এখন সময়:দুপুর ২:২৫- আজ: মঙ্গলবার-২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

এখন সময়:দুপুর ২:২৫- আজ: মঙ্গলবার
২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-১১ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ-বসন্তকাল

শেহেরাজাদে (পর্ব-৪) মূল : হারুকি মুরাকামির

ভাষান্তর : জ্যোতির্ময় নন্দী

[প্রখ্যাত জাপানি লেখক হারুকি মুরাকামি (জন্ম: ১২ জানুয়ারি, ১৯৪৯)’র পরিচয় বিশ্ব সাহিত্যের পাঠকদের নতুন করে দেয়ার কিছু নেই । তাঁর উপন্যাস, প্রবন্ধ, এবং ছোট গল্প জাপানে এবং আন্তর্জাতিকভাবে বহুবার বেস্ট সেলার হয়েছে, তাঁর কাজ পঞ্চাশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং জাপানের বাইরে লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রি হয়েছে। বহুপ্রজ লেখক মুরাকামির অসংখ্য গ্রন্থের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বা বহুলপঠিত ও পরিচিত কয়েকটির মূল জাপানি নাম প্রকাশনার কালানুক্রমে নিচে দেয়া হলো (পাঠকের বোধগম্যতার স্বার্থে বইগুলোর ইংরেজি অনুবাদের নামগুলোও এখানে দেয়া হলো, যদিও সেগুলোর প্রকাশকাল মূল বইগুলোর সমসাময়িক নয়):

‘কাজে নো উতা ও কিকে’ (হিয়ার দা উইন্ড সিং, ১৯৭৯), ‘১৯৭৩-নেন নো পিনবরু’ (‘পিনবল-১৯৭৩, ১৯৮০), ‘হিৎসুজি ও মেগুরু বকেন’ (এ ওয়াইল্ড শিপ চেজ, ১৯৮২), ‘সেকাই নো অওয়ারি তো হাদো-বইরুদো ওয়ান্ডারালান্ডো’ (হার্ড বয়েল্ড ওয়ান্ডারল্যান্ড অ্যান্ড দা এন্ড অব দা ওয়ার্ল্ড, ১৯৮৫), ‘নরউওয়েই নো মোরি’ (নরওয়েজিয়ান উড, ১৯৮৭), ‘দান্সু দান্সু দান্সু’ (ড্যান্স ড্যন্স ড্যান্স, ১৯৮৮), ‘নেজিমাকি-দোরি কুরোনিকুরু’ (দা ওয়াইন্ড-আপ বার্ড ক্রনিকল, ১৯৯৪-৯৫), ‘উমিবে নো কাফুকা’ (কাফকা অন দা শোর, ২০০২),  ‘ইচি-কিয়ু-হাচি-ইয়ন’ (ওয়ানকিউএইট্টিফোর, ২০০৯-১০), ‘শিকিসাই ও মোতানাই তাজাকি ৎসুকুরু তো, কারে নো জুনরেই নো তোশি’ (কালারলেস ৎসুকুরু তাজাকি অ্যান্ড হিজ ইয়ার্স অব পিলগ্রিমেজ, ২০১৩)  প্রভৃতি। চিন্তাধারা ও রচনাশৈলীর দিকে দিয়ে মুরাকামি যাঁদের প্রভাব স্বীকার করেছেন, তাঁরা হলেন: নাৎসুমে সোসেকি, কেনজাবুরু ওয়ে, ইমানুয়েল কান্ট, সিগমুন্ড ফ্রয়েড, কার্ল ইয়ুং, লুডভিগ ভিডগেনস্টেইন প্রমুখ।  মুরাকামি কেন এখনও পর্যৗল্প সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান নি, সেটা অনেক সাহিত্যামোদির ও সমালোচকের বিস্ময়মিশ্রিত প্রশ্ন বটে। তবে নিজের সাহিত্যকর্মের জন্য অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে গুনজো পুরস্কার (১৯৭৯), নর্মা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮২), তানিজাকি পুরস্কার (১৯৮৫), ইয়োমিউরি পুরস্কার (১৯৯৫), কুওয়াবারা তাকিও পুরস্কার (১৯৯৯), ওয়ার্ল্ড ফ্যান্টাসি পুরস্কার (২০০৬), ফ্রান্জ্ কাফকা পুরস্কার (২০০৬), ফ্রাঙ্ক ও’কনর আন্তর্জাতিক ছোটগল্প পুরস্কার (২০০৬), হ্যান্স খ্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসেন সাহিত্য পুরস্কার (২০১৬), আমেরিকা সাহিত্য পুরস্কার (২০১৮), জেরুজালেম পুরস্কার ইত্যাদি। এখানে ধারাবাহিকভাবে দেয়া হচ্ছে তাঁর লেখা ‘শেহেরাজাদে’ নামের বিখ্যাত গল্পটি। “আলিফ লায়লা’ বা ‘হাজার এক রজনী’র গল্পকথক কেন্দ্রীয় চরিত্র শেহেরাজাদের নামানুসারে এ গল্পের নাম রাখা হয়েছে, যেহেতু এ বইয়ের অন্যতম প্রধান চরিত্র মেয়েটিও উপকথার শেহেরাজাদের মতো গল্প বলে। আলিফ লায়লার শেহেরাজাদে যেমন প্রতি রাতের শেষে একটা গল্প অসমাপ্ত রেখে দিতো পরের রাতে বলার জন্যে, এ গল্পের শেহেরাজাদেও তেমনটাই করেছে। গল্পের কোথাও লেখক মেয়েটার আসল নাম লেখেন নি, সবসময় তাকে শেহেরাজাদে নামেই উল্লেখ করা হয়েছে। গল্পটার বাংলা ভাষান্তর করা হয়েছে মূল জাপানি থেকে টেড গাসেনের করা ইংরেজি অনুবাদ অনুসরণে।]

