিস্থিতিতে লেখক তাকে ফেলেন নি। খোকার সাথে তার কোনো যৌন সম্পর্ক তৈরি হয় নি। আর বিষয়টি ছিলো দুজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

তারপরেও আমরা বলতে পারি লেখক সেই সময়ের প্রেক্ষিতে বেশ সাহস দেখিয়েছেন। সত্যি কথা বলতে কি এরকম গল্প তো আমরা পরেও এদেশে লিখতে দেখিনি। আর এরকম ঘটনা তো এ সমাজে অহরহ ঘটে তাহলে কেউ লেখেন নি কেনো। যে প্রেম বা কামনা সমাজ ধর্ম সমর্থিত তা নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে গল্প লেখার তো প্রয়োজন নেই বরং লেখক বা শিল্পিকে তো সেই অংশে আলো ফেলতে হবে যেখানে কখনো আলো পড়ে না। সমাজের বা মানুষের জন্য আলোকবর্তিকা জ্বালানোও লেখকের কাজ। লক্ষ করা যাবে সব দেশে বিশেষত ইউরোপে যে নবজাগরণ বা যুক্তিবাদ আমরা দেখি তার মূল কাজটি করেছিলেন লেখক বা শিল্পিরা। মফিজন গল্পের মূল বিষয় যৌনতা নয় মূল বিষয় জীবনের মৌল আকাঙ্ক্ষা বা অভিপ্রায় বা চাহিদা থেকে বঞ্চিত নারীর কথা। মফিজন সমাজ বা ধর্মের তৈরি কাঠামোতে বন্দী হয়েছে,এটি এক অর্থে জেলে বন্দী জীবন যেখান থেকে ভিন্নভাবে হলেও মুক্তি চেয়েছিলো সে। বিকল্পভাবে খানিকটা আনন্দ সে পেয়েছিলো তবে সার্বিকভাবে সামাজিক যুপকাষ্ঠে সে নিপতিত। তার কোনো মুক্তি নেই।

মাহবুব-উল আলম এই গল্প রচনায় বেশ সফল। তাঁর অন্য গল্প বিবেচনা করলে এখানের উত্তরণ সহজে চোখে পড়ে। সেই উত্তরণের একটা বড় যায়গা হলো বর্ণনাভঙ্গির চমৎকারিত্ব ও গভীরতা। তাঁর ব্যঞ্জনাময় বর্ণনা ও সূক্ষ্ম রসবোধ ও উইট গল্পটিকে একটি সফলতার কাঠামোয় দাঁড় করিয়েছে। গল্পটি তো সবার জানা থাকে প্রকৃত বিষয় হলো এর গাঁথুনি এবং লেখকের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এর অবকাঠামোর দিকে নজর দিই তাহলে দেখতে পাবো তিনি যে পরিকল্পনা অনুযায়ী মফিজনকে নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন সেভাবে গল্পের শরীরে উপাদান যুক্ত করেছেন। মনোদৈহিক যেসব বিষয়ে তিনি বর্ণনা দিয়েছেন কোনো রকম রাখঢাক ছাড়াই তার জন্য তাঁর প্রথম থেকেই প্রস্তুতি ছিলো। অর্থাৎ হঠাৎ করেই তিনি মফিজনের এই অবস্থা তৈরি করেন নি। যে দুজন অল্পবয়স্ক বালক মফিজনের প্রকৃত নারীত্ব ও তার প্রেমময় সত্তা আবিষ্কার করতে অগ্রসর হয়েছিলো তাদেরকে এই কর্মে নিযুক্ত করার যৌক্তিকতাও লেখক ব্যাখ্যা করেছেন এবং এক পর্যায়ে থেমে গেছেন পরিমিতি জ্ঞানের জন্য। এটাও ছোটগল্পের বা শিল্পের বড় বৈশিষ্ট্য তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যা হোক সার্বিকভাবে এই গল্পটির কাঠামো ও বর্ণনাভঙ্গির দিকে দৃষ্টি দিলে লেখকের বলিষ্টতা সনাক্ত করা পাঠকের পক্ষে সম্ভব হবে। একই সাথে এটি বলতে আমাদের সুবিধে হয় যে ১৯৪৬ সালে রচিত গল্পটি এখনো প্রাসঙ্গিক কেনো এবং সব প্রজন্মের গল্পকারদের কাছে এর আবেদন শেষ হয়ে যায় নি।

