এখন সময়:বিকাল ৫:৩৮- আজ: শুক্রবার-২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

এখন সময়:বিকাল ৫:৩৮- আজ: শুক্রবার
২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

শূন্য থেকে শূন্য

মোহাম্মদ আবদুর রহমান

ভীর রাত। শুরু হয়েছে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি। বজ্রপাতের শব্দে কেঁপে উঠছে ঘর—বাড়ি। যারা কুঁড়ে ঘরে থাকে তাদের বুকের উপর যেন বজ্র গুলো পড়ছে। তাদের মিষ্টি ঘুমকে বেদনাদায়ক করে তুলেছে। ফলে তারা জেগে আছে ঘড়ির কাঁটার মত। প্রভুর কাছে আর্তনাদ করছে বৃষ্টিকে থামানোর জন্য। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে আশঙ্কায়। বজ্রপাতের শব্দ শুনে বিছানা থেকে উঠে পড়েন আলিয়া। তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পাশের ঘরে থাকে তাদের একমাত্র ছেলে শরীফ। যার বয়স খুব জোর আঠারো বছর হবে। তিনি শরীফের ঘরের কাছে গিয়ে বলেন — বাজান। ও শরীফ বাজান। চলে এসো আমাদের ঘরে।
শরীফ তাড়াতাড়ি দরজা খুলে বলে — তুমি ঘরে যাও মা। আমি ঠিক আছি।
— না বাজান তুমি ঘরে চলো। আমরা সবাই এক সাথে থাকব। বৃষ্টি থেমে গেলে আবার তুমি চলে আসবে।
— না মা। আমি যাবো না। তুমি ঘরে গিয়ে ঘুমাও। দেখবে একটু পরে বৃষ্টি থেমে যাবে। বেকার চিন্তা করছো। আমি এখন ছোটো নাকি?

আলিয়া কোনমতেই সেখান থেকে যেতে রাজি নন। কি করে ছেলেকে এরকম দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় রেখে যাবেন! আলিয়া যে একজন মা। আর মা কি পারে ছেলেকে বিপদের মধ্যে রেখে সুখে থাকতে? তিনি কোন মতেই নিজের ঘরে যেতে রাজি নন। শরীফ বুঝতে পারছে তার মা এত সহজেই ঘরের ভেতর যাবে না। তাই সে তার মায়ের হাত ধরে নিয়ে গিয়ে ঘরের ভেতর রেখে আসলো।

আলিয়া জানে যতই কষ্ট হোক শরীফ কিন্তু আসবে না। কারণ তাদের ঘরে শরীফ আসলে সবাইকে বসে থাকতে হবে। ঘুমানোর জন্য একটাই বেড। ফলে সে চায় নিজে কষ্টের মধ্যে থাকবে তবুও বাবা—মাকে কষ্ট করতে দেবে না। শরীফ তার বাবা—মায়ের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে। সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের কাজ করে অর্থ উপার্জন করার চেষ্টা করছে। সে কোন রকম একটা পাকা ঘরের ব্যবস্থা করেছে তার বাবা—মার জন্য। আর সে থাকে একটা কুঁড়ে ঘরে। বৃষ্টি হলে বিভিন্ন জায়গা থেকে জল পড়ে। ফলে বৃষ্টি হলে সে ঘুমাতে পারে না। বরং বিছানা উঠিয়ে বুকে জড়িয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকে। আলিয়া সে সব কিছুই জানেন।

আলিয়া ঘরের ভেতর বাধ্য হয়ে আসলেও তিনি বিছানায় ঘুমাতে চেষ্টা করলেও ঘুমাতে পারেন না। যেন বিছানায় রাখা আছে অজ¯্র কাঁটা। যে কাঁটা গুলো আলিয়ার হৃদয়কে ক্ষত বিক্ষত করছে। নিজেকে অপরাধী মনে করছে। মা হয়ে ছেলের মাথার উপর বিশাল বড় বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। তার মত বয়সের ছেলে মেয়েরা স্কুলে কলেজে যায়। নানান রকম দুষ্টামি করে। বাবার টাকা ধ্বংস করতে থাকে। নিজের আনন্দের জন্য বাবা মাকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দেয়। ছুটন্ত ঘোড়ার মত ঘুরে বেড়ায় যেখানে সেখানে। কিন্তু শরীফ নিয়েছে তার বাবার দায়িত্ব। পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে। কোন দিন সে তার বাবাকে দায়ী করে না। বরং তার ভালোই লাগে বাবা—মায়ের জন্য কিছু করতে পারে।

