এখন সময়:ভোর ৫:৪২- আজ: বৃহস্পতিবার-৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এখন সময়:ভোর ৫:৪২- আজ: বৃহস্পতিবার
৬ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২১শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-হেমন্তকাল

এন্টারটেইনমেন্ট

বিশ্বজিৎ মন্ডল

 

টারকুইজ কালারের শার্টটায় বেশ মানিয়েছে অরিঘ্নকে।

স্টেজের দিকে নয় অ্যাংকারের দিকে তাকিয়ে আছে ঝরনা। স্কুলের বার্ষিক স্কুলের অনুষ্ঠানে অ্যাংকারিং করছে অরিঘ্ন।

তার শরীরের শার্টটা ঝরনার গিফট করা। জামাটা এতটা প্রিয় হয়ে উঠেছে ভেবে, ভালো লাগছে ঝরনার। স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রায় একশ মানুষ উপস্থিত হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের রপ্ত করা বিষয়গুলো উপস্থাপন করছে অনুষ্ঠানে।

অফ কালারের জিন্সে ফিরোজা রঙের জামাটা বেশ মানিয়েছে। চোখের রিমলেস চশমাটা অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে।

ঝরনা আজ শাড়ি পরেছে। এটা তার অভ্যাস নয়। কিন্তু অরিঘ্ন আবদার করেছিল, শাড়ি পরে আসবে। শাড়ি পরে তোমাকে দেখতে চাই। ইচ্ছে না থাকলেও মন রাখার জন্য আর শাড়ি পরে এসেছে। ওর স্কুল বেসরকারি হলেও প্রায় পাঁচশ ছাত্রছাত্রী আছে। কো এড স্কুল, ইংলিশ মিডিয়াম। এখানে প্রত্যেকটা অভিভাবক অভিভাবিকা সুশিক্ষিত।

 

 

সেই কারণে ছেলেমেয়েকে ভিন্নমাত্রায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে ওরা সি বি এস সির এই প্রতিষ্ঠানে পড়ান।

কিন্তু ঝরনা এ প্রতিষ্ঠানের কোন অভিভাবিকা বা ছাত্রী নয়। সেখানে শুধুমাত্র দর্শক। সেটা শুধুমাত্র অরিঘ্নর জন্য।

অরিঘ্নর যেসব টিউশন ব্যাচ আছে তাদের মধ্যে ঝরনা একজন ছাত্রী ছিল। অদ্ভুতভাবে ঝরনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল অরিঘ্ন। ঝরনা টের পেয়েছিল, ওদের দুজনের অদৃশ্য সম্মতিতে সম্পর্কটা হাটি হাটি পায়ে এগিয়েছে।

দিন কয়েক আগে ঝরনার বার্থ ডে গেল। ও ঐ দিন নিমন্ত্রণ করেছিল। কোনরকম সংকোচ না করে বলেছিল, স্যার আমার আবদার রাখবেন কিন্তু। আপনাকে আসতেই হবে। অন্য কোন বন্ধু-বান্ধবকে তেমনভাবে বলিনি, শুধু আপনাকে আশা করছি।

কথা রেখেছিল অরিঘ্ন। ঝরনা এবার আঠারো পূর্ণ করবে। আঠারোর প্রসন্ন দুপুরে হাজির হয়েছিল সে। পছন্দের হাত ঘড়িটা পকেট ভরে হাজির হলো। ঝরনা দরজার পাশে  দাঁড়ালো স্মিত হাসিতে , স্যার আপনি এসেছেন। খুব খুশি হয়েছি।

তোমার জন্মদিনে বলেছ, আসবো না, তাই হয় ? অরিঘ্ন বলল।

স্যার বসুন। আমি আসছি ভেতর থেকে।

কেন?

