সাঈদ, তোমায় স্যালুট
আমিনুল ইসলাম
বিদেশ চালায় প্রেমের গুলি ফেলানী হয় লাশ
নিজ উঠোনে রাজার গুলি সাঈদ হারায় শ্বাস।
সাঈদ কিন্তু লুটেরা নয় নয় সে ছিনতাইকারী
চায়নি বসতে সিংহাসনে পাতেনি ফোনে আড়ি।
রাজার পথে দেয়নি কাঁটা চায়নি লুটের ভাগ
তবু কেন সে টার্গেট হলো তার ওপর কী রাগ?
মেধাবী সাঈদ বেরোবিতে ইংরেজিতে পড়ে
বিসিএস-এ নাম লেখাবে চাকরি আসবে ঘরে।
তবু সাঈদ গুলিবিদ্ধ! কী অপরাধ তার?
অন্যায় কোটা বাতিল চায় তাই সে রাজাকার!
হাজার লোকের উপস্থিতি ভিডিও ক্যামেরা অন
তবু গুলি চালায় পুলিশ রাজার অনুগ যম।
পুলিশ কেন হলো উইলিং এক্সিউকিশনার?
এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে সোসিয়লোজির স্যার।
রাজা তুমি মূর্খ বড়ো পুষেও হাজার জন
প-িত পুলিশ বুদ্ধিজীবী উপদেষ্টাগণ।
এত কথা বললে,Ñদিলে এত এত ভাষণ
জানলে নাকো কোন শক্তিতে শক্ত রাজার আসন।
জনগণই ক্ষমতার উৎস অন্য কেহ নয়
তাদের স্বার্থ নিয়ে তুমি করলে নয় ও ছয়!
বহু আগেই বলেছেন কবি স্বজন সদাই শ্রেয়
ঘরের কলস ফেলে তুমি ঘাটকে করলে প্রিয়?
ভুলে গেলে বায়ান্নকে ভুললে একাত্তর
নূর হোসেনকে মুছে ফেলে রচলে মোহের ঘোর।
আসাদ বরকত নূর সাঈদ কেউই একজন নয়
জনগণের কণ্ঠ তারা তাই অকুতোভয়।
ইতিহাসে তারাই উজ্জ্বল সোনার মুকুটধারী
ওদের হত্যা করে রাজা তোমরা স্বৈরাচারী।
তাই তো সাঈদ টার্নিং পয়েন্ট মোহনামাখা নাম
তার হত্যায় কোটার মিছিল গণ-অভ্যুত্থান।
সাঈদ এখন বিশ্বনায়ক ন্যায়ের পক্ষের নাম
কবির হাতে কবিতা সে শিল্পীর কণ্ঠে গান।
তার মৃত্যু প্রাণ জোগায় আধমরাদের গানে
পদ্মার মৃত্যু মেঘনা হয়ে ছুটে দ্বিগুণ প্রাণে।
মুক্ত স্বদেশ মুক্ত উঠোন, মুক্ত কণ্ঠস্বর
সাঈদ, তোমায় স্যালুট জানাই নেই কোনো আর ডর!
===========================
কোজাগরীর চাঁদ
সাথী দাশ
আকাশের গায়ে ছেড়া ছেড়া মেঘ, দিন শেষের
পাঁচমিশালী বর্ণচ্ছটা। ধীরে-ধীরে খুব ধীরে
সন্ধেটা ডানা মেলছে। শরতের সন্ধেটা
ক্রমঃশ গাঢ় হচ্ছে। চোখে দেখা দূরে মাছ ধরা
নৌকার সারি, রাত জাগা বাতি জ্বলে
নৌকায় নৌকায় ব্রীজের খাঁজে। কী এক
অপূর্ব দৃশ্যমান ছবি, রাতের আঁধারে হঠাৎই
ধরা দেয় চোখে। খোলা খোলা আকাশের নীচে
হাওয়ার আমেজে ছুটি ছুটি গন্ধ, মুছে যাচ্ছিল ক্লান্তি শ্রান্তি;
আমার মধ্যে সুর বাজছে অবিকল যেন সেতারের ঝংকার।
নিজস্ব বিশ্বাস আর উপলব্ধির জগৎ বদলে যায়;
অনুভবে ভেসে উঠে বিদ্যুৎ নিভে গেছে।
মাথার উপরে চাঁদ জ্যোৎ¯œার আভা জলের উপর
মনে হয় ধুয়ে দিচ্ছে জমে থাকা মলিনতা। শব্দহীন নীরবতায়
ভালোবাসা বোঝাতে চুম্বনে চুম্বনে ভাসিয়ে দিচ্ছে
অপার্থিব সুন্দরের পবিত্র প্রক্রিয়া।
================================
শরীর জুড়ে কলহ–বিবাদ
ওমর কায়সার
ডান চোখ
ঝরনার কলহাস্যে দেখে গানে ভাসা জুম
অন্য চোখ
জলের গভীরে পায় পাথরের ঘুম।
এক চোখ
অরণ্যে কোথাও দেখে ব্যাকুল নিষাদ