আলিয়ার হৃদয়াকাশে ভেসে উঠে তার ফেলে আসা দিন গুলোর কথা। তাদের ছোটো বেলা প্রচুর কষ্টের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। আলিয়ারা ছিলেন সাত বোন। আর সব ছোটো একটি ভাই। তিনি ছিলেন পাঁচ নাম্বার। তিনি খুব সুন্দরী ছিলেন। যে কেউ দেখলে প্রেমে পড়ে যেত। কিন্তু তাদের দরিদ্রতার কারণে সে রকম ভালো বাড়িতে বিয়ে হয়নি। এমনিতেই তার বাবা মেয়েদের বিয়ে দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। কারণ তার বাবার সম্পত্তি তেমন ছিল না। বিঘা তিনেক চাষের জমি। জমি থেকে যে ফসল হতো খরচ বাদ দিয়ে তাতে তিন বেলা খাবারও জুটতো না। আবার বন্যা হলে ঘাড়ে চাপতো ঋণের বোঝা। তার বাবা ঋণ পরিশোধ করার জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বেশির ভাগ বাইরে থাকতেন। তার মা জমি দেখা শুনা করতেন। এমন কি পুরুষ মানুষের মত কাজ করতেন। অনেকে তার মাকে নিয়ে নানান কথা বলত। কিন্তু তার মা সেই সব কথা হজম করে নিজের কাজে ব্যাস্ত থাকতেন। তিনি তো চুরি করেন না। নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করা প্রত্যেক প্রাণীর কর্তব্য। তিনি তাই করতেন। তিনি মনে করতেন কারো দেওয়ার মোরাদ নেই শুধু সমালোচনা করার মোরাদ আছে। কেউ কোন দিন ভাবেনি তারা অনেক দিন তিন বেলা খেতে পান না। তারা এখানে অবস্থান করছিলেন।

আলিয়ার বাবার নাম ফরিজুদ্দিন। তবে তিনি ফরিজ ছ্যাচড়া নামে পরিচিত ছিলেন। ফরিজ ছ্যাচড়া সংসারের প্রবল চাপে পড়ে মানুষের কাছে টাকা ঋণ করলেও। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই ঋণ পরিশোধ করতে পারতেন না। আর কিছু পরিশোধ করলেও অনেক বার ঘুরানোর পর দিতেন। যে সকল দোকানদারের কাছ থেকে তিনি বাকি নিতেন তারা বার বার ঘুরার পর কিছু টাকা পেতেন। আসলে তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে তো দেবেন। তিনি নিজেই নিজেকে পাড়ার কুকুরের মত দেখতেন। কুকুর দেখলে মানুষ তাকে তাড়িয়ে দেয়। ঠিক তেমনই দোকানদার দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। তিনি বুঝতে পারেননি তার নামের পাশে কখন যে ছ্যাচড়া শব্দটি জুড়ে গেছে।

তিনি মেয়েদের স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে পড়িয়েছেন। তবে তার মেয়েরা সবাই সুন্দরী ফলে তাদের খুব কম বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন। আলিয়া যখন পনেরো বছরে পা দিয়েছিলেন তখনই তার বিয়ে হয়ে যায় পাশের গ্রামের আব্দুল মালেকের সাথে। আসলে মালেক আলিয়াকে দেখে তার প্রেমে পড়ে যান। তার রূপের কাছে হার মানতে বাধ্য। তিনি আলিয়ার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। যেহেতু আব্দুল মালেক দেখতে খুব সুন্দর ও ব্যাবহারও খুব ভালো। তাছাড়া কোন যৌতুক নিবে না। তাই ফরিজ সে প্রস্তাব গ্রহণ করে নেন। যদিও আব্দুল মালেকের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। তিনিও শূন্যের ভেতর হাবুডুবু খাচ্ছেন।