 

শেহেরাজাদে সেদিন ছেলেটার বিছানায় অনেকক্ষণ গা টানা দিয়ে পড়ে রইলো। তখন তার কলজে অত জোরে জোরে কাঁপছিলো না, এবং সে স্বাভাবিকভাবে দম নিতে পারছিলো। ছেলেটা তার পাশে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে, এটাও সে কল্পনা করতে পারছিলো। এমনকি তার এও মনে হচ্ছিলো যে, সে ঘুমন্ত ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। তার মনে হচ্ছিলো, হাত বাড়ালেই সে যেন ছেলেটার সুগঠিত বাহু ছুঁতে পারবে। অবশ্যই ছেলেটা ওখানে তার পাশে ছিলো না। সে শুধু একটা দিবাস্বপ্নের কুয়াশায় হারিয়ে গিয়েছিলো।

 

ছেলেটার গায়ের ঘ্রাণ নেয়ার একটা দুর্দম ইচ্ছা শেহেরাজাদেকে পেয়ে বসেছিলো। বিছানা থেকে উঠে সে এগিয়ে গিয়েছিলো ওয়ার্ডরোবটার দিকে। তারপর সেটা খুলে ভেতরে রাখা শার্টগুলো পরীক্ষা করে দেখলো। সবগুলোই ধোলাই করা এবং পরিপাটিভাবে ভাঁজ করে রাখা। ওগুলো একেবারে ধোপদুরস্ত, গন্ধমুক্ত, যেমনটা সে আগের বার দেখেছিলো।

 

তারপর হঠাৎ করে তার মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গিয়েছিলো। একছুটে সে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গিয়েছিলো নিচের তলায়। সেখানে বাথরুমের পাশেই সে একটা ময়লা কাপড় রাখার একটা ঝুড়ি দেখতে পেয়েছিলো। ওটার ঢাকনা খুলে সে দেখতে পেয়েছিলো, এ বাড়ির তিন সদস্য মা আর তার ছেলে ও মেয়ের ময়লা কাপড়চোপড় ওটার ভেতরে একসাথে মিশিয়ে রাখা। দেখে মনে হচ্ছিলো তার দিনটা সার্থক হয়েছে। ঝুড়িটা থেকে ছেলেদের একটা পোশাক বেছে তুলে নিয়েছিলো সে। একটা সাদা ক্রু-গলার টি-শার্ট। ওটা একটু শুঁকে দেখেছিলো সে। নির্ভুলভাবে একজন তরুণের গায়ের গন্ধ। ক্লাসে তার ছেলে সহপাঠীরা কাছে এলে এরকম মাদকতাময় ঘ্রাণ সে আগেও পেয়েছে। সত্যি বলতে গেলে তেমন কোনো নাড়া দেয়ার মতো ঘ্রাণ নয় ওটা। কিন্তু এটা ছেলেটার গায়ের গন্ধ, এটা ভাবতেই তার সীমাহীন আনন্দ হচ্ছিলো। শার্টটার বগলের নিচে নাক গুঁজে দিয়ে গভীর শ্বাস নিয়েছিলো সে, আর তার মনে হয়েছিলো, ছেলেটা যেন তার দুবাহুতে তাকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরেছে।

 