বাম চোখে
গোধুলির অন্ধকারে হরিণী বিষাদ।
এক চোখ রাত্রি ভাবে, অন্য চোখ চাঁদ
বাম যদি মায়া বোঝে, ডান বোঝে ফাঁদ।
বাম কানে
ভেসে আসে অশ্বক্ষুরধ্বনি
ডান কান
দামামা বাজায়, শোনায় অশনি।
এ কদম
চলে যায় দূরে, অন্য তেপান্তরে
ও কদম
পড়ে থাকে একা, শূন্য কোনো ঘরে।
এ রকম আন্তঃদেহ কলহ–বিবাদে
নিঝুম আত্মার ঘরে কেউ যেন কাঁদে।
সমস্ত শরীর জুড়ে কটু বাক্য বিতর্কের ক্ষত
গৃহযুদ্ধে পুড়ে ছাই মানচিত্রের মতো।
===============================
সোনালু ফুলের রেণু
শামীম নওরোজ
বহুদিন লালন করেছি হারিয়ে ফেলার শখ
রক্তাক্ত পায়ের কাটা-দাগ দেখে উড়ে গেছে বক
নিজের যন্ত্রণা দেখি আপামর ফসলের ক্ষেতে
কেউ একজন এসেছিলো জানি অলৌকিক রাতে
ফিরে গেছে, ফিরে যাচ্ছি বসতের মায়া ছেঁড়ে
আঁধারে দেখেছি তাকে আলোকিত বিষণœ নিগড়ে
নিজস্ব অসুখে কাঁপে নিয়োজিত জোছনার মায়া
বিছানায় রক্তাক্ত পায়ের মতো এলোমেলো ছায়া
ভুলে গেছি বিয়ের কাহিনি, একা থাকা স্বর্ণসুখ
সুখের চাঁদরে ঢেকে দেখতে চেয়েছি প্রতœমুখ
দেখালে না অবয়ব, রক্তাক্ত পায়ের ছবি আছে
ভালোবাসা ব্যাধ ও ব্যাধিনী বোঝে, পাখিনৃত্য নাচে
বাবার মোকামে মানত করেছি, যদি বৃষ্টি হয়
বাড়ি ফেরে বিকালে গোকুল, অস্পষ্ট আঁধারে নয়
================================
বাবুর জন্যে
বিপুল বড়ুয়া
বাবুর ম্যালা পয়সাপাতি টুকরো কাগজ ভাঁজ করা
ছাদ দোতলায় হাঁটা হাঁটি এই তো অফিস কাজ করা।
দাদার খাতা-দিদির কলম লুকিয়ে নিয়ে দাগ টানা
হিজি বিজি এঁকে টেকে বললো দেখো বাঘ টা না।
গাড়ি কোথায় তাও আছে বাক্সে বসে লোক ডাকে
মেজাজ চড়া হম্বি করে চশমা কালোয় চোখ ঢাকে।
দারুণ খেলে ড্রয়িং রুমে বিশ্বকাপের কাঁপায় মাঠ
বল উড়িয়ে কোথায় ফেলে বেজায় দূরে বাঁ পায় মাঠ।
পড়ছে থুকু অনেক পড়া পাস দিয়েছে ভার্সিটির
কানে কানে কানতালি হল¬া-মিছিল-কার সিটির।
জামা জুতো সাহেব সুবো সবাই হাসে বেশ বাবু
বড়ো হয়ে অনেক বড়ো খবর সবার নেস বাবু।
অনেক কিছু ভাবছে বাবু দুই চোখের ঘুম পালায়
কাজ রয়েছে অনেক বাকি খাওয়া-দাওয়ার ধুম পালায়।
বাবু এখন অনেক বোঝে কোনো কিছুই হালকা না
চোখ কান খোলা রাখে নয়কো মোটে তাল কানা।
=====================================
দ্রোহী মাঝি
হো সে ই ন আ জি জ
ব্যাঙ! লাফালাফি করে হয় সাপের খাবার
দ্রুতগতি হরিণেরও স্থান হয় বাঘের পেটে।
বানরের দেশ হয় না, ঠিকানা হয় না কভু
লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বেড়ায় এগাছ ওগাছ
কখনো হামলে পড়ে লোকালয় করে তছনছ
শেষে তারও গলায় উঠে বন্দিত্বের শিকল।
আমি আজন্ম আপোষহীন, বেয়ে গেলাম তরী
স্রোতের অনুকূলে নয়, প্রতিকূলে
সমুদ্রের মোহনা ডিঙিয়ে খরস্রোতা নদীপথ ধরে
উজানে, মানুষের সমৃদ্ধ বসতির খোঁজে …
দেশ ও নারীর কাছে যোদ্ধার চাহিদা ভীষণ
যোদ্ধা না হলে প্রেমিক হওয়া সাজে কি পুরুষের!