আবদুল মালেক বিয়ে করার পর সে তার স্ত্রীকে বলে ছিলেন তোমাকে রাণি করে রাখব। তবে আলিয়া সেই কথায় কোন দিন কান দিতেন না। আলিয়া জানতেন এমন স্বপ্ন তার না দেখাই উচিত। কারণ আব্দুল মালেকের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। তবে তিনি আলিয়াকে খুব ভালোবাসতেন। আলিয়া সেই ভালোবাসা পেয়েই খুশি ছিলেন। কারণ দিদিরা মায়ের বাড়ি গিয়ে বলেন তোমার জামাই এটা চায় সেটা চায়। টাকা না দিতে পারলে তার মারধর করে। মালেক তাদের মত নন। সে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন শুধু মাত্র আলিয়ার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তিনি প্রতিদিন বাড়ি ফেরার সময় কিছু না কিছু মুখরোচক খাবার নিয়ে আসেন যা তিনি খাওয়ার জন্য ছোটো বেলায় ইচ্ছা পোষণ করতেন। কিন্তু তা পেতেন না। মালেককে আলিয়া যা বলে তাই করে। ফলে আলিয়া মালেককে স্বামী হিসেবে পেয়ে দারুণ খুশি। যেন তিনি সুখের উচ্চ শিখরে পৌঁছে গেছেন। পর্যাপ্ত টাকা না থাকুক প্রচুর সুখে আছেন।

এক বছর যেতে না যেতেই তাদের সংসারে আলো করে আসে শরীফ। শরীফকে পেয়ে আব্দুল মালেকের কাজ করার শক্তি আরও বেড়ে গেল। আব্দুল মালেক যখন সাত বছরের তখন তার বাবা মারা যান। ফলে তাকে প্রচুর কষ্টের মধ্যে মানুষ হতে হয়েছে। তার মা পরের বাড়ি কাজ করে কোন রকম তাকে মানুষ করেছেন। ছোটো বেলায় মালেককে প্রচুর অপমান সহ্য করতে হয়েছে। সব উপেক্ষা করেছেন। মা ছিল তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। সেই মা তাদের বিয়ের প্রায় এক বছর আগে পরলোক গমন করেন। মাকে হারিয়ে মালেক যেন আত্মীয়হীনতায় ভুগ ছিলেন। ফলে আলিয়ার সাথে বিয়ে হওয়ায় মালেকের হৃদে বেঁচে থাকার শক্তি জেগেছিল। আর শরীফকে পাওয়ার পর আব্দুল মালেক যেন তার বাবাকে পেয়েছেন। তাই তিনি তার ছেলের নাম তার বাবার নামে রেখেছেন। তার তিন বছর পর তাদের একটি কন্যার জন্ম হয়। আব্দুল মালেকের ঘরে যেন ভালোবাসে মানুষের অভাব নেই।

আবদুল মালেক বুঝতে পারেন ছেলে মেয়েদের মানুষের মত মানুষ করতে হলে প্রচুর পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে হবে। গ্রামে কাজ করে তেমন উপার্জন সম্ভব নয়। তাই তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে যাওয়ার। তার বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছে হয় না। কিন্তু কিছুই করার নেই। ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে হলে বাইরে যেতেই হবে।
তাই আবদুল মালেক পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বাইরে যান। তার সুন্দর ব্যবহার ও সততার জন্য যেখানে কাজে যান সেখানকার মালিকের নজরে পড়ে তার উপর। মালিক তাকে বার বার পরীক্ষা করেন। তিনি সেই সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যান। মালিক তাকে খুব ভালোবাসতে থাকেন। সেই জন্য মালিক তাকে উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা করতে থাকেন। তিনিও প্রচুর পরিশ্রম করতে শুরু করেন। যেন তার ভাগ্যের চাকা রাজপথে অবস্থান করছে। কয়েক বছরের মধ্যে আব্দুল মালেক গ্রামের মধ্যে বিত্তশালী মানুষে পরিণত হন। তিনি আলিয়াকে বলেন — দ্যাখো তুমি পাশে থাকার জন্য আমার অবস্থার কত উন্নতি হয়েছে। তুমি আমাদের গ্রামের রাণী। আমি রাজা।
আলিয়া মিষ্টি করে হেসে বলেছিলেন — আমি গ্রামের রাণী হতে চাই না। আমি তোমার রাণী হয়ে থাকতে চাই।
— এমন কথা বললে হবে না। তোমাকে গ্রামের রাণী হয়ে থাকতে হবে।
— তার মানে!
— আমি তোমার জন্য রাজ প্রাসাদ তৈরি করব। যেই রাজ প্রাসাদের তুমি রানী। সবাই বুঝতে পারবে তুমি কত সৌভাগ্যবান।
— পাগলের মতো করো না। আমি এমন রাজ প্রাসাদ চাই না। আমি শুধু তোমার ভালোবাসা চাই।
কিছু দিনের মধ্যে মালেক তৈরি করেন একটি দোতলা বাড়ি। শহরের বাড়িগুলোর মত সাজানো। দূর থেকে দেখলে রাজ প্রাসাদ মনে হবে। এই বাড়ি দেখে আলিয়া খুব খুশি হন। যেহেতু তিনি দরিদ্রতাকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তার মনে হয় এই সুখ কি তার চিরকাল স্থায়ী হবে? না স্বপ্নের মত কিছুক্ষণ থাকবে। মালেকের বাড়াবাড়ি দিন দিন বেড়েই চলেছে। তিনি নিজেকে বিত্তশালী মানুষ বোঝাবার জন্য বেশভূষা পরিবর্তন করেছেন। আলিয়াকেও দারুণ দামি দামি পোশাক কিনে দিয়েছেন। একটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনেছেন। হঠাৎ করে যে কেউ দেখলে বুঝতে পারবেন না তিনি এক সময় শূন্যের ভেতর অবস্থান করছিলেন।

মালেকের বন্ধু—বান্ধবীর অভাব নেই। যে সকল বিত্তশালী মানুষগুলো একদিন তাকে অবজ্ঞা করতো তাদের অনেকেই এখন তার প্রিয় বন্ধু—বান্ধবী। আর যে সকল বন্ধু তার দরিদ্রতার সময় পাশে ছিল তাদেরকে রেখেছেন বহু দূরে। মালেক বলেন বন্ধুত্ব হবে সমানে সামন। তাকে দেখলে বুঝা যায় তিনি যেন বিত্তশালী মানুষ হয়ে জন্মেছেন। রোজ তার কোন না কোন প্রোগ্রাম লেগেই থাকে। তার বাড়িতে রোজ বন্ধু—বান্ধবীরা এসে ভিড় জমায়। আস্তে আস্তে তার সুন্দর ব্যবহার অসুন্দর হতে থাকে। তা দেখুন আলিয়ার আর বুকের ভেতর সৃষ্টি হয় বিশাল আতঙ্ক। হারানোর ভয়ে জড়সড় হয়ে যেতেন।

এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পর আব্দুল মালেকের চরিত্রের অধঃপতন শুরু হয়। বিভিন্ন ধরণের নেশাদ্রব্য পান করতে থাকে। তাকে দেখে বুঝা যায় না তিনি আগে কোন দিন নেশা দ্রব্য পান করেননি। তিনি একেবারে পাল্টে গেছেন। দিন রাতের মত। আলিয়া বারবার মালেককে বুঝাবার চেষ্টা করেছেন যে তোমাকে বড়লোক করেছে সে তোমাকে আবার ভিখারি বানিয়ে দিতে পারে। সুতরাং তোমার উচিত নিজেকে সংযত রাখা।
মালেক মৃদু হেসে বলেছেন— এখন একটু মাস্তি না করলে কখন করব।
আলিয়া তাকে অনুনয় বিনয় করে বলেছেন—এমন কিছু করো না যাতে সারা জীবন আফসোস করতে হয়।
মালেক ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন — আমাকে জ্ঞান দিতে হবে না। তুমি তোমার নিজের মতো থাকো। আমাকে আমার মত থাকতে দাও।

মালেকের আলিয়ার প্রতি যত দুর্বলতা ছিল তা আর নেই। যে আলিয়ার দিকে তাকিয়ে মালেক নিজের সকল দুঃখ ভুলে যেত। সেই আলিয়াকে দুই চোখে দেখতে পারেন না। আসলে মালেক তো আর দুঃখের মধ্যে নেই যে আলিয়াকে তার প্রয়োজন। সে তো চাইলেই আলিয়ার থেকে সুন্দরী সুন্দরী মহিলাদের সাথে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। এমনকি তিনি পরকীয়ায় মেতে উঠেছেন। আলিয়া বুঝতে পারছেন তাদের সুখের সংসারে অতি শীঘ্রই নেমে আসবে এক অরাজক পরিস্থিতি। যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আর কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

এলাকার যে সব লোকেরা তাকে তার উত্তম চরিত্রের জন্য ভালোবাসত তারা কেউ তাকে আর ভালোবাসে না। বরং ঘৃণা করে। সে অনেক টাকার মালিক হতে পারে। সে নিজেকে রাজা ভাবতে পারে। গ্রামের কেউ তাকে আর ভালোবাসে না। শুধু তার চরিত্রের অধঃপতনের জন্য। অথচ সে মনে করে তার উন্নতি কেউ মেনে নিতে পারে না। কিন্তু সে ভাবে না যে আজ বিত্তশালী। কিছু দিন পর সে আগের মত শূন্যতে অবস্থান করতে পারে।

কয়েক বছর এমন ভাবে চলতে থাকে। তারপর শুরু হয় চরম অধঃপতন। দিনে দিনে তার লস হতে থাকে। যে ভাবে তিনি উচুঁতে উঠছিল তেমনি ভাবে শূন্যের দিকে এগোতে থাকেন। এভাবে প্রচুর টাকার ঋণ চেপে বসে ঘাড়ের উপর। যে সকল বন্ধু—বান্ধবীরা তার সুখের সময় পাশে ছিল আজ তারা কেউ পাশে নেই। যে মহিলার সাথে পরকীয়ায় মত্ত ছিল। সেও তার খোঁজ রাখে না। যে মিথ্যে অভিনয় করে বলেছিল সব সময় তোমার পাশে থাকব। সেও পালিয়েছে অনেক দূরে। সেই মহিলার জন্য সে আলিয়ার উপর নির্যাতন করতেন। অথচ আলিয়া তাকে ছেড়ে যায়নি। আলিয়া সব সময় পাশে থেকেছে পরম বন্ধুর মত। মালেক বুঝতে পেরেছে তার নিজের ভুল। অনুশোচনার ঝড় তার হৃদয়ের ভেতর বয়ে চলেছে। আলিয়ার সামনে দাঁড়াতে তার খারাপ লাগছে। যে আলিয়া তাকে বারবার বলতো নিজেকে সংযত হওয়ার জন্য। তার কথা না শুনে বরং তার উপর আরো অত্যাচার করেছেন। অথচ তিনি আলিয়ার সুখের জন্য বড় লোক হতে চেয়েছিলেন। মালেক তা সহ্য করতে না পেরে জীবন্ত লাশে পরিণত হন।

আলিয়ার সাধের রাজপ্রাসাদ বিক্রি করে দেন। বিক্রি করেন বিলাস বহুল গাড়ি। এক কথায় সকল কিছুই বিক্রি করেছেন। এখনও কিছু ঋণ মাথায় চেপে আছে। এক প্রকার বাধ্য সেই গ্রাম ছেড়ে অনেক দূরে অন্য এক গ্রামে সরকারি জমির উপর বাড়ি তৈরি করেছেন। পাহাড়ের চূড়া থেকে আবারও পৌঁছে গেছেন গিরিখাদে। এক্কেবারে শূন্যের ভেতর অবস্থান করছেন। সেই চেনা শুন্য যার ভেতর অনেক সময় কেটেছে।

ভাষার যতো মান অপমান

অজয় দাশগুপ্ত : বাংলাদেশ আমাদের দেশ। আমাদের মাতৃভাষার নাম বাংলা ভাষা। আপনি আশ্চর্য হবেন জেনে প্রবাসের বাঙালিরা প্রাণপণ চেষ্টা করে তাদের সন্তানদের বাংলা শেখায়। এ

চাঁদপুর চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির কবিতা উৎসবে ১০ গুণী ব্যক্তির পুরস্কার লাভ

আন্দরকিল্লা ডেক্স : নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির কবিতা উৎসব-২০২৫। গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় চাঁদপুর শহরের ইউরেশিয়া চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবুজ

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্কুলের শতবর্ষ উদযাপন

আন্দরকিল্লা ডেক্স : শতবর্ষ পূর্ণ হওয়া চট্টগ্রামের হাতেগোনা কয়েকটি স্কুলের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পাহাড়তলী অন্যতম একটি। ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুল ২০২৪

কেনো ইহুদিরা জাতি হিসেবে এত বুদ্ধিমান?

মূল লেখক: ডঃ স্টিফেন কার লিওন অনুবাদক— আসিফ ইকবাল তারেক   ইসরাইলের কয়েকটি হাসপাতালে তিন বছর মধ্যবর্তীকালীন কাজ করার কারণেই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করার চিন্তা

আগমনী এবং দুর্দান্ত দুপুর

দীপক বড়ুয়া ঋষিতার মুখে খই ফুটে। কালো মেঘে ঝুপঝুপ বৃষ্টি পড়ার সময়। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বৃষ্টির জল গড়িয়ে পরে। আনন্দে বৃষ্টি ফোটা ছুঁয়ে হাসে। মাঝেমধ্যে