দেশে চাকরির বাজার কত প্রকট বা দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা কত তা নিরূপণ করতে গবেষণার প্রয়োজন নেই। সরকারি চাকরি বা বিসিএস ক্যাডারে আবেদনকারীর সংখ্যা দেখলেই বুঝা যায় পরিস্থিতি কত ভয়াবহ। এমতাবস্থায় একদল শিক্ষিত চাকরিপ্রত্যাশী সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে আন্দোলন করছে। সেই আন্দোলনে পুলিশ হামলা করেছে, মামলা দিয়েছে। এরপরও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশে শিক্ষিত বেকারের চেয়ে সরকারি চাকরির শূন্য পদ নিতান্তই কম। আর বেসরকারি খাতে ব্যাপক শিল্পায়ন ও বিনিয়োগ না আসাতে সেখানকার অবস্থাও ভালো নয়। দেশের বাইরে গিয়ে কর্মসংস্থান করতে পারে অতি অল্প ভাগ্যবান তরুণ। বাকিরা হতাশায় নিমজ্জিত হয়, বিপথগামী হয়। উল্লেখ্য যে, এখন প্রতি বছর নতুন চাকরি প্রত্যাশীর সংখ্যা যোগ হচ্ছে ২২ থেকে ২৩ লাখ। এছাড়া নির্দিষ্ট পড়ালেখা শেষ করে আবেদন করলেই হুট করে চাকরি পাওয়া যায় না। একটা চাকরি এখন সোনার হরিণ। এই সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে ছুটতে বয়স কখন যে আটাশ পেরিয়ে যায় তা টেরও পাওয়া যায় না। তাছাড়া উচ্চ শিক্ষার নানা কারণে সেশনজট, রাজনৈতিক কারণে শিক্ষা সনদ পেতেও বিলম্ব হয়ে যায়। তখন ফুরিয়ে যায় সরকারি চাকরিতে নির্ধারিত বয়সসীমা। এছাড়া বিসিএস পরীক্ষা ও ফলাফল এবং নিয়োগ পেতে ক্ষেত্র বিশেষে পাঁচ-ছয় বছর লেগে যায়। অনেক সময় পিএসসির সুপারিশের পরও অনেকে কাক্সিক্ষত নিয়োগপত্রটি হাতের মুঠোয় পায় না। বৃটিশ আমলে প্রবর্তিত পুলিশ ভেরিপাই অনেক বিসিএস পাস করে যুবকের কপাল পুড়েছে। ইদানীং নতুন করে যুক্ত হয়েছে দলীয় অলিখিত সনদ। যাতে অনেক মেধাবী ঝরে পড়ছে। একদিকে চাকরির শূন্য পদ খুবই কম অন্যদিকে চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা সীমাহীন বেশি হওয়াতে দুর্নীতিবাজরা বেকার যুবকদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। ক্ষমতাবানরা নানা অপকৌশলে নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিচ্ছেন নানা জায়গায়। প্রকৃত মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন অমেধাবীরা ক্ষমতার জোরে নানা পদ পদবি নিয়ে চেয়ারে বসে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে দেশের দুইজন শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ জনপ্রশাসন, ব্যাংক-বীমা, বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র নিজস্ব লোক বসানোর বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছেন।
দেশের শিক্ষিত বেকারদের নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করার জন্য চাকরি পদে আবেদনের বয়সসীমা অবশ্যই ৩৫ বছর করা যৌক্তিক। পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ব্যাপারে ষোল আনা নির্ভেজাল ও নির্মোহ রাখা জরুরি বলে মনে করি।
আবির প্রকাশন
আপনি দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- ঘরে বসেই গ্রন্থ প্রকাশ করতে পারেন অনলাইনে যোগাযোগের মাধ্যমে আবির প্রকাশন থেকে। আমরা বিগত আড়াই দশকে বিভিন্ন