================================
এই বিজয় তারুণ্যের
মুস্তফা হাবীব
একাত্তরের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম,
মায়ের দামাল ছেলেরা ক্ষেপে ওঠে অণির্বাণ
আগ্রাসী পাকশত্রকে পরাস্ত করে স্বাধীন করে
পাতাবাহার রঙের একটি দেশ, আমাদের বাংলাদেশ।
তারপর কিছুদিন যেতে না যেতে চারদিকে মেঘ জমে
সমূহঃ অর্জন ধুলায় গড়াগড়ি যায়
পাথরের কান্না দেখে কাঁদে স্বজন হারানো পিতৃপরিজন
রাহাজানি আর স্বজনপ্রীতির নির্লজ্জ উত্থানে বিমর্ষ জন্মভূমি।
দেখলাম,অরক্ষিত এই পরাধীন এই দেশে
স্বদেশি মীরজাফরের ধুলিঝর উল্লাস,
আয়নাঘরে গুম হওয়া কাঁচাপাতার তীব্র আর্তনাদ ,
পাষাণ দেবীর প্রতিহিংসার ঝাঁঝালো ধ্বনিতে
থমকে দাঁড়ায় পৃথিবী, অপয়া মাদলের তালে তালে
চলে চেতনাখোর বেনে- বেনিয়াদের মহাহরিলুট।
অতঃপর ঝড় ওঠে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ঝড় ;
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে ছাত্রজনতার মুক্তিপণ লড়াইয়ে
ভেঙে চূর্ণ বিচূর্ণ বেহায়া স্বৈরিনীর শিরদাঁড়া- ডালপালা।
পাঁচ আগষ্ট দুই হাজার চব্বিশে
আবার হেসে ওঠে স্বপ্নের দেশ , লাল সূর্যের পতাকা,
এ বিজয় তারুণ্যের, এ বিজয় মুক্তিকামী বাংলার সব মানুষের।
=============================
আগ্নেয়গিরি
কাজী লাবণ্য
সুদীর্ঘকাল ধরে অচলায়তনের চাকায় ঘুরছিল এই পেষণকাল
যন্তর-মন্তর ঘরের আয়নায় দৃষ্টি রেখে ঘুমিয়ে ছিল কত কত
আক্ষেপ, ক্ষোভ, আর উগরে আসা বমি।
কোটার বোটা আলগা হতেই মুখ খুলে যায় আগ্নেয়গিরির।
পোষা পেটোয়া বাহিনীর অন্ধ কাজলের গন্ধে
অনির্বাণ আগ্নেয়গিরির লেলিহান লাভাকে দমাতে চাও?
সারি ধরে মর্গে পাঠাও? ক্রীড়ারত ফেরেশতার মুখ
আকাশের গায়ে সেঁটে দিলে, মেঘেরাও বিপ্লবী হয়ে ওঠে।
লাভা চেন? লাভা? জেনে রাখ,
ওই নখ, ওই জিভ, ওই জং ধরা নমরুদের কাহিনি
পুনঃ মঞ্চস্থ হবে, উত্তপ্ত লাভার মঞ্চে।
তাকিয়ে দেখ, বাংলার আকাশ ঢাকা পড়েছে
আবাবিলের ডানায়,
তাদের ঠোঁটে
একটা নয় অগুনতি নুরিতে ঝলকে উঠছে
শাণিত তরবারির মৃত্যু পরোয়ানা।
=============================
ভগবানের মহীনি রুপ
বিদ্যুৎ কুমার দাশ
“যদি গৌর না হইত, তবে কি হইত,
কেমনে ধরিতাম দে’।
রাধার মহিমা, প্রেম-রসসীমা
জগতে জানাত কে?”
ভাজ পরা বালিয়াড়ি-
নেমে গেছে সৈকতে-
কে জলে নেমে
সাঁতার শেখে-
কে জানে?
