এখন সময়:রাত ১০:৪৭- আজ: বুধবার-৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-বর্ষাকাল

এখন সময়:রাত ১০:৪৭- আজ: বুধবার
৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-বর্ষাকাল

ফুটবলের সোনালি দিনগুলো হারিয়ে গেছে

নিখিল রঞ্জন দাশ

এদেশের আপামর জনসাধারণ ও ক্রীড়ামোদিদের মনের মণিকোঠায় অনেক খেলার মাঝে যে খেলাটি ঠাঁয় করে নিয়েছে তা হলো ফুটবল। শৈশবে বাড়ির আঙিনায় বাতাবি লেবু নিয়ে যে ফুটবলের পদচারণা শুরু হয় তা একদিন পরিপূর্ণতা লাভ করে স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বরে ইটঘেরা গ্যালারির ঘেরাটোপের মধ্যে। তবে ইদানিং ‘লাঠি তোমার দিন গিয়াছে’—সেই কিংবদন্তির মতো ফুটবলও আজ এদেশে অপাংক্তেয়। সম্প্রতি বাফুফে এদেশের ফুটবলের নবজাগরণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এটা অত্যন্ত সুখকর অনুভূতি যে এক ঝাঁক ছেলেমেয়ে স্টেডিয়ামের সবুজ চত্বর আর স্টেডিয়াম পাড়াটাকে সরগরম করে রাখে। বর্তমান সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে এটা একটা বিরাট পাওনা।

আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি কেননা নিয়াজ স্টেডিয়াম থেকে চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম ও বর্তমান এম.এ. আজিজ স্টেডিয়াম— এই বিবর্তনের আমি সাক্ষী। ১৯৫৪ সালে এই স্টেডিয়াম  যে পদচারণা শুরু হয়েছিল আজও তা থামেনি। যদিও কালের অমোঘ নির্দেশে একদিন তা থেমে যাবে। তবে ফুটবল আজ এদেশে যে অপাংক্তেয়। প্রচার আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবই বহুলাংশে দায়ি। দায়সারা গোছের কিছু কিছু কাজকর্ম হলেও সেটা ফুটবল এর রস  পিপাসুদের মন ভরাতে পারছে না।

বর্তমানে যে সমস্ত সমস্যা প্রকট হয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠছে তা হলো খেলার মাঠের বড়ই অভাব। এই অভাব দূর করতে হলে পাড়ায় পাড়ায় সংগঠনগুলোকে জাগিয়ে তুলতে হবে। চট্টগ্রাম নগরীতে এক সময় কলেজিয়েট স্কুল মাঠ, লালদীঘি মাঠ, পলোগ্রাউন্ড, আউটার স্টেডিয়াম, আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠ, নাসিরাবাদ স্কুল মাঠ, প্যারেড মাঠ, সেন্ট প্লাসিড স্কুল মাঠ ছাড়াও নগরীর আনাচে কাানচে ছোট বড় আরও অনেক মাঠ ছিল যা কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।

নগরীতে খেলার মাঠ কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে ক্রীড়াঙ্গনে— যেমন আজকাল শিশু-কিশোররা একাডেমিতে ভর্তি হয়ে ক্রীড়াবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখে।

একটা সময় ছিল যখন চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল মাঠ ছিল ফুটবলের পীঠস্থান। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব ছাড়াও তখন ফিরিঙ্গি বাজার ক্লাব আর ক্রাউন ক্লাব ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। প্রয়াত ফজলুল করিম, কালু সিংহ, অমিয় দত্ত, ব্রাজিল ডি কস্টারের নাম তখন ক্রীড়ামোদিদের মুখে মুখে ফিরত। অন্যদিকে ডা. শামসুর রহিম সাহেব গঠন করেছিলেন বদরপাতি ক্লাব। এখনও স্মৃতির মণিকৌঠায় তা দেদীপ্যমান। তবে বর্তমানে যে সমস্যা সবচাইতে প্রকট হয়ে ওঠেছে তা হলো খেলার মাঠের অভাব। এ অভাব দূর করতে হলে বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় সংগঠনগুলোকে জাগিয়ে তুলতে হবে। তাহলে আবারও চট্টগ্রামে নতুন করে সৃষ্টি হবে ফজলুর রহমান আরজু, প্রকাশ শংকর, রশিদুল্লার মতো কিংবদন্তি ফুটবলার। স্বাধীনতাউত্তর ফুটবল অর্জনের দিকে তাকালেও আমরা দিলীপ বড়ুয়া, ফারুক, সুনীল কৃষ্ণ দে, সালাউদ্দিন, জসিম, পান্না লাল নন্দী, আশীষ ভদ্র, এফ.আই. কামাল এর মতো ফুটবলারদের দেখা পাই। কিন্তু তারপরই যখন হঠাৎ ছন্দপতন। এটার দুটো কারণ হতে পারে, ক্রিকেটের প্রচার আর অন্যদিকে ফুটবলের পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।