দুই বোন ছবিরন ও মফিজন মক্তবে পড়ে। ছবি বড় মফি ছোটো। লেখকের বর্ণনা ধার করা যায়; কিন্তু দেখিতে দুইজন সমান। তবুও পার্থক্য অনেক। ছবির রং ময়লা,শরীর মাংসল। মফির গায়ের রং খোলাতাই খুব,অথচ কৃশাঙ্গী। কিন্তু আসল পার্থক্য চোখে। ছবি গরু-চোখা— প্রকাণ্ড গোলকে ভাষা মুখ— কোনো আদম যেন উহার প্রতিবাদ স্তব্ধ করিয়া দেবার জন্য উহাকে মুষড়াইয়া রাখিয়া গিয়াছেন। আর মফির চোখ দিয়া বাহির হয় ঝলকে ঝলকে জ্যোতিঃ। ছবি তাকাইয়া থাকে বেশী,কথা বলে কম— কথা আকার ধরিয়া যেন বাহির হওয়ার পথ পায় না— পেছনে যেন কোনো মনন নাই। মফি তাকায় মুহূর্ত; কিন্তু কথা বলে অনেক। ডিম ভরা কৈয়ের মতো; ভিতরে দানা বাঁধিয়া আছে। ছাড়িতে পারিলে বাঁচে। আর পার্থক্য দেখা দিতেছে গ্রীবায়। যতই বালিকাত্ব ছাড়াইতেছে,ছবির গ্রীবা বসিয়া যাইতেছে— মিস্ত্রীর কুঁদান গোলকের ন্যায় নিজের খাঁজে,আর মফির বাহির হইয়া যাইতেছে পদ্মের মৃণালের মতো।’ এই বর্ণনা প্রধান চরিত্র মফিজনকে পাঠকের কাছে সঠিকভাকে উপস্থাপন করার জন্য,পাঠককে প্রস্তুত করার জন্য। এই প্রগলভা তন্বী সুন্দরী বুদ্ধিমতি ও অগ্রসর বালিকার চঞ্চল মতি যা কিছু করতে পারে তার অভিপ্রায়ের নিমিত্ত। যার প্রাণের বাঁধ খুলে গেছে সে শরীর ও মনের সব অর্গল খুলে দিতে প্রস্তুত। তাই কিছু দিনের জন্য মামুদ যখন তাদের সাথে মক্তবে পড়তে এলো সেই অগ্রসর বালকের সাথে তার ভারি ভাব হয়ে গেলো। যাবার সময় মামুদ তার কপালে চুমু খায় আর মফি তার ঠোটে চুমু খায়। গ্রামের মেয়ে মফিজনকে বেশ আধুনিক ও সাহসী মনে হবে পাঠকের কাছে। বাপ ছিলো পুঁিথ বিষয়ে পণ্ডিত। বাপের কাছে প্রেমের অনেক উপাখ্যান তার শোনা আছে আমরা সেরকম অনুমান করতে পারি। কাজেই এই রকম কাজ করার পিছনে তার একটা মানসিক প্রস্তুতি ছিলো বলা যায়। পরে আমরা দেখব যে সে খোকাকে পুঁথি পাঠের আসরে নানা জ্ঞান দিচ্ছে। মধ্যযুগের পুঁথি সাহিত্যের ভেতরে প্রেম বিরহ কামজ ও জৈবিক বিষয়ে নানা খোলামেলা বর্ণনা ছিলো। এবং আমাদের নায়িকা সে বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান লাভ করেছিলো ধরে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