মানুষের রুপ এত অপরুপ-
ভগবানের নাকি মহীনি রুপ।
=========================
জন্মান্ধ ঘোড়া
বঙ্গ রাখাল
কেমন ছিল আমাদের দুঃখ ভরা রাত কিংবা দিন
দূরে কোথাও মায়ের হৃদপি-েÑজন্মান্ধ ঘোড়া
ছড়িয়ে দিলÑধর্মের দ্রোহী বিষ, ব্লু-ফিল্ম, নাগরিক কলহ
রাষ্ট্রের ঘাপটি মারা রাজনীতিÑ আড়ালে গণিকা পোষে।
ঘোড়া প্রতিনিয়ত দাপিয়ে ফেলেÑ উন্নয়ন স্বদেশেÑ
এ প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে।
জনগণ: দ্রব্যমূল্যের লাগাম ধরে খেয়ে যায় বিস্বাদী মুখে…
গলি পথে অচেনা পথিক
খুঁজে ফেরে হারানো দীর্ঘশ্বাস…
==========================
একটি অথেনটিক প্রেস রিলিজ
হোসাইন আনোয়ার
যদি পারো ভালোবেসো, অবজ্ঞা করো না
ভালোবাসা কোনো স্প্যানিশ কিংম্বা জাপানি শব্দ নয়
ভালোবাসাকে ব্যঙ্গ করোনা কখনো।
ভালোবাসা কোনো বিক্রয় যোগ্য পণ্য নয়
ইচ্ছে হলেই বিক্রি করা যায় না।
ভালোবাসা ম্যাকবেথ নাটকের সেই ছেনালীও নয়
যে আচ্ছন্ন করে রাখে, মুক্ত করে বুকের বসন
ফিন্ ফিনে শিপন শাড়িতে।
ভালোবাসা অবিশ^াসী ঝড়ো হাওয়ায় বেড়ে ওঠা কোনো বিষবৃক্ষও নয়
অথবা নির্ঘুম রাতের অ্যাস্ট্রেতে জমানো কোনো ছাইয়ের পাহাড়ও নয়।
ভালোবাসা হল মাতৃজঠরে থাকা পিতার প্রথম রক্ত বিন্দু
যার মৃত্যুর চিন্তা থাকে জন্মের ভেতর।
===============================
ঘোলাটে আয়নায় বিপন্নতার মুখ
মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ্
পূর্বাচলের দ্বারে ঠিকরে পড়া রোদ খেতে
ফড়িংটা লেবুর কাঁটায় রক্তাক্ত হোলো!
মন এবং মৃত্তিকার গভীর ভাঁজ খুলে
সদ্য প্রসূত সবুজ প্রাণের স্রোতকে
স্বাগতম জানালো স্বাগতিক মেঘ।
জলজ প্রেমের চটুলতায় ক্লোরোফিল
এখন সবুজ সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হয়েও বিবাগী।
সবুজ চেতনার পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা
অবারিত দুঃসময়ের ঢলে ডুবে যায়
গণতন্ত্র, এখন বিলাপ করছে।
বিপণন তারুণ্যের হট্টগোলে
খেই হারিয়ে যায় দেশপ্রেম।
নিষিদ্ধ স্লোগানগুলো উৎরে যায়,
কালের দেয়ালে প্রতিধ্বনি তুলছে
পরাজিত হায়েনা।
=================================
আসব আবার ফিরে
(ফারহান ফাইয়াজ স্মরণ)
হাফিজ রহমান
এইযে আমার চলে যাওয়া, এইযে তোমার কষ্ট
ভুলে তুমি যেও না মা, বাবাও যেন না ভোলে!
স্বপ্ন চোখে চলে যাওয়া, এযে বড় অতৃপ্তি
এখন আমার যাওয়ার সাময়? তবুও কেন রক্তঝরা,
আর যেন না রক্তঝরে, আর নয় কোন মৃত্যু,
এইযে হঠাৎ চলে যাওয়া, ইচ্ছে-পূরণ কি হবে?
তোমার মুখের হাসি মাগো আর কি গো মা ঝরবে?
আমার সকল ইচ্ছেগুলো ছড়িয়ে যাক ভবিষ্যতে
ইচ্ছেগুলো পূরণ হবে, হবেই- নইলে তারাও রক্ত দেবে!
ইচ্ছে-পূরণ হলে ওরা আসবে ফিরে ঘরে,
ওদের মাঝেই মাগো আমি আসব আবার ফিরে!
ফারহান নয়, হয়তো অন্য নামে,
অন্য কোন অবয়বে, অন্য কোন ঘরে,
প্রতিশ্রুতি দিলাম মাগো আসব আমি ফিরে!