টি-শার্টটা হাতে নিয়ে শেহেরাজাদে আবার দোতলায় উঠে এসে ছেলেটার বিছানায় শুয়ে পড়েছিলো। শার্টটার মধ্যে তার মুখটা চেপে ধরেছিলো সে। এবার সে তার কোমরের নিচের অংশে ধীরে ধীরে একটা উত্তেজনা অনুভব করছিলো। তার স্তনবৃন্ত দুটোও শক্ত হয়ে উঠছিলো। তার মাসিক হওয়ার সময় হয়ে এলো নাকি? না, এত সকাল সকাল হওয়ার কথা তো নয়! এটা কি যৌনকামনা? তা-ই যদি হয়, তাহলে এখন এটা নিয়ে সে কী করতে পারে? তার মাথায় কোনো মতলব আসছিলো না। তবে একটা কথা নিশ্চিত ছিলো যে, এ অবস্থায় কিছুই করা সম্ভব না। এ কামরায়, ছেলেটার বিছানায় অবশ্যই না।

 

শেষপর্যন্ত শেহেরাজাদে শার্টটাকে তার সঙ্গে নিয়ে যাবে বলেই ঠিক করেছিলো। কাজটা যে ঝুঁকির, তাতে কোনো সন্দেহ ছিলো না। ছেলেটার একটা শার্ট যে লাপাত্তা, সেটা তার মা সম্ভবত জেনে যাবে। এমনকি শার্টটা যে চুরি হয়ে গেছে সেটা বুঝতে না পারলেও, ভদ্রমহিলা হয়তো অবাক হয়ে ভাববে ওটা

কোথায় যেতে পারে। যে মহিলা তার বাড়িকে সারাক্ষণ এত নিখুঁত পরিপাটি করে রাখে, সে শুচিবায়ুগ্রস্ত না হয়েই যায় না। এখানে কিছু একটা হারিয়ে গেলে সেটা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত সে নিশ্চয় সারা বাড়ির আগাপাশতলা চষে ফেলবে, পুলিশের কুত্তার মতো। তখন তার দামি ছেলেটার কামরায় শেহেরাজাদে যে-জিনিসগুলো রেখে এসেছে, সেগুলোও নিশ্চয় তার চোখে পড়ে যাবে। কিন্তু এমনকি কথাটা বুঝতে পারার পরও সে শার্টটা ফেলে রেখে যেতে চাইলো না। তার মগজ তার মনকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়েছিলো।

 

এর বদলে সে ভাবতে শুরু করেছিলো, তার চিহ্ন হিসেবে এবার সে কী রেখে যাবে। এক্ষেত্রে নিজের প্যান্টিটাকেই তার সেরা বাছাই বলে মনে হয়েছিলো। ওটা ছিলো সাধারণ, সাদাসিধে চেহারার, তুলনামূলকভাবে নতুন, এবং সেদিন সকালে সদ্য পরা। এটাকে সে ছেলেটার ওয়ার্ডরোবের একেবারে পেছনদিকে লুকিযে রাখতে পারে। বিনিময় হিসেবে রেখে যাওয়ার জন্যে এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে? কিন্তু প্যান্টিটা খোলার পর সে দেখলো ওটার উরুসন্ধির মাঝখানের সেলাইয়ের জায়গাটায় ভেজা ভেজা ভাব। মনে হয় এটাও আমার যৌনকামনা থেকেই হয়েছে, সে ভেবেছিলো। নিজের কামুকতার দাগ লাগা কোনো জিনিস ছেলেটার কামরায় রেখে যেতে তার দ্বিধা হচ্ছিলো। এভাবে সে শুধু নিজেকেই আরো ছোট করে ফেলবে। প্যান্টিটা আবার পরে নিয়েছিলো সে আর ভাবছিলো অন্য কী জিনিস রেখে যাওয়া যায়।

 

শেহেরাজাদি তার গল্প বলা মাঝপথে হঠাৎ থামিয়ে দিল। অনেকক্ষণ ধরে সে একটা শব্দও উচ্চারণ করলো না। চোখ বন্ধ করে, শান্তভাবে শ্বাস নিতে নিতে শুয়ে রইলো সে। হাবারাও তার মতোই চুপচাপ শুয়ে রইলো। শেহেরাজাদের গল্প বলা আবার শুরু করার জন্যে অপেক্ষা করছিলো সে।

অবশেষে শেহেরাজাদে তার চোখ খুলে কথা বললো। “এই যে হাবারা সাহেব,” সে বললো। এই প্রথম তাকে নাম ধরে ডাকল সে। হাবারা তার দিকে তাকালো।

“তোমার কি মনে হয় এটা আমরা আরেকবার করতে পারি?”