১৯৪৬ সালে রচিত এই গল্পের বর্ণনাভঙ্গি ভালো তবে সন্দেহ নেই এই বর্ণনা রবীন্দ্রনাথের দ্বারা প্রভাবিত অর্থাৎ তিনি যে নতুনত্ব নিয়ে এসেছেন সেটি মুসলিম সমাজের জন্য নতুন বটে বা অপরিপক্ক পাঠকের কাছে এই বর্ণনা নতুন বটে তবে অগ্রসর পাঠকের কাছে তা নতুন নয়। তবে যে নারীকে তিনি নির্মাণ করেছেন সে সম্পূর্ণ নতুন;তার নিজস্ব সৃষ্টি। যাহোক, মফির বাবা পুঁথির পণ্ডিত পাটের দালালী করে অর্থবান হলেও শরীফ হতে পারে নি। তাই বড় মেয়ে ছবিরনের সাথে মামুদের বিয়ে দিয়ে তিনি শরীফের মর্যাদা পেতে চাইলেন। বিয়ে হলো মফির প্রেমিক মামুদের সাথে ছবিরনের; কেউ আপত্তি করলো না, না ছবিরন না মামুদ। মফির বাবার অবস্থান স্পষ্ট। তিনি বড় মেয়েকে আগে বিবাহ দেবেন। আর মামুদের সাথে মফির সম্পর্ক বিষয়ে তিনি জানতেন না। মামুদ ইচ্ছে করলে হয়তো তার বাবা মাকে বিষয়টা বলতে পারতো,সে বলে নি। সে সুবোধ ছেলের মতো বিয়েতে রাজি হয়েছে। মামুদের সাথে ছবির বিয়ের পর এই বিষয় নিয়ে লেখকের বলার তেমন কিছু ছিলো না,কারণ তার লক্ষ তো অন্যত্র। তবু লেখক যখন ছবি-মামুদের বিয়ে পরবর্তী বৈবাহিক বা সোজা কথায় দেহমিলন বিষয়ে কথা বলা শুরু করেন তখন আমরা বুঝতে পারি লেখক প্রথম থেকেই এই বিষয়ে অতিরিক্ত  কিছু প্রয়োগ করার চেষ্টা করেছেন। এমন না যে এটি গল্পের বাইরের বিষয়। তবে ছবির মুখের কথা আমরা একটাও শুনি না। তাকে তো বিয়ের পরে আর টেনে আনার দরকার ছিলো না। যাহোক, লেখক আমাদের কাছে বিবাহপরবর্তী ছবির নতুন করে পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি লিখেছেন; বাসর রাতে  সে (মামুদ) ছবির নতুন পরিচয় পাইল। মফির কথা নামিয়া আসিত জিহবা বাহিয়া অবিরল ধারায়। ছবির জিহবা মুক। সে কথা বলে তার দেহ দিয়া। মাংসল সুগঠিত প্রশান্ত দেহ। একবার হাত লাগাইলে উহা যেন লাগিয়া যায়, উঠাইয়া নিতে ইচ্ছা  হয় না আর। আর সারা দেহে কান লাগানো; শুধু হাতের তালুতে লাগানো ভাষা। যেখানে যত গোপন স্পর্শ কর— চির-জাগ্রত ধরিত্রির ন্যায় সে তাহা শুনিতে পায়,অমনি তাহার হাত সক্রিয় হইয়া ‘রেকর্ড’ করে সাদর আহবান; না মানিয়া উপায় নাই। তখন সমগ্র ছবিটি হইয়া ওঠে প্রকাণ্ড একটি হৃদপিণ্ড— তাজা ও তপ্ত— সবচেয়ে নীরব,আবার সবচেয়ে গতিমুখর।’

