এখন সময়:সন্ধ্যা ৭:৩৫- আজ: রবিবার-১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

এখন সময়:সন্ধ্যা ৭:৩৫- আজ: রবিবার
১৯শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-শীতকাল

গ্রাম ঘোরা

আবদুস সাত্তার বিশ্বাস

ঘাড়ে ব্যাগ, মাথায় তালপাতার মাথাল টুপি, পরনে ইস্ত্রি করা সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি, পায়ে পালিশ করা বুট জুতো, চোখে হালকা ফ্রেমের সোনালি চশমা; এক ভদ্রলোক সাইকেল চালিয়ে নদীর উঁচু পাড়ে এসে দাঁড়ালেন। সাইকেলের প্যাডেলে এক পা আর মাটিতে এক পা; গায়ের রং দুধে-আলতা। সুপুরুষ বলতে আমরা যা বুঝি।

নদীতে এখন জল নেই। তলানি পড়ে গেছে। ঝিরঝির করে কেবল বইছে। তার ওপর দিয়ে চরাট পাতা। আর নদীর উঁচু পাড় কেটে চরাট পর্যন্ত সুন্দর একটা রাস্তা বানানো। ভদ্রলোক ওই রাস্তা বেয়ে সাইকেল চালিয়ে নিচে নামলেন। নামার সময় সাইকেলে খানিক ঝনমন শব্দ হল।

চরাট, ভাল্ক্যা বাঁশের তৈরি এক রকম পুরু মাচা। নদীতে যখন জল থাকে না, কমে যায়, জলে খুঁটি পুঁতে তার সাথে মাথালের তার দিয়ে টানা দিয়ে কষে বাঁধতে হয়। না হলে যদি ভেঙে পড়ে! মানুষ ওই চরাটের ওপর দিয়ে হাঁটাচলা করে। শুধু মানুষ কেন? গ্রামের ছাগল, গরু, মহিষ, ভেড়া, সাইকেল, মোটরসাইকেল সব কিছু। আবার কোনো কোনো সময় ছোট ডিসিএম, মারুতি ও গরুর গাড়ি পার হয়।

কিন্তু ভদ্রলোক পার হওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ চরাটের ওপর উঠলেন না। কাছে পাট কাঠির একটা বেড়া ঘেরা কুঁড়েঘর দেখতে পেয়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।

 

ওপরে খ্যাড়ের চাল। গরমকালে এরকম কুঁড়েঘর ঠা-া হয়। আবার শীতকালে গরম হয়। শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরের মতো। আগে এরকম কুঁড়েঘর মাঠে খুব দেখতে পাওয়া যেত। মাঠে ফসল পাহারা দেওয়ার জন্য বানিয়ে রাখত। আগে মানুষের খাবারের খুব অভাব ছিল। ফলে মাঠের যেকোনও ফসল খুব চুরি যেত। ফসল কাটার আগে মাঠে চাষিরা তাই কুঁড়েঘর বানিয়ে তার ভেতর বসে ফসল পাহারা দিত। মানুষের এখন সুখ হওয়ায় সেসব দিন আর নেই। এরপর ভেতরে কী আছে উঁকি মেরে দেখলেন। কিন্তু তেমন কিছু দেখতে পেলেন না। ছোট একটা মাচা। তার ওপর ধানের আউড় বিছিয়ে একটা খেজুর পাতার পাটি পাতা আছে। কবেকার তেল চিটচিটে পুরনো পাটি কে জানে! চিমটি দিলে ময়লা উঠবে। আর পাটির পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে আপনি ঝরে পড়ছে। ভুরভুরে হয়ে গেছে। সারা ভারতের দারিদ্র্যের ছাপ যেন ওই একটা পাটি একাই বহন করছে। তার ওপর একটা মুরুব্বি লোক নিচে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। কঙ্কালসার শরীর। ভারতবর্ষের সমস্ত রুগ্ন মানুষদের রুগ্নতা সে যেন একাই গায়ে নিয়েছে। চুলদাড়ি সব সাদা।