“আমার মনে হয় করে ফেলা যায়,” হাবারা বললো।

তাই তারা আবার এক দফা যৌনসঙ্গম করল, যদিও এবারেরটা ছিলো আগের চেয়ে একদম আলাদা। উদ্দাম, কামার্ত, আর সবকিছু নিংড়ে দেয়া। শেহেরাজাদে যে কামতৃপ্তির চূড়ায় পৌঁছে গেলো তাতে কোনো ভুল নেই। পর পর কয়েকটা খিঁচুনির পর তার সারা শরীরটা কাঁপছিলো। এমনকি তার মুখের চেহারা পর্যন্ত পাল্টে গিয়েছিলো। হাবারার জন্যে এটা ছিলো প্রথম যৌবনের দিনগুলোতে শেহেরাজাদে যেমনটা ছিলো তা একনজর দেখতে পাওয়া। তার বাহুপাশে ধরা দেয়া এই নারীটি আসলে মনোচাঞ্চল্যের শিকার এক সপ্তদশী তরুণী, যে কিভাবে যেন পঁয়ত্রিশ বছর বয়সের এক মহিলার শরীরের মধ্যে আটকা পড়ে গেছে। হাবারা নিবিড়ভাবে অনুভব করতে পারছিলো সেই তরুণীকে, যার চোখ নিমীলিত, দেহ কম্পমান, যে মেয়েটা নিষ্পাপভাবে একটা ছেলের ঘামে ভেজা টি-শার্টের ঘ্রাণ নিচ্ছে।

 

এবারের যৌনমিলনের পর শেহেরাজাদে হাবারাকে আর কোনো গল্প বললো না। তার কনডমের বস্তুগুলোও পরীক্ষা করে দেখলো না সে। তারা শুধু পাশাপাশি চুপচাপ শুয়ে রইলো। শেহেরাজাদের চোখ দুটো ছিলো পুরোপুরি খোলা। সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো সে, যেভাবে একটা ল্যাম্প্রে মাছ তাকিয়ে তাকে জলের উজ্জ্বল উপরিতলের দিকে। হাবারা ভাবছিলো, সেও যদি অন্য কোনো স্থান আর কালের বাসিন্দা হয়ে এই নোবুতাকা হাবারা নামে সুস্পষ্ট চিহ্নিত একজন মানুষের খোলস থেকে বেরিয়ে গিয়ে একটা নামহীন ল্যাম্প্রে হয়ে যেতে পারতো তবে কত চমৎকার হতো। সে মনের চোখে নিজেকে আর শেহেরাজাদেকে পাশাপাশি দেখতে পেলো, তাদের চোষকগুলো একটা পাথরে আটকানো, তাদের শরীর দুলছে স্রোতের সঙ্গে, আর তারা তাদের ওপরে জলপৃষ্ঠের দিকে তাকিয়ে আছে কখন একটা মোটাসোটা রুইমাছ ব্যস্তসমস্ত হয়ে সাঁতরে যাবে তার অপেক্ষায়।

 

“তাহলে শার্টের বদলে সেদিন তুমি কী রেখে এসেছিলে?” নৈঃশব্দ্য ভেঙে হাবারা জিজ্ঞেস করলো।

শেহেরাজাদি সঙ্গে সঙ্গে তার প্রশ্নের জবাব দিলো না।

অবশেষে সে বললো, “কিছুই না। আমার সঙ্গে সেদিন যা কিছু ছিলো তার কোনোটাকেই ছেলেটার গায়ের ঘ্রাণওয়ালা সেই শার্টের সঙ্গে তুলনা করা যেতো না। তাই আমি শুধু শার্টটা নিয়েই চুপচাপ বেরিয়ে এসেছিলাম। আমার জীবনে সেই প্রথম আমি একটা নির্ভেজাল খাঁটি চুরি করেছিলাম।”

 

বারো দিন পর শেহেরাজাদে চতুর্থ বারের জন্যে ছেলেটার বাড়িতে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলো, সামনের দরজাটায় একটা নতুন তালা ঝুলছে। ওটার সোনালি রঙ দুপুরের রোদে চমকাচ্ছিলো, যেন ওটা গর্ব করছিলো তার দুর্ভেদ্যতা নিয়ে। এবং পাপোষের তলায় কোনো চাবি লুকানো ছিলো না। স্পষ্টতই, শার্টটা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ছেলেটার মায়ের সন্দেহের উদ্রেক হয়েছিলো। সে নিশ্চয় ওপরে-নিচে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে, যে-সময়ে তার আরো কিছু জিনিস চোখে পড়েছে, যেগুলো থেকে সে বুঝতে পেরেছে যে, তার বাড়িতে অদ্ভুত কিছু একটা ঘটছে। তার সহজাত বোধ ছিলো নির্ভুল, তার প্রতিক্রিয়া ছিলো দ্রুত।