লক্ষ করা প্রয়োজন যে বর্ণনা লেখক ছবিরন ও মামুদের বিয়ে পরবর্তী সময় নিয়ে দিলেন সেটি ছবিরনের দেহভাষার বা মামুদের দেহউপভোগের। এই প্রয়োগ আমরা হয়তো আশা করেছিলাম মফির বেলায়। কারণ শরীরীভাষার নানা উদ্দীপক মফির মধ্যে ছিলো বলেই লেখক প্রাথমিকভাবে আভাস দিয়েছিলেন। তবে সর্বোপরি মফির পরিণাম আমাাদের শিহরিত করে উত্তেজিত করে কখনো কখনো পুলকিত করে। সেই পুলকের খানিকটা অসামঞ্জস্যের নিক্তিতে বাঁধা তবু তা আনন্দের। মফির জীবনে প্রথম দেহজ উত্তাপ আসে একবারের জন্য যখন বার্মায় ব্যবসায়ীর সহায়ক কর্মচারি (যে  অমানসিক পরিশ্রম করে অনেক টাকা আয় করে) বকশুর সাথে বিয়ে হয়। এখানে কোনো প্রেমজ সম্পর্ক সে অনুভব করিনি। দীর্ঘদিন ধরে যে লোকটা বিয়ের জন্য অপেক্ষা করে আছে আর মাত্র এক রাতের জন্য স্ত্রীকে পেয়েছে তার কাছে প্রেমের চেয়ে দেহ অনেক আকাঙ্ক্ষিত। মফির কপালে মামুদের চুম্বনের দাগ। সে তা মুছে ফেলে। বকশু তাকে ওষ্ঠে চুম্বন করে। কি রকম বোধ হলো লেখক সে সস্পর্কে মন্তব্য করেন না। কেন করেন না? আমরা একটু আশ্চর্য হই। বকশু কয়েকটি উপদেশ দিয়ে বাতি নিভিয়ে শোয়ার প্রস্তাব দিল। আর মফি এই পর্ব শেষে ভাবতে থাকে তার কি এই এক রাতের স্মৃতি নিয়ে থাকতে হবে। বকশু গেলে বার বছর আর আসবে না। চিরজীবনের মতো নাও আসতে পারে। কী নিয়ে বাঁচবে সে। ভেবেছিলো প্রথম মিলনে তার গর্ভে একটি সন্তানের জন্ম সঞ্চার হবে। লেখক আমাদের জানাচ্ছেন, সর্বশেষ তাহার উভয়দিককার সিদ্ধান্ত আসিয়া মিলিল একই যায়গায়— যখন জরায়ুতে পুরুষের রেতস্খলন হয়। তাহারও হইয়াছে, সে স্পষ্ট অনুভব করিয়াছে। আল্লা করুন,তাহার যদি একটা সন্তান হয়। তাহাকে মানুষ করিতে সে জীবন কাটাইয়া দিবে।’

বকশু চলে গেলো। সে বুঝতে পারলো তার সন্তান হবে না। লেখক তখন খোকাকে পাঠালেন মফির কাছে লেখাপড়ার সাহায্য করার জন্য। সম্পর্কে ভাগ্নে হয়,রক্তের সম্পর্কহীন গ্রামের ছেলে। শাশুড়ি পরিচয় করে দিতে দিতে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রতিদিন সে বই খাতা নিয়ে আসে। আর মফি তাকে পড়ায় যা পারে। সে পুঁথি পণ্ডিতের মেয়ে সুর করে মধুর স্বরে পুঁথি পড়ে। খোকার মনে নানা প্রশ্ন। দিনে দিনে অসমবয়সী দুজনের মধ্যে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠলো। মফি বাপের বাড়ি গিয়েও থাকতে পারে না। এমনকি ছবিরন সন্তান জন্ম দিতে এলেও সে যায় বটে তবে থাকতে পরে না। খোকাকে পুঁথি শোনানোর জন্য তার চিত্ত অধীর হয়ে ওঠে। এদিকে খোকার পরিবর্তন হচ্ছে। সে নির্বিচারে সব কথার অর্থ জিজ্ঞেস করে। এই ক্রমোন্নতি লেখক বেশ ব্যঞ্জনাময় করে তুলেছেন;

খোকা জিজ্ঞাসা করিত; শেকম মানে কি?

‘পেট’

‘মেয়েদের পেট?’

‘হাঁ,এইখানে মেয়েদের পেট।’

(আবার)‘ এক বিন্দু মণি যদি টলিয়া পড়িল’ (খোকা মণি শব্দ পায় নাই,পাইয়াচে মুণি,সুতরাং)

‘মণি মানে কি?’

‘এক রকমের পানি।’

পানি পেটে পড়বে কেন? মেয়েটির অসুখ হয়েছে?’

