এখন সময়:রাত ৯:১৬- আজ: বুধবার-৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-বর্ষাকাল

এখন সময়:রাত ৯:১৬- আজ: বুধবার
৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-বর্ষাকাল

আমরাই শেষ জেনারেশন

বৈজয়ন্ত বিশ্বাস ভিক্টর

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপার সনিক কনকর্ড জেট দেখেছি। পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার থেকে শুরু করে আজকের জিমেইল, ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ পর্যন্তও করছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা টেলিগ্রাম এসেছে শুনলেই চৌদ্দগুষ্টির মুখ শুকিয়ে যেতে দেখেছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা পাটিতে বা পিঁড়িতে বসে ভাত খেয়েছি আর পিরিচে ঢেলে চা খেয়েছি সুরুৎ সুরুৎ শব্দে।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে কানামাছি, বাঘবন্দি, ডাঙ্গুলি, দাড়িয়াবাধ, গোল্লাছুট, মার্বেল, হামকে পুলিশকে খেলেছি, বউলার আঠা দিয়ে কাগজের ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে উড়িয়েছি, নাড়া (খড়/বিচালি), জাম্বুরা ইত্যাদি দিয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলেছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা হ্যারিকেন আর কুপি বাতির আলোতে পড়াশুনা করেছি, বেত থেকে শুরু করে পাখার ডাঁটির মার খেয়েছি, খাটের নিচে বা কাঁথার মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে পড়েছি দস্যু বনহুর, কুয়াশা, মাসুদ রানা, স্বপন কুমারের সিরিজ। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা ফ্যান, এসি, হিটার, ফ্রিজ, গ্যাস, মাইক্রোওভেনের অস্থাবর সুখ ছাড়াই ছোটবেলা কাটিয়েছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা ঈগল, ইকোনো, রেডলিফ থেকে শুরু করে বমি করা সুলেখা কালি হাতে মেখে সেই হাত মাথায় মুছে ‘বাবরের যুদ্ধবৃত্তান্ত’ লিখেছি, বড়দের পকেটে বড় নিবের উইংসাং পেন দেখেছি আর নতুন বই-খাতার হাতে পেয়ে পাতা উল্টানোর আগে গন্ধ শুঁকেছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা বিনা টিফিনে স্কুলে গেছি, স্কুলে টিচারের হাতে বেতের বারি খেয়ে, বাড়ি এসে নালিশ করাতে সেকেন্ড রাউন্ড ফ্রি-স্টাইলে উত্তম মধ্যম সহ্য করেছি — দোষ তো আমাদের, নাহলে টিচার মারবেন কেন? আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা বড়দের সন্মান করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা জোৎস্না রাতে ছাদে ট্রানজিস্টরে বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকার খবর, অনুরোধের আসর গানের ডালির শেষ সাক্ষী।

 

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা টেলিভিশনে আলিফ লায়লা, ম্যাকগাইভার, টিপু সুলতান, মিস্টার বিন, টম এন্ড জেরি, রবিনহুড, সিন্দবাদ দেখার জন্য ছাদে উঠে অ্যান্টেনা ৩৬০ক্ক ঘুরিয়ে স্যিগনাল ধরার চেষ্টা করেছি। আমাদের ছিল বাঁশের আগায় অ্যান্টেনা, আর ছিল টিভি স্ক্রিনে পার্মানেন্ট ঝিরঝিরে ছবি, তাতে কোনো সমস্যাই হতো না, কারণ ওটা আমাদের জীবনের অঙ্গ হিসেবেই ধরা ছিল। গন্ডগোল যা পাকাতো তা হলো নিয়ম করে লোডশেডিং।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে আসার জন্য অপেক্ষা করেছি। ইচ্ছে করে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছি, ঝিনুক দিয়ে কাটার বানিয়ে আম কেটে খেয়েছি, ম্যাচের বাক্স দিয়ে টেলিফোন বানিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা সাইকেলের টায়ার, বেয়ারিং এবং সুপারির খোলা দিয়ে গাড়ি বানিয়ে চালিয়েছি, গুলতি নিয়ে নিরিখ প্র্যাকটিস করে বেড়িয়েছি, দুপুরে একসাথে পুকুরে ঝাঁপিয়ে গোসল করেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা প্রতিদিন সূর্য ডোবার আগে বাড়িতে ঢুকেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা ঈদ বা দুর্গাপূজায় শুধু একটা নুতন জামার জন্য বাবার মুখের দিকে চেয়ে থেকেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা রাস্তাঘাটে স্কুলের স্যারকে দেখামাত্র সেখানেই সাইকেল থেকে নেমে নির্দ্বিধায় সালাম বা নমস্কার করেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা এখনও বন্ধু খুঁজি, কারণ জীবনের চলার স্রোতে আমরা হারিয়ে ফেলেছি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।

 

বৈজয়ন্ত বিশ্বাস ভিক্টর

রেম্ব্রান্টের জন্মশহর লেইডেন, ইনডেক্স পোয়েট্রি বুকস এবং কেইস নুটবুমের তিনটি কবিতা

আলম খোরশেদ বছর ছয়েক আগে জার্মান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের আমন্ত্রণে বিশ্বখ্যাত নাট্যোৎসব থিয়েটার ট্রেফেন এর ছাপ্পান্নতম আসরে যোগ দিতে বার্লিন গিয়েছিলাম, পৃথিবীর আরও কুড়িটি দেশের

আমরাই শেষ জেনারেশন

বৈজয়ন্ত বিশ্বাস ভিক্টর আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপার সনিক কনকর্ড জেট দেখেছি। পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার থেকে শুরু করে আজকের জিমেইল, ফেসবুক,

আন্দরকিল্লা সাহিত্যপত্রিকা এবং স্মৃতিকাতর চাটগাঁ

প্রবীর বিকাশ সরকার “আন্দরকিল্লা” ম্যাগাজিনটি ২৭ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে, আদৌ কম কথা নয়! সাহিত্য, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজবিষয়ক একটি সাময়িকী বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহর