গুমানী নদীর পাড়
বড়সড় একটা আয়না
সাজানো তোমার রুম
এপাড় — ওপাড় সীমাহীনপ্রায়
ড্রেসিং করা ঢেউ তবু তোলপাড়
স্নো, আই লাইনার, চুড়ি — কাঁটা
অবিশ্বাস্য অবিরাম ধড়ফড় —
তুমি আমার আয়নামতি
পড়ে থাকে কদম আয়নাঘরে।
ভোরগুলো দুপুর হলেই নির্জনতা
রিমঝিম বিছানা আয়নাঘর ভেসে যায়
এঘরে তোমার জন্ম খুঁজি,
সুখ দ্যাখি, ম্যানিকিউর নিপুণ
মিস্তিরির গভীর নিঃশ্বাস টের পাই
অস্ত্রময় তুমি সে ঘাটে সমূহ সর্বনাশ
যেন একখানা ডিঙ্গিনৌকা, একঘটি জল
ভেসে যাবে দুদ্দাড় মিথুন তোড়ে
নিঃশ্বাস সবটা লাল লিপিস্টিক।
তুমি গুমানী নদীর পাড় একটা আয়নাঘর।
অবেলার গান
ভাবি, না লেখা একটা মুশায়েরা তুমি
অনেক দূরের মেঘ
সাদা কাগজ বাতাসে ওড়ে
হতচ্ছাড়া আমি বিপন্ন আবেগ।
যতটা দূরের, তারচেয়েও অনেক
ভাসাবো মনের ঝিল
ক্ষরণের রক্তবমনে পুড়ছে গান
টেনে ছিঁড়ে নামে বাতাসের খিল।
বুঝি, জলে ভাসে অন্যের সাম্পান
আমার বেদনা খান খান
মাঝি টানো তুমি ধীরে ধীরে
জলে ও জোয়ারে ভাসে আমার সম্মান।
মুহূর্তের মুগ্ধরা
মুগ্ধ, তোমার দিকে বাংলাদেশ
তুমি পানি দেবে না তাদের
যারা তৃষ্ণার্ত!
কত বয়স তোমার
বৈষম্যবাজরা ওঁৎ পেতেছে
তুমি আহতদের পানি হতে চেয়েছিলে।
স্তরে স্তরে মানুষ বড় হয়
তুমি বড় হ’য়ে উঠেছ পানিতে
দ্যাখো, পৃথিবীর তিনভাগ জল
সাগর সেঁচে তুলেছ একভাগ
আর্তরা যখন কাতরাচ্ছে
তোমার গভীর উচ্চারণ
আকাশ—বাতাস ধর্মহীন —
শুধু পানি—ই ধর্ম
পানিতে রুপান্তরিত তুমি
পানিতে জীবন পানিতে মরণ ;
এ—ই আপ্তবাক্য দুমড়েমুচড়ে
তোমার মন্দি্রত কন্ঠ — পানি লাগবে পানি
পানির অপর নাম আজ — মীর মুগ্ধ
মুহুর্তের মুগ্ধরা নিজের রক্তের পানিতে
সাঁতার কাটবে।
ভিন্ন এক দেয়াল
দেয়ালটি সবার আড়ালে বিষণ্ণতা দিয়ে তুলেছি এবার
এক কলস দুপুরে যখন ঘুমিয়ে পাতা
যখন ঘুঙট রাগ নেমেছে আঁধার করে,
দেয়াল নির্মাণে মনিব ছিল না পাশে ;
এটি আমাদের দুর্ভাগা মনন বৈষম্যের বিরুদ্ধ আকর।
শাদাচুনকামে খুব সুন্দর দেখায় জ্যোৎস্না প্লাবিত
অন্ধকারে — যেন প্যাগান পরীর দেশ।
দেয়ালচিত্রটি গুডবুকে ছিলনা কখনও
একটি নদী এঁকে তাতে জল দিলে
ঢেউ গোনা শুরু হয়ে যায়।
দেয়ালটি দেশ ভাগের না, মন ভাগেরও না
অদৃশ্য সুতোর সুঁই দিয়ে ঢাকা বিধবার ছাপ।