‘হাঁ, অসুখ হয়নি এবার হবে।’

পাঠক মনে করতে পারে পুুঁথি পাঠের আসরে বাৎসায়নের শাস্ত্র পাঠ হচ্ছে। আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ পুঁথি পাঠ করতে করতে খোকার দ্বিতীয় পাঠ হলো মফির দেহ। সে গোপনে ঘুমের ভান করে মফির দেহ আবিষ্কারে নামে। মফি ঘুমিয়ে গেলে সে তার অনুসন্ধান পর্ব শুরু করে। ধরে নেওয়া চলে যে খোকার সে মা নয় তবু সে তাকে পালন করে সন্তানের স্নেহে। তবু সে বালক কিশোর বা যুবক। তার তো স্বাভাবিক মনোবাসনা বা আকাঙ্ক্ষা থাকবে। আর মফি স্বামীহীন পুরুষসঙ্গহীন অথচ বিবাহিতা নারী। সে খোকার চোখের দিকে তাকিয়ে সব বোঝে তবে কিছু বলতে পারে না। তাকে বারণ করতে পারে না। যাহোক, লেখকের এই যায়গায় সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিলো। মফির যে চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা যা সে পরিপূর্ণ করতে পারে না তার একটা সংস্পর্শ সে পায়, কিছুটা উপভোগ সে করে বিকল্প পথে। এটিকে পাপ বা পদস্খলন বলতে পারেন কেউ কেউ। তবে বাস্তবতা হলো এটি মানব মানবীর মৌলিক বৈশিষ্ট্য যা সে অস্বীকার করতে পারে না। যাহোক,লেখক আমাদের কাছে বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে; খোকা দেখে পাগলের মতো— কোথাও হাত লাগাইয়া— যেন নিজের দুই মুঠা ভরিয়া সমুদ্রকে তুলিয়া লইতে চায়,আর কানের পথে নিজ বুক ভরিয়া লইতে চায় তাহার গর্জন। কূলমুক্ত সমুদ্রের ন্যায় দেহ খুলিয়া গলিয়া পড়িতে চায় আপন ভারে। খোকা বিভিন্ন যোজনায় ন্যস্ত করিয়া উহাকে বাঁধে,খোলে আবার বাঁধে। আর কোনো দিন দূরে বসিয়া শুধু দেখে আর দেখে। নিত্য বাঁধন ছাড়া পাইয়া মফির দেহ গেল খুলিয়া। খোলস যেন পড়ি ছোট হইয়া। কেয়ার ফুলের ন্যায় তাহা গেল ফুটিয়া,আর উহার ভিতর হইতে যেন বাহির হইল নূতন মফি— সুবাসিত,কোমল ও লাজুক।’

এর পরেও গল্পটি আরো অনেক দূরে গেছে। মফিজনের আবার বিয়ে হয়েছে এক পীরের সাথে। ছবিরনের মেয়ের সাথে খোকার বিয়ে হয়েছে। মফিজনের জীবনের যে আশা আকাঙ্ক্ষা ছিলো তা পূরণ হয় না, লেখক তাঁকে দিয়ে কিছু নিরীক্ষা করেছেন বলা যায়। আমরা দেখতে পাই একজন নারীর যে অবস্থান হওয়া উচিত সেটা এখানে অনুপস্থিত। কোনো না কোনোভাবে সে পুরুষতন্ত্রের স্বীকার। তার মুখেও কোনো প্রতিবাদ আমরা দেখি না। পীর তাকে যখন এক অর্থে ধর্ষণ করে বিয়ের প্রথম দিনে তখন তাকে কোনো প্রতিবাদ করতে দেখিনা। খোকা যে তার গোপন সম্পদ আবিষ্কার করলো সে খোকাকে কিছু বলেনি। হয়তো বলতে চায় নি বা বলতে পারে নি। তবে নারী হিসেবে সে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে বার বার।