ঘটনা এদিকে মোড় নেয়ায় শেহেরাজাদে কিছুটা হতাশ হয়েছিলো, কিন্তু সেইসঙ্গে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাসও ফেলেছিলো। তার মনে হয়েছিলো, কেউ যেন তার কাঁধ থেকে ভারী একটা বোঝা নামিয়ে নিয়েছে। এর মানে আমাকে আর তার বাড়িতে চুরি করে ঢুকতে হবে না, সে ভেবেছিলো। তালাটা না বদলালে ছেলেটার বাড়িতে তার গোপন অভিযান যে অনির্দিষ্ট কাল ধরে চলতে পারতো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটাও নিঃসন্দেহ যে, প্রতি অভিযানে তার কর্মকাণ্ডের পরিধি ক্রমশ বাড়তেই থাকতো। শেষপর্যন্ত কোনো একদিন সে বাড়িটার দোতলায় থাকাকালেই হয়তো পরিবারটির কোনো সদস্য এসে হাজির হতো। তার তখন পালিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা থাকতো না। তার কৃতকর্মের দায় থেকে রেহাই পেতে কিছু বলার উপায়ও থাকতো না। আগে হোক বা পরে, এরকম একটা ভবিষ্যতই তার জন্যে অপেক্ষা করছিলো, আর এর ফলাফলটা হতে পারতো সর্বনেশে। এখন সে এটার পাশ কাটাতে পারছিলো। বাজপাখির মতো চোখের জন্যে ছেলেটার মাকে হয়তো তার ধন্যবাদ জানানো উচিত ছিলো, যদিও সে-মহিলার সঙ্গে তার কখনো দেখাই হয় নি।

প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শেহেরাজাদে বুক ভরে ছেলেটার টি-শার্টটার ঘ্রাণ নিতো। ওটাকে পাশে নিয়ে ঘুমোতো সে। সকালে উঠে স্কুলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ার আগে সে ওটাকে কাগজে মুড়ে লুকিয়ে রেখে যেতো। তারপর রাতের খাওয়াশেষে মোড়ক খুলে আবার ওটা বের করে নিয়ে শুঁকতো আর বুকে চেপে ধরতো। তার দুর্ভাবনা ছিলো, যতই দিন যাবে, গন্ধটা ততই মিলিয়ে যেতে থাকবে। কিন্তু কার্যত সেটা ঘটে নি। ছেলেটার ঘামের গন্ধ শার্টটায় ভালোমতোই বসে গিয়েছিলো।

তখন ওই বাড়িতে চুরি করে আরেকবার ঢোকার যখন প্রশ্নই উঠছিলো না, শেহেরাজাদের মনের অবস্থা ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিলো। ক্লাসে সে আর অত দিবাস্বপ্ন দেখতো না, এবং শিক্ষকের কথাগুলো তার কানে আবার ঢুকতে শুরু করেছিলো। কিন্তু তারপরও তার মন প্রধানত পড়ে থাকতো শিক্ষকের কণ্ঠস্বরের দিকে নয়, বরং তার সহপাঠী ছেলেটার আচরণের দিকে। সে গোপনে তার ওপর নজর রাখতো,  খুঁজে বের করার চেষ্টা করতো তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন এসেছে কিনা, সে কিছু একটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এমন কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছে কিনা। কিন্তু ছেলেটা সবসময় যেরকম আচরণ করে এসেছে, এখনো ঠিক তেমনটাই করে যাচ্ছিলো। মাথাটা পেছনে হেলিয়ে দিয়ে সে হাসতো সবসময়ের মতোই অনাবিলভাবে, এবং শিক্ষকের প্রশ্নের জবাবও দিতো যথারীতি চটপট। ফুটবল খেলার সময় সে একইভাবে চিৎকার করতো আর ঘেমে নেয়েও যেতো একইভাবে। রোজকার গতানুগতিকতার বাইরে কোনাকিছুর চিহ্ন তার চোখে পড়ছিলো না — স্রেফ একজন আত্মবিশ্বাসী তরুণ, যেএকটা কুয়াশামুক্ত পরিচ্ছন্ন জীবন কাটাচ্ছে বলেই মনে হতো।