একটা মৌমাছি ওই সময় উড়ে এসে ভদ্রলোকের গায়ে বসতে গেলে সে দেখে ফেলে বলল— আপনার গায়ে এ্যাকটা মধুরমাছি বসতে যাছে। মধুরমাছিড্যা খেদিয়্যা দেন। নাহালে হুল ফুটে দিবে। মধুরমাছির হুলে খুব ব্যথা। জ্বর চলে আসবে।

ভদ্রলোক মৌমাছিটা খেদিয়ে দিয়ে বললেন— ছোটবেলায় মৌচাকে কতো ঢিল ছুড়েছি! আর মৌমাছির কতো তাড়া খেয়েছি! তার ইয়ত্তা নেই। আজ সেসব কথা মনে পড়লে গা শিউরে ওঠে!

— ছোটবেলায় ও রকম একটু আধটু সবাই খামখেয়ালি থাকে। আমরাও ছিনু। আমরাও কতো মধু ভেঙ্যাচি! চুমকুড় মের‌্যা মধু খেয়্যাচি। তখুন মধুর চাক খুব দ্যাখা যাতোক। পাহাড়িয়্যা মধুর চাক ও ক্ষুদে মধুর চাক। পাহাড়িয়্যা মধুর চাক গুলা সাইজে বড়ো হতো। আর ক্ষুদে মধুর চাক গুলা সাইজে ছোট হতোক। পাহাড়িয়্যা মধুর চাক বড়ো বড়ো গাছে বসতোক। কিন্তুক ক্ষুদে মধুর চাক যেকুনু জাগায় দেকতে পাওয়া যাতোক। গাছের কোটরে ও চালের বাতায় খুব বসতোক। গায়ে চাদর জড়িয়্যা মুখ ঢেক্যা সেইসব মধুর চাক কতো ভেঙ্যাচি। এ্যাখুন আর মধুর চাক সেভাবে দ্যাখা যায় না। তাই মধুও ভাঙা হয় না। এ্যাখুন কিত্তিম উপায়ে মানুষ মধু তৈয়ার করে বেচছে। স্বাদ ক্যামুন কে জানে! কুনুদিন খাইনি। আল্লাহ বাঁচ্যা থুলে ওই মধু আমি কুনুদিন খাবোও না। আমার পোতিজ্ঞ্যা করা আছে। শুনেছি, ওজুন ভারি করার লাগ্যা মোমবাতি গলে অর ভিতর ঢেল্যা দ্যায়। তাহালে অই মধু খাবো? মুরুব্বিটা বলল।

ভদ্রলোক তখন জিজ্ঞেস করলেন— আপনার বাড়ি কোথায়?

— ওই ভেতরে। এই ঘাট আমার। বছর বছর আমিই ডাক করি। চল্লিশ বছর ধরে এই ঘাট আমার কাছে আছে। আমি মরে গ্যালে ব্যাটারা কেহু ডাকবে না। সব রাজমিস্ত্রী কাজ করে। আইজক্যাল রাজমিস্ত্রী কাজে ভালো পয়সা না! কুন্নিখ্যান হাতে করে লিয়ে বার হলেই সাড়ে পাশশো টাকা। ঘাটে সারাদিনে পাশশো টাকাই আদায় হয় না। তাহালে ঘাট ডাকতে আসবে? না ডাকুক! আমি যতোদিন আছি আমি ডাকবো। আমি মরে যাওয়ার পর এলাখার মানুষ কে কীভাবে ঘাট পার হবে আপনি দেখ্যা লিবে। কী বুলেন!

— হ্যাঁ। আপনি আমার পয়সাটা নিন! ভদ্রলোক পকেট থেকে দু’শো টাকার একটা নোট বের করে দিলেন।

নোটটা নিয়ে সে বলল— আমার কাছে ভাঙানি টাকা নাই যে! ভাঙানি দশ টাকা দেন! নাহালে এ্যাকশো নব্বই টাকা আমি পাবো কুন্ঠে! দেকতেই পাছেন, ছোট ঘাট! খুব বেশি পয়সা আদায় হয় না।

