ফেরা
নিজের ফিরে আসার দিকে তাকিয়ে আছি
একটা আকাশ
একটা পথ
আর একটা পা
পরষ্পরকে জড়িয়ে ধরে পড়ে আছে গুহায়
ধূলি ওড়া একটা মানুষ পাখি হয়ে উড়ে যাচ্ছে
গন্তব্য খেয়ে গেছে পথের দুই ধার
একটা মানুষ
একটা নক্ষত্র
আর একজোড়া চটি
পায়ের তলায় লিখে যাচ্ছে না-ফেরার সংলাপ।
নিজের ফিরে আসার দিকেই তাকিয়ে আছি।
হুইসেল
হরিণ ফুলের ভাঁজে মুখ লুকিয়ে বৃক্ষেরা
গেয়ে যায় জারুল পাখির গান
সন্দেহের ডানায় ঝরাপাতার নাম লিখে
উড়ে যায় মানুষ; কোনদিন
ফিরে আসার ডাক পেলে ভীড়ের ভেতর
কেঁপে ওঠে শরীর-
এই ঘরেই মানুষ আর পাখির সঙ্গম।
সংসারের নামে কুড়িয়ে যাই ক্ষুদ ও খোসা-
দৃশ্যের ভেতরে ডুব দিয়ে
ঘুমিয়ে পড়েছে জখমের মৌসুম-
ফুল আর পাতার আড়ালে বেড়ে ওঠা
কাঁটার জংশনে মানুষ এক
ছন্নছাড়া হুইসেল।
পতনের ভাষা
কিছু দৃশ্য থেকে এমনভাবে নামো
যেন সিড়ি ভেঙে নিচে নেমে যাচ্ছে জল
হাত থেকে খসে পড়ছে আঙুল
পাতারা কুড়িয়ে রাখে এইসব পতনকাল।
এই ভ্রমণ শেষ হলে দৃশ্যের পৃষ্ঠা
উল্টিয়ে চলে যাই
নামার শব্দেরা নিচু হয়ে বসে থাকে
তোমার পায়ের ছাপ
আমার কাছে হয়ে ওঠে প্যাচানো অক্ষর।
মাড়িয়ে যাওয়া নিঃশ্বাস
কিছু কথা জমে আছে ঠোটের কার্নিশে-
আঙুলের গ্যালারিতে
কিছু মানুষ আটকে আছে
পাথুরে হৃদয়
বীজের খোসার ভেতর কিছু
মূহুর্ত ভিজে বৃষ্টি
আমরা দূর থেকে দেখছি
উড়ে যাচ্ছে
আমাদের ছায়া
পরষ্পরের বিপরীতে
অনবরত বৃষ্টিতে কান্না মিশে যাচ্ছে-
আর তুমি কুয়াশার কথা বলে
মাড়িয়ে যাচ্ছো নিঃশ্বাস!
মৃত হরিণের গান
পাতার পৃষ্ঠে সমুদ্দুর নেমে এলে মৃত হরিণের গান-
দেয়ালে টাঙিয়ে রাখি শোক-
দূরে সরে যাচ্ছে প্রস্থানের নির্ভুল ব্যাকরণ
এই যাওয়ার ভেতরে পথ নেই
এমনকি ফিরে আসাতেও
এক শূন্যরেখা বিছিয়ে রাখে পারাপারের আয়ু
কথার ভেতরে কথা থাকে না
দেখার ভেতরে দৃশ্য-
ভাষার ভেতরে খেলা করে বোবা হরিণের ডাক।
ঝরাপাতার মানুষ
অনেক দুঃখ পাতায় মুড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকে গাছ
বেদনা জমে জমে হলুদ হলে
পাতারা ঝরে পড়ে
ঝরাপাতা কুড়াতে কুড়াতে মানুষ মূলত ভবঘুরে।
একটা পাতার গভীরে
অনেকগুলো অপেক্ষা পুরে সারারাত কানের কাছে
ভনভন করে সময়
পাতা ওড়ার এই শহরে হাওয়ারা লিখে রাখে
মৃতের ঠিকানা।