তারপরও শেহেরাজাদে কিন্তু ছেলেটার ওপরে ঝুলে থাকা একটা ছায়ার কথা জানতো। অথবা ছায়ার মতোই কিছু। আর কারোই সেটা জানার সম্ভাবনা একেবারেই ছিলো না। জানতো শুধুমাত্র শেহেরাজাদে নিজে (এবং একবার ভেবে দেখুন — সম্ভবত তার মা-ও)। বাড়িটায় তার তৃতীয় গোপন অনুপ্রবেশের সময় ছেলেটার ওয়ার্ডরোবের অনেক ভেতরের এক খাঁজের মধ্যে চতুরভাবে লুকিয়ে রাখা কয়েকটা পর্নো ম্যাগাজিন খুঁজে পেয়েছিলো সে। ওগুলো পা ফাঁক করে বসে থাকা আর নিজেদের যৌনাঙ্গগুলো উদারভাবে দেখাতে থাকা ন্যাংটো মেয়েছেলেদের ছবিতে ভর্তি। কিছু ছবিতে যৌনসঙ্গম দেখানো হয়েছে, যেখানে পুরুষরা তাদের শক্ত দণ্ডের মতো লিঙ্গ নারীদের অঙ্গে ঢুকিয়ে দিয়েছে যৌনমিলনের সবচেয়ে অস্বাভাবিক কিছু ভঙ্গিতে। এধরনের ম্যাগাজিন শেহেরাজাদে আগে কখনো দেখেনি। ছেলেটার পড়ার টেবিলে বসে সে ধীরে ধীরে ম্যাগাজিনগুলোয় চোখ বুলিয়েছিলো, প্রতিটি ছবি পর্যবেক্ষণ করেছিলো গভীর কৌতূহলের সঙ্গে। সে অনুমান করেছিলো, এসব ছবি দেখে দেখে ছেলেটা হস্তমৈথুন করে থাকে। চিন্তাটাকে তার কিন্তু মোটেও ন্যাক্কারজনক বলে মনে হয়নি। হস্তমৈথুনকে সে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটা ব্যাপার হিসেবেই ধরে নিয়েছিলো। অতগুলো শুক্রাণুকে কোথাও না কোথাও তো যেতেই হবে, ঠিক যেভাবে  মেয়েদের মাসিক হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে, একজন অল্পবয়সী তরুণের যেমনটা হওয়ার কথা, ছেলেটা ঠিক তেমনই। বীর নায়কও নয়, সাধুসন্তও নয়। এমনটা ভাবতে পেরে শেহেরাজাদে একধরনের স্বস্তি পেয়েছিলো।

 

“চুরি করে ওদের বাড়িতে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, আমার আবেগ জুড়িয়ে যেতে শুরু করেছিলো। এটা ছিলো এক ক্রমিক প্রক্রিয়া — দীর্ঘ, ঢালু একটা সৈকত থেকে জোয়ারের জল নেমে যাওয়ার মতো। খেয়াল করলাম, কিভাবে যেন তার শার্টটা আগের চেয়ে কম শুঁকছি এবং তার পেন্সিল আর ব্যাজ নাড়াচাড়ার পেছনেও আগের চেয়ে কম সময় দিচ্ছি। জ্বরটা ক্রমশ নেমে যাচ্ছিলো। আমার যেটার ছোঁয়াচ লেগেছিলো সেটা মানসিক বিকারের মতো কিছু নয়, বরং সত্যিকারের কিছু একটা। যতক্ষণ ওটা ছিলো, ততক্ষণ আমি কোনোকিছুই সোজাসুজি ভাবতে পারি নি। হয়তো প্রত্যেকেই জীবনের কোনো না কোনো পর্বে এরকম খ্যাপাটে সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়। অথবা হয়তো এমন একটা ব্যাপার শুধু আমার বেলাতেই ঘটেছে। তোমার নিজের বেলায় কেমন হয়েছে? তোমার কি কখনো এধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে?”

 

হাবারা মনে করার চেষ্টা করল, কিন্তু সেরকম কিছুই ভেবে পেলো না। “না, আমার মনে হয় অত বাড়াবাড়ি রকমের কিছু ঘটে নি,” সে বললো।

 

শেহেরাজাদের চেহারা দেখে মনে হলো, তার জবাবটা শুনে সে যেন খানিকটা হতাশই হয়েছে।

 

“যাই হোক, স্কুল ফাইন্যাল পাস করে বেরুনোর পর আমি তার ব্যাপারে সবকিছু ভুলে গিয়েছিলাম। এত তাড়াতাড়ি আর সহজে

 

 

 

 

 

 

যে, ব্যাপারটা কেমন যেন অদ্ভুতই ছিলো। ছেলেটার মধ্যে এমন কী ছিলো যে সতের বছর বয়সী আমি তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম? যতই চেষ্টা করি না কেন, কিছুই মনে করতে পারতাম না। জীবনটা অদ্ভুত, তাই না? এমুহূর্তে তুমি কিছু একটার ব্যাপারে সম্পূর্ণ মোহাবিষ্ট হয়ে পড়লে, ওটাকে তোমার করে নেয়ার জন্যে সবকিছু ত্যাগ করতে রাজি হয়ে গেলে, কিন্তু তারপর সামান্য একটু সময় পেরিয়ে যায়, বা তোমার পরিপ্রেক্ষিত একটুখানি পাল্টে যায়, আর হঠাৎ করেই তুমি দেখে চমকে যাও যে, দীপ্তি কতটা ম্লান হয়ে গেছে। আমি ওটা কী দেখছিলাম? তুমি অবাক হয়ে ভাবো। এখন এই হলো  গিয়ে অন্যের ঘরে আমার ‘গোপনে ঢুকে পড়া’ পর্বের কাহিনি।

 

ও এমনভাবে কথাটা বলছে, যেন সে পিকাসোর নীল পর্বের কথা বলছে, হাবারা ভাবলো। কিন্তু সে কী বলতে চাইছে সেটা সে ঠিকই বুঝলো।

 

বিছানার পাশে রাখা ঘড়িটার দিকে তাকালো শেহেরাজাদে। তার চলে যাওয়ার সময় প্রায় হয়ে গিয়েছিলো।

 

সবশেষে সে বললো, “আসলে কিন্তু গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যায় নি। কয়েক বছর পর আমি যখন নার্সিং স্কুলের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী, ভাগ্যের এক অদ্ভুত চক্র আমাদেরকে আবার পরস্পরের কাছে এনে দিয়েছিলো। এ ব্যাপারে তার মা একটা বড় ভূমিকা পালন করেছিলো। সত্যি বলতে কী, পুরো ঘটনাটাতেই রহস্যময় একটা ব্যাপার ছিলো। ঘটনাক্রম কেমন যেন একটা অবিশ্বাস্য মোড় নিয়েছিলো। তুমি কি এ ব্যাপারে শুনতে চাও?”

 

“শুনতে পেলে খুব ভালো লাগবে,” হাবারা বললো।

 

“তাহলে আমার পরের বার আসা পর্যন্ত তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে,” শেহেরাজাদে বললো। “আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। আমাকে এখন সোজা বাড়ি ফিরে রাতের রান্নাটা সারতে হবে।”

 

বিছানা থেকে নেমে কাপড় চোপড় পরে নিলো সে — প্যান্টি, ব্রা, মোজা, এবং সবশেষে তার স্কার্ট আর ব্লাউজ। হাবারা বিছানায় শুয়ে শুয়ে অলস চোখে তার নড়াচড়াগুলো দেখছিলো। হঠাৎ তার মনে হলো  যে, মেয়েদের কাপড় খোলার চেয়ে পরার দৃশ্য অনেক বেশি আকর্ষণীয় হতে পারে।

 

“তোমার জন্যে বিশেষ কোনো বই আনতে হবে?” দরজার দিকে এগিয়ে যেতে যেতে শেহেরাজাদে জিজ্ঞেস করলো।

 

“না, তেমনকিছু তো মনে পড়ছে না,” হাবারা জবাব দিল। আসলে সে যেটা চাইছিলো তা হলো, শেহেরাজাদে তার গল্পটা শেষ করুক। কিন্তু কথাটা সে মুখে প্রকাশ করলো না। করলে হয়ত তার শোনার সম্ভাবনাটাই নষ্ট হয়ে যেতো।

 

শেহেরাজাদের কথা ভাবতে ভাবতে সেদিন সকাল সকাল শুতে গেলো হাবারা। সম্ভবত আর কখনোই সে তাকে দেখবে না। ভাবনাটা তাকে কষ্ট দিচ্ছিলো। সম্ভাবনাটা ছিলো বড্ড বেশি বাস্তব। কোনো অঙ্গীকার, অকথিত বোঝাপড়া — ব্যক্তিগত ধরণের কোনো সম্পর্ক তাদের মধ্যে তো ছিলো না। অন্য কথায়, তাদের মধ্যে ছিলো ঘটনাচক্রে অন্য কারো তৈরি করে দেয়া এক দৈবাৎ সম্পর্ক, এবং অন্য কারো খেয়ালমতোই তা যেকোনো সময় শেষ হয়ে যেতে পারে। অন্য কথায়, তাদের সম্পর্কটা ছিলো একটা খুব সরু সুতোয় বাঁধা। সম্ভবত — না, নিশ্চিতভাবেই — সুতোটা একসময় ছিঁড়ে যাবে, আর তার সাথে ফুরিয়ে যাবে শেহেরাজাদের যত অদ্ভুত আর অচেনা গল্প শোনার সম্ভাবনা, যেগুলো সে কখনো হয়তো তাকে শোনাতো।

 