মফিজন গল্পের মূল বিষয় মফিজনের ক্রমরূপান্তর এবং মনোদৈহিক সত্তার উন্মোচন। এই উন্মোচনের জন্য লেখক যে প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তা বেশ ভালো,যে কাঠামোও সামাজিক প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন তাও যুৎসই বলা যায়। তবে যেভাবে বেড়ে উঠেছিলো সেই দিক দিয়ে তাকে প্রতিবাদী করা যেত বলে আমাদের মনে হয়। সেই সময়ের মুসলিম সমাজের একজন নারী হিসেবে মফিজন যে সাহস দেখিয়েছে সেটা প্রশংসার্হ তবে তাকে খানিকটা খাটো করা হয়েছে বলেও মনে হয়। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যারা ব্যবসায় ও টাকা পয়সা আয় করাকে একমাত্র লক্ষ বলে মনে করে এবং পুঁথিপাঠের পণ্ডিত,শরীফ বা ধনী ব্যক্তিদের সংস্কৃতি লেখক বেশ ভালোভাবে ব্যবহার করেছেন এই গল্পে। এই বাস্তবতাও এই গল্পের বড় সম্পদ। যদিও এদিকে আলোচকদের তেমন দৃষ্টি দিতে আমরা দেখিনা।

ইউরোপীয় নভেলের দিকে তাকালে মফিজনের জীবনধারা খুব সাধারণ মনে হবে তবে বাস্তবতা হলো এটা ইউরোপ নয়। মুসলিম পরিবারের একটি মেয়ের পক্ষে এটা বেশ সাহসী ভূমিকা। এই গল্পের শিল্পভাবনা ও তার প্রয়োগ অসাধারণ। পরিমিতিবোধ আর তীক্ষ্ম গাথুনির কারণে গল্পটির  যে সার্বিক পরিচর্যা তা আমাদের আকৃষ্ট করে। মফিজন নামক মেয়েটিকে তিনি ভালোভাবে চিনতে পেরেছিলেন;অবলোকন করতে পেরেছিলেন তার নিভৃত হৃদয়ের জগতকে। জীবনের সহজ গুরুত্বপূর্ণ ও আপাতভাবে  গোপন বিষয়কে তিনি শৈল্পিকভাবে ভাষাবদ্ধ করতে পেরেছেন। মাহবুব-উল আলমের মতো আমরাও মনে করি মফিজনকে আমরা ভুলতে পারি নি।

 

মোস্তফা তারিকুল আহসান, প্রাবন্ধিক ও গবেষক

লাহোর প্রস্তাব বিকৃতির কারণে একাত্তর অনিবার্য হয়ে ওঠে

হোসাইন আনোয়ার ২৩ মার্চ ১৯৪০। পাকিস্তানিরা ভুলে গেছে ২৩ মার্চের ইতিহাস। একটি ভুল ইতিহাসের উপর ভিত্তি করেই ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস পালিত হয় সমগ্র পাকিস্তানে।

ইফতার পার্টি নয়, সেদিন যেন তারার হাট বসেছিল পিটস্টপে

রুহু রুহেল সমাজ ও সংস্কৃতির বড় পরিচয় সম্প্রীতির অটুট বন্ধনে সামনের পথে অবিরাম এগিয়ে চলা। সাম্য সুন্দর স্বদেশ গঠনের জন্য প্রয়োজন বিবিধ মত ও পথকে

নভোচারী সুনিতা মহাকাশে ফুল ফোটায় পৃথিবীতে নারীর পায়ে শেকল পরায় কে?

প্রদীপ খাস্তগীর চমৎকার একটি সফল মহাকাশ সফর শেষ হয়েছে গত ১৮ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে। গত বছরের ৬ জুন মাত্র ৮ দিনের

দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ: দর্শনের বিজ্ঞান

রাজেশ কান্তি দাশ দর্শনের ক্ষেত্রে বস্তু ও ভাবের দ্বন্দ্ব অতি প্রাচীন। খ্রিষ্টপূর্ব সময়ের। বস্তুবাদী দার্শনিকেরা মনে করেন বস্তু থেকে জাগতিক সব কিছুর উৎপত্তি। গ্রীক দার্শনিক

মানুষ ও মঙ্গল মানব

সরকার হুমায়ুন দুজন মহাকাশচারী- একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা মঙ্গল গ্রহ অভিযানে গেলেন। তারা নিরাপদে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করেন। সেখানে তাদেরকে অতিথি হিসেবে মঙ্গলবাসীরা সাদরে