বসুন, আমি আসছি তো ! বলে ঝরনা ভেতরে চলে গেল।

কিছুক্ষণ পর হাতে একটা গিফট দেখাতে ঝরনা এসে দাঁড়ালো ওর সামনে।

স্যার এটা আপনার জন্য । মিষ্টি হেসে প্যাকেটটা এগিয়ে দিল।

এতে কি আছে? আর কেনই বা হঠাৎ এমন গিফট ? আকাশ থেকে পড়ার অবস্থা অরিঘ্নর।

আমার জন্মদিনে আপনাকে দেওয়া এটা আমার প্রথম গুরুদক্ষিণা।

দ্ৎু, কি যে বল, তোমার জন্মদিনে আজ তোমাকেই তো উপহার দেওয়া উচিত। আর তুমি কিনা উল্টোটা করছো ? উদ্বিগ্ন হয়ে অরিঘ্ন বলে ফেলে।

তাতে কি ? এমন বিশেষ দিনে আমি কি আপনাকে আমার উপহারটা  না দিয়ে পারি? এই নিন । বলে মৃদু ধমক লাগাল ঝরনা।

গুরুদক্ষিণা গ্রহণ করতে হলো। কথাটা মিথ্যা নয়। ইলেভেন টুয়েলভ দুবছর টিউশনি ক্লাস পড়েছে। সেক্ষেত্রে সত্যিই ও তো গুরু  , বিষয়টা অনৈতিক নয়।

এই নাও ,তোমার জন্মদিনে আমার দেওয়া আশীর্বাদ। বলতে পারো, প্রীতি উপহার থথ বলে পকেট থেকে একটা রিস্ট ওয়াচ বার করল অরিঘ্ন।

ঝরনা লজ্জা পেয়ে বললো, এটা আবার কেন? আপনার আশীর্বাদ পেলেই আমি ধন্য। বলে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।

একজন তরুণ শিক্ষক হিসেবে এমন একজন ছাত্রীর কাছে প্রণাম নেওয়াটা  বড্ড সেকেলে বলে মনে হল অরিঘ্নর।

আশীর্বাদ রইল, ভালো লেখাপড়া কর, সুখী হও । সৌজন্যতা রাখতে বলতেই হল।

তারপর একটা ট্রেতে প্লেট সাজিয়ে নানাবিধ খাবার নিয়ে ঝরনা এল। ওর মা বোন এদিকে মাড়ায়নি। শুধু  সৌজন্য হাসিতে ওরা অন্দরের দিকে চলে গেছে।

ঝরনা তুমি কি খেপে গেলে? এত খাবার আমি খাবো ?  অস্বস্তি নিয়ে বলল অরিঘ্ন।

সব আপনাকে খেতে হবে, কে বলেছে ? যা পারবেন,তাই খান। ঝরনা বলল মৃদু হাসিতে। এটা যেন ঝরনার নির্দেশ।

অল্প কিছু খাবার খেয়ে প্লেটগুলো সরিয়ে দিল। এখন ঝরনা স্যারের দিকে আর তাকাচ্ছে না। কিন্তু ঝর্ণাকে দেখল, খুব মিষ্টি দেখাচ্ছে ওকে। হালকা তুতিয়া কালারের একটা চুড়িদার পরেছে। ঠোঁটে লিপস্টিক নেই। পাতলা ঠোঁট দুটো বড় মিষ্টি। চোখে চোখ পড়তেই লজ্জা পেলে ঝরনা।

ছোট্ট ঘরটায় এখন আর কেউ নেই। অরিঘ্ন বসে আছে একা। একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। কে কি বলবে, ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।

স্যার, যদি আজ আপনি না আসতেন, খুব খারাপ লাগতো আমার। খুব কষ্ট পেতাম। এসেছেন বলে খুব খুশি হয়েছি। ঝরনা প্রসঙ্গ পাল্টালো।

তুমি বলেছ, আমি আসবো না, তাই হয়? তাছাড়া আজ বিশেষ দিন তোমার। আঠারোর দুর্মর দিন শুরু হল তোমার জীবনে। অরিঘ্ন বলল ।

আজ আমার খুব আফসোস হচ্ছে, কেন জানো ? তোমাকে আর কখনো পড়াতে আসতে পারবো না। তুমি তো এখন স্কুল ছেড়ে কলেজে।  তাছাড়া তোমার এখন নতুন জীবন শুরু হল। অরিঘ্ন একটানা বলে গেল।

তা নয় স্যার,আমি আপনার স্কুলের সেই ছোট্ট ছাত্রী হিসেবে সারা জীবন থেকে যেতে চাই। তাছাড়া স্যার আপনাকে বলেছি তো, আপনি যখন খুশি আমাদের বাড়ি চলে আসবেন। আমাদের বাড়িতে কেউ আপনাকে খারাপ ভাবে নেবে না।

হ্যাঁ, সত্যিই ভোলে নি ঝরনা । মাঝে মাঝে ফোন করে কলেজের বিষয়ে যাবতীয় পরামর্শ চায়। প্রতিদিন নিয়ম করে এসএমএস করে, গুড মর্নিং ,গুড নাইট। হ্যাভ এ নাইস ডে ইত্যাদি ইত্যাদি।

অরিঘ্নর দুষ্টুমিটা বাড়ছিল দিন দিন। ফোন আর এসএমএস করতে করতে কখন একে অপরকে দুর্বল করে ফেলেছে,ওরা  জানে না।  এ সম্পর্কটা গুরু শিষ্যায় সম্পর্ক ছাড়িয়ে অন্য দিকে বাঁক নিচ্ছে।

২.

স্কুলের ধহহঁধষ ঢ়ৎড়মৎধস এ অরিঘ্নকে অ্যাংকারিং করতে দায়িত্ব দিলেন হেড স্যার। এই বিষয়ে অরিঘ্ন পারদর্শী। তাছাড়া স্কুলের প্র্যাকটিস তো ওই নিজেই করায়। স্যার ম্যামদের নিয়ে এমন মজার মজার কথা বলে , তাই স্যার ম্যাডামরা অরিঘ্নকে এন্টারটেইনার বলে ডাকেন, কোন কোন সময়।

অনুষ্ঠানসূচির প্রথমেই ছিল, কবিতা আবৃত্তি। ছোট ছোট শিশুরা সকলকে আনন্দ দিল। তাদের পরিবেশনায় এইবার শুরু হচ্ছে, কিশোরীদের নাচের অনুষ্ঠান। শুধু স্কুলের বর্তমান নয়, প্রাক্তন ছাত্রীরাও অংশ নেবে।

ক্লাস টেনের দুজন ছাত্রী পরিবেশন করল নৃত্যনাট্য। তুমুল হাততালি দিয়ে সকলে অভিনন্দন জানালো।

অনুষ্ঠান চলাকালীন কথা বলার সুযোগ পায়নি। ইতি উতি চোখে খুঁজছিল অরিঘ্ন। ভিড়ের ভেতর প্রায় পেছনের সারিতে ঝরনা,ওর এক বান্ধবীকে নিয়ে বসেছে। চোখ পরল, ঝরনা তাকালো। ইচ্ছে থাকলেও ইশারা করতে পারল না। অন্যরা খারাপ ভাববে, এই ভেবে নিয়ে। কিন্তু ঝরনা ভেতর ভেতর খেপে যাচ্ছে না তো?

স্টেজে ঘোষণার মঞ্চে সদা হাস্য মুখ নিয়ে পরিবেশনায় তৎপর অরিঘ্ন। প্রতিটি পদক্ষেপে ঝরনা লক্ষ্য করছে তাকে। আজ াধষবহঃরহব ফধু এমনও দিনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ওরা। প্রধান অতিথি পার্শ্ববর্তী হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। স্কুল জীবনের শিক্ষক আর তার শ্রদ্ধার মানুষ ,স্যার এসে বসেছেন।

অতিথি গ্রহণ পর্ব শেষ। অতিথিকে বরণ করে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল ঝরনার। কিন্তু তা হলো না, ঝরনার অনুপস্থিতি জন্য। ফলে তাকে স্টেজে ডাকা হল না।

না, এখন দর্শক হয়ে দেখুক ও। তবে ওকে সাবধান করে দিয়েছে, আমাকে না বলে চলে যাবে না। অনুষ্ঠানের শেষে আমরা সেলফি নেব। সায় দিয়েছে ঝরনা।

অন্যান্যদের নাম ঘোষণা করে ডাকছে, আবৃত্তি পাঠের জন্য। অথচ একবারও নাম করছে না ঝরনার। মনে মনে ক্ষেপে যায়। তবে অকারণে কেন এই অনুষ্ঠানে ডেকেছে। অরিঘ্নর ওপর খুব রাগ হল।

অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা হচ্ছিল। রাগ করেন, করুন তাতে কিছু যায় আসে না, নিজেকে অপমানিত মনে হল।

কিছুক্ষণ হলো সমস্ত অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।  কখন ঝরনা পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, খেয়াল করেনি।

তুমি খুব রেগে গেছো তাই না? স্বাভাবিক ছন্দে আনার চেষ্টা করল অরিঘ্ন।

ঝরনা নিরুত্তর।

এই সেরেছে, প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড। আই হ্যাভ সামথিং রং, বলল অরিঘ্ন।

বাড়ি যাব। একটা অটো দেখে দিন। ঝরনা  সোজাসুজি বললো।

আমার সঙ্গে চলো।

না।

কেন?

আমার সমস্যা আছে।

ওকে। তবে একটা সেলফি নিতে চাই,তোমার সঙ্গে। আবদার করল, অরিঘ্ন।

বাধা দিল না ঝরনা। সুযোগ সদ্ব্যবহার করল ঝরনার পাশে দাঁড়িয়ে। একটা রোমাঞ্চকর মুহূর্তের ফটোকপি করে নিল নিজস্বীতে। ঝরনা বাড়ি ফেরার জন্য তৎপরতা দেখালো। অরিঘ্ন সুযোগ খুঁজছিল, কখন হাতের গোলাপ টা তুলে দেবে। সেটা জানতো না। এটাই তো সারপ্রাইজ।

ঝরনা একটু এদিকে শোনো। অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় গিয়ে ডাকলো অরিঘ্ন।

ঝরনা নিঃশব্দে এগিয়ে এলো। এটা তোমার জন্য আজ াধষবহঃরহব ফধু তোমার জন্য এনেছি। নির্লজ্জের মতো বলে ফেলল অরিঘ্ন।

না নেব না এটার দরকার নেই । আপত্তি জানাল ঝরনা।

দুজনেই থমকে দাঁড়ালো, কি বলা উচিত ভেবে পাচ্ছিল না। অপমানিত হলো মনে মনে।

ঠিক আছে দাও , নিতে হবে না। এটার কোন প্রয়োজন নেই। বলে ছুঁড়ে ফেলে দিতে গেল ফুলটা।

না দিন। এটা আমার। গোলাপটাকে আঁকড়ে ধরল । এরপর অরিঘ্নর দিকে আর তাকাতে পারিনি লজ্জায় ।

৩.

তিন দিন কেটে গেল। লজ্জায় ফোন করতে পারেনি অরিঘ্ন। ঝরনা বোধহয় অপ্রস্তুত হয়ে ফুলটা নিয়েছিল, ইচ্ছার বিরুদ্ধে। নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছিল। ঝরনার বড় পরিচয়, সে ছাত্রী। আর পাঁচটা আটপৌরে প্রেমের মতো গল্প সাজানো এটা। একেবারে সাদামাটা বাঙালির তুচ্ছ প্রেম। ছাত্রীকে যুবক শিক্ষক প্রেম নিবেদন করছে, এটা নাটক নোবেলে হামেশাই দেখা যায়।

ঝরনাকে প্রপোজ না করাই ভালো ছিল। একটা অপরাধবোধ চাপছিল অবচেতন মনে। যা হবার হয়ে গেছে। এবার ব্যাপারটাকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে হবে।

কিন্তু কি করবে ? হন্যে হয় অরিঘ্ন। তার চেয়ে নীরবতায় বড় ধর্ম।

হঠাৎ মনে পড়ে গেল, অরিঘ্ন তখন ক্লাস সেভেনের ছাত্র। টিউশন পড়তে যেতো পাশের গ্রামে। অন্য স্কুলের ছেলেরা পড়তে আসত ,স্যারের কাছে। ওদের সহপাঠী উৎপলের কাছে শুনেছিল ,কালিতলা দিয়ার হাই স্কুলের সুধাংশু বাবু ক্লাস টেনের এক ছাত্রীকে অফার দিয়েছিলেন। তারপর জানাজানি হতেই স্কুলে ছি ছি পড়ে যায়। কিছু দিন পর ঐ শিক্ষক  ছাত্রীকে বিয়ে করেছিলেন।