এমনটাও হতে পারে যে, হাবারা একসময় সবধরনের স্বাধীনতা পাওয়া থেকেই বঞ্চিত হবে, এবং সেক্ষেত্রে শুধু শেহেরাজাদে নয়, সব নারীই তার জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। আর কখনোই সে তাদের কোমল উষ্ণতায় প্রবেশ করতে পারবে না। আর কখনোই সে তাদের শরীরের সাড়া দেয়ার স্পন্দন অনুভব করতে পারবে না। তাকে এর চেয়েও বেশি পীড়া দিচ্ছিলো শেহেরাজাদের সঙ্গে যৌনমিলনের পর তারা নিবিড় অন্তরঙ্গতার যে-মুহূর্তগুলো কাটাতো, সেগুলো হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা। মহিলাদের সাথে তার কাটানো সময়গুলো তাকে একদিকে দিয়েছে বাস্তবতায় জড়িয়ে পড়ার আর অন্যদিকে বাস্তবতাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করার সুযোগ। শেহেরাজাদে তাকে এটাই দিয়েছে প্রচুর পরিমাণে। তার এই দান অফুরাণ ছিলো বটে। এটা হারানোর আশঙ্কাই হাবারার মন সবচেয়ে বেশি খারাপ করে দিয়েছিলো।

 

হাবারা তার চোখ বুঁজে ফেলল আর শেহেরাজাদেকে নিয়ে ভাবনা বন্ধ করে দিলো। তার বদলে সে ভাবতে লাগলো ল্যাম্প্রে মাছদের কথা। চোয়ালহীন ল্যাম্প্রেরা কিভাবে পাথরের সঙ্গে নিজেদের আটকে রাখে, লুকিয়ে থাকে শৈবালের মধ্যে, আর দুলতে থাকে জলের ঢেউয়ের সঙ্গে। সে নিজেকে ওই ল্যাম্প্রোদেরই একটা বলে কল্পনা করলো, আর অপেক্ষা করতে লাগলো কখন তার ওপর দিয়ে একটা রুইমাছকে ভেসে যেতে দেখা যাবে। কিন্তু যতই সে অপেক্ষা করুক, কোনো রুই মাছই ভেসে গেলো না। মোটাসোটা, রোগাপাতলা, কোনোরকমের রুইমাছেরই টিকি দেখা গেলো না। শেষ পর্যন্ত সূর্য অস্তাকাশে ঢলে পড়লো, আর এক অন্ধকার চাদরে ঢাকা পড়ে গেলো তার জগৎ।

 

জ্যোতির্ময় নন্দী, কবি, সাংবাদিক ও অনুবাদক

লাহোর প্রস্তাব বিকৃতির কারণে একাত্তর অনিবার্য হয়ে ওঠে

হোসাইন আনোয়ার ২৩ মার্চ ১৯৪০। পাকিস্তানিরা ভুলে গেছে ২৩ মার্চের ইতিহাস। একটি ভুল ইতিহাসের উপর ভিত্তি করেই ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবস পালিত হয় সমগ্র পাকিস্তানে।

ইফতার পার্টি নয়, সেদিন যেন তারার হাট বসেছিল পিটস্টপে

রুহু রুহেল সমাজ ও সংস্কৃতির বড় পরিচয় সম্প্রীতির অটুট বন্ধনে সামনের পথে অবিরাম এগিয়ে চলা। সাম্য সুন্দর স্বদেশ গঠনের জন্য প্রয়োজন বিবিধ মত ও পথকে

নভোচারী সুনিতা মহাকাশে ফুল ফোটায় পৃথিবীতে নারীর পায়ে শেকল পরায় কে?

প্রদীপ খাস্তগীর চমৎকার একটি সফল মহাকাশ সফর শেষ হয়েছে গত ১৮ মার্চ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে। গত বছরের ৬ জুন মাত্র ৮ দিনের

দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ: দর্শনের বিজ্ঞান

রাজেশ কান্তি দাশ দর্শনের ক্ষেত্রে বস্তু ও ভাবের দ্বন্দ্ব অতি প্রাচীন। খ্রিষ্টপূর্ব সময়ের। বস্তুবাদী দার্শনিকেরা মনে করেন বস্তু থেকে জাগতিক সব কিছুর উৎপত্তি। গ্রীক দার্শনিক

মানুষ ও মঙ্গল মানব

সরকার হুমায়ুন দুজন মহাকাশচারী- একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা মঙ্গল গ্রহ অভিযানে গেলেন। তারা নিরাপদে মঙ্গল গ্রহে অবতরণ করেন। সেখানে তাদেরকে অতিথি হিসেবে মঙ্গলবাসীরা সাদরে