============================
রক্তখেকো
দালান জাহান
আমাদের উপর রোলার গেলো
রোলারের গল্প নিয়ে কৌতুক শুরু করলো দানবেরা।
দানবদের হাত আকাশ সমান
তাদের লম্বা হাত বিলিয়ে দিলো অসুস্থতা
আমাদের একেকটা ঘর হয়ে উঠলো হাসপাতাল।
আমরা হাসপাতালকে বুকে নিলাম
মৃত্যু জেল ও গুমের ভয়ে
মিথ্যে বোতলে প্রদর্শিত হলো সংবাদসংস্থাগুলো।
আমরা সংবাদ শুনতে শুনতে বধির হয়ে গেলাম
মোমরক্ত গলতে গলতে পাহাড় হলো
আমাদের শিশু ও কিশোরের হাড়
মৃত্যু দিয়ে রুখে দিলো।
আমরা আবারও শিখলাম
স্বাধীনতা এক রক্তখেকো।
===========================
একজন কাপুরুষ কবির আত্মকথন
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ
কে না জানতো….?
যেভাবে হামানদিস্তায় গুঁড়া হচ্ছিলো মন, মনন, মেধা….
উদভ্রান্ত পথিক কোথাও কি খুঁজে পাবে আলোক
অচিরেই একদিন লাবণ্যহীন হবে এই নক্ষত্রলোক!
দারুচিনি দ্বীপ থেকে কিছু কথার কথা উড়ে এলো
উড়ে এলো আরো কিছু এলোকেশী শব্দের দ্যোতনা
যে একবার ভালোবেসে মরেছিলো,
সে কেন আবার ভুখা রাজপথে মরতে গেলো?
আমি ফরাসী বিপ্লবের কথা ঘুর্ণাক্ষরেও বলছি না
রুশো, ভলটেয়ার তাঁদেরকেও কবর ফুঁড়ে তুলে আনছি না
যে বলেছিলো কীর্তিমানের মৃত্যু নেই, তার কথা বলছি!
আমি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের কথা বলছি
আমি পানি লাগবে..পানি…পানি…সেই মুগ্ধ’র কথা বলছি!
তবুও আমি নিরাক পড়া আকাশে আলোর ঝলকানি দেখি
কপালের ভাঁজে ভাঁজে প্রেমপত্র লিখি
চোখে আঙুল দিয়ে উপলব্ধির দরজা-জানলা বন্ধ রাখি!
এর চেয়ে বেশি আর কী আছে আশা
এর চেয়ে বেশি আর কীভাবে প্রকাশ করি ভালোবাসা?
তবুও আসল কথাটি হয়নি বলা
আজও কাপুরুষ কবি রুপকের অন্তরালে তা দিয়েছি বলী
বলতে পারো, এভাবে আর কতোকাল চলবে….
এক নপুংসক কবির হাতে সত্যের জলাঞ্জলি…???
========================
মহাবিশ্বের প্রণয়লীলা
রওশন মতিন
বাঁধ ভাঙা অভিমনী অশ্রুতে ভাঙে বুকের দু-কূল,
সব অভিমান মিশে শেষে মহাসমুদ্রে বিবসনা সৈকতে,
যৌবন জোয়ারে কামার্ত উপস্থিতি, ভালবাসার নগ্নতা স্মারক,
এই পৃথিবীর ঠিকানা বদলে যায়, অন্য এক পৃথিবীতে,
গ্রহ-নক্ষত্র দূরান্তরে গোধুলি ভালবাসায় সিক্ত মানব-মানবীর নগ্ন-শরীর,
চোখের কোনে আনন্দ অশ্রু গড়ায়, ভালবাসায় অদম্য আপ্লুত,
খুলে যায় শরীরের বেবাক জানালা-কপাট, স্বাধীনতার-
উত্তাল গণজাগরণে মুক্তির নিঃস্বাশ, ভাঙ্গাংকুর, অর্গজাম-আদিরস,
লিঙ্গের উত্থান-মুক্তিকামী রাইফেলার বজ্র নির্ঘোষ গর্জনের মতো,
খাঁচামুক্ত পাখির স্বাধীনতার আকাশে অবাধ উড়াল,
কাল-মহাকাল পেরিয়ে অণু-পরমাণুর বিগ-ব্যাঙ চুম্বুক আকর্ষণে,
জীবনের প্রথম অঙ্কুর, মহাবিশ্বের প্রণয়লীলা, জাগ্রত স্বাধীনতার,
আদিম কোলাহলে নিমগ্ন প্রমত্ত মিলনের গোধুলি স্বর্গ-কানন।
=================================
মানুষপোড়া আগুন–মুদ্রিত ছায়া
সাজ্জাদুর রহমান
বিকেলের মাঝখানে উছলে ওঠে
বেদনার আড়াল
গ্রহে গ্রহে ঝলসে ওঠে রুটির বায়না
নিদ্রিত রাত্রির নদী বেয়ে নেমে আসে
ভেজা ক্ষুধার নোনা ঘ্রাণ