বিষয়টাকে নিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মানুষের মজার গল্প বানিয়েছিল।

কিন্তু অরিঘ্ন , সুধাংশু নয়। যে নিজের ছাত্রীকে বিয়ের জন্য নিজেই পাত্র সেজে বসবে না।

আর পাঁচটা কিশোর কিশোরীর মত প্রেম নিবেদন করাটা এখন ঠাট্টার। শেষে ঐ পথে হাঁটতে চাইলেও অনিচ্ছুক সে। কখনো যে মেয়েটার কথা ভাবেনি, নিয়ম রাখতে  ঝরনার জন্য কিনে ফেলল একটা রিষ্ট ওয়াচ। মিষ্টি হেসে গ্রহণ করেছিল উপহারটা।

সেই থেকে সম্ভাব্য যাত্রা শুরু। কয়েকটা মাস অতিবাহিত।

এইসব মুহূর্তের ঘোরে থাকতে বেশ ভালই লাগে। কিন্তু ব্যাপারটা এখনো ততটা প্রকট হয়ে ওঠেনি। কেউ কাউকে বলতে পারেনি দুর্বলতার কথা।

সম্বিত ফিরে পেতে একাকী হেসে ফেলেছিল অরিঘ্ন। কি সব অবান্তর ভাবনা সাজাচ্ছে মনে মনে। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, না এসব লুকোচুরি খেলা ছেড়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে হবে।  প্রতিদিন নিয়মমাফিক ফোনের বিষয়টাকে এড়িয়ে যেতে হবে। হঠাৎ সেলফোনটা বেজে ওঠে। ফোনটা হাতে তুলে নেয় । ঝরনা ফোন করেছে।

অরিঘ্ন দা, আজ আমাদের বাড়ি আসবে ? মা তোমাকে ডেকেছেন। আমি আর পারছি না থাকতে, প্লিজ এসো। ঝরনার মধ্যে একটা আর্তি ফুটে ওঠে।

সামনের দ্বিখণ্ডিত রাস্তাটার দিকে তাকালো অরিঘ্ন। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে দেখল, পথটা একাকার হয়ে যাচ্ছিল দৃষ্টির সামনে। তারপর দ্বিখণ্ডিত পথ ধরে একাকী চলে যায় সুদূরের পানে। যেখানে ঝরনা, তার মা, নির্দিষ্ট গন্তব্য বলে কিছু নেই। নেই কোনো সুগন্ধি রুমালের হাতছানি।

 

বিশ্বজিৎ মন্ডল, গল্পকার

আহমদ রফিক: ভাষাসৈনিক থেকে সাহিত্য-গবেষণার আলোকবর্তিকা

শাহেদ কায়েস   আহমদ রফিক (জন্ম: ১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯-মৃত্যু: ২ অক্টোবর ২০২৫) বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের ভুবনে আহমদ রফিক একটি উজ্জ্বল নাম। তিনি একাধারে

অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

আন্দরকিল্লা ডেক্স \ চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম এর ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেনের আত্মজীবনী ‘প্লেজার অ্যান্ড পেইন’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব

ফেরা

সৈয়দা মাসুদা বনি   নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের কথা শোনা থাকলেও আদতেই সেটা কেমন জানা ছিল না রিশানের। এটাই তাহলে মৃত্যুর পরের জগৎ, সে ভাবে। সে ভাবতে

ফিরে যাওয়া

বিচিত্রা সেন   রুবা.. রুবা খবরদার, না খেয়ে এক পাও বাইরে দিবি না। মুশকিল হয়ে যাবে কিন্তু! মায়ের হুমকিতে অগত্যা রুবাকে দাঁড়াতেই হয়। মা যে

চিরহরিৎ বৃক্ষের গল্প

সুজন বড়ুয়া   ছাদে উঠে দেখি শানবাঁধানো উঁচু আসনে একা বসে আছেন হরিৎবরণ ঘোষাল। একটু অবাক হলাম। এ সময় তার ছাদে বসে থাকার কথা নয়।