সরকার হুমায়ুন
দুজন মহাকাশচারী- একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা মঙ্গল গ্রহ অভিযানে গেলেন। তারা নিরাপদে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করেন। সেখানে তাদেরকে অতিথি হিসেবে মঙ্গলবাসীরা সাদরে গ্রহন করলো। মঙ্গলবাসীদের এমন অতিথিপরায়ণ হিসেবে দেখতে পেয়ে নভোচারীদ্বয় খুব খুশি হলেন। তারা অতিথিদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে মঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখাতে আগ্রহবোধ করেন। মঙ্গলবাসীদের বিভিন্ন সংস্কৃতি দেখালেন। এভাবে কয়েকদিন কেটে গেল। এবার নভোচারীদ্বয় গবেষণায় নেমে গেলেন। গবেষণার বিষয় মঙ্গোলিয়ানদের কিভাবে বংশ বিস্তার ঘটে সে বিষয়ে সবিস্তারে জানা।এইজন্য, নভোচারীরা তাদেরকে একটি কঠিন প্রশ্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।
তাদের হোস্টদের কাছে প্রশ্ন করলেন,”কীভাবে তোমরা তোমাদের বংশ বিস্তার করো ?” মঙ্গলগ্রহের নেতা সিংহের মত কেশর দুলিয়ে নভোচারীদের একটি পরীক্ষাগারে নিয়ে যায়; যেখানে সে তাদের দেখায় যে, পরীক্ষাগারটি কিভাবে মঙ্গলবাসীদের বংশ বিস্তার ঘটায়। প্রথমে তাদেরকে টিউবের মধ্যে কিছু সাদা তরল পদার্থ দেখালো , তারপরে তরলের মধ্যে সাবধানে একটি বাদামী পাউডার ছিটিয়ে দিল। মিশ্রণটি নাড়াচাড়া করে ঘুটিয়ে একপাশে রেখে দিল। মহাকাশচারীদের তারা বলল যে, কিছুদিনের মধ্যে এই মিশ্রণ থেকে জন্ম নেবে একটি নতুন মঙ্গল সন্তান । এবার মঙ্গলবাসীদের প্রশ্ন করার পালা। তারা জিজ্ঞেস করল, “কিভাবে পৃথিবীতে মানুষ জন্মলাভ করে থাকে? নভোচারীরা কিছুটা বিব্রত হলেও অবশেষে একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করেন। তারা সাহস সঞ্চয় করে পুরুষ নভোচারী নারীটিকে জড়িয়ে ধরে প্রেম করতে শুরু করে। যেন তারা কৃষ্ণ লীলায় মেতে ওঠলেন। এটি দেখে মঙ্গোলিয়ানরা হাসিতে ফেটে পড়ে এবং নভোচারীদের আর এগুতে মানা করে ।নভোচারীরা বললেন, “এতে মজা করার কি আছে! এত হাসির কি হল ? এই প্রেম লীলার পর নারী তার পেটে সন্তান ধারন করে। নয়/দশ মাস কেটে যায়।তারপর একটি মানব সন্তান জন্মলাভ করে।” মঙ্গলগ্রহের নেতা বললেন, “হুম! তোমাদের জন্ম প্রক্রিয়াটি খুব কষ্টদায়ক। দীর্ঘ দশ মাস পর পর একটি মানব সন্তান জন্ম নেয়।তাহলে পৃথিবীতে এত বেশি মানুষ এল কোত্থেকে?”
সরকার হুমায়ুন, সায়েন্স ফিকশন লেখক, ঢাকা