আমাদের জীবনের মর্চেপড়া তালায়
শুধু অন্ধকার হাতল ধরে থাকে ফণা তুলে
দীর্ঘ হাইফেন পেরিয়ে যেতে
বিকল হয় চাবির খাঁজকাটা দাঁত।
ধারালো ক্ষুধার ফুটপাত আটকানোর
ব্যর্থ চেষ্টায় মৃত্যু বরণ করে অগ্নি-উল্কা
ভাঙা ম্যানহোলে ডুবে যায়
মানুষপোড়া আগুন- মুদ্রিত ছায়া
না ফেরার প্রস্তুতি শূণ্যতায় অঙ্গীকারবদ্ধ ।
পৃথিবীর এরকম কবর বিস্তর লুকিয়ে আছে
মৃত কান্নার ছোট্ট বুকে।
==============================
পরিচয়
বিপ্রতীপ অপু
শাড়ির আঁচল শুঁকে বলে দিতে পারি
কোনটা আমার মায়ের;
বোন কিংবা ঠাম্মার অথবা প্রিয়তমা’র।
শরীর বেয়ে ঝরে পড়া ঘামেরও থাকে
আলাদা বর্ণ পরিচয়।
যাতে করে বুঝে নিতে পারি আমার
বাবার উপস্থিতি।
তামাক পোড়া উৎকট গন্ধের সাথে
নোনা ঘাম মিশে গেলে যে ভারী ও মিশ্র সুবাস;
সেটি আমার বাবা।
মায়ের চোখের নোনা জল আমি স্পর্শ করে দেখেছি
সেখানেও বাস করে অযুত-নিযুত মা।
আহা,যদি জিভে তুলে একবার চেখে দেখতাম
মায়ের অশ্রুর স্বাদ কতোটা বেদনাময়।
যদি একবার বাবার জুতোর সুকতলা শুঁকে দেখতে পারতাম
কতটা স্নেহের যাঁতায় পিষ্ট হয়ে-
নিজের দেহের মতো ক্ষয়ে যায় জুতোর সুকতলা।
যাপিত জীবনের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকা
সুবাসগুলো এক করে যদি খুঁজে নিতে পারতাম
কে আমার আদি পিতা।
===========================
বিষবাণ
আবদুর রাজ্জাক খান
দোটানার দোলাচলে আনমনে পথচলা
উদাসী হাওয়ার ঝাপটায় সম্বিৎ ফিরে পাওয়া,
শ্বাপদসংকুল বনে
কেবল নাগিনীর কালো ছায়া।
ভুলতে না পারা অজস্র স্মৃতির পাহাড়
ধ্বনি প্রতিধ্বনিতে ঠাসা সম্ভ্রমের বলাৎকার,
অশ্লীল শব্দবাণ আর হায়েনার চিৎকার।
দিকে দিকে অস্ফুট নাগিনীর শ্বাস
ছোবল শংকায় সব পুরনো অভিলাষ,
নিথর চোখে পিশাচিনীর মায়াছল,
ভেসে বেড়ায় যেন অভিশপ্ত নোনাজল।
হিমশীতল পবনস্রোতে ওস্ঠাগত প্রাণ,
গোধুলির লালিমায় রবির কর্দমাক্ত অস্তযান,
বিস্মৃত স্মৃতি, দংশিত শলীল, নাগিনীর বিষবাণ।
=============================
সাঁকোতট
ওসমান গণি
দাপুনিয়া ওয়ারুক মাঝে বনুড়িয়া—
অস্ফুট স্বদেশী ছাপ সাঁকোতটে
ঝিঁঝির বৃন্দগান মৃদু বেজে ওঠে
সিরাতের হলুদ পৃষ্ঠা গুলি ভিজে যাচ্ছে
ঝুপঝুপ বৃষ্টির সন্ধ্যায়—
সাঁকোতটে হারানো কবিতা খুঁজি
পূর্বপুরুষের কালো মুক্তোয়
বিস্মৃতির জলে ফাউন্টেনপেন লেখে না কেউ
বিড়ির দোকানে বসে দিনভর নির্জনতা।
অত শূন্যতা সাঁকোতটে!
======================================
নদীক্রান্ত
নাদিয়া ফারহানা
নদীক্রান্ত নেমে আসে
বেনী হয়ে দুলে দুলে
ছুঁতে চায় বিলের জল
তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক।
রাত্রি হলে ফোঁটায় ফুল
সৌরভে তার ছড়ায় কুল
ভোর হতেই ঝরে পরে
মনখারাপের নিচুল ফুল।
হিজলের রূপে ছুটে যাই
তাকিয়ে থাকি অপলক
ঝিরিঝিরি পাতার সুরে
কষ্টের কথা নিষ্পন্দ।
জলের কাব্য হিজল ফুল
ছুঁতে পায় না জলকে।
ঝুঁকে ঝুঁকে ছুঁতে চায়
ছোঁয়া যায় না মনকে।
জলের পাড়েই ঝরে পড়ে
বিছিয়ে লাল বিছানা
তবুও কি জল বোঝে
নদীক্রান্তের কান্না?