এক সময় স্কুল ফুটবল থেকে শুরু করে অফিস লীগ পর্যন্ত চালু ছিল। আর এটা সম্ভব হয়েছিল রেলওয়ে, বন্দর, পিডিবি, কাস্টমস, প্রভৃতি দলে খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্তি যা খেলোয়াড়দের মধ্যে নিরাপত্তা বোধের জন্ম দিয়েছিল। কেননা, খেলোয়াড়দের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ জাগিয়ে তুলতে না পারলে এটাকে ধরে রাখা মুশকিল। আমাদের বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রফেশনালিজম ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আর এটা আমাদের সমাজ এখনও দৃশ্যমান নয়। যদিও কিছু কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে।

আমরা যদি ফুটবলের শিকড় থেকে শিখর-এ যেতে চাই তাহলে আমাদের অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। স্কুল ফুটবল থেকে শুরু করে আন্তঃজেলা ফুটবল আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। সর্বোপরি জেলা ক্রীড়া পরিষদ ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় যে কয়টি মাঠ রয়েছে তা সংস্কার এর মাধ্যমে ক্লাবগুলোকে খেলার সুযোগ দিতে হবে। তবে আজকাল বিভিন্ন ক্লাবে বিদেশি খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্তির একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—যাতে আমরা আবু তাহের পুতু, মারীর মত খেলোয়াড় আর পাচ্ছি না। বাফুফে এবার জাতীয় দলেও প্রবাসী ফুটবলারদের খেলার সুযোগ দিচ্ছেন। এতে নিজস্ব খেলোয়াড় তৈরীর প্রবণতা যেন হারিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই আমাদের ফুটবলকে তার আগের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে হলে একটা সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন যেমন জরুরি, তেমনি সংগঠনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন। আমরা আবারও গ্যালারি ভর্তি দর্শক দেখতে চাই স্টেডিয়ামের চারপাশে।

 

নিখিল রঞ্জন দাশ, ক্রীড়া ভাষ্যকার ও সংগঠক

রেম্ব্রান্টের জন্মশহর লেইডেন, ইনডেক্স পোয়েট্রি বুকস এবং কেইস নুটবুমের তিনটি কবিতা

আলম খোরশেদ বছর ছয়েক আগে জার্মান সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের আমন্ত্রণে বিশ্বখ্যাত নাট্যোৎসব থিয়েটার ট্রেফেন এর ছাপ্পান্নতম আসরে যোগ দিতে বার্লিন গিয়েছিলাম, পৃথিবীর আরও কুড়িটি দেশের

আমরাই শেষ জেনারেশন

বৈজয়ন্ত বিশ্বাস ভিক্টর আমরাই শেষ জেনারেশন, যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপার সনিক কনকর্ড জেট দেখেছি। পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার থেকে শুরু করে আজকের জিমেইল, ফেসবুক,

আন্দরকিল্লা সাহিত্যপত্রিকা এবং স্মৃতিকাতর চাটগাঁ

প্রবীর বিকাশ সরকার “আন্দরকিল্লা” ম্যাগাজিনটি ২৭ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে, আদৌ কম কথা নয়! সাহিত্য, শিল্পকলা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজবিষয়ক একটি সাময়িকী বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহর