মানুষ কতদূর যেতে পারে
মানুষ কতদূর যেত পারে? ধানের
চারা লাগানো থেকে শুরু করে
যখন জেনেছে সব ধান গাছই মা
হবার ক্ষমতা রাখে , সে-ই কিশোরী
সময় থেকে থোড় আসা সুডৌল দেহের
বুকের কারুকার্য , পাকা ছরা পর্যন্ত —-
কতদূর যেতে পারে কৃষক মানুষ?
অগাধ এই পৃথিবীর কোলে কতটা
নিষ্পাপ হলে জানতে পারে হয়ে ওঠা
শস্যের রহস্য? অন্ত:স্থল প্রবাহিত
মৃত্তিকার গূঢ় মহিমার গুণে এই
হয়ে ওঠা ধ্যানী শস্যমাঠ-
ঘুরে দাঁড়াবার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হতে পারে
এক বাজপাখি- ৭০ পেরুতে যার
পায়ের নখ, ইস্পাত কঠিন ঠোঁট ও ডানা
ভেঙে যাবার পর আত্মপ্রত্যয়ী
সে নিজেকে তৈরি করে সংগ্রামের
পথ বেছে নিয়ে বাসা বাঁধে উঁচু পাহাড়ে ;
আত্মশক্তির জোরে অপেক্ষা করে
নতুন ঠোঁট, নখ গজাবার- শেষে
গায়ে নতুন পালক গজাতে শুরু করলে
ফিরে পায় সাহসী জীবন, হয়ে ওঠে
পূর্বের চেয়ে আরও ক্ষিপ্র ও চৌকস
অনুপ্রেরণার উৎস স্থল-
নখ
হিংস্র রৌদ্রের নখ খামছে ধরছে
ধান শ্রমিকের মুখ—- তার ঘাম লোনা
উলঙ্গ বুক,কিষাণীর শোভাহীন ছেঁড়া পোড়া স্তনের মৌনতা—-
দেখ পাটক্ষেতে ছোট কোদালের কোপ ঢলে পড়া
ব্যথিত চারার পাশে
মৌন মাটির সাথে আমাদের
নির্লজ্জ ব্যবধান।
উপেক্ষা
ধান কাডা,রউদ পোড়া, আডি মাথা
বাড়ি বইয়া দ্যাখছ কি পাশে বইয়া
পাও ছাপ হুনছ কি গোড়া কাডা
গোছাদের কান্দন,হুনছ কি
রাত্রির কান্না ভেজা চউখ কৃষকের?
মহাযন লইয়া যায় সব ধান
গোলা খালি হাহাকার
শোষণের পাতা ফাঁদে অনাহারী
মাইনষের উপেক্ষিত ভাঙ্গা ঘর।
তোমার কাছে না ঘুমালে
তোমার কাছে না ঘুমালে ঘুম আসত না
তোমার জন্য না ফুরালে রোদ উঠত না,
তোমার চোখে না পুড়লে আর নিমের ডালে চাঁদ উঠত না—- জানতুম যদি
আসবে না আজ কেয়াপাতার নৌকো
আমার জলে ভাসত না; শরৎ এলে
সকাল সকাল বাড়ির পাশে পদ্মবিলে
যাওয়া হত না; শরীরে তোমার লুকানো
হৃদয় জানা হত না—- তোমার কাছে
থাকা আমার ব্রত হত না,সাগর পাড়ে
বসে বসে সূর্য ডোবা দেখা হত না—
এই পৃথিবী ভালোবাসা হত না,বোঝা
হত না আরেকটা রূপ বীভৎসতা —-