জলে ভেসে ভেসে
আমি এই উদ্দেশ্যহীন মায়ার দিকে যেতে যেতে
যদি আর ফিরে না আসি
তবে জেনো
নির্জনতা পাথরের মতো চেপে ধরেছিল
আমি ও আমার গোধুলী বেলাকে।
হেমন্তের বনে বনে ঝরা পাতাদের
শান্ত বিছানায় কোনোদিন যদি পেয়ে যাও
অচেতন মুঠোফোন।
দেখে নিও
আমার স্ট্যাটাসে
শূন্যতার চিহ্ন ছাড়া আর কোনো বাক্য কোথাও ছিল না।
অনেক দেরিতে ফোটা আকাশের গায়ে যে তারাটি অকারণ বিষণ্নতা ছড়িয়েছে
আলোকবর্ষের দূরত্বে
তার আলো এখানে কান্নার মতো নেমে আসে
ভাষাহীন হাহাকার ছড়াতে ছড়াতে।
আন্তঃদেহ কলহ–বিবাদ
ডান চোখ
ঝরনার কলহাস্যে দেখে গানে ভাসা জুম
অন্য চোখ
জলের গভীরে দেখে পাথরের ঘুম।
এক চোখ
অরণ্যে কোথাও দেখে ব্যাকুল নিষাদ
বাম চোখে
গোধুলির অন্ধকারে হরিণী বিষাদ।
এক চোখ রাত্রি দেখে, অন্য চোখ চাঁদ
বাম যদি মায়া দেখে, ডান দেখে ফাঁদ।
বাম কানে
ভেসে আসে অশ্বক্ষুরধ্বনি
বাম কান
বাজায় দামামা শোনায় অশনি।
এ কদম
চলে যায় দূরে, অন্য তেপান্তরে
ও কদম
পড়ে থাকে একা শূন্য কোনো ঘরে।
এরকম আন্তঃদেহ কলহ-বিবাদে
নিঝুম আত্মার ঘরে কেউ যেন কাঁদে।
সমস্ত শরীর জুড়ে কটু বাক্য বিতর্কের ক্ষত
গৃহযুদ্ধে পুড়ে ছাই মানচিত্রের মতো।
কান্না জমায় তরুমূলে
ঠান্ডা লেগে ভালোবাসা
ভুগছে এখন নিমুনিয়ায়
আগুনে আর উষ্ণতা নাই
আগের মতো এই দুনিয়ায়।
কত কম্বল উজাড় হলো
লোম বাছানোর সব রটনায়
গল্পগুলো বাঁক নিয়েছে
দৈবদোষে দুর্ঘটনায় ।
সব কথা তো রয়েই গেল
আসছে না আর উচ্চারণে
পথের বরফ গলায় গিয়ে
দিচ্ছে বাধা কোন্ কারণে।
কাউকে যেন নিঃস্ব করে
ঝরল পাতা শীতের ভুলে
শিশিরবোনা রাত্রি কেবল
কান্না জমায় তরুমূলে।
কেউ কি আসে?
কেউ কি আসে উড়িয়ে ধুলো
কাঁপিয়ে মাটি ছুটিয়ে ঘোড়া
দুপুর ঘেরা বারান্দাতে
মাখছে আদর পায়রা জোড়া।
ডাকছে শরীর বাকুম বাকুম
ঘুম পালালে রাত্রি নিঝুম
কাঁদছে শরীর হৃদয়সহ
কাঁপছে শরীর কী দুঃসহ
ছোবলছাড়া বিষ ছড়ালো
কোন্ সে অলীক চন্দ্রবোড়া।
কেউ কী ক্ষ্যাপা ভাঙছে কেবল
সীমারেখা জলেস্থলে
কেউ কি আসে ছড়িয়ে আগুন
বন হাহাকার দাবানলে
ভয় কিরে তার তপ্ত হাওয়ায়
কোন্ দুখিনীর কপাল পোড়া
বারান্দাতে মায়ায় মায়ায়
মাখছে আদর পায়রা জোড়া।