ভদ্রলোকের কাছেও ভাঙানি টাকা নেই। সুতরাং, নোটটা তিনি পুরোটাই রেখে দিতে বললেন। বলে পরে তিনি কথায় কথায় জানতে পারলেন যে সে মহাসেন সেখ। তবে মহাসেন সেখ বললে সবাই চিনতে পারে না। মহাসেন মাঝি বললে সবাই চিনতে পারে। আর ঘাটের নাম পঞ্চানপুরের ঘাট। কেউ কেউ নিধি নগরেরও ঘাট বলে। যারা এপারের মানুষ তারা পঞ্চানপুরের ঘাট বলে। আর যারা ওপারের মানুষ তারা নিধি নগরের ঘাট বলে। তবে কাগজ-কলমে পঞ্চানপুরের ঘাট। পঞ্চানপুরের মৌজায় আছে। ঘাটের ওপারের গ্রামটা হল নিধি নগর। নিধি নগর, তেকোনা, রামকৃষ্ণপুর, খাসপুর, মদনপুর ও সরসাবাজ— এগুলো সব ঘাট পারের গ্রাম। সব গা লাগালাগি গ্রাম। একটা গ্রাম আরেকটা গ্রামের সাথে দিনরাত কথা বলে। সবসময় তাদের চোখে চোখে দেখা হয়। কোনও গ্রামের সাথে কোনও গ্রামের কাজিয়া ঝামেলা নেই। আর হলেও মিটে যায়। যখনকার তখনই। সব মিলেমিশে বসবাস।

ভদ্রলোক সব গ্রাম ঘুরবেন। তিনি গ্রাম ঘুরতেই বেরিয়েছেন। লেখালেখি করেন। গ্রাম ঘুরলে ভালো গল্প, উপন্যাস লেখা যায়।

সেই লেখার মধ্যে মাটির গন্ধ লেগে থাকে। মাটির থেকে পৃথিবীতে বড় আর কিছু নেই। পুরো পৃথিবীটাই দাঁড়িয়ে রয়েছে মাটির ওপর। মাটিতেই উৎপত্তি আবার মাটিতেই বিনাশ। মানুষও একদিন এই মাটিতেই বিলীন হয়ে যাবে। তাই, লেখার মধ্যে মাটির গন্ধ থাকা জরুরি। তাছাড়া শহুরে মানুষের একঘেয়েমি জীবন অনেকটাই কেটে যায় গ্রাম ঘুরলে।

ভদ্রলোক গাঁড়াবাড়িয়া, মালতিপুর, জোড়গাছা, কালুপুর, বাটিকামারী, মোহনপাড়া, সাবাজপুর, শ্যামপুর, বেনেখালি ও পঞ্চানপুর এই গ্রামগুলো ঘুরেছেন। এবার নদী পারের গ্রাম গুলো ঘুরবেন।

মোটরসাইকেলে গ্রাম ঘোরা ভালো হয় না। অনেক কিছু বাদ পড়ে যায়। গ্রাম ঘুরতে হয় ধীরে সুস্থে। গ্রামের মাঠঘাট, নদীনালা, খালবিল, পুকুর পুস্করিণী, ঘরবাড়ি, গরুছাগল, হাঁসমুরগি, মানুষজন সবকিছু খোলা চোখে দেখতে হয়। তবেই তো হল গ্রাম ঘোরা। কিন্তু মোটরসাইকেলে সেটা সম্ভব নয়। তাছাড়া সাইকেল হল স্বাধীন জিনিস। সাইকেলে কোনও ঝামেলা নেই। মোটরসাইকেলে অনেক ঝামেলা। তাই, মোটরসাইকেল না নিয়ে তিনি সাইকেল নিয়েই বেরিয়েছেন।

সাইকেলটা নতুন না হলেও খুব পুরনো নয়; চকচকে নিকেল আছে এবং বেশ চালু।

মহাসেন মাঝি জিজ্ঞেস করল— আপনার নাম কী?

— ফায়সাল আহমেদ। ভদ্রলোক নাম বললেন।

— আপনার বাড়ি?

— সারাংপুর।

— কিন্তুক আপনাকে সারাংপুরে কুনুদিন দেখিনি যে! চিনতে পারছি ন্যা।

— চিনতে পারবেন না। আমি এখানে থাকি না।

— কুন্ঠে থাকেন?

— বাংলাদেশ।

— তাহালে চিনতে পারবো কী করে? ওখ্যানে কী করেন?

— চাকরি করি।

— মাস্টারি?

— না, কলেজের প্রফেসর।

মহাসেন মাঝি তখন বলতে লাগল— আপনি খুব বড়ো মানুষ! খুব বড়ো মানুষ! বলতে বলতে জিজ্ঞেস করল— এখ্যানে কবে আস্যাচেন?

— সপ্তাহ খানেক হল।

— আর কতোদিন থাকবেন?

— এখনও মাস খানেক আছি। দু-মাসের ভিসা নিয়ে এসেছি।

— তাহালে তো খুবই ভালো হলো। রোজ বিক্যালে আমার ঘাটে বেড়াতে চলে আসবেন! লদীর বাতাস খাইয়্যা যাবেন! সারাংপুরে তো লদী নাই। লদীর বাতাস খাত্যে পাবেন না। তবে খালবিল পোচুর আছে। তা থাকলে কী হবে? তা-ও লদীর বাতাস খাত্যে চলে আসবেন। লদীর বাতাস খুবই উপকারী। মুন, মেজাজ খুব ভালো থাকে। আপনি তো সেড্যা ভালোই জানেন।

— ঠিক আছে, আসব।

ভদ্রলোক ঘাট পার হয়ে নিধিনগর গ্রামে ঢুকলেন। নিধিনগর খুব ছোট গ্রাম। কিন্তু বনজঙ্গল বেশ আছে। গা লাগালাগি বাড়ি নেই। ছাড়াছাড়ি। হিন্দু-মুসলমানের মিলেমিশে বাস। রাস্তাঘাট কাঁচা এবং বেশির ভাগ কাঁচা বাড়ি। এরপর তেকোনা, রামকৃষ্ণপুর ঘুরে খাসপুরে ঢুকলেন। তেকোনা, রামকৃষ্ণপুর মাঝারি গ্রাম। নিধি নগরের মতো ওই দুই গ্রামেও হিন্দু-মুসলমানের মিলেমিশে বাস। রামকৃষ্ণপুরে সপ্তাহে দুটো হাট হয়। সব্জি হাট। জায়গাটার নাম কালীতলা। কালী মন্দিরের নামে নাম। আগে এখানে বিরাট মেলা বসত। কালী পুজোর দিন মেলা শুরু হতো। চলত পুরো একমাস। কাঠের যাবতীয় আসবাব থেকে শুরু করে সব রকম জিনিস এই মেলায় পাওয়া যেত। কিন্তু দিনে দিনে মাস্তানদের উপদ্রব বাড়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে। একসময় এ গ্রামে প্রচুর বনেদি লোকের বাস ছিল। মাস্তানদের ভয়ে সব শহরে উঠে চলে গেছে। কে বহরমপুর, কে কলকাতা। খাসপুরও ছোট গ্রাম। ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর। এ গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুল আছে। তবে ভালো চলে না। ভাঙা ভুন্নি হয়ে পড়ে আছে। স্কুলের পাশ দিয়ে একটা পাকা রাস্তা চলে গেছে। গ্রামীণ পাকা রাস্তা। ছোট ছোট অনেক গাড়ি এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে— অটো, টোটো, ট্রেকার ও লছিমন; ঘোড়ার গাড়িও চলে। পাশে মদনপুর গ্রাম। হাইস্কুল, প্রাইমারি স্কুল ও পোস্ট অফিস তিনটে সরকারি জিনিস একসঙ্গে রয়েছে। রাস্তাঘাট বেশ ঝরঝরে। বড় বড় পাকা বাড়ি। প্রচুর চাকরিজীবী মানুষ রয়েছে। পাশে সরসাবাজ। সরসাবাজ বড় গ্রাম। তবে গ্রামটা এক ডেরে। অর্থাৎ এক ধারে নদী এক ধারে গ্রাম। সরসাবাজ ঘুরতে ঘুরতে তিনি নদীর ধারে একটা মানুষকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন— আপনার বাড়ি কি এই গ্রামেই?

— হ্যাঁ।

— তাহলে আপনি ভালো বলতে পারবেন, ওই গ্রামটা কোন গ্রাম?

— লদীর ওপারে দেকতে পাওয়া যাছে, ওড্যা?

— হ্যাঁ, কোন গ্রাম?

— চক। আপনি কুন গিরামে যাবেন?

— সারাংপুর।

— আপনি তাহালে চকের ভিতর দিয়ে সোজা ইসলামপুর চলে যান! ইসলামপুর থাক্যা ডান দিকে নেতাজি মূর্তির পাশ দিয়ে পুব দিকের রাস্তাডা ধরে সোজা চলে যাবেন। কিছুডা যাওয়ার পর

নাজিরপুর মুড় পাবেন। ওখ্যান থাক্যা ডান দিকে বাঁক লিবেন। খানিক গিয়্যা রামচন্দ্রপুর। ওখ্যানে এ্যাকটা কালভাট পড়বে। কালভাট পার হয়ে শ্রীপতিপুর। শ্রীপতিপুরের ভেতর দিয়ে সোজা সারাংপুর। সারাংপুরে আমার এ্যাকটা বিটির বিহ্যা দিয়েছি। মাঝে মাঝে বিটির বাড়ি বেড়াতে যাত্যে হয় তো তাই অই রাস্তাডা ভালো করে চিনহি।

— আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ওপারে যাওয়ার রাস্তা কোন দিকে?

— সামনে পার ঘাটা।

ভদ্রলোক পার ঘাটে এলেন। কিছু বাচ্চা ছেলে জলে ছতর টেনে মাছ ধরছে। দেড়কে, পুঁটি, খোলসে। খালুইয়ে মাছ খলবল করে নড়ছে। সব নদীর খচ্চামাছ।

দেখে তিনি ঘাট পার হয়ে চকে এলেন। কিন্তু চককে তাঁর গ্রাম বলে মনে হল না। গ্রামের কোনও বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ল না। বড় বড় দোকানপাট, বড় বড় বাড়ি আর রাস্তাঘাট দেখে বাজার জায়গা বলেই মনে হল।

এরপর তিনি ইসলামপুর চলে এলেন। ইসলামপুর একটা বাজার জায়গা। ইসলামপুর একটা থানা। রাস্তার ধারে খাবারের অনেক রকম দোকান দেখে তিনি লোভ সামলাতে পারলেন না। একটা মিষ্টির দোকানে ঢুকে গোটা কতক মিষ্টি খেয়ে পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে এলেন। দিনের সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে অস্ত যেতে শুরু করেছে। এখন ঘরে ফেরার পালা। এখন তিনি আর কোনও গ্রাম ঘুরবেন না। সরসাবাজের লোকটা যেভাবে বলেছে ওইভাবে বাড়ি ফিরবেন। ফিরতে ফিরতে যেটুকু দেখতে পান পাবেন। আজকের মতো এখানেই শেষ গ্রাম ঘোরা।

 

 

আবদুস সাত্তার বিশ্বাস, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

৭১ এর সেই মাহেন্দ্রক্ষণ

হোসাইন আনোয়ার ১৯৭১ সাল ১৪ ডিসেম্বর দিয়েই শুরু করছি। ১৪ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে লে. জেনারেল নিয়াজী ফোনে রাওয়ালপি-িতে সামরিক বাহিনীর প্রধান সেনাধ্যক্ষ জেনারেল আবদুল হামিদকে

সেকাল ও একালের চট্টগ্রাম

মুহাম্মদ ইদ্রিস আলি   নদী—পাহাড়—সাগর, অবারিত মাঠ, সবুজ— সোনালি ফসলের ক্ষেত, বৃক্ষরাজি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রাকৃতিক ভান্ডার—শ্বাশত বাঙালিয়ানার অফুরন্ত উৎস। সকালের সোনা মাখা হলুদ নরম

আমি শ্রাবণ!

সৈয়দ মনজুর কবির   মাস খানেক হলো হামিম সাহেব সিরাজগঞ্জের এডিসি হয়ে এসেছেন। শহরের ভেতর সরকারি বাড়ি। দুসপ্তাহ আগে পরিবার নিয়ে এসেছেন। পরিবার বলতে স্ত্রী