============================
ইতিহাস
রোকসানা আনোয়ার
কে যেন বলছিল আরো কবর খুঁড়ে রাখো।
আমি লাশ চাই।
কবরে যেতে কি লাশ হতে হয়?
কত লাশ তো বেওয়ারিশ হয়ে রয়।
কত প্রাণ তো মরেও বেঁচে রয়।
আবু সাঈদ তুমি তো মরনি।
মুগ্ধ কি মরেছে?
আবু সাঈদের প্রথম বুক পেতে নেওয়া
গুলি, মুগ্ধর পানি লাগবে পানি?
এগুলো কোন সাধারণ কিছু নয়।
একটি জাতির ইতিহাস নির্মাণ করতে যেমন রক্ত দিতে হয়।
সেই রক্তে লেখা বাংলাদেশের অকুতোভয় ছাত্ররা
ইতিহাস হয়ে কথা কয়।
============================
আদর্শ আজ বোকার নীতি
জেসমিন সুলতানা চৌধুরী
বেকারত্বে করুণ পথে অরুণ আলোর যাত্রী
সেই সুযোগে ডাক দিয়ে যায় আঁধার কালো রাত্রি।
আদর্শ আজ বোকার নীতি পাহাড় সমান বাধা
ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে টানছে গোলকধাঁধা।
টর্চার সেলের বিরূপ প্রভাব মরছে ধুঁকে ধুঁকে,
নেই যেন কেউ এই ভীতিকর পরিণতি রুখে।
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে বিভোর অপার তরুণ শক্তি ,
অতল গর্ভে যায় হারিয়ে ‘ টু পাইস’ এ ভক্তি।
রাজনীতিরই বিষবাষ্প অন্ধকারে ঠেলে
স্বার্থনেশায় অন্ধ হয়ে গভীর কূপে ফেলে।
সর্বনাশা প্রবণতা খায় গিলে এই দেশকে
অধ্যয়নকে রাখছে দূরে উস্কে দিয়ে দ্বেষ কে !
নয় পথে আর অনিশ্চিতে এক মুহূর্ত যাত্রা
ভবিষ্যতের সেই পথে দিই বিশালাকার মাত্রা,
কর্ম করে ন্যায়ের পথে গড়তে পারি মিত্র।
নয় সুদূরে জ্ঞানগরিমার উজ্জ্বলতর চিত্র ।
সময়ের কাজ চাই সময়ে, হোক আমাদের রীতি
দূর হয়ে যাক মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা ভীতি।
উদ্যমে তাই যাই এগিয়ে সময় কাটুক কর্মে
সফলতা নাড়বে কড়া কোমল দেহের ঘর্মে ।
===========================
বুকের অতলে রাত পুষি
সৈয়দ ইবনুজ্জামান
বিরান ভিটায় একটা নিস্তদ্ধ রাতের মত একা
বোকা নাবিকের দীর্ঘশ^াস নিয়ে বেঁচে আছি আজো !
কিষাণ বধূর খিলখিলে নবান্নের রাতে
ধান ভানতো ভিটের উঠোন ঘরে
ও নতুন বউ, হাসিস কেনে?
ডালিম তলা শুকিয়েছে সেই কবে!
নিশাকাল এত একা কেন
বিরান ভিটেয় অথবা বোকা নাবিকের বুকের অতলে !
