ভাষান্তর: জিললুর রহমান
১.
যেদিন লেনিন গেলেন পরপারে
মৃত্যু-দেখা এক সেনা, গল্পটা সে বলে,
তার কমরেডদের কাছে: আমি চাইনি
এটা বিশ্বাস করতে। আমি ভেতরে ঢুকি,
এবং তার কানের কাছে চিৎকার করি: “ইলিচ
শোষকেরা তাদের পথে আসছে!” সে নড়ল না।
এখন আমি জেনেছি সে মারা গেছে।
২.
কখন একজন ভাল মানুষ চলে যেতে চায়?
তাকে তুমি কিভাবে পেছন থেকে আটকাবে?
বলো তাকে কেন দরকার,
সেটাই থামাবে তাকে।
৩.
কোন জিনিষটা লেনিনকে ফিরিয়ে আনতে
পারতো?
৪.
সেনাটি ভেবেছে
যখন সে শুনবে, শোষকেরা এগিয়ে আসছে,
সে যতই অসুস্থ হোক, সে উঠে দাঁড়াবে।
হতে পারে সে আসবে ক্রাচে ভর দিয়ে,
হতে পারে সে কাউকে ধরে ধরে আসবে, কিন্তু
সে উঠে দাঁড়াবে এবং এগিয়ে আসবে
শোষকদের সাথে লড়াই চালাতে।
৫.
সেনাটি জানতো, বলা যায়,
লেনিন আজীবন সংগ্রাম চালিয়ে গেছে
শোষকের বিরুদ্ধে।
৬.
আর যে সেনা অংশ নিয়েছে
শীতল প্রাসাদের গোলযোগে, চেয়েছিল
বাড়ি ফিরবে, কারণ সেখানে
এস্টেটের জমি বিলিবন্টন হচ্ছে,
তখন লেনিন তাকে বললেন: থেকে যাও!
শোষকেরা এখনও বিদ্যমান।
আর যতদিন শোষণ চলবে
এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে,
যতক্ষণ তোমার অস্তিত্ব আছে
তুমি অবশ্যই এর বিরুদ্ধে সংগ্রামে রত থাকবে।
৭.
দুর্বল লড়াই করে না।
সবল সংগ্রামে রত হয়,
হতে পারে তা এক ঘন্টার জন্যে।
যারা অধিকতর সবল তারা
অনেক বছর ধরে লড়ে যায়।
বলিষ্টতমগণ তাদের সারাটা জীবন
লড়াইয়ে রত থাকে।
এসব অপরিহার্য।
৮.
বিপ্লবীর প্রশংসায় :
যখন শোষণ বর্ধিষ্ণু
অনেকেই নিরুৎসাহিত হয়,
কিন্তু তার উদ্দীপনা ক্রমবর্ধমান।
সে সংগঠিত করে তার সংগ্রাম
মজুরীর পয়সা আর জলখাবারের জন্য
আর ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার জন্য।
সে সম্পত্তিকে জিজ্ঞেস করে:
তোমার উৎপত্তি কোথা থেকে?
সে দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রশ্ন করে:
তুমি কার সেবা কর?
যেখানেই থাকে নিস্তব্ধতা
সে কথা বলবেই,
যেখানেই রয়েছে দমন-পীড়ন, এবং কথাই ভবিতব্য
সে বিষয়গুলোকে ডাকবে তাদের সঠিক নামে,
যেখানে সে টেবিলের ওপর বসে
তার সাথে অসন্তোষও বসে,
খাবারকে ভয়ঙ্কর মনে হয়,
আর কক্ষ ভীষণ সংকীর্ণ ।
যেখানেই তারা তাকে তাড়িয়ে দেয়
অশান্তি অনুসরণ করে, এবং শিকারের জায়গায়
অশান্তি থেকে যায়।
৯.
লেনিন যখন মারা গেলেন এবং তাকে আমরা হারালাম,
বিজয় অর্জিত হয়েছে, কিন্তু জমি পরিত্যক্ত পড়ে থাকল,
জনতা বেরিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পথ ছিল অন্ধকার।
যেমন লেনিন চলে গেলেন,
সৈন্যরা ফুটপাথে বসে কাঁদছিল
এবং শ্রমিকরা তাদের মেশিন থেকে দূরে চলে গেল
এবং তাদের মুষ্টি দৃঢ়বদ্ধ করলো।
১০.
লেনিন যেভাবে চলে গেলেন, এ ছিল
যেমন গাছ তার পাতাগুলিকে বলে
আমি আর নেই।
১১.
তারপর থেকে পনেরো বছর কেটে গেছে
ভূবিশ্বের এক ষষ্ঠাংশ
শোষণ মুক্ত হয়েছে।
সেই ডাক: শোষকরা আসছে!
জনসাধারণ, বরাবরের মতোই, নতুন করে উঠে দাঁড়ায়।
সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত।
১২.
লেনিন অধিষ্ঠিত নিহিত আছেন
শ্রমিক শ্রেণীর বিশাল হৃদয়ে,
তিনি ছিলেন আমাদের শিক্ষক।
তিনি আমাদের সাথে একত্রে লড়াই চালিয়ে গেছেন।
তিনি অধিষ্ঠিত
শ্রমিক শ্রেণীর বিশাল হৃদয়ে।
(১৯৩৫)