============================
শ্রাবণে মগন হই
সারমিন চৌধুরী
এসো আজ শ্রাবণে মগন হই
লোচনের সমস্ত উষ্ণ নোনাজল ঝরিয়ে
মিলেমিশে সমুদ্র ভেসে যাই অনন্তের পানে,
যেখানে নিরবচ্ছিন্ন নির্জনতার লহরি
জড়িয়ে রাখবে আমাদের অটুট বন্ধনে।
শীতল পরশে মন মাতাবে রিনিঝিনি বৃষ্টি
কদম,খেয়া,হাসনাহেনা,ফুলের সৌরভে
তনু-মন চঞ্চল হয়ে উঠবে প্রেম আনন্দে।
জ্যাৎস্নারাতে নৈঃশব্দের অতলে ডুবে,
বোগেনভিলিয়ার বুকে সাজাবো বাসর।
কান পেতে শুনবো শুধু বৃষ্টির আলাপন
সূরের মূর্ছনায় হারিয়ে যাবো দু’জন;
আবার ভেসে উঠবো বৃষ্টিরই আঁজলায়।
তুমি আলতো করে ছুঁয়ে দিবে চিবুক
আমাদের সঙ্গমে খিলখিলিয়ে উঠবে ধরণী
প্রজাপতি আর ফড়িং চন্দ্রিল রেণুতে
আবার ডুবাবে তাদের চঞ্চুটুকু সানন্দে।
আকাশে জাগবে নীলাম্বর রাশি রাশি;
এমন করে শ্রাবণের আবেশে লালিত হবে
ধূসর স্বপ্নগুলো পুনরায় কামনার রঙে
বর্ষাস্নানে ভুলে শোক,দুঃখ,বেদনার সংলাপ
আমরা ভালোবেসে মগন হবো বারেবার
============================
ধর্ম, মাটি না অস্তিত্ব
সিদ্ধার্থ
আমি কোন দলের মতের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে নই
তবুও এই অন্তর্দহন কষ্ট নীববে সই
শুধু নিজেকে এই প্রশ্ন করি
জাতিকে প্রশ্ন করি
ধর্ম নিরপেক্ষ দলকে প্রশ্ন করি
আমার দেশের সংবিধানকে প্রশ্ন করি
আমরা কোন স্বাধীনতা চেয়েছিলাম
স্বাধীনতার এতোটা পথ পেরিয়ে
আর কি বা পেলাম
আর কি বা হারাচ্ছি
দিন দিন
দৃষ্টি মলিন
কে বলে আমি চিন্তিত নই
কোন ভাঙনে ভেঙে ভেঙে
কোন অশনি অন্ধকারে বিলিন হচ্ছি
ধর্ম, মাটি না অস্তিত্ব
এই ভেবে
বিশ্মিত হই
========================
নান্টু ঘটক
অপু বড়ুয়া
নান্টু ঘটক দেখান চটক
চশমা এঁটে চোখেÑ
খবর কি ভাই নান্টু মিয়াা
দেখলে জিগায় লোকে।
লোকের কথায় বাঁ-হাত নাড়েন
দেন না ডকে সাড়া…
জোর-কদমে ছুটতে থাকেন
কাজের বড়ো তাড়া।
জিন্না টুপি চুরুক দাড়ি
হাতে রঙিন খাতাÑ
পাম-সু পায়ে নান্টু ঘটক
বগোল দাবায় ছাতা।
মুচুর মুচুর পানের খিলি
মোল্লা চাদর ঘাড়ে;
নান্টু মিয়ার শ্বশুরবাড়ি
কদমদিঘির পাড়ে।
==========================
শরতের ছড়া
বিভা ইন্দু
শরৎ মানেই ঢ্যামকুড়াকুড় ঢাকের পিঠে বোল
শরৎ মানেই কাশ শিউলির আনন্দ শোরগোল
শরৎ মানে ধবল মেঘ, দূর আকাশের ঘুড়ি
শরৎ মানে চাঁদ বুড়িটার কথায় ফুলঝুরি
শরৎ মানে কাঁচা রোদে ভোরের রক্তরবি
শরৎ মানে শিউলি তলায় নরম ঘাসের ছবি
শরৎ মানে খুকির মুখে ছড়ার তুমুল ঝড়
শরৎ মানে মেঠোপথে হাঁটাহাঁটি দিনভর
শরৎ মানে কাশবাগানে সবুজের আনাগোনা
শরৎ মানে নরম রোদে খুকুর স্বপ্নবোনা
শরৎ মানে বৃষ্টি পালানো রোদ ঝলমল দিন
শরৎ মানে পুজার গন্ধ, আনন্দে মন রঙিন।
শরৎ মানে পাড়ায় পাড়ায় হিম হিমানীর সুখ
শরৎ মানেই কলাবতীতে শিশিরের খুশি মুখ
শরৎ মানে কোজাগরী চাঁদ জোছনা ধোয়া আলো
শরৎ মানে গাঁয়ের কুটিরে সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালো
==========================
জ্যামিতিক ভালোবাসা
টিপলু বড়ুয়া
ইচ্ছে ছিল-
বৃত্তাকার ভালোবাসায়- তোমার মন রাঙাবো।
আশা ছিল-
চতুর্ভুজের মতো চারকোণা ভালোবাসায়-
জীবন রাঙাবো।
কথা ছিল-
পীথাগোরাসের উপপাদ্যের মতো-
দু’কাঁধে বর্গাকার ভালোবাসায়-
জীবন পাড়ি দেবো।
কিন্তু…
ত্রিভুজক্ষেত্রে জমানো ভালোবাসাও যেন আজ-
ম্লান হয়ে গেল।
বক্ররেখার উপর চলমান বস্তুর মতো-
ভালোবাসায় ফাঁটল ধরে গেল।
পরিশেষে…
সমান্তরাল রেখার মতো-
দু’দিকে দু’জনার পথচলা শুরু হলো।
এভাবেই জ্যামিতিক ভালোবাসার
অবসান